Showing posts with label রোজনামচা. Show all posts
Showing posts with label রোজনামচা. Show all posts

August 6, 2024

স্বৈরাচার পতন-পরবর্তী সময়ে শরিয়া শাসন বিষয়ক নোট

 আমি জানি এখন দুনিয়ার যেকোনো প্রান্তে মৌখিকভাবে ইসলামী শাসন চাইলেই হয়ে যাবে এটা ভাবা নিতান্তই বোকামি। 
আর বাংলাদেশের জনগণ ইসলাম সম্পর্কে এবং ইসলামী শাসন সম্পর্কে যে পরিমাণ অজ্ঞ, সেটা আপনাদের মত জ্ঞানী ফেসবুকারদের ধারনার অতীত।

তবে একজন মুসলিম হিসেবে অবশ্যই আমাদের কাম্য হচ্ছে ইসলামের বিধান অনুযায়ী পরিবার - সমাজ - দেশ - দুনিয়া চলবে। এবং নিজ নিজ সক্ষমতা অনুযায়ী আমাদের আমল করারও চেষ্টা করা উচিত। এখন সেকুলার আইনে চলা দেশে কমপক্ষে এতোটুকু  অবশ্যই চাইবো, আমরা যেন ইসলাম মেনে চলতে এবং মানুষকে ইসলামের দিকে ডাকতে কোনও বাধার সম্মুখীন না হই।    

---

কথা হচ্ছে গতকাল থেকে যখন কিছু মানুষ পোস্ট-কমেন্ট করছে ইসলাম অনুযায়ী দেশ চালাতে হবে, তখন বেশ কিছু অজ্ঞ পোলাপান বলছে "তাহলে কি অমুসলিমদেরকে বের করে দেবেন?" "তাহলে কি সবাইকে মুসলিম হয়ে যেতে হবে?"

বোঝা যাচ্ছে তাদের কোন ধারনাই নাই এদেশে ইসলামী সালতানাত কিভাবে চলেছে। বাংলার স্বর্ণযুগে সকল ধর্মের লোকেরা সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে বসবাস করছে। বাংলার স্বর্ণযুগ দূরের কথা (কলোনিয়াল যুগ অব্দি) পরবর্তী শাসন ব্যবস্থা গুলো সম্পর্কেও তাদের কোন ধারণা নাই। 

আপনাদের করণীয় হচ্ছে, ইতিহাসের সেই সুন্দর সময়গুলো বারবার তুলে ধরা, মানুষের মধ্যে এই আগ্রহ পয়দা করা, যাতে আমাদের সেই হারানো ফেরদাউসের প্রতি মানুষের আকাঙ্ক্ষা প্রকট হয়। বাংলার যেকোনো প্রান্তে কেউ ইসলামী শাসনের কথা বললে যেন তারা আগ্রহের সাথে সমর্থন করে। সাহায্য ও সহযোগিতা করে। 

---

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে জানিয়েছেন কোন কাজ করলে জান্নাতে যাব, কোন কাজ করলে জাহান্নামে যাব। তবে খুটিনাটি বিধান নাযিলের আগে মৌলিক কিছু বিষয় শিখিয়েছেন। এবং বেশিবেশি জান্নাতের লোভনীয় বর্ণনা এবং জাহান্নামের শাস্তির কথা জানিয়ে আমাদেরকে জান্নাতের প্রতি আগ্রহী করেছেন। ফলে বুদ্ধিমানরা বুঝে গেছে আমাদের জন্য ইসলাম ছাড়া আর কোন গতি নাই। সকল কল্যাণ এই ইসলামের মধ্যেই।
 আমরা এই সুন্নাতুল্লাহ অনুসরণ করতে পারি...

---

মদিনার অবস্থাও কিন্তু লক্ষণীয়। মদিনার লোকেরা দ্রুত ইসলাম কবুল করার একটা কারণ ছিল - ওরা যুগের পর যুগ ধরে ইহুদিদের কাছে শুনেছে - একজন নবী আসবে, তিনি এই এই করবে, তার অনুসারীরা এরকম সফলতা পাবে ইত্যাদি ইত্যাদি। 

ফলে তারা যখনই বুঝতে পারছে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামই হচ্ছেন সেই নবী, তখন এক মুহূর্ত বিলম্ব করে নাই। দ্রুত ইসলাম কবুল করেছে এবং ইসলামের জন্য নিজের ধনসম্পদ এমনকি নিজের প্রাণ দিতেও প্রস্তুত হয়ে গেছে।

-----

০৬-০৮-২০২৪ (source link)

Share:

July 11, 2024

মাজারপন্থীরা কেমন আশেকে রাসুল?

 [ক]

একদিন এক ক্লাসে আমাদের উস্তায বলছিলেন, বেদাতি সুন্নিরা যত গালি দেয়, এর মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক গালি কোনটা জানো? 

- না হুজুর কোনটা? 

-- গোস্তাখে রাসুল। এটা সবচেয়ে ভয়ানক কথা। কাফের বলার চেয়েও খারাপ বিষয়। 

[খ]

২০১৩ সনে হেফাজত যখন শাহবাগের নাস্তিকদের বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলন করছিল, দেশের সর্বস্তরের মুসলিমরা এক কাতারে দাঁড়িয়ে যখন হালালুদ্দম লেভেলের শাতিমদের ফাসি চাইতেছিল, বেদয়াতিরা তখন সরাসরি হেফাজতের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। আন্দোলন প্রতিহত করার হুমকি দিচ্ছিল। 

[গ]

এরকম আপনি আরও একশ উদাহরণ খুঁজে বের করতে পারবেন। বেদাতিরা চাপাবাজির সময় অনেক জঘন্য কথা বলবে, ভাব নিবে যেন এদেরচেয়ে নবীজির ভালোবাসা কারও নাই (নাউযুবিল্লাহ), কিন্তু আসল কাজের সময় হারিকেন নিয়েও খুঁজে পাবেন না। 

..

ধরেন, আপনি সারাদিন আপনার বাপরে বলেন, বাবা আপনারে অনেক ভালোবাসি, সম্মান করি। পরে একদিন রাস্তার মোড়ে অন্যায়ভাবে একজন আপনার বাপের গায়ে হাত তুললো, গালিগালাজ করলো। আপনি ওইখানে তাকাইয়া তাকাইয়া তামাশা দেখলেন। পরে সাধারণ এক রিকসাওয়ালা এসে আপনার বাপরে সরাইলো ওখান থেকে।

 তাহলে আপনার দোয়া-দরুদের দাম থাকলো কই? আপনার থেকে তো কাজের সময়ে আপনার বাপের পাশে দাঁড়ানো সাধারণ রিকসাওয়ালাই সততার পরিচয় দিল। আপনি তো দুইনাম্বারি করলেন মিয়াঁ। থুঃ

----

১১-০৭-২০২৪ (source link)

Share:

October 14, 2023

নতুন এলেম, বইপত্র এবং দুইচারটা কথা

[ক]
সেদিন সাবের চৌধুরী ভাই বলছিলেন,
"প্রত্যেকটা বই কালোত্তীর্ণ হতে হবে, এটা জরুরি না। একটা বই কিছুদিন - কিছু মানুষের প্রয়োজন পূরণ করেছে, এটাও খারাপ না।"
বিষয়টার সাথে আমি একমত, তবে আমি আরও কিছু কথা যোগ করতে চাই।
[খ]
ওপরের বিষয়টার বড় উদাহরণ হচ্ছে, শরিয়াত। পূর্বে আল্লাহ তা'আলা বিভিন্ন নবীকে শরিয়ত দিয়েছেন, সেগুলো একটা নির্দিষ্ট সময় পরে মানসুখ হয়ে গেছে। এরপর নতুন শরিয়াহ এসেছে। সবার শেষের শরিয়তে মুহাম্মাদী ﷺ‎, এটার উসুল-ফুরু' এতটা মজবুত আর বিস্তৃত যে, এরপর আর কিছুর দরকার নাই। কিয়ামত অব্দি এটাই যথেষ্ট।
কিন্তু পূর্বের নবীদের উম্মতের জন্য যখন যে বিধান দেয়া হয়েছে, সেটা কিন্তু ওই সময়ের জন্য অবশ্যই জরুরি এবং প্রয়োজনীয় ছিল। এটা মাথায় রাখতে হবে।
[গ]
আরেকটা বিষয় হল, আমাদের প্রত্যেকটা বই ইউনিক হতে হবে, এটাও জরুরি না। আব্দুল হক নামে এক লোককে দেখা যায়, আমাদের আলেমদের গালিগালাজ করে, আর মুতাযিলাদের প্রশংসা করে।
আমাদের আলেমদের ক্ষেত্রে তার করা আপত্তির একটা হচ্ছে, 'উনারা চর্বিত চর্বন করে, নতুন কিছু সৃষ্টি করে না।' এখানে বিষয় হল ভাই, ইসলামী ইলমের মাঝে নতুন কিছু আবিষ্কার কেন করবে? এই অধিকার কি কারও আছে? আমাদের শাস্ত্রগুলোর দিকে খেয়াল করেন,
উলুমুল হাদিস – সেই নবীজির কথাগুলোই, বারবার, বিভিন্ন বর্ণনায় আসছে। তাকরার বাদে ইউনিক মতন আর কয়টাই বা আছে। রিজাল শাস্ত্রেও সেই হাদিসের রাবিদের নিয়েই কথাবার্তা। কিন্তু এগুলো আলোচনা কেন বাদ দিব আমরা? এগুলো পুরানাবৃত্তি ও চর্চা রাখাই তো দরকারি।
উলুমুল কোরআন এবং তাফসির – এইখানেও ঘুরেফিরে সেই তাবারি আর রাযীর কথাগুলোই সবাই বলে। যুগে যুগে বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে হয়তো সামান্য মন্তব্য যোগ হয়। কিন্তু মূল কথা ঘুরেফিরে প্রায় একই থাকে। আর আল্লাহর কালামের ব্যাপারে মুসলিমদের বুঝ এক হইলেই তো বেশি ভাল, তাইনা? আর আমি কেন কামনা করবো যে, একটি ঘর – একটি আকিদা প্রকল্প গড়ে উঠুক। অদ্ভুত!
এছাড়া আধুনিক তাফসির বা বিজ্ঞানের আলোকে ব্যাখ্যার নামে যা হয়, তার প্রায় শতভাগই আবর্জনা আর গাঁজাখুরি। এছাড়া এখন মিশনারিদের তত্বাবধানেও কোরানিস্ট মতবাদ বাজারজাত হচ্ছে। যাহোক, কথায় ফিরি।
ফিকহ – এখানে নতুনত্বটা কেমন? যার যা মনে হয় লিখে দেয়? না ভাই! আপনি যত আধুনিক বা নতুন মাসয়ালাই নিয়ে আসেন না কেন, সেই হাজার বছর পুরনো উসুল দিয়েই ইস্তিম্বাত হবে, দলিল-আদিল্লা থাকবে সেই কোরআন আর হাদিসই।
হ্যাঁ। এটা হতে পারে যে, অমুক মাসয়ালা নিয়ে আলোচনা করা হয়না, সহজে লেখা হয়না, একাধিক মাজহাবের তাতবিক ভালো মত দেয়া হয়, কেউ একজন করলো। কিন্তু ঘুরে ফিরে সেই একই শরিয়ত। সেই দেড় হাজার বছরের পুরনো ইসলামের আইনই।
তাজদীদ মানে দ্বীনের মাঝে নতুন কিছু সৃষ্টি করা না। বরং সময়ের ব্যবধানে আল্লাহর দ্বীনের ওপর চেপে বসা জঞ্জাল সাফ করে, আগাছা দূর করে নতুনের মত ঝকঝকে অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া। আদি ও আসল দিন ইসলামের চেহারা নতুন করে মানুষকে চিনিয়ে দেয়া।
[ঘ]
ইদানীং ইসলামি বই অনেক বের হচ্ছে তো, বইয়ের ব্যাপারে মন্তব্যকারির পরিমানও অনেক বেড়েছে। এর মাঝে দেখা যায়, অনেকের ইসলামি জ্ঞানের ধারা সম্পর্কে কোনো ধারণা নাই, কিন্তু হুট করে বলে দিচ্ছে – অমুক কাজটা উচিত হয়নাই, অমুক কাজ খারাপ করেছে, এটা কেন করল – সেটা কেন করলো।
ধরেন, বড় একটা বই। হাজার পৃষ্ঠার। কয়জন পড়বে এটা? কেউ যদি এটার সারসংক্ষেপ করে ২০০পেজের মধ্যে কিছু বের করে। অনেকেই গালিগালাজ করবে। অথচ তালখিস করা, মুখতাসার নুসখা তৈরি করা, এসব সালাফদের যুগে হরহামেশাই হত। হিদায়ার লেখক বড় কিতাব (মেবি ৯০খন্ড) লেখার পরে যখন বুঝেছেন এতবড় বই কেউ পড়বে না, তখন উনিই শর্ট করে হিদায়া বানাইছেন।
এছাড়া একাধিক বইয়ের সারাংশ করে লেখার রেওয়াজও ছিল। কিংবা কখনও বইয়ের লাইনের মাঝেমাঝেও শরাহ করা হয়েছে। যেমন আমাদের দরসে পড়া একাধিক বই (শরহে বেকায়া, শরহে জামি, হেদায়া, মেশকাত) আগের বইয়ের ওপর বেজ করে লেখা। ইবনে কাসীরের তাফসির এবং তারিখ দুইটাই আগের কিতাবের ওপর ভিত্তি করে লেখা। এরকম উদাহরণ শত না বরং হাজার হাজার। অনেক ক্ষেত্রে দুইটা বই-ই টিকে গেছে, আবার অনেক ক্ষেত্রে পরের বইটাই মানুষের জন্য বেশি উপকারী, বেশি যুগোপযোগী বা অধিক সমাদৃত হয়েছে।
এখন তাকি সাহেব থানবী রহ. এর কিতাবের ওপর আলোচনা করছে, রিনোভেট করছে, শরাহ করছে, এজন্য আপনি তাকে গালি দিবেন কেন? গালি দেয়ার শখ থাকলে, একদম ওপর থেকেই শুরু করেন না। নাহু, ফেকাহ, হাদিস, তাফসির কোন শাস্ত্রের ইমামরা বাদ যাবে আপনার তীর থেকে?
[ঙ]
তবে ভাই, ‘নকল করা’ কিন্তু অন্য জিনিস, একই বাজারে (অর্থাৎ অঞ্চল ও সময় কমন) কোনো পণ্য ভাল চলছে, ডুপ্লিকেট বের করে সেটার নাম – ফেম হাতিয়ে নিতে চেষ্টা করা। হয়তো মানহীন জিনিস অন্যের মোড়ক কপি করে বাজারজাত করা। কিংবা অন্যের লেখা/অনুবাদ কপি করে নিজের নামে চালিয়ে দেয়া। এটার সাথে অন্য কারও কাজের ওপরে আবার ইলমি কাজ করার বিস্তর ফারাক রয়েছে। এক্ষেত্রে উদ্দেশ্য ও বিধেয় দুইটাই ভিন্ন। সুস্থ মস্তিষ্কের সব মানুষেরই বিষয়টা বোঝার কথা।
শুরুর কথা আবার দোহরাই, এটা জরুরি না প্রতিটা বই কেয়ামত অব্দি টিকে থাকতে হবে, কিংবা এটাও জরুরি না প্রত্যেককে হরহামেশা নতুন কিছু আবিষ্কার করতে হবে। একটা লেখা কিছুদিন মানুষের প্রয়োজন মিটিয়ে হারিয়ে যেতে পারে, পুরনো কিংবা ভিনদেশি কাজের ওপরেও নতুন করে কাজ হতে পারে। প্রত্যেকে তার আমল এবং নিয়ত অনুযায়ী প্রতিদান পাবে।
কোরআনে এসেছে ‘ফেনা তো উধাও হয়ে যায়। আর যা মানুষের জন্য উপকারী তা ভূমিতে থেকে যায়। আল্লাহ এভাবেই উপমা দিয়ে থাকেন।‘ (সুরা রা’দ:১৭)

----

(শবনামচা ১৪-১০-২৩)

Share:

September 7, 2023

ভুতের বাচ্চা সোলাইমান (আংশিক রিভিউ)

পোস্টটা ১৪-০৮-২০১৭ তে লেখা। সম্ভবত লেখা কমপ্লিট করা হয়নি দেখে পোস্ট করা হয়নাই। এই বইটাতে আসলে বাচ্চাদেরকে জাদুটোনা - জিনসাধনা এসবের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়েছে। জঘন্য একটা বিষয় আগ্রহোদ্দীপক করে উপস্থাপন করা হয়েছে। জাফরিকবাল লোকটা আসলেই খুব বিপদজনক। ইতিহাসে কেউ এর অপরাধকর্মের তালিকা করলে এই বইটার কথাও উল্লেখ করা উচিত।

-----
[ক]
রোজার কিছুদিন আগে, তখন হাটহাজারিতে আমাদের বার্ষিক পরীক্ষার সিজন চলছিল। সিনিয়র এক ভাইয়ের রুমে মাঝেমধ্যে গল্প করতে যেতাম। গল্পগুজব হতো, ইলমি মুযাকারা হতো, উনার কাছে নতুন কোনো বই থাকলে পড়া হতো। সেদিন গিয়ে দেখি উনি কিযেন লেখায় মগ্ন, কাছে বসে টুকটাক গল্প জুড়ে দিলাম, উনার টেবিলে চোখ পড়তেই দেখি ভুতের বাচ্চা সোলাইমান রাখা।
হাতে নিয়ে পড়া শুরু করলাম, মাত্র কয়েকপৃষ্ঠার বই। তাঁর ওপর বাচ্চাদের (ব্রেইন ওয়াশ করার) জন্য লেখা, এজন্য সহজ ভাষা হেতু পড়তে আরো সহজ হলো।
[খ]
চলুন আপনাদেরকে স্যারের লেখা বইয়ের গল্প শোনাই।
গল্পের প্রধান চরিত্র নিতু। জাফর ইকবাল স্যারের খুব পছন্দের নাম। শুরুটা হয়েছে একজন টিচারের ক্লাস থেকে, যিনি কিনা বোরিং, ক্লাসে বসে ঝিমান, এমনকি ছাত্রছাত্রীরাও ঘুমিয়ে পড়ে ইত্যাদি। আমি জানিনা স্যার নিজে একজন শিক্ষক হয়েও উনার লেখা বইগুলোতে কেন শিক্ষকদের নেগেটিভভাবে রিপ্রেজেন্ট করেন। যাক সে কথা, আমরা গল্পে ফিরি। স্যারের ক্লাসে বসে থাকতে থাকতে নিতুর ঘুম ঘুম ভাব আসছে, তখনই ক্লাস ছুটি হয়।
নিতু স্কুল ছুটির পর বাড়ি যাওয়ার পথে ফুটপাথের এক বইওয়ালার থেকে ১০টাকা দিয়ে একটি পুরাতন বই কিনে। বইটি যাদুমন্ত্রের। সেখানে বিভিন্ন রকমের মন্ত্র আছে, আর প্রতিটি মন্ত্রের মার্জিনে কলম দিয়ে মন্তব্যও করেছে কেউ একজন, এটা কার্যকর, এটা ভয়ংকর! এটা প্রাণঘাতী, এটা কাজ করেনা.. ইত্যাদি। অর্থাৎ বইটির স্পেলগুলো এর আগেও কেউ একজন পারফর্ম করেছে, নিতু সেই বইটিতে একটা মন্ত্র পায় ভুত ডেকে আনার মন্ত্র।
[গ]
তো নিতু বই পড়তে পড়তেই বাড়ি যায়, স্যারের মতে অষ্টম শ্রেণী পড়ুয়া একটা মেয়ে বই পড়তে পড়তে ফুটপাথ দিয়ে হেটে যাচ্ছে, এটা খুব স্বাভাবিক আর সহজ বিষয়! পরে সেই বইয়ের রিচুয়াল পালন করে নিতু জিন হাজির করে, এবং সেটাকে আবার ফেরত পাঠানো নিয়ে বিভিন্ন ঝামেলা হয়। এভাবেই গল্প এগিয়ে যায়।
তা যাইহোক, এই গল্পে স্যার নতুন এক শ্রেণীর ওপর ঝাল মিটিয়েছেন। স্যার এক লেখায় বলেছিলেন “কি আর করার? ইটের ভাটার মালিকদের আমার কিশোর উপন্যাসের ভিলেন বানিয়েই মনের ঝাল মেটাতে হলো” – এথেকে আমরা বুঝি, স্যার নিজের লেখা (অথবা নকল করা) বইয়ে যাদেরকে বা যে শ্রেণির লোককে ভিলেন বানান, তারা স্যারের চোখের বালি!
এই গল্পের ভিলেন হচ্ছে দবির চাচা। বইয়ের মলাটে সৌদি স্টাইলের জুব্বা আর রুমাল মাথায় দেয়া যাকে দেখা যাচ্ছে, উনি দবির চাচা। তিনি মধ্যপ্রাচ্যে থাকেন। সবচেয়ে বড় রেমিটেন্সের দুয়ার মধ্যপ্রাচ্যের প্রবাসীদের প্রতি স্যারের এই বিদ্বেষের কারণ কি, তা এখনও জানা যায়নি। দুঃখিত আমি গল্পের মধ্যে রাজনীতি ঢুকাচ্ছিনা, তবে আমরা তো প্রশ্ন রাখতেই পারি – ভারত আম্রিকা টাইপের কোনো দেশের প্রবাসীদের প্রতিও স্যার অনুরূপ মানসিকতা রাখেন কিনা?
-------
Share:

May 7, 2023

অনেক মত আছে, অনেক ধর্ম আছে...।

 নাস্তিকদের একটা ফ্যালাসি হচ্ছে, আরে! আরও তো অনেক ধর্ম আছে। দুনিয়ায় কয়েক হাজার ধর্ম। ব্লা ব্লা ব্লা। 

(এখানে তার উদ্দেশ্য হচ্ছে, যেহেতু ইশ্বরে বিশ্বাসীরা কোনো ১টা ধর্মের ব্যপারে একমত না, এজন্য সে কোনো ধর্ম মানবেই না। কোন ধর্ম সঠিক সেটা যাচাইয়ের চেষ্টাই করবে না। আগের গোড়ামি নিয়েই থাকবে।) 

এই একই প্যাটার্নের যুক্তি বেদ্বীন আর ফেমিনিস্টরা অহরহ ইউজ করে। আরে দাড়ি নিয়ে ইখতেলাফ আছে, আরে কতটুকু পর্দা করতে হবে তা নিয়ে তো ইখতেলাফ আছে, আরে ঘরের কাজ করতে হবে নাকি তা নিয়ে ইখতেলাফ আছে...  and so on...

এরাও আগের বেদ্বিনির ওপরেই থাকতে চাচ্ছে। ইসলামের বিধানগুলো মানতে চাচ্ছে না। অস্বীকার করছে। কিন্তু অস্বীকার করতে গিয়ে নিজের প্রবৃত্তি পূজার কথা গোপন করে ইখতেলাফের দোহাই দিচ্ছে। আর প্রবৃত্তির অনুগামী ফাতওয়া শপিং করছে।

ধর্ম হাজারটা থাকুক, যেটা সবচেয়ে সেরা আমরা সেটাই মানি ও মানবো।

--

মূল পোস্ট

Share:

May 4, 2023

আইওএম এর রুকইয়াহ শারইয়াহ কোর্সে কী থাকে?

 গত কয়েকবছর ধরে Islamic Online Madrasah - IOM (আইওএম) নিয়মিত রুকইয়ার শারইয়াহ কোর্সের আয়োজন করছে আলহামদুলিল্লাহ। এই কোর্সে আমরা রুকইয়াহ শারইয়াহ বিষয়ে একদম প্রাথমিক স্তর থেকে ব্যবহারিক ও তাত্বিক বিষয়গুলো পাঠদান করে থাকি। কোর্সটি প্রাপ্তবয়স্ক প্রত্যেক মুসলিম নারী-পুরুষের জন্যই উপকারী হবে ইনশাআল্লাহ।

এই কোর্সের মূল উদ্দেশ্য হল, রুকইয়াহ শারইয়াহ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ইলম আমভাবে সকলের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া। যাতে প্রত্যেকে নিজের বা নিজের পরিবারের প্রয়োজনে রুকইয়াহ করতে পারে। আর আশেপাশের মানুষদেরও এব্যাপারে সহায়তা করতে পারে।

কোর্সে সাধারণত ১৫-২৫টি দরস থাকে। ক্লাসের ডিউরেশন হয় ১ থেকে ২ ঘন্টা‌। প্রতিটা বিষয়ে সংক্ষিপ্ত/বিস্তারিত ক্লাসনোট দেয়া হয়। আর ক্লাসের রেকর্ডও সংরক্ষিত থাকে। এছাড়া মাঝেমধ্যে অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর পর্বের আয়োজন হয়। কোর্স চলাকালীন নারী ও পুরুষ শিক্ষার্থিদের জন্য পৃথক ডিসকাশন গ্রুপ থাকে। সেখানে সবাই ক্লাসের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে পারে। কোর্স সমাপ্তকারী সবার জন্য থাকে সনদের সফটকপি। কোর্স পরীক্ষার মেধাতালিকায় থাকা ব্যক্তিদের জন্য থাকে উপহার ও সনদের হার্ডকপি। আর ১ম,২য়,৩য় স্থান অধিকারীদের জন্য থাকে বিশেষ পুরস্কার।



আচ্ছা,এবার আমাদের সিলেবাসটা দেখে নেয়া যাক - 

অধ্যায়-১. রুকইয়াহ শারইয়াহ :

  • * রুকইয়াহ পরিচিতি,
  • * রুকইয়াহ বনাম নিষিদ্ধ ঝাড়ফুঁক/জাদু,
  • * রুকইয়ার গুরুত্ব ও ফজিলত,
  • * সাপ্লিমেন্টের ব্যবহার,
  • * সাইড ইফেক্ট প্রসঙ্গ ও নিয়ন্ত্রণের উপায়,
  • * রুকইয়ার আগে ও পরে করণীয়,
  • * বাচ্চাদের রুকইয়াহ কিভাবে করবেন ,
  • * আমভাবে যেকোনো রোগের রুকইয়ার নিয়ম

অধ্যায়-২. বদনজর: জিন এবং মানুষের নজর,
অধ্যায়-৩. ওয়াসওয়াসা রোগ,
অধ্যায়-৪. জিনের আসর,
অধ্যায়-৫. জাদুটোনা ও তাবিজ-কবচ 
:

  • * এই সমস্যাগুলোর ব্যাপারে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি,
  • * এসব বিপদ থেকে নিরাপদ থাকার উপায়,
  • * লক্ষণীয় উপসর্গের বিবরণ, রোগ নির্ণয় পদ্ধতি,
  • * চিকিৎসা : সেলফ রুকইয়াহ এবং অন্যের জন্য রুকইয়ার নিয়ম।

অধ্যায়-৬. শারীরিক ও মানসিক রোগব্যাধির জন্য রুকইয়াহ :

  • * কিছু কমন সমস্যার জন্য রুকইয়ার নিয়ম,
  • * প্যারানরমাল সমস্যা এবং সাধারণ রোগব্যাধির পার্থক্য।

অধ্যায়-৭. পরিশিষ্ট : 

  • * কিছু কমন পরামর্শ ও রুটিন,
  • * জটিল ও দীর্ঘমেয়াদী কেসগুলোর ক্ষেত্রে করণীয়,
  • * বিভিন্ন অভিজ্ঞতা ও গল্প-আলাপ।
  • মাঝেমধ্যে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে অতিরিক্ত দাওয়াহ, কিরাত বা মাসায়েলের ক্লাস হতে পারে।
  • প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সপ্তাহে একদিন তা'লিম বা ইসলাহি মজলিসের আয়োজন হতে পারে।
----

রেজিস্ট্রেশনের নিয়ম :

রেজিস্ট্রেশনের দুইটা ধাপ -
১. প্রথমতঃ কোর্স ফি পরিশোধ করা। (বিকাশ, নগদ বা বিভিন্ন ব্যাংক কার্ডের মাধ্যমে পে করা যায়)
২. এরপর রেজিস্ট্রেশন ফরম ফিলাপ করা। (পেমেন্টের তথ্য দিয়ে রেজিঃ ফর্ম পূরণ করতে হয়)
প্রতিটা ব্যাচের ক্ষেত্রে পেমেন্ট লিংক এবং ভর্তি ফরম ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে, এজন্য ব্লগ-পোস্টের মাঝে দিতে পারলাম না। রেজিঃ চলাকালীন আপনি প্রয়োজনীয় লিংক ও পেমেন্টের পদ্ধতি জেনে নিবেন। (কমেন্টে কিছু লিংক থাকবে)
রেজিস্ট্রেশন করা শেষ হলে, আপনার ইমেইলের মাধ্যমে ক্লাসের তথ্য, ডিসকাশন গ্রুপের লিংক, ক্যাম্পাসের ক্রেডেনশিয়াল জানিয়ে দেয়া হবে। তাই কোর্স শেষ হওয়া পর্যন্ত সব নোটিশগুলো ভালোভাবে খেয়াল করবেন।
----

কোর্সের নিয়ে বহুল জিজ্ঞাসিত কিছু প্রশ্ন এবং তার উত্তর :

১। সবাই কি কোর্সটি করতে পারবে?
- জ্বি, পারবে৷ এজন্য আলেম হওয়া বা আরবি ভাষা জানা আবশ্যক না। দেশ-বিদেশের সব জায়গা থেকেই করতে পারবেন।

২। মেয়েরাও কি কোর্সে রেজিঃ করতে পারবে?
- জ্বি, পারবে। নারী-পুরুষ সবাই এই কোর্স করতে পারবে। আর আমাদের জানামতে পর্দার ব্যাপারে IOM এর ম্যানেজমেন্ট টিম যথেষ্ট সতর্ক থাকে। তাই আশা করছি সমস্যা হবে না।

৩। কবে থেকে কোর্স শুরু হবে? কতদিন পর্যন্ত?
- সাধারণত ক্লাস সপ্তাহে ২-৩ দিন ক্লাস হয় আর দেড় থেকে দুইমাসে সিলেবাস শেষ হয়। ১৫ থেকে ২০টি ক্লাস হতে পারে। ক্লাসের দৈর্ঘ বেশি হলে দরস সংখ্যা কম হয়।
- প্রতিটা কোর্স শুরুর কয়েক সপ্তাহ আগে রেজিস্ট্রেশনের ঘোষণা দেয়া হয়। এজন্য আইওএমের পেজরুকইয়াহ সাপোর্ট গ্রুপ এবং আমার ওয়ালে চোখ রাখুন।

৪। কোর্সের জন্য কি কি প্রয়োজন হবে?
- অনলাইন ক্লাস হেতু ইন্টারনেট কানেকশন এবং ফোন/পিসি লাগবে।
- যেহেতু সহায়ক কিছু স্লাইড/নোট থাকবে, সুতরাং বাংলা পড়তে জানতে হবে।
- রুকইয়াহ করতে যেহেতু কোরআন পড়া লাগে, তাই কমপক্ষে কোরআন পড়তে জানা লাগবে।

৫। কোনো নির্দিষ্ট বই রাখা লাগবে?
- আবশ্যক না। প্রয়োজনীয় নোট এবং অতিরিক্ত মুতালায়ার পিডিএফ দেয়া হবে। তবে"রুকইয়াহ" (রচনা: আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ) বইটা থাকলে আশা করছি ক্লাসে নোট করা বা পিডিএফ থেকে পড়ার কষ্ট অনেকটা কমে যাবে। তাই চাইলে এটা সংগ্রহ করতে পারেন। (বইটা পাওয়া যাবে ওয়াফিলাইফ, রকমারি অথবা অফলাইনে ভালো ইসলামী বইয়ের দোকানে।)

৬। কিভাবে ক্লাস হবে? যদি কোনো ক্লাস মিস করি?
- ক্লাস অনলাইনে হবে, zoom অ্যাপের মাধ্যমে। আর প্রাইভেট গ্রুপে স্ট্রিম করা হবে, সেখানেও দেখতে পারবেন। প্রতিদিনের ক্লাস রেকর্ড করা থাকবে। নেটের সমস্যা অথবা অন্য কোনো কারনে লাইভ ক্লাস মিস হলে পরে সেটা শুনে নিতে পারবেন। তবে লাইভ ক্লাস করলে সবচেয়ে বেশি ফায়দা হয়

৭। কি কি টপিক আলোচনা করা হবে? সম্ভাব্য কোর্স প্ল্যান কী?
- পূর্বে বলা সিলেবাস অনুযায়ী আলোচনা করা হবে ইনশাআল্লাহ।

৮। রুকইয়াহ বই পড়লেই কি এই কোর্সের সব জানা যাবে?

- না, এই কোর্সে আলোচ্য অনেক বিষয় বইয়ের মধ্যে নাই। আবার বইয়ের কিছু কিছু বিষয়ে কোর্সে বাদ দেয়া হয়। উপরন্তু কোর্স যেহেতু শিক্ষকের তত্বাবধানে হয়, তাই এর ফায়দা বইয়ের চেয়ে ভিন্ন।

৯। আমার জিন-জাদুর সমস্যা আছে, আমি কি উপকৃত হব?
- জ্বি, আপনি কোর্সে বলা নিয়মে নিজের বা পরিবারের জন্য রুকইয়া করতে পারবেন। কখন কী করণীয় বুঝতে পারবেন। নিরাপত্তার বিষয়গুলো জানতে পারবেন। প্রয়োজনে যদি কারও দ্বারা রুকইয়াহ করাতে হয়, সেক্ষেত্রে ভালো-মন্দের পার্থক্য করতে পারবেন। 
- তবে যেহেতু ক্লাসের সময় অল্প, তাই পাঠের বাইরে নির্দিষ্ট কারও সমস্যা নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ থাকেনা। ক্লাসের বাইরে যদি উস্তায বা অন্য সহপাঠীরা সময় দেয় সেটা ভিন্ন বিষয়।
- তবে আপনার সমস্যা বেশি হলে, এবিষয়ে পড়াশোনা করা কষ্টকর হতে পারে। শয়তান বিভিন্নভাবে বাধা দিতে পারে, সেক্ষেত্রে আপনার উচিত এটাকে আরও গুরুত্বের সাথে নেয়া। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

১০। আমি কি এই কোর্স করে রাকি হতে পারবো?
- এটা প্রফেশনাল এক্সোরসিস্ট হওয়ার কোর্স না। তবে এটা সহায়ক হবে। এখানে যেহেতু আমরা শরঈ রুকইয়ার জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় সবগুলো বিষয়েই আলোচনা করে থাকি, আর ভবিষ্যতে আরও পড়াশোনা করার ব্যাপারেও দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকি, তাই এটা সবার জন্যই উপকারী হবে ইনশাআল্লাহ।

১১। কোর্স শেষে আমরা কি কি আশা করতে পারি?
- ইনশাআল্লাহ, ভালোভাবে কোর্সটি শেষ করলে এবং কোর্সের দিকনির্দেশনা অনুসরণ করলে -

  • * আপনি নিজের এবং পরিবারের জন্য রুকইয়াহ করতে পারবেন। 
  • * আশেপাশের মানুষদের প্রাথমিক চিকিৎসা ও পরামর্শ দিতে পারবেন।
  • * জাদুটোনা আর জিনভুতের ব্যাপারে অহেতুক ভীতি দূর হয়ে যাবে।
  • * এসব বিষয়ে প্রচলিত ভুলত্রুটি ও কুফরি-কালামের ব্যাপারে সতর্ক হবেন।
  • * জিন, জাদু, বদনজর, ঝাড়ফুঁক, হিফাজতের আমল ইত্যাদি বিষয়ে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো জানতে পারবেন।
  • * আর এই কোর্স থেকে দিকনির্দেশনা নিয়ে ভবিষ্যতে আরও পড়াশোনা এবং প্র‍্যাক্টিস করতে পারবেন।
---

হেল্পলাইন:

কোর্স সংক্রান্ত আরও তথ্যের জন্য আইওএমের হেল্পলাইন নাম্বারে অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিয়ে কথা বলা যাবে।

Share:

April 27, 2023

কাকে বিয়ে করছেন, সাবধানে...

 ভাই অনেক সময় অনেক ফান করি। এটা সিরিয়াস কথা।

গত দুইবছরে ইমার্জেন্সি পিলের ব্যবহার বেড়েছে ৬গুন। ২০২১ - ২২ সনে ই.পিল বিক্রি হয়েছে ৩লাখ ৮৭হাজার। এবং কোনো সন্দেহ নাই যে, এর অধিকাংশ ইউজ হয়েছে যিনা করার পর যেন বাচ্চা না হয় এই জন্য।

দেখেন ভাই, শুধুমাত্র অনলাইনের ম্যাচমেকিং থেকে পাত্রি নির্বাচনের ব্যাপারে সাবধান হোন।

 কারণ এই পৌনে ৪ লক্ষ পিলের ভোক্তা যারা, তাদের অনেককেই আপনারা লেবাসে-সুরতে দ্বীনদার মনে করে থাকেন। কতজন কতবার বিসমিল্লাহ ফার্মেসিতে গেছে কেউ জানেনা। 

অনেকে আবার হানাফি ফিকহের সুযোগ নিয়ে এতবার গোপনে বিয়ে করেছে.. বিয়ের পর আপনি গুনে শেষ করতে পারবেন না, আপনি কত নাম্বার বৈধ স্বামী।

সুতরাং কাকে আপনার সন্তানের মা বানাবেন, কাকে আপনার বাড়ির চাবি অর্পণ করবেন, কার দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন। সাবধানে।

----- ----- 

এটাচড ছবির ফাতওয়া এবং সুরা নূর ৩নং আয়াতের বিস্তারিত আলোচনা দ্রষ্টব্য। 

اَلزَّانِیۡ لَا یَنۡکِحُ اِلَّا زَانِیَۃً اَوۡ مُشۡرِکَۃً ۫ وَّالزَّانِیَۃُ لَا یَنۡکِحُہَاۤ اِلَّا زَانٍ اَوۡ مُشۡرِکٌ ۚ وَحُرِّمَ ذٰلِکَ عَلَی الۡمُؤۡمِنِیۡنَ 

ব্যভিচারী কেবল কোন ব্যভিচারিণী অথবা মুশরিক নারীকেই বিয়ে করবে এবং ব্যভিচারিণীকে কেবল কোন ব্যভিচারী অথবা মুশরিক পুরুষই বিয়ে করবে। মুমিনদের জন্য এদেরকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। [An-Nur 24:3]

(নোট: মুশরিকদের সাথে বিয়ে এরপরে অন্য আয়াতে রহিত করা হয়েছে।)

Share:

March 4, 2023

প্রাণের জিনিস ধরার সহজ উপায়!

💥 যদি আগে থেকে জানেন বা প্যাকেটে প্রাণ/আরএফএল এর লোগো পান, তাহলে তো সহজেই হল। না পেলে সামনে-পেছনে খুঁজে দেখবেন, এর উৎপাদক বা বাজারজাতকারীর নাম কী দেয়া আছে, তাহলে সহজে পেয়ে যাবেন। এক্ষেত্রে শুধু ওদের প্রতিষ্ঠান আর সেগমেন্টগুলোর কথা মনে রাখলেই চলবে। এছাড়া দোকানীকে জিজ্ঞেস করলেও হয়তো জানা যাবে। 

নিচে প্রতিষ্ঠানের লিস্ট আছে।

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের প্রোডাক্ট মুসলিমরা অপছন্দ করে এটা ওরাও জানে। ওদের ফুড আইটেমগুলো যে জঘন্য এটা কিন্তু জেনেশুনেই বানায়। এজন্যই এগুলোকে কমন ব্র‍্যান্ডের আন্ডারে আনে না, ভিন্ন-ভিন্ন নামে চালায়। ওরা ইংরেজি ২৬টা বর্ণের প্রায় সবগুলো দিয়ে পণ্যের নাম দিয়েছে। ইলেক্ট্রনিক অনেক পণ্য অন্যদের থেকে বানিয়ে নিয়ে অথবা চায়না থেকে এনে শুধু সিল মেরে বেচে দেয়। যেটা অন্তত কয়েক ডজন কোম্পানি করে। চাইলে আপনিও পারবেন।

...

আমি প্রাণের জিনিস বর্জন করি ৩ কারণে-

১। ঈমানের দাবিতে। কাdiয়ানীরা তাদের আয়ের বড় অংশ অধর্ম প্রচারে লাগায় এজন্য।
২। এরা দেশের অসংখ্য ক্ষুদ্র বেকারি, ফাউন্ড্রি ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে ও করছে এইজন্য।
৩। এদের জিনিসগুলো জঘন্য। ওপরে ফিটফাট ভেতরে সদরঘাট এইজন্য।

..

মূল কথা হল, একান্ত নিরুপায় না হলে, বিকল্প না পেয়ে ঠেকায় না পড়লে এদের জিনিস কিনি না। আপনার যদি সদিচ্ছা থাকে এদের অলমোস্ট ১০০% পণ্যের বেটার অলটারনেটিভ সহজেই পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ। হয়ত দুইটা টাকা বেশি লাগতে পারে, ঈমানের খাতিরে কয়টা টাকা বেশি খরচ হলে আল্লাহর কাছে যথাযথ বদলা পাবেন সন্দেহ নাই। 

....

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের কিছু প্রতিষ্ঠানের তালিকা -

১। এগ্রিকালচারাল মার্কেটিং কোম্পানি লিমিটেড
২। রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড (আরএফএল)
-- আরএফএল প্লাস্টিকস লিমিটেড
--- রিগাল ফার্নিচার। দুরন্ত বাইসাইকেল, প্রোটোন মোবাইল। ভিশন, ক্লিক, বিজলি (ইলেকট্রনিক)। গুড লাক (খাতা, কলম, পেন্সিল)।
৩। অথবা.কম এবং RFL e-shop (অনলাইন শপ)
৪। প্রাণ ফুডস লিমিটেড। 
--- প্রাণ বেভারেজ লিমিটেড, প্রাণ ডেইরি লিমিটেড, প্রাণ কনফেকশনারি লিমিটেড। প্রাণ এক্সপোর্টার্স লিমিটেড। প্রাণ এগ্রো লিমিটেড, প্রাণ এগ্রো বিজনেস লিমিটেড। 
৫। বঙ্গ বেকার্স লিমিটেড  
--- এটা থেকে 'অলটাইম' ও 'বিস্ক ক্লাব' ব্র্যান্ড চলে)
৬। হবিগঞ্জ এগ্রো লিমিটেড। 
৭। নাটোর এগ্রো লিমিটেড।
৮। ময়মনসিংহ এগ্রো লিমিটেড। 
৯। সান বেসিক কেমিক্যালস লিমিটেড
১০। চরকা টেক্সটাইল লিমিটেড 
১১। মিডিয়া :: Jagonews24, JagoLive, জাগো এফএম।
১২। ডিপার্টমেন্টাল স্টোর :: Daily Shopping, best buy.
১৩। খাবারের দোকান :: মিঠাই, Testy Treat, Fry Bucket, 

----- ----- 

প্রয়োজনীয় কিছু লিংক নিচে থাকবে।

[১] rfl brands [২] pran brands [৩] wiki

-----

মূল পোস্ট এর লিংক

image

Share:

June 17, 2022

আকিদার বিবর্তন?

এসব শিশুরা নিজ শায়েখদের অন্ধ তাকলিদ করে অন্য মুসলিমদেরকে খারেজি বলে গালি দেয়, অথচ জানেও না যে, নিজের মধ্যেই খারেজি আকিদার বিষ ঢুকে আছে। ছোট্ট একটা কমেন্ট, কিন্তু এই কমেন্টটা মাদখালিদের ইমান-আকিদার ভয়াবহ অনেকগুলো সমস্যার দলিল।


---

১. এরা খারেজিদের মত ইমান ও আমলকে আলাদা করতে পারে না। ফলে যেকোনো ধরনের কাজের নাজায়েজ জন্যই তাকফির করে বসে। হারাম কাজকে তো বটেই, মাকরুহ, এমনকি সাধারণ অনুচিত কাজকেও কুফর-শিরক বানিয়ে ফেলে।
শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বা মুসান্নেফে বাশারি (হাদা.)দের লেকচারে আপনারা এগুলো দেখেছেন। বিষয়টা নিয়ে সবাই হাসাহাসি করলেও এটা প্রমাণ যে, এরা কত সাধারণ কারণে মানুষের রক্ত হালাল করে ফেলতে পারে।)
২. ঈমানের শাব্দিক অর্থ ও সংজ্ঞা স্পষ্ট। সাহাবাদের মজলিসে নবীজি ঈমান কি শিখিয়েছেন, জিবরীল আমিন সেখানে উপস্থিত থেকে সত্যায়ন করেছেন। এরপর কোনো ফিরকা এসে নতুন করে ঈমানকে ডিফাইন করতে চাইলে বুঝতে হবে এরা ইসলামকে কাটাছেড়া করতে করতে অনেকদূর পৌঁছে গেছে।
৩. নবীজির জন্য কোন ভালোবাসা মিথ্যা, কোনটা সত্য- এটার ব্যাপারেও তারা এবিষয়ক এতগুলো হাদিস উপেক্ষা করে নিজেদের চিন্তাধারার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ একটা মনগড়া স্কেল বানিয়ে নিয়েছে। একেতো শরঈ দলিলের সাথে সাংঘর্ষিক, এরপর সুস্থ মস্তিষ্কও এরকম চিন্তা করতে পারে না।
৪. নামাজের মাসায়েল ক্লিয়ার করি, আহলুস সুন্নাহর ইমামদের কথা যদি আপনার কাছে মূল্যহীন মনে হয়, সালাফি আলেম ছাড়া আর কাউকে যদি আলেম মনে না হয়, তাহলে আসেন যে হাদিসের জন্য তাকফির করছেন সেটাই দেখি,
হাদিসের ভাষ্য হল "নামাজ ছেড়ে দেয়া" - এখানে ছেড়ে দেয়া মানে "ছেড়ে দেয়া।" মাঝে মাঝে না পড়া না। নিয়মিত না পড়া না। হাদিসে যা আছে, এটাই রাখেন, নিজের কথাকে হাদিস বানাইয়েন না।
এরা "নামাজ ছেড়ে দেয়া" বিষয়টার তাহরিফ (বিকৃত) করে বানিয়েছে "নিয়মিত নামাজ না পড়া"। আচ্ছা, বাংলা শব্দ বোঝেন না? "খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দেয়া" "দোকান ছেড়ে দেয়া" "জব ছেড়ে দেয়া" এগুলার মানে কী?
- অমুক ব্যক্তি মরার দুইদিন আগে খানাদানা ছেড়ে দিয়েছিল। মানে কি একবেলা করে খাচ্ছিল?
- আমার দুইটা দোকান ছিল, ছোটটা 'ছেড়ে দিলাম'। মানে কি একদিন পরপর বসি?
- সিল্ক ফ্যাক্টরির জবটা 'ছেড়ে দিলাম'। মানে কি সপ্তাহে একদিন করে কাজ করি?
৫. আহলুস সুন্নাহর ইমামদের বুঝ হচ্ছে, কেউ যদি নামাজ পড়তে অস্বীকার করে, মানে স্থায়ীভাবেই ছেড়ে দিল, আর পড়বে না। তাকে ফরজ বিষয় অস্বীকার করার জন্য তাকফির করা হবে। একদিন বা এক সপ্তাহ পড়েনি, সেটা তো অবহেলা করেছে, অপরাধ করেছে, সেজন্য তাওবা করবে। নামাজগুলো কাজা করবে। এর বাইরে নজদি আলেমদের মত যেটা উনাদের মত হিসেবেই রাখেন, বড়জোর চাইলে আপনার মাজহাব মানা লোকদের ওপর এপ্লাই করতে পারেন। অন্যদের ওপর চাপাবেন না।
৬. আপনার মনে হতে পারে, এরা বোধহয় নামাজকে অনেক গুরুত্ব দেয়। তাই এরকম কথা ভুলে বলে ফেলেছে। জ্বি না। এটা তাদের রাজনৈতিক টুলস। নামাজকে উইয়েপনাইজ করছে তাদের শাসকপুজা আর অথর্বতার অপরাধ ঢাকতে। আপনি হাদিস অস্বীকারকারী অনেক শয়তানকে দেখবেন, তারা বলে "কোরআনের বিধানগুলোই সব মানতে পারলাম না, হাদিস কখন মানবো!!" এরা যেমন কোরআন মানার শ্লোগান উইপনাইজ করেছে। এই মাদখালিদের বিষয়টাও একই।
৭. মজার ব্যাপার হল, আম মুসলিমদের ব্যাপারে এদের আচরণ হল খারেজিদের মত, পান থেকে চুন খসলেই তাকফির। আর জালিম শাসক ও সংশ্লিষ্টদের ব্যাপারে আচরণ হল, মুরজিয়াদের মত। ইসলামের যতই অবমাননা করুক, কিছুই বলা যাবে না। এদের মধ্যে দুই প্রান্তিক ফিরকার চমৎকার কম্বিনেশন দেখা যায়। বাস্তবে এরা এই শাতিমে রাসুল প্রসঙ্গে নুন্যতম স্তরের ঈমানদারির প্রমাণ দেখাতেও ব্যর্থ হয়েছে। এবং খুব সম্ভবত আগামীতেও অনেকেক্ষেত্রে এরা পুরা মুসলিম উম্মাহর বিপরীতে দাঁড়াবে।
----
ইসলামের পক্ষে থাকুন। মুসলিমদের পক্ষে থাকুন।
সালাম!
Share:

April 25, 2022

আহলে বাইতকে ভালোবাসতে হবে, তবে...

এই কথাটা কেউ অরিজিনালি আহলে বাইতের প্রতি সম্মান থেকে বলছে নাকি শিয়া ইন্সপায়ার্ড বোঝার ছোট্ট উপায় হল, খেয়াল করে দেখবেন, নবীজির মূল আহলে বাইত (ঘরওয়ালী, স্ত্রী)দের বাদ দিয়ে এক লাফে আলী-ফাতিমার গল্প শুরু করে কি না। 

যদি দেখেন মাওলা আলী মাওলা আলী করে ভাব নিচ্ছে, কিন্তু নবীজি পালক পূত্র যায়দ বা স্ত্রীদের সম্মান নিয়ে টু শব্দ নাই। উসমান রা.এর শাহাদাত নিয়ে কোনো কথা নাই। উম্মুল মুমিনিনদের গালিগালাজ করা নিয়ে কোনো চিন্তা নাই। ইবনে মাসউদ, ইবনে ওমর, ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহুমদের মত সাহাবাদের নিয়ে কোনো কথা নাই। 

তাহলে বুঝবেন হয়তো এই লোক শিয়া ভাইরাসে এফেক্টেড। অথবা লোকটা বোগাস। আজাইরা এস্থেটিক সাজতেসে।

----
২৫এপ্রিল, ২০২২

----

কমেন্ট থেকে -

someone commented
তারা অবশ্যই আহলে বাইতের অন্তর্ভুক্ত। আলে আব্বাসরাও আহলে বাইতের অন্তর্ভুক্ত। রদিয়াল্লাহু আনহুমা। তবে চাদরাবৃত চারজনের আলাদা মর্যাদা সহিহ হাদিস দ্বারা স্বীকৃত। এটাকে নেগলেক্ট করার সুযোগ নেই।
Active
Abdullah Almahmud
সেই হাদিস নতুন করে শেখা লাগবে ভাই?
উনাদেরকেও যেন আহলে বাইতের ফজিলত দেয়া হয়, সেজন্য নবীজি ওভাবে দোয়া করেছেন। যারা বাই ডিফল্ট আহলে বাইত, তারা কই গেল?
আহলে বাইত সমাজে প্রচলিত পরিভাষা। মঙ্গলগ্রহের কোনো টার্ম না। 
কমন সেন্স থেকে বলেন, কেউ যদি বলে, ইমাম সাহেবের ঘরওয়ালী/ঘরের লোক এটা পাঠাইসে। কি বুঝবেন? বাইশ পারার শুরুতে যে আহলে বাইতের কথা বলেছে আল্লাহ, সেখানে কাদের কথা বলেছে?
Share:

February 8, 2022

চন্দ্রপূজার ছড়া : আয় আয় চাঁদ মামা

 চন্দ্রপূজা বিষয়ক এই কবিতাটার লেখক কে আসলে? এরকম জঘন্য একটা জিনিস আমাদের সমাজে কিভাবে পুশ করে দিয়েছে ভাবতেই গা ঘিন ঘিন করে।

পূরাতন কবিতা পড়েন টিকা-টিপ্পনি দিয়ে। নতুন করে মাথায় ঢুকবে।

------- 

আয় আয় চাঁদ মামা [১]

টিপ দিয়ে যা[২]

চাঁদের কপালে চাঁদ

টিপ দিয়ে যা।[৩]

"ধান ভানলে কুঁড়ো দেব

মাছ কাটলে মুড়ো দেব

কাল গাইয়ের দুধ দেব

দুধ খাবার বাটি দেব" [৪]

চাঁদের কপালে চাঁদ

টিপ দিয়ে যা।[৫]

--------

টিকাঃ

[১] দেবিকে মা বলে, সেই হিসেবে চন্দ্রদেবতাকে মামা।

[২] দেবতার আশীর্বাদ প্রার্থনা করছে।

[৩] সন্তানকে চাদের মত বিখ্যাত বা প্রশংসনীয় কিছু হওয়ার জন্য আবারও দেবতার আশীর্বাদের অনুরোধ করছে।

[৪] এই কয় লাইন হচ্ছে দেবতাকে সন্তুষ্ট করতে পুজা হিসেবে কি কি উৎসর্গ করবে তার বর্ণনা।

[৫] এতকিছু দেয়ার বদলেও যেন দেবতা আশীর্বাদ করে সেজন্য অনুরোধ করেছে।


Share:

January 25, 2022

January 14, 2022

আপনার খাবার হালাল তো?

ফুডব্লগিং এর জামানায় ফেসবুকে অনেক খাবারের ছবি ভেসে বেড়ায়। মাঝেমধ্যে অফার থাকে বিশেষ বিশেষ চাইনিজ বা কম্বো প্ল্যাটারে। এখন সমস্যা হল, নতুন খাবার বা অফার দেখলে আমাদের মাথা ঠিক থাকে না। 

রাজশাহীতে স্ট্রিট ফুড আর আধুনিক রেস্তোরা নিয়ে খুবই ক্রেজ চলছে। ঢাকায় কি চলছে জানিনা। সেদিন ফুডিজ গ্রুপে রাজশাহীর এক রেস্তোরার এড দেখলাম, নাম "*** পার্বণ"। তাদের রেস্তোরা নিয়ে বেশ কিছু সনাতনীর রিভিউ দেখেছিলাম, তাই খটকা ছিল, কমেন্টে জিজ্ঞেস করলাম - আপনাদের খাবার কি হালাল? সিম্পলি উত্তর হওয়া উচিত ছিল "জ্বি অবশ্যই হালাল" -- কিন্তু না! উনি দেখি কথা ঘুরিয়ে আমাকেই জেরা করছে, "প্রশ্ন কেন করছি, উদ্‌দেশ্য কি ইত্যাদি ইত্যাদি।" কয়েকবার স্পষ্টভাবে প্রশ্ন করেও উত্তর বের হল না। মোটামুটি বুঝে নিলাম কাহিনী কি। অথচ সেই দোকানে মুসলমানরাও খাচ্ছে।

খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, এই যে সব চাইনিজ, থাই, ম্যাক্সিক্যান রেসিপির খাবারগুলো, কিংবা খুবই প্রসিদ্ধ আইটেম বার্গার, গ্রিল চিকেন আর সাব-স্যান্ডুইচগুলো খাচ্ছি আমরা। কিংবা পথের ধারে কিমার চপ দেখেই কিনে নিচ্ছি। বিরানির দোকানের নাম শুনে কথাবার্তা ছাড়াই কয়েক প্লেট বসিয়ে দিচ্ছি। কিন্তু এব্যাপারে আমরা কতটুকু খোজ করছি?

ফাস্টফুড শপের প্রায় সব আইটেমই তো গোশতের। একবারও কি জিজ্ঞেস করছি হালাল হওয়ার ব্যাপারে? সে মুসলিম কি না, যদি অমুসলিম হয় তবে কোনো মুসলমানকে দিয়ে জবাই করিয়েছে কি না, জিজ্ঞেস করেছি? এই নুন্যতম তাহকিকটা কি করা উচিত না? 

হনুমাঞ্জির মন্দিরের সামনের দোকান থেকে বিখ্যাত চপ আর কাবাব খাচ্ছি যে, আমি নাহয় জানি যে উনি মুসলমান। কিন্তু বাকিরা কি একবারও খোজ নিয়েছে এটা? 

..

সুতরাং আমার ক্লিয়ার মেসেজ হল, যেহেতু আমাদের দেশে গত ১ যুগ প্রতিবেশী হিন্দুদের প্রচুর ফ্যাসিলিটিজ দেয়া হয়েছে, খ্রিষ্টান মিশনারি, কাদিয়ানী ও হাদিস অস্বীকারকারিরা যেহেতু আগের চেয়ে বহুগুণ জোরসে কাজ করছে। ফলে মুসলমান ঘরের সন্তানরাও দলে দলে ইমানহারা হচ্ছে। সুতরাং আমাদের সতর্ক হতে হবে। 

আমার জানামতে, বিশ্বের অনেক দেশের মুসলিমদের খাবার হালাল কিনা সার্টিফাই করার শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান আছে, কিন্তু বাংলাদেশে নাই। সুতরাং অপরিচিত লোকের দোকান থেকে গোশত দিয়ে তৈরি খাবার যদি খাই, আমাদের নিজেদেরই যাচাই করে খাওয়া উচিত। যাচাই করার সুযোগ না থাকলে মাছ, ডিম, শাক-সবজি এসবের তৈরি খাবার দিয়ে বাইরের প্রয়োজন মেটানো উচিত।

..

হালাল খাবার ইবাদাত কবুলের জন্য শর্ত। এছাড়া রুকইয়া করে অনেকে উপকার পায়না, পেছনে কারণ থাকে হারাম খাবার, হারাম কামাই। তাই আপনারা যারা সুস্থতা লাভের আশায় রুকইয়া করছেন, তাদের এই বিষয়টা আরও গুরুত্বের সাথে খেয়াল রাখা উচিত।

হালাল খান। ভাল খান। ভাল থাকুন।

Share:

December 28, 2021

Dark Mode

 ডার্কমোড নিয়ে একটা অদ্ভুত ঘটনার সাক্ষী হইছি,

 কয়েকদিন আগে একটা পাবলিক গ্রুপে একজন পোস্ট করেছে 'আমি সব সফটওয়্যারে ডার্ক থিম ব্যবহার করছি গত ৬-৭মাস, এখন চোখের সমস্যা হচ্ছে। ১০হাত দুরেই ঝাপসা দেখি।'

অদ্ভুত ব্যাপার হল, ওই কমেন্টে এই সমস্যার কথা অনেকেই বলল। মেবি কম করে হলেও ৮-১০জন তো হবে। তাদেরও একই সমস্যা। ডার্কমোড ইউজ করেছে সব যায়গায়, এখন চোখের সমস্যা হচ্ছে।

তারপর থেকে একটু চিন্তায় আছি। পারতপক্ষে অন্ধকার রুম না হলে বা ব্যাটারির চার্জ বাচানো না লাগলে ডার্কমুড ইউজ করিনা।

..

* তবে কোড লেখার ক্ষেত্রে ডার্ক থিমেই ফোকাস করতে সুবিধা। এক্ষেত্রে বিকল্প নাই।

* রাতে চোখের ওপর চাপ না পড়ে এজন্য f.lux ব্যবহার করি। আর ফোনে নাইটলাইট অপশন। একটা হলুদাভ/ক্রিম কালারের ওভারলে থাকে স্ক্রিনে, এটা ব্লু লাইটের তোড় কাটায় দেয়। দরকার অনুযায়ী এই রঙ কমবেশ করা যায়।

Share:

December 5, 2021

এক বিয়ে ও চার বিয়ের মাসয়ালা

 এক বিয়ের মাসয়ালার সাথে দুই-চার বিয়ের মাসয়ালায় খুব বেশি একটা পার্থক্য নেই।

প্রথম বিয়ের ক্ষেত্রেও হক আদায় করা জরুরি, চতুর্থ বিয়ের ক্ষেত্রেও তাই।

যে একটাও বিয়ে করেনাই, আর বিয়ে না করলে গুনাহে লিপ্ত হওয়ার আশংকা আছে, তার সামর্থ্য থাকলে প্রথম বিয়ে ওয়াজিব। একাধিক বিয়ের ক্ষেত্রেও একই বিষয়, যে আরেকটা বিয়ে না করলে গুনাহে লিপ্ত হওয়ার আশংকা আছে, সামর্থ্য থাকলে তার আরেকটা বিয়ে ওয়াজিব। বউ মাইন্ড করলে তো ওয়াজিব রহিত হবে না, আমলনামা লেখার ফেরেশতাও গুনাহ লেখা বন্ধ করবে না, তাইনা? 

নেগেটিভ সাইড থেকেও একই কথা, যার সামর্থ্য নাই, তার জন্য একটা বিয়ে করাও দুরস্ত নাই। হাদিসের ভাষ্য "ফা ইন লাম ইয়াসতাত্বিই..." (যদি কারও সামর্থ্য না থাকে, সে গুরুত্বের সাথে রোজা রাখুক) থেকে তো এটাই বের হচ্ছে। একাধিক স্ত্রীর ওপর জুলুম করা জায়েজ নাই, এক স্ত্রীর ওপর জায়েজ আছে নাকি? 

নাকি দুদিন পর হক নষ্ট হওয়ার দোহাই দিয়ে সমগ্র বিবাহরীতির বিরুদ্ধেই সেক্যুদের সাথে সুর মেলাবেন?

পরের বিষয় হল, সক্ষমদের জন্য একাধিক বিয়েই ন্যাচারাল। এজন্য আল্লাহ তা'আলা আগে ২, ৩, ৪ বিয়ের কথা বলেছেন, এরপর বলেছেন না-পারলে একটাই করো। এখানে বিষয় হল, মানবজাতি টিকে থাকা, উপরন্তু নিজের চরিত্র হিফাজত করা। এজন্য যার যার প্রয়োজন ও সামর্থ্য অনুসারে বিয়ে করবে। এখন এটাকে কেন আপনারা নেগেটিভলি দেখবেন? কারণটা কী?

Share:

November 30, 2021

ফেমিনিস্ট ট্যাগ দেয়া প্রসঙ্গে...

আনওয়ার শাহ ভাইয়ের লেখার অংশ -

আমরা নাকি কথায় কথায় ফেমিনিজম এনে একে ওকে ট্যাগ দিয়ে দিই। ফেমিনিজমের গোড়ায় আছে ট্রেডিশনাল জেন্ডার রোলকে অস্বীকার করা। অর্থাৎ মেয়েদের কাজ ঘরে নয় এটা প্রতিষ্ঠা করা। ঐ পোস্টেও তারই সুর লক্ষনীয় ছিল, যদিও জোরালো ছিল না। এখন আমরা যদি বলি এখানে ফেমিনিজমের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে তাহলে আমাদের দোষ দেয়া হবে ট্যাগিং এর। 

এছলামি ফেমিনিস্টরা সোজাসুজি এই সুরে কথা বলে না। কিন্তু তাদের পোস্টে ঘরের কাজকে হেয় করা এবং বাইরের যে কোন কাজকে গ্লোরিফাই করা স্পষ্ট বোঝা যায়। স্বামীর দায়িত্বের কথা তাদের কন্ঠস্থ, কিন্তু স্ত্রীর কর্তব্যের ব্যাপারে তাদের দৃশ্যত কিছু বলতে দেখা যায়না। বরং তাদের লেখা পড়লে মনে হলে খাওয়া আর ____ ছাড়া স্ত্রীদের বুঝি ইসলাম কোন দায়িত্বই দেয়নি। অথচ ইসলাম ন্যায়বিচারভিত্তিক ধর্ম।

আধুনিক দুনিয়াতে যারা ফেমিনিজম থিউরী এপ্লাই করেছে তাদের অবস্থার দিকে তাকালেই বোঝা যাবে এর পরিণতি কী। জাপানে এখন পুরুষরা বিয়ে করতে চায় না। কারণ বিয়ে করা লস প্রজেক্ট। প্রচুর দায়িত্ব নিতে হবে, অথচ লাভ প্রায় শুন্য। চাইলে সে কয়েকদিনের জন্য চাহিদা মিটিয়ে নিতে পারে অল্প টাকাতেই। এছাড়া জনপ্রিয় হচ্ছে সেক্স ডল। এসব পুতুল জাপানি পুরুষদের যৌণ চাহিদা মিটাবে। ফলে আর বিয়েই লাগবে না। এমন অবস্থার অনিবার্য পরিণতি হলো সভ্যতার পতন। 

এই বাংলাদেশেই এমন গ্রুপ আছে এখন। ছেলেরা যেখানে বিয়ের বিরুদ্ধে প্রচার করে। তারা আজীবন মেয়েদের সংশ্রব থেকে দূরে থাকার শপথ নেয়। এই ঘোর অন্ধকার সময়েও শুধু আল্লাহকে ভয় করে বলেই দ্বীনি ভাইরা বিয়ে করতে চায়। সেখানেও এসব ফেমিনিস্ট বা ফেমিনিজম প্রভাবিত মহিলা যেসব কথাবার্তা ছড়াচ্ছে তার জন্য কতটুকু দায় তারা নিতে চায়? 

তাদের প্রশ্ন করি, তারা কি চায় মুসলিম সমাজটাও জাপানের মত হোক? এসব থিউরির অনিবার্য পরিণতি ওটাই। আল্লাহকে যে ভয় করে, সে ছাড়া আর কেউই বিয়ে নামের এরকম লস প্রজেক্টে যেতে চাইবে না, যেখানে সব দায়িত্ব ছেলেদের আর মেয়েদের কোন দায়িত্বই নাই। আবার এরকম বন্ধন থেকে মুক্ত হতে চাইলেও প্রচুর টাকা জরিমানা দিতে হবে। 

শেষ করবো নতুন দ্বীনে আগ্রহী হওয়া বোনদের উদ্দেশ্যে কিছু বলে। আপনাদের কয়েকটা কাজ করতে হবে সত্য পথ পেতে। ১। মেয়ে বলেই কারো কথা ঠিক হবে - এই জাতীয় আবেগ বর্জন। ২। আপনার পক্ষের হলেই ঠিক এই জাতীয় মনোভাব বর্জন। ৩। আপনার সুবিধার সাথে আপনার দায়িত্ব কী তার আলোচনা যদি না পান তবে চিন্তা করবেন এটা ইনসাফ সম্মত হচ্ছে কিনা। এটা ধোঁকাবাজি। 

মনে রাখবেন, দ্বীনি লেবেল থাকলেই তার থেকে দ্বীন পাবেন এমন নাও হতে পারে। আপনাকে আল্লাহর সাথে সৎ থাকতে হবে। দরকারে যারা ইনসাফশুন্য কথা প্রচার করে, তাদের এভয়েড করতে হবে। যদিও সে কথা আপনার মনঃপুত হোক না কেন। কারণ ইনসাফের উলটো হলো জুলুম আর জুলুমে অংশ নিলে ওটা কোন না কোনভাবে আরো বর্ধিত জুলুম হয়ে আপনার দিকেই ফিরে আসবে। অতএব সাবধান। 

ওয়ামা আলাইনা ইল্লাল বালাগ। আল্লাহ আমাদের সবাইকে বোঝার তাওফিক দিন। শুধু নিজের সুবিধার কথা না ভেবে পুরো উম্মাহর কথা একসাথে ভাবার তাওফিক দিন।

-------------

আমি 'সেই' পোস্টের নিছে দুইটা কমেন্ট করেছিলাম, একটু এডিটসহ যুক্ত করে দিই

"ফেমিনিজম হল নারীদের প্রতিক্ষেত্রে পুরুষের সাথে তুলনা বা প্রতিযোগিতার শিক্ষা দেয়ার মতবাদ। পক্ষান্তরে ইসলামে প্রত্যেকের মর্যাদা ও বিধান স্বতন্ত্র। এবার মিলিয়ে দেখেন 'আপনার লেখার মাঝে ইসলাম পান নাকি ফেমিনিজম।' আমি মূলনীতি বলেছি। তাহকিক নিজেই করতে পারবেন।"

"দ্বিতীয়তঃ (আপনি রুকইয়াহ নিয়ে উপহাস করলেন, এজন্য রুকইয়াহ থেকেই উদাহরণ নিন), যারা জিন-জাদু সম্পর্কে জানে না, তাদের মাঝে এসব সমস্যা সুপ্ত থাকলেও বুঝতে পারে না। বদনজর সম্পর্কে জানার আগে মানুষ বুঝতেই পারে না, বদনজরের জন্য তার জীবনে কত ক্ষতি হয়ে গেছে। অনেক রোগীকে যদি বলা হয় আপনার জিনের সমস্যা আছে, তাহলে সে রেগে যায়। 

সে চিন্তাই করতে পারে না তার সমস্যা আছে, কারণ সে এসব সমস্যার ব্যাপারে সচেতনই না। পক্ষান্তরে অভিজ্ঞ চিকিৎসক অবস্থা দেখলেই বুঝে ফেলেন কে রোগাক্রান্ত, সে সুস্থ। ফেমিনিজম রোগের ক্ষেত্রেও একই মাসয়ালা। যে বুঝেইনা ফেমিনিজম কি, সে নিজে আক্রান্ত হলে বুঝবে কিভাবে।" 

ইশরাক ভাইয়ের লেখা পড়েন, উনারা ছাত্রীসংস্থার আপাদের লেখাকে ইসলামে নারী অধিকারের আলাপ ভেবে পোস্ট করত, যতদিনে ভাইয়েরা বুঝতে শিখেছেন এসব আসলে ছিল ইসলাম ও নারীস্বত্বা বিরোধী ফেমিনিজম, ততদিনে ওই আপারা ঈমানহারা হয়ে গেছে...

জহুরি চেনে কোনটা আসল হিরা, অন্য দোকানে ঠগে এসে জহুরিকে গালি দিয়ে লাভ কী?

--------

NgoSvembear8 3ns0, 9rc20126ed1 

Share:

November 26, 2021

তিন তালাক প্রসঙ্গ...

 [ক]

সাধারণ পরিবারগুলো থেকে উঠে আসা যারা দ্বীন মানতে চেষ্টা করে, তাদের জন্য পর্দা ও ফ্রিমিক্সিং এর বিষয়টা বেশ সেন্সিটিভ। একেতো তারা জানে নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তি এবং তাদের উসুল-ফুরু' এর সাথে দেখা সাক্ষাত জায়েজ। অপরদিকে তাদের সামনে থাকে, এই এই মানুষগুলোর সাথে আমি দেখা সাক্ষাত করতাম।
ফলে অভ্যাস ও ইহসানের (তাক্বওয়া) মাঝে সমন্বয় করতে অনেকের একটু বেগ পেতে হয়।
.
আমি বংশ পরম্পরায় দ্বীন পাওয়া ভাইবোনদের কথা বলছি না। আমি ওইসব মানুষদের কথা বলছি, যারা এক পা - দু পা করে আল্লাহর দিকে উঠে এসেছে, অতীতে যাদের চৌদ্দপুরুষের মাঝে সুরা ফাতিহা শুদ্ধ করে পড়ার মানুষ ছিল না। এই মানুষগুলোর জন্য দ্বীন মানে অনেক রক্তঘামে অর্জিত দৌলত।
.
[খ]
এখন এদের ক্ষেত্রে প্রথমে করণীয় হল, শরীয়ার সীমার মধ্যে থেকে সুযোগগুলো গ্রহণ করা, এবং আস্তে আস্তে স্ট্রিক্ট হয়ে যাওয়া।
.
স্বল্প পরিসরে বোঝানো মুশকিল বিধায় অহেতুক কথা বেশি লম্বা করব না, নিজনিজ পরিচিত আলেমের থেকে ভালোভাবে বুঝেব নিবেন। তবে উদাহরণ হিসেবে "একটা কম্বাইন্ড ফ্যামিলিতে দেবর - ভাবির বিষয়টা" ভাবতে পারেন।
রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দেবরকে মৃত্যু তূল্য বলেছেন কেন? কারণ একদিকে সে মাহরাম নয়; বিধায় তার সাথে পর্দা করতে হচ্ছে। অপরদিকে একই বাড়িতে থাকার কারণে স্বাভাবিকভাবেই দুজনের ঘনঘন সাক্ষাত এবং কথাবার্তা হচ্ছে, যা দুজন নারী-পুরুষের জন্য অনেক ঝুকিপূর্ণ।
.
এক্ষেত্রে যেমন শরীয়ার দেয়া সুযোগ এবং নিষেধাজ্ঞা উভয়টির দিকে লক্ষ রেখে চলতে হয়। দ্বীন মেনে চলার অভ্যাস করার পর অন্যান্য রিলেটিভদের ক্ষেত্রেও এরকম সাবধানতার সাথে চলতে হয়।
.
এখানে "আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা" এর আবশ্যিকতা স্মরণ রাখার পাশাপাশি মেয়েদের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ হল, "আরে অমুকের সাথে তো আমি দেখা করিই" বা "অমুককে তো চিনিই" - এই বিপদের ব্যাপারে সতর্ক থাকা।
আর ছেলেদের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ হল, প্রয়োজন হলে শরিয়ার সীমার প্রতি খেয়াল রেখে তাদের সাথে সাক্ষাত ও কথাবার্তা বলা। আর সাক্ষাতের সময় নজরের হিফাযতের ব্যাপারেও খুব সতর্ক থাকা।
.
রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ভাষায়, নজর হল শয়তানের একটি বিষাক্ত তীর!
.
[গ]
"অমুকের সাথে তো দেখা করিই" — এই ফিতনার একটা চুড়ান্ত ভয়াবহ রূপ হল "তিন তালাকের হয়ে যাওয়া পর স্বামী-স্ত্রী পুনরায় একত্রে থাকা।"
যার সাথে তালাক হয়ে গেছে, তার এবং গাইর মাহরামের মাঝে পার্থক্য কী? সে তো বরং আরও দূরের লোক।
আল্লাহর তা'আলার ভাষায়-
[Baqarah 2:230]
فَاِنْ طَلَّقَهَا فَلَا تَحِلُّ لَهٗ مِنْۢ بَعْدُ حَتّٰي تَنْكِحَ زَوْجًا غَيْرَهٗ ؕ
এরপর স্বামী যদি স্ত্রীকে (তৃতীয় বারের মত) তালাক দেয় তাহলে স্ত্রী আর এই স্বামীর জন্য বৈধ হবে না, যতক্ষণ না সে অন্য এক স্বামীকে বিয়ে করে। (বাকারা, আয়াত ২৩০)
.
একজন সাধারণ গাইরে মাহরামের ক্ষেত্রে কিন্তু এই বাধাটা নেই। সুতরাং পূর্বের স্বামী তার জন্য সাধারণ গাইরে মাহরামের চেয়েও ভয়ংকর।
.
[ঘ]
সমস্যা যেটা হচ্ছে, আল্লাহর বিধানের তোয়াক্কা না করে তিন তালাকে মুগালাজা হওয়ার পরেও স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিচ্ছে।
যেটা "স্পষ্ট যিনা!" অন্য কিছু না। ১০০% যিনা। এরপর কোনো সন্তান যদি হয়, সেটা ওয়ালাদুয যিনা তথা অবৈধ সন্তান হবে।
কিন্তু যেহেতু এক সময় তারা স্বামীস্ত্রী ছিল, তাই পরবর্তী হারাম জীবনযাপনের ব্যাপারে তাদের বিশেষ কোনো অনুভূতিই হয় না। (নাউযুবিল্লাহ)
এটা বিদআতি কাজগুলোর অনুরূপ, কিন্তু আরও অনেক ভয়ংকর।
.
সমাধান কী? শুধুমাত্র একটাই পথ আছে, একই আয়াতে আল্লাহ বলেছেন—
فَاِنْ طَلَّقَهَا فَلَا تَحِلُّ لَهٗ مِنْۢ بَعْدُ حَتّٰي تَنْكِحَ زَوْجًا غَيْرَهٗ ؕ فَاِنْ طَلَّقَهَا فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَاۤ اَنْ يَّتَرَاجَعَاۤ اِنْ ظَنَّاۤ اَنْ يُّقِيْمَا حُدُوْدَ اللّٰهِ ؕ وَتِلْكَ حُدُوْدُ اللّٰهِ يُبَيِّنُهَا لِقَوْمٍ يَّعْلَمُوْنَ
"এরপর স্বামী যদি স্ত্রীকে (তৃতীয় বারের মত) তালাক দেয়, তাহলে স্ত্রী আর এই স্বামীর জন্য বৈধ হবে না, যতক্ষণ না সে অন্য এক স্বামীকে বিয়ে করে। তারপর সেই (দ্বিতীয়) স্বামী যদি তাকে তালাক দেয় তাহলে তারা পুনরায় (বিবাহের মাধ্যমে) পরস্পরের কাছে ফিরে গেলে তাদের কোন পাপ হবে না, যদি তারা মনে করে যে, তারা আল্লাহর বিধান ঠিক রাখতে পারবে। এগুলো আল্লাহর বিধান, যা তিনি জ্ঞানী লোকদের জন্য স্পষ্ট করে দিচ্ছেন।" (বাকারা, আয়াত ২৩০)
.
[ঙ]
এখানে একটা ফাঁকফোকর আছে। তা হল, "যদি মৌখিক তালাকের সময় কোনো সংখ্যা না বলে, কিংবা তালাক দেয়ার কথাটা তিনবার না বলে, ডিভোর্স লেটারেও আমভাবে শুধু তালাকের কথা থাকে, তিন তালাকে কথা না থাকে" - তাহলে কিন্তু হিসেবে শুধু এক তালাকই হচ্ছে। আরও দুইটা সুযোগ থাকছে। বাকি অবস্থাভেদে তালাকে বায়েন না রজঈ হয়েছে - এর ওপর নির্ভর করবে ফিরিয়ে নেয়ার পদ্ধতি কি হবে। তাই সরাসরি অভিজ্ঞ মুফতি সাহেবের সাথে পরামর্শ করে এব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে হবে।
.
সমস্যা হল, আমাদের মুর্খ নিকাহ রেজিস্ট্রারার কাজীগুলো। পরিবার ভাঙনের এই ফিতনার সময়ে কাজির দায়িত্বে থাকা লোকগুলোর ইসলাহ করা গেলে অনেক ফায়দা হত। কিন্তু এদের ওপরের লোকরা যেভাবে শিখিয়ে দেয়, তাই করে। কেমন যেন আল্লাহর দ্বীন মানছে না, অন্য কোনো দ্বীন মানছে।
বিয়ে কিংবা ডিভোর্সের ফর্ম এদেরকে পুরন করতে দেয়া মানেই একটা না একটা আকাম ঘটায়া ফেলে। কেউ না বললেও এরা ঠাস করে ৩ তালাকের কথা লিখে দেয়। আর লোকেরাও মনে করেন হুজুগে সিগনেচার করে দেয়। ফলে নিজেই নিজের সর্বনাশ লিখে নেয়।
এরা জানেও না যে, একসাথে সবগুলো তালাক দিয়ে কতবড় কবিরা গুনাহ আর কত ভয়ানক অভিশাপের কাজ করে ফেলল। এটা বন্দুকের এমন গুলি, যা আর কখনও ফেরত আসে না।
.
আরেকটা বিষয়ে সাফ কথা বলে দিই ভাই, তালাকের প্রসঙ্গে আহলে হাদিস আলেমদের ফাতওয়া নিয়েন না। অনেক বড় ভুল করবেন। এটা এমন ভুল, ইহজনমে হয়তো টের পাবেন না। কিন্তু আখিরাতে আল্লাহর কাছে চরমভাবে ধরা খেতে হবে।
.
[চ]
শেষ করব দুটি ঘটনা বলে,
আমাদের সমাজের দু'পেয়ে প্রাণীগুলো দিনদিন সব পশু হয়ে যাচ্ছে। না, বরং পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট। সদ্য কুষ্টিয়া ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করা এক মজলুম বোনের ঘটনা। উনার বড় বোনের ডিভোর্স হয়েছিল, ডিভোর্সের পর ওই শশুরবাড়ির লোকেরা আবার ফিরিয়ে নিতে চাচ্ছিল। আমাদের মজলুম বোনটি বাধা দিয়েছিল।
এরপর কি হয়েছে জানেন? সেই বাড়ির কয়েকটা শয়তান উনাকে গণধর্ষণ করেছে, এরপর ফাসিতে ঝুলিয়ে আত্মহত্যার নাম দিয়ে দিয়েছে...।
কোনো মানুষ এত নিচে নামতে পারে? ছিহ!
.
[জ]
আরেকটা ঘটনা বলি, রাজশাহীর এক বোনের ঘটনা এটা।
দুই বছরের মত আগে উনার ডাইনি শাশুড়ী জাদু করে উনাদের ডিভোর্স করায়। এরপর আরেকজনের সাথে তার ছেলের বিয়ে দেয়, কদিন যেতে না যে সেই মেয়েকেও পছন্দ না হওয়ায় তার সাথেও ডিভোর্স করায়। এরপর?
এরপর শুনেছিলাম আবার পূর্বের ওই বোনকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছে। আমি শুনে বললাম, এটা কিভাবে সম্ভব! ছেলেখেলা পাইছে নাকি? আমি ইসলামের বিধান জানিয়ে দিলাম।
পরে কি হয়েছে জানেন?
বছরখানেক পর একদিন দেখি ওই আপার মেসেজ। সেই ডাইনি মহিলা আবার জাদু করেছে! আমি শুনে বললাম, "মানে!! আপনাদের না ডিভোর্স হয়ে গেছিল?"
বলল, "আবার ফিরিয়ে এনেছে?" মানে যিনা করার জন্য আবার নিয়ে এসেছে আর কি!
আমি আসলে বলার মত কিছু খুজে পাচ্ছিলাম না। বললাম, আমি আপনাকে কোনো হেল্প করতে পারব না, মাফ করে দিয়েন...।

---
অক্টোবর ৪, ২০২১
Share:

June 21, 2021

শাইখ ওয়াহিদ বালীর সাক্ষাতকার থেকে কয়েকটা অংশের ভাবানুবাদ

প্রশ্ন – দরস তাদরিস ছেড়ে আফ্রিকার অভাবগ্রস্ত অঞ্চলে পড়ে আছেন। মানুষ তো হিদায়াত পাচ্ছে আলহামদুলিল্লাহ, কিন্তু ব্যক্তিগত বিশেষ অর্জন কি হল ভাবছেন? 

উত্তর= পথে নেমে দাওয়াতি কাজ করে দুইটা লাভ বুঝতে পারছি 

এক. আমিত্ব ধ্বংস হচ্ছে। নিজস্ব বলয়ে থাকলে ছাত্র-অনুসারী সবাই তাযীম করে, খেদমত করে। এসব থেকে শায়খসুলভ যা অহম পয়দা হয়েছিল, আল্লাহ দয়ায় সেসব দূর হচ্ছে। অচেনা অজানা গ্রামে গিয়ে মানুষকে দ্বীনের কথা বলছি, কেউ চিনেনা, জানেনা, কেউ কথা শুনছে, কেউ শুনছে না। এটা আর ছাত্রদের সামনে বা অনুষ্ঠানে বসে বসে আলোচনা করার বেশ পার্থক্য আছে। 

দুই. নববী তরিকায় বাস্তব দাওয়াতের স্বাদ। আহ! এই অপার্থিব স্বাদ যে নিজে অনুভব করেনি, তাকে মুখে বলে বোঝানো সম্ভব না। 

 দরসের চেয়ারে বসে ছাত্রদেরকে ফিকাহ – হাদিস পড়ানোর সাথে এই দুইটা পার্থক্য আমি দেখতে পাচ্ছি। দাওয়াতের স্বাদ আর আমিত্ব শেষ হওয়া। 

(এরপর অমুসলিমদের দাওয়াতের একটি ঘটনা বললেন, এক গ্রামে একজনকে জিজ্ঞেস করেছেন- ইসলামের ব্যাপারে কিছু জানো? সে বলছে- ইসলাম এটা কী? খাওয়ার জিনিস? নাকি কোনো শহর? নাকি কোনো যায়গা? না কি এটা?!!)

---

প্রশ্ন – শাইখ আপনি তো আগে কিছু কিতাব লিখেছিলেন, জিন – জাদু- ইত্যাদি বিষয়ে…।

উত্তর= ত্রিশ বছর পার হয়ে গেছে ভাই!

- তবুও আপনার কথা উঠলেই মানুষের মনে হয় “সিহরের শাইখ” :D মানুষ আসলে এগুলো নিয়ে কথা বলতে মজা পায়। আসসারিমুল বাত্তার বইটা কিভাবে লিখেছিলেন? 

= জামেয়ায় পড়ার শেষ বছরের ঘটনা, পড়াশোনার পাশাপাশি এক মসজিদে জুমা পড়াতাম, একদিন জুমার বয়ানের মধ্যে আলোচনা করলাম, জাদুকর, তান্ত্রিক এসবের শয়তানদের কাছে যাওয়া জায়েজ নাই। নামাজের পর যখন মানুষজন চলে গেল, তখন কাছের এক মাদরসার উস্তায এসে দেখা করলো। বলল- হুজুর! যা বলেছেন মাশাআল্লাহ ভাল বলেছেন, জাদুকরদের কাছে যাওয়া জায়েজ নাই। কিন্তু আমাকে আর আমার ভাইকে তো যাদু করা হয়েছে, দুজনেরই বিয়ে ভেঙ্গে যাওয়া যাওয়া অবস্থা। এর কোনো সমাধান আপনার কাছে আছে? বললাম, আমার এব্যাপারে জানা নাই, বাকি সমাধান নিশ্চয় আছে, একটু খুঁজেন। এরপর থেকে আমি নিজেও খুঁজতে থাকলাম, প্রথম পেয়েছিলাম বরই পাতার গোসলের ব্যাপারে, তাবেঈ ওয়াহাব ইবনুল মুনাব্বিহ রহ. থেকে বর্ণিত ওই বর্ণনাটা…। 

----

প্রশ্ন – এসবের ক্ষতি থেকে হিফাজতের জন্য কি করা উচিত? 

= লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু… দোয়াটা ১০০বার। আউযু বিকালিমাতিল্লাহ… ৩বার। বিসমিল্লাহিল্লাযি… ৩বার। 

- এগুলোতে সত্যিই ফায়দা হয়?

= হ্যাঁ! মনোযোগের সাথে, বুঝে বুঝে পড়লে আল্লাহ চায়তো অবশ্যই ফায়দা হবে। সন্দেহ নেই। অনেক জাদু আক্রান্ত আছে, সকাল-সন্ধার যিকর করেই সুস্থ হয়ে যায়।

-----

প্রশ্ন – আফ্রিকার উপজাতিদের সমাজ তো অন্যরকম, সেখানে কাজ করতে সমস্যা হয় না?

= ওখানে প্রতিটা গোত্র বা গ্রামের আলাদা আলাদা রাজা আছে। একজন রাজা একটা একটা গ্রামের মত এলাকা শাসন করছে। আমরা কোনো এলাকায় কাজ করতে গেলে প্রথমে রাজার সাথে কথা বলতে হয়, তাকে বুঝিয়ে অনুমতি নিয়ে এরপর এলাকার লোকদের কাছে যেতে হয়। তাহলে সমস্যা হয়না কোনো।

.

– সাধারণ মুসলিমদের কাছে কি প্রত্যাশা করেন? 

= অমুসলিম, নওমুসলিম আর দাঈদের জন্য সাধারণ মুসলিমরা যদি তাদের দোয়ার অর্থেকটা আর ধনী মুসলিমরা যদি তাদের যাকাতের অর্ধেকটা বরাদ্দ করতো, তাহলে হয়তো প্রতি সপ্তাহে আমরা নতুন নতুন গ্রাম জয় করতে পারতাম।

.

– খরচাঁদির বিষয়টা কেমন?

= দাওয়াতি কাজ তো করা যায়, কিন্তু তারা ইসলাম কবুল করলে ইসলামের ওপর টিকিয়ে রাখাটা কঠিন। একটা গ্রামের জন্য অন্তত একটা মসজিদ-মক্তব তৈরি করা, বছর খানেক একজন শিক্ষক রেখে তাদেরকে ইসলামের ব্যাপারে শিখানো এগুলোর জন্য প্রতিটা গ্রামে ৮০হাজার থেকে ১লাখ ডলারের মত খরচ হয়ে যায়।

-----

প্রশ্ন – কোনো দাওয়াতি কাজে সফলতার গোপন সুত্র কী? দাঈদের যা অর্জন করা উচিত

= এক্ষেত্রে সফলতার সুত্র ৩টি - 

১. দয়া-মায়া,

২. ইখলাস,

৩. মানুষকে হিদায়াত পৌঁছানোর ব্যকুলতা...।

-------

সাক্ষাতকারের লিংক - https://www.youtube.com/watch?v=typHs3QXKrY

Share:

May 31, 2021

অতৃপ্ত আত্মাগুলোর কথা...

ভালোবাসার কি যেন একটা ভাষা আছে, যেটা খুব সহজে মানুষকে কাছে টানে। অক্ষরবাদ কিংবা নিরেট টেক্সট ভিত্তিক দাওয়াহ মানুষকে অত সহজে টানতে পারে না।

নজরুলের কামলিওয়ালা নাতের ব্যাপারে বিভিন্ন অমুসলিমদের রিয়েকশন দেখছিলাম। এক কথায় এমেইজিং। একেতো এমনিতেই শ্রুতি আছে এই নাতের সুর নজরুল দেয়নি, বরং চিত্তরঞ্জন রায় দিয়েছে!! এরপর এতবছর পরও মানুষকে এভাবে টানার বিষয়টা অভূতপূর্ণ।

বলছিলাম ভালোবাসার ভাষার কথা। এই বাররে সগিরের সালাফরা, যারা এই অঞ্চলে ইসলাম এনেছেন। তারা আম মানুষকে কিন্তু এই ভাষাতেই দাওয়াত দিয়েছেন। তবে প্রয়োজনের ক্ষেত্রে আল-ক্বওলুস সওয়ারিম প্রয়োগ করেছেন, সেটা আওর বাত। 

আমার মন বলে, হালজামানায় গণহারে ইরতিদাদের দিকে ছোটার একটা কারণ হল অক্ষরবাদিতা। এটা স্রেফ নজদিদের ঘাটতি না। বরং আমরা অনেকেই এর দ্বারা ইনফেক্টেড।

আপনি মানুষকে কবিতা/শে'র আবৃত্তি করতে দিবেন না। গজল গাইতে দিবেন না। তারা করবেটা কি? লাস্টে কা ফিরদের মত মিউজিকে ডুব দিবে।

শত শত আইটেমের খানা। স্ট্রিমিং করার মত লিমিটলেস উপাদান। জ্ঞান পিপাসুদের জন্যও আছে কোটি টেরাবাইটের তথ্য ভাণ্ডার। তবুও কিসের যেন একটা শূন্যতা চারপাশে। 

আত্মার এই অতৃপ্তি থেকে পশ্চিমের বহু মানুষ তাসাউফের দিকে ঝুঁকছে, কিন্তু তাদের খুব সামান্য অংশই মিলছে সালাফদের মানহাজে। অমুসলিমদের মেডিটেশনের দল তো ভারী হচ্ছেই, মুসলিমদের অধিকাংশও থাকছে শিয়াদের মত বিকৃত কিছু রিচ্যুয়ালে সীমাবদ্ধ। এই মানুষগুলোর আত্মা কিছু চায় ভাই! শুধুমাত্র বইয়ের পাতায় সেটা নাই। কোনো কালেই ছিল না।

-----

৩১ মে, ২০২১। [মূল লেখার লিংক]

..

কমেন্টবক্স থেকে-

ইসলামি সংস্কৃতির কথা বলতে বলতে অনেকে ঘুরেফিরে পশ্চিমাদের সংস্কৃতিরই ইসলামি ভার্শন বের করে। এটার ফলাফল দিনশেষে বড় একটা গোল্লা। 

উদাহরণস্বরূপ, মিউজিক দেয়া নাশিদ, রিমিক্স তিলাওয়াত! এগুলা ভাই ওদেরই অনুসরণ। এসবে আমাদের সংস্কৃ‌তি পুনর্জিবন পাবে না।

Share:

May 7, 2020

আমাদের পরের প্রজন্ম যেন মুসলমান থাকে...

জনৈক খ্রিষ্টান হয়নি তবে...

[ক]
সে খ্রিষ্টানদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়েছে, তাদের এলাই(মিত্র) হয়েছে। 

এই পয়েন্টটা গুরুত্বপূর্ণ, খেয়াল করুন- শয়তান যখন দেখে লোকদেরকে কোন বিভ্রান্ত বা অভিশপ্ত সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত করা যাচ্ছে না, তখন চেষ্টা করে কমসে কম তাদের এলাই বা মিত্র বানাতে। 
যেমন,  LGBTQA টার্মে লাস্টের এ ফর এলাই, অর্থাৎ যারা সমকামী - ট্রান্সজেন্ডারদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত নয়, কিন্তু তবুও তাদের সহযোগী সমর্থক। 
এতে শয়তানের লাভ হল, এই লোকগুলো কখনওই উক্ত সম্প্রদায়ের পাপ কাজে বাধা দিবে না, বরং কেউ বাধা দিলে সে পথভ্রষ্টদেরই পক্ষ নেবে!!

শয়তানি বাইবেলের লিবারেলিজম চ্যাপ্টারের খোলাসা এটাই। এরা শয়তানের উপরি ইনকামের মত হলেও মাঝেমাঝে এদের দ্বারাই মেইন জবের চেয়ে বেশি লাভ হয়!!

[খ]
আমরা জানি, ঈমানের ৩টা স্তর আছে - 
১ম স্তর, হাত (অর্থাৎ শক্তি) দিয়ে বাধা দেয়া। 
২য় স্তর, মুখ দিয়ে (নিষেধ করে, প্রতিবাদ করে, অন্য কাউকে অভিযোগ করে) অন্যায়ে বাধা দেয়া।
৩য় স্তর হল, অন্তর দিয়ে বাধা দেয়া! (অন্তর দিয়ে বাধা দেয়ার অর্থ শুধু পাপকে ঘৃণা করা না, বরং রবের অবাধ্যতাকে ঘৃণার সাথে সাথে অন্তরে কষ্ট অনুভব করা, অন্তরে আফসোস করতে থাকা যে রবের অবাধ্যতা হওয়ার পরেও বন্ধ করতে পারছি না, অন্তর লাগিয়ে এটা বন্ধের ফিকির করা এবং আল্লাহর কাছে এজন্য দোয়া করা। - অন্তরের এই অবিরত আমলগুলোই সবচেয়ে দূর্বল ঈমানের কাজ। 
কারো ঈমান যদি এরচেয়েও নিচে নামে, তাহলে তার ঈমান আদৌও আছে কি না, সেটা বিবেচনা করে দেখতে হবে।

[গ] 
পূর্বের কথায় ফিরি। সেন্ট জোসেফে পড়া এবং ব্র‍্যাকে কর্মরত জনৈক সেলেব এরকম লিখেছে - আমি সেন্ট জোসেফে এতদিন পড়েছি, কই খ্রিষ্টান হয়ে যাইনি তো! ব্রাদারদের সাথে কত ঘুরেছি, তখন একবার ডাকলেই তো গির্জায় চলে যেতাম..! end q.

খেয়াল করেন, লোকটির অন্তর থেকে সেখানে পড়াবস্থাতেই কুফরের প্রতি ঘৃণা চলে গেছে, এখন এই পর্যায়ে এসে সে জনসম্মুখে মিশনারীদের কার্যক্রমকে জাস্টিফাই করছে, মুসলিমদের বিরুদ্ধে খ্রিস্টান এবং ইস্কনিদের পক্ষ নিচ্ছে।
সে টেরই পায়নি, কখন সে শয়তানের এলাই বনে গেছে, আর সর্বনিম্ন স্তরের ঈমানটাও তার মাঝ থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেছে!

কি বুঝলেন, সেন্ট জোসেফের মিশনে সেখানকার প্রিস্টরা কি সফল হয়নি?!! আপনার সুস্থ বিবেকের কাছে আপিল রইলো।

[ঘ]
আমরা সচেতন না হলে "কুফর এবং পাপাচারের প্রতি অনুভূতিহীনতা" - এই জিনিসটা হয়তো আমাদের নেক্সট জেনারেশনকে সবচেয়ে বেশি ভোগাবে। যেমনটা আমরা ভুগছি ফেমিনিজম আর এলজিবিটি ফিতনা নিয়ে, হয়তো এরচেয়ে অনেক বেশি। 
ফলাফল - দলে দলে মানুষের রিদ্দার দিকে ছোটা।

গতকালের ওয়েবিনারে উস্তায ড্যানিয়েল হাকিকাতজু এরকম বলেছিলেন, "কিছু মানুষ প্রাচ্য থেকে ওয়েস্টের মরিচিকার পেছনে ছুটে যায়, এরা কোনমতে ঈমান নিয়ে বেচে যেতে পারলেও এদের পরের প্রজন্ম যায় ফেঁসে। স্রষ্টার অবাধ্যতার কাজগুলো দেখতে দেখতে তাদের কাছে গা সওয়া হয়ে যায়। ফলে...।"

উনার কথাটা আমি শেষ করে দেই "ফলে.. মুসলমানের ঘরে জন্ম নিয়েও সন্তানরা কাফির হয়ে কবরে যায়।"

--------
Share: