June 7, 2020
August 12, 2019
হজ্জের সফরে দোয়া কবুলের যায়গাসমূহ
সাইদ কাহতানি রহ. এর বইয়ে দোয়া কবুল হওয়ার বিশেষ কিছু সময় এবং যায়গার তালিকা ছিল। এর মাঝে শুধু হজ্জের দিনগুলোতেই ছিল অনেকগুলা। যেমন-
১. আরাফার দ্বীনের আরাফার ময়দানে
২. ছোট এবং মধ্য জামরায় পাথর মারার পর
৩. কা'বার মধ্যে (হাতিমও কাবার মধ্যেই পড়ে)।
৪. সাফা পাহাড়ের ওপর
৫. মারওয়া পাহাড়ের ওপর
৬. মা'শারুল হারামের নিকট (মুযদালিফায়)
৭. প্রথমবার কা'বা দেখার সাথে সাথে
-------
তো যেসব ভাইয়েরা হজ্জে আছেন, তারা মন ভরে দোয়া করতে পারেন। নিজের জন্য দোয়া করার পাশাপাশি অন্যান্যদের জন্যও দোয়া করবেন। আর আমার সুস্থতা এবং পেরেশানি দূর হওয়ার জন্যও প্লিজ...। আর কাশ্মীরের ভাই-বোনদের জন্যও।
August 2, 2019
আশিক জিন ফোবিয়া
আপনি একটা কেস হাতে নিলেন, আর ১০টা কেসের মত এখানে জিন সহজে গেল না, একটু ত্যাড়ামো করলো, আপনি জিনরে 'আশিক জিন' ট্যাগ দিয়ে সেই গল্প ফেসবুকে এসে শেয়ার করলেন।
এই লেখাটা কত রকম মানুষ দেখেছে আপনার হুশ আছে?
.
গত দেড় বছরে একাধিক জেলার, একাধিক বোন থেকে আমি এরকম অভিযোগ পেয়েছি, যাদের জ্বিন অথবা জাদু সংক্রান্ত কোন সমস্যা আছে। আর তাদের হাজব্যান্ড ফেসবুকে এসব দেখা দেখার পর অহেতুক সন্দেহ করে বাজে কথাবার্তা বলেছে।
এমনকি গতবছর একজন জানিয়েছিল, তার হাজব্যান্ড এভাবে পর্যন্ত বলেছে "তোমাকে জিন রাতে এসে রেপ করে তাইনা?!!!"
(লা-হাউলা ওয়ালা- কুউওয়াতা ইল্লা-বিল্লাহ) এগুলা কি কথা ভাই?!
অথচ ওই বোনের জিন পজেশনই নাই। জাদুর সমস্যা। উনার হাজব্যান্ড ফেসবুকে হাবিজাবি পড়েছে, আর বাসায় গিয়ে এসব বলে উনাকে সারারাত ধরে কান্দাইসে।
.
আরে ভাই হোক না জিন পজেশন, ভালোবাইসাই ধরসে ধরলাম, কিন্তু তাই বলে তোমরা যেভাবে চটি গল্পের মত রসাইয়া রসাইয়া ফেসবুকে আলাপ করতেসো, কই পাইছো এগুলা? অনুসরনীয় সালাফদের কয়জনকে এরকম করতে দেখেছো? সালাফ বাদ দাও, বর্তমান সময়ে যেসব সুন্নাহের অনুসারী আলেমদের খিদমত আল্লাহ কবুল করেছেন, তাদের কয়জনকে এরকম করতে দেখেছো?
জিনের আসর কেন ভাই? হলের একটা রুমে একবছর একসাথে থাকলেই তো মায়া জন্মে যায় মানুষের ওপর। এক বছর কেন, একসাথে ১০টা দিন ইতিকাফ করার পরে একজন আরেকজন ছেড়ে যেতে ইচ্ছা করে না, কয়েক বছর ধরে শরীরের মধ্যে আটকে আছে একটা স্বত্বা, তোমার কি মনে হয়? কোন টান জন্মাবে না?
এখন এরকম জিনের রুগি পেলেই যদি তুমি লাভার জিন বানাও, আর মানুষের ওপর সেক্সুয়াল এসল্টের ইলযাম লাগাও; তাহলে আমি শপথ করে বলছি, এখন যদি খিলাফাহ থাকতো, কাযির দরবারে নালিশ করে তোমারে হদ্দে কযফের ৮০ঘা বেত্রাঘাত খাওয়াইতাম।
.
ভাই! কমন সেন্সের যদি এত ঘাটতি থাকে, তোমারে এই কাজে নামতে কে বলেছে? সবজির দোকান দাও গিয়ে। ভ্যান চালাও। পরিবেশ দূষণ করছো কেন?
.
ভাই তোমরা সবকিছুর আগে আল্লাহকে ভয় কর। তুমি অনুমানের ওপর ভিত্তি করে বানানো এসব ভালগার কন্টেন্ট শেয়ার করে হয়তো দুইটা লাইক-ফলোয়াব বেশি পাইবা। কিন্তু তোমার কারণে যদি একটা মুমিনকে তোহমত নিয়ে কাঁদতে হয়, তোমার কারণে যদি অজানা কারও সংসারে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়।
কিয়ামতের দিন ছাড় পাইবা না ভাই। আল্লাহকে ভয় করো।
July 20, 2019
দ্বীনি ভাই নাকি জাহিলি ভাই!
এই ভাইয়েরা যদি একদম জাহেলদের মত হত, তাহলে সমস্যা ছিল না। আমরা উনাদের ১০০% বর্জন করতাম অথবা পাত্তাই দিতাম না। কিন্তু উনারা সুরতে মুমিন, সিরাতে শয়তান। আফসোস!!
.
যাহোক, আমরা কোরআনুল কারিমের এই আয়াতগুলো দেখি। আল্লাহ তা'আলা কী বলছেন-
(61) আর যদি তাদেরকে বলা হয়, “আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার দিকে এবং রসূলের দিকে এসো” তাহলে দেখবে, মোনাফেকরা তোমার দিক থেকে একেবারে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।
(62) কিন্তু তাদের কৃতকর্মের ফলে যখন তাদের কোন বিপদ আসবে তখন কেমন হবে? তখন তারা তোমার কাছে এসে আল্লাহর নামে শপথ করে বলবে, “আমরা তো কল্যাণ আর সম্প্রীতি ছাড়া আর কিছু চাইনি।”
June 23, 2019
বি লাইক আহমাদ
তিনি রুকইয়াহ বিষয়ে পর্যাপ্ত ধারণা রাখার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ইসলামী আকাইদ ও মাসায়িল সম্পর্কে ধারনা রাখেন।
একান্ত প্রয়োজন না হলে, তিনি কারও চিকিৎসা নিয়ে আমভাবে আলোচনা করেন না।
তিনি নিজের পুরোনো মৌলিক পাঠগুলোর দিকে বারবার নজর বুলিয়ে থাকেন এবং প্রতিবারই নতুন কোন শিক্ষনীয় বিষয় খুজে পান।
তিনি নিজের সংশোধনের প্রতি মনযোগি। কেউ নসিহত করলে তার প্রতি অম্লাত্মক প্রতিক্রিয়া দেখান না, বরং রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ভাষ্য মোতাবেক এটাকে নিজের জন্য সৌভাগ্যের বিষয় মনে করেন।
আহমাদ এমন কোন পদ্ধতি অনুসরণ করেন না, যা কাফির কবিরাজদের পদ্ধতির সাথে অধিক সাদৃশ্যপূর্ণ এবং সুন্নাহ থেকে দূরবর্তী।
আহমাদ বারবার চেষ্টা করেন উম্মাহর মাঝে ব্যপকভাবে কবুলকৃত সালাফদের রুকইয়ার পদ্ধতি সমূহ অনুসরণ করতে। ফিতনার সময়ে উদ্ভাবিত সন্দেহজনক কিংবা বিরল পন্থাসমুহ পরিহার করতে।
আহমাদ এমন সব পদ্ধতিগুলো পরিহার করেন, যা তাকে আস্তে আস্তে সিরাতে মুস্তাকিম থেকে বিচ্যুত করতে পারে।
আহমাদ একজন প্রফেশনাল রাকি। তবে সে সুন্নাহর প্রচারের নামে রোগিদের পকেট ফাঁড়ার দিকে মনোনিবেশ করেন না। বরং তিনি জৌলুশপূর্ণ টাকা-পয়সার হাতছানি ওয়ালা জীবনকে ফিতনা মনে করেন। তিনি বিশ্বাস করেন আয়-ব্যয়ের ব্যাপারে, দুনিয়ার সম্পদের ব্যাপারে আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে।
আহমাদ বিশ্বাস করেন যে, আল্লাহ অনেক বান্দাই নিরবে-নিভৃতে আল্লাহর কালিমা বুলন্দির কাজ করে যাচ্ছেন, তাঁরা সকাল-বিকাল নিজেদের গল্প ভাগ করছেন না এর অর্থ এই নয় যে তারা অভিজ্ঞতাশূন্য কিংবা জড়বস্তু।
April 30, 2019
নিজেরই ঠিক নাই...
একটা লোক ভালো অথবা খারাপ = সিম্পল
২.
আরেকজন ফেসবুকে অনেক নসিহত করে, মানুষের ভুলত্রুটি ধরিয়ে দেয়, অথচ নিজের আমল - মুয়ামালাতেরই ঠিক নাই = গর্জিয়াস
৩.
এই হযরত মানুষকে বলেন- "আরে ভাই মানুষ অন্যকে উপদেশ দেয়, ফেসবুকে ইসলাহী বয়ান দিতে দিতে টাইমলাইনকে খানকা বানিয়ে ফেলে অথচ তাদের নিজেদেরই ঠিক নাই" আপনি তার বয়ানে বিমোহিত এবং শিহরিত হলেন "আহ! মানুষ কত খারাপ"
কিন্তু কদিনপর টের পাইলেন "নিজের ঠিক নাই" বয়ান করা এই হযরতেরও নিজেরই ঠিক নাই = সিম্পলের ভিত্রে গর্জিয়াস...
আল্লাহ আমাদেরকে নিফাক থেকে হিফাজত করুক
January 29, 2019
নষ্ট বিরিয়ানি...
কর্মিদের মধ্যে "এই কাজটা আমার জন্যই হয়েছে" "আমি না করলে এটা হত না" "দ্বীনের জন্য / এই মেহনতের জন্য আমি অনেক কিছু করেছি" — এসব মনোভাব।
এই চিন্তাগুলো নিজের অতীত - ভবিষ্যৎ দুই দিকেই বাজে প্রভাব ফেলে, অন্য কর্মীদের সাথে সম্পর্ক নষ্ট করে, পরিণামে পুরো মেহনত ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
.
২. আরেকটা কারণ হচ্ছে, শুরা অথবা সিনিয়রদের নির্দেশ ছাড়া হুল ইউনিটির মধ্যে আরও ছোট ছোট ইউনিট / সার্কেল বানিয়ে ফেলা, এটার ফলে পরবর্তীকালে কোন সমস্যা তৈরি হলে সেটা সমাধানে এসব ইউনিট বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ফলে পুরা মেহনত ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
.
৩. মেহনতগুলো নষ্টের আরেকটা কারণ হল, আর্থিক দিকে স্বচ্ছ না হওয়া কিংবা শতভাগ আমানতদারিতা রক্ষা না করা। এই জিনিসটা পুরা মেহনতের রহমত - বরকত স্পঞ্জ চিপে পানি বের করার মত বের করে ফেলে দেয়।
দ্বীনি মেহনতে দুনিয়াবি স্বার্থ ঢুকে যাওয়া এবং আর্থিক খিয়ানত হওয়া খুবই — ওয়াল্লাহি খুবই স্পর্শকাতর বিষয়।
.
৪. সাধারণত দ্বীনি কাজগুলো বিরিয়ানির মত হয়ে থাকে, যতক্ষণ ভালো আছে অনেক ভালো! নষ্ট হলেই গেল; আর রিপিয়ারের উপায় থাকে না।
June 20, 2018
অনলি-মি ছবি!
অনর্থক পিকচার আপলোড করার অভ্যাস, অহেতুক যে সে বিষয়ে রিয়েক্ট করার অভ্যাস, এরকম আরও কিছু ফালতু অভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় হতে পারে "only me" করে পোস্ট দেয়া।
[খ]
আমি প্রথমে ফেসবুকে পিক আপলোড দিতাম না। ঢাকায় যে বছর পড়েছিলাম, সঙ্গদোষে হঠাৎ কি হল; ধুমায়া ছবি আপলোডানো শুরু করলাম। অন্যদের মত যদিও তেমন ঘোরাঘুরি করতাম না। তবুও এখন চিন্তা করলে বুঝি, তখন আমার অবস্থা বেশ খারাপ ছিল। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম গিয়ে অভ্যাসটা নিয়ন্ত্রণে নেয়া বেশ কষ্টকর হচ্ছিল। কারণ সেখানে তো দেখানোর মত আরও ভালো ভালো ব্যাকগ্রাউন্ড আছে!!
ব্যাপারটা অনেকটা ড্রাগ-এডিকশনের মত, খেয়ে কোন লাভ নাই, তবুও ভাল লাগে। ছবি আপ করছেন না, ভালোই আছেন। যদি শুরু করেন, বিভিন্নজনের মন্তব্য শুনে আরও আপলোডাইতে ইচ্ছা করবে।
[গ]
তবে আলহামদুলিল্লাহ, মনে হয় অনেকেই এখন সচেতন হচ্ছে এবিষয়ে। অথবা এরকম পাবলিক আমার লিস্টে রাখি না দেখে এমন মনে হচ্ছে!
আচ্ছা! জায়েজ-নাজায়েজ নিয়ে না বলি। ঝগড়া করার মত পর্যাপ্ত ক্যালোরি একাউন্টে নাই। তবে ভাই-ব্রাদার হিসেবে বলব, আজাইরা ছবি আপ দেয়া একটা অরুচিকর বিষয়। নিঃসন্দেহে অনর্থক কাজ। এথেকে দূরে থাকাই ভালো।
রাসূল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আমরা জেনেছি, ইসলামের কিছু সৌন্দর্য রয়েছে, মানুষের অপ্রয়োজনীয় বিষয় পরিত্যাগ করার মাঝে! (তিরমিযি)
তাই আসুন না একটু চেষ্টা করি। আমি কি করছি, কোথায় যাচ্ছি, কি খাচ্ছি, এসব প্রচার করার আগে একটু ভাবি এতে কি ফায়দা আছে?
যদি থাকে, তাহলে আলহামদুলিল্লাহ! প্রচার করব।
না থাকলে মুসলমান হিসেবে ঈমানের-ইসলামের সৌন্দর্য রক্ষার চেষ্টা অন্তত করি।
[ঘ]
আচ্ছা! বলছিলাম চিটাং যাওয়ার পর...
চিটাগাং গিয়েও প্রথম প্রথম প্রচুর ছবি আপ করেছি। তবে সব অনলি মি করে রাখতাম। আগের ছবিগুলোও এলবামে পুরে প্রাইভেসি দিয়ে রেখেছিলাম। পরে খেয়াল করে দেখলাম, আমার ছবি তোলার হার প্রায় তিন ভাগের একভাগে নেমে এসেছে। পরের বছর আলহামদুলিল্লাহ এটা প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে গেল।
দাওরায়ে হাদিসের শেষের দিকে অর্থাৎ গতবছর এরকম সময়েই.. রাঙ্গামাটি গেলাম কয়েকজন মিলে। ফোনের ক্যামেরা তেমন ভালো না, ছবি তুলতেও পারি না। তবে চেষ্টা করেছিলাম কিছু সুন্দর ছবি তুলতে।
আরে আমার ছবি না! আশেপাশের, পরিবেশের, প্রকৃতির!
অন্যরা যেখানে নিজের কয়েক ডজন খানেক ছবি তুলে ফেলেছে। আমি ২টা পিকের মধ্যে নিজেকে সীমাবদ্ধ রেখেছিলাম, তাও আবার প্রথমটা ভালো হয়নি, তাই আরেকটা। আমার মনেও হয়নি আমি কোন বিরাট কিছু মিস করে ফেললাম। তবে পরে সম্ভবত: প্রাকৃতিক ছবিগুলো ইন্সটাগ্রামে আপলোড দিয়েছিলাম। কিন্তু ওই দুইটা ছবি আর আপ করা হয়নি! ওই যে.. আস্তে আস্তে অভ্যাস দূর করা হয়েছে।
.
[ঙ]
গতকাল অমুকের আম্মা নাকি আমার ছবি চাইছে; তখন ছবি খুঁজে পাচ্ছিলাম না কি দিব! কয়েকবছর আগের তো শ'খানেক ছবি আছে। ফেসবুকেই আছে, কিন্তু এখনকার ছবি পাব কই? আর স্টুডিওর ছবির ওপর তো আমার নিজেরই বিশ্বাস নাই!! বোগাস..
যাহোক, আজ পাসপোর্টের জন্য ছবি তুলতে গিয়েছিলাম, তখন কথাগুলো ভাবলাম। মনে হল, ফেবুতে লিখে দেই। কারও হয়তো কাজে লাগবে।
হঠাৎ করে ছবি আপলোড দেয়া বন্ধ করা কষ্টসাধ্য মনে হলে, এই পদ্ধতি দেখতে পারেন, ইনশাআল্লাহ ফায়দা হবে।
February 11, 2017
তোমরা যারা হুজুর হয়েছো...
[১] অনেকদিন আগে এক সিস্টার এরকম পোষ্ট দিয়েছিলো, ""দ্বীনদার বোনদের যেমন ফেবুতে ফটো আপ করা উচিৎ না তেমন ভাইদেরও উচিত ফটো আপলোড থেকে বিরত থাকা। কারণ মেয়েদেরও তো সমস্যা হয়.. ( ওদেরও তো বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্শন আছে।""
.
সত্যি বলতে ব্যাপারটা উনারা না পারেন সইতে, আর না পারেন কইতে। মেয়ে মানুষ এসব কথা বলে?!! কেন ভাই? তোমাদের 'ইয়ে' আছে, ওদের নাই? বানানোর সময় তো আল্লাহ দুইজনকে একসাথেই বানাইছে, সুরা নাবা'র ৮নং আয়াত ভুলে গেছো?
এমনিতেই কলেজ-ভার্সিটির বৈরী পরিবেশে ইসলামের ওপর থাকাটা অনেক কঠিন; অনলাইনে দ্বীনদার ভাইদের এসব ফটো উনাদের ইসলামের ওপর চলা আরো কঠিন করে দেয়। তো যাহোক, এই পোষ্ট দেয়ার অপরাধে আলোচ্য লেখিকাকে সেই জামানার ইসলামিস্টরা(!) অনেক পচাইছিলো।
.
[২] "রি..." ভাই, ফেসবুকে পরিচিত মুখ, সফট ইসলামিস্ট হিসেবে বেশ পরিচিতি। সমস্যাগ্রস্থ দ্বীনদারদের আর্থিক সহায়তার জন্য একটা গ্রুপ আছে উনার। সাধারণত আত্মশুদ্ধিমূলক লেখালেখি করেন। এক আত্মীয়ার সাথে কথা বলতে গিয়ে "রি..." ভাইয়ের কথা উঠালাম। বললো, "ইদানীং ফটো আপ করা শুরু করেছে দেখে আনফ্রেন্ড করে দিয়েছি!"
.
[৩] অমুক পীর সাহেবের শিষ্যদের একটা ইসলামিক শিল্পীগোষ্ঠী আছে, তো শুনেছিলাম ওই শিল্পীগোষ্ঠির সিঙ্গার সাহেবরা নাকি নিজের ফটো ছাড়া কোনো পোষ্ট দেয়না। আমাদের কোনো সাথি ভাই কলরবের কারো পোষ্টে (থুক্কু ফটোতে) কমেন্ট করেছিলেন- "ভাই সালাম দিলেও কি নিজের ছবি দেয়া লাগে?"
ফলাফল = ব্লক
.
[৪] এই সময়ে বদদ্বীনি যেমন অনেক বেশি, তেমনি এই জেনারেশনের তরুণতরুণীদের ইসলামের প্রতি ঝুঁকে যাওয়ার প্রবণতাও অনেক বেশি। তবে টিনেজারদের অবস্থা আবার নেগেটিভ।
তো, যেসব ইয়ংস্টাররা নতুন নতুন ইসলামের প্রতি আগ্রহী হয় তাঁদের বিরাট একাংশের দৃষ্টি থাকে মাদরাসার তালেবে ইলমদের দিকে, আর কারো দৃষ্টি থাকে পুরোনো প্রাক্টিসিং মুসলিমদের দিকে। উলামা বিদ্বেষ নিয়ে না, বরং আপনাদেরই একজন হামসফর হিসেবে বলছি, আমরা 'অধিকাংশ' তালাবা অথবা তরুণ উলামা উনাদের হতাশ করি। আমরা চাই মানুষ আমাদের অনুসরণ করুক, কোরআন হাদিস ঘেঁটে তাক্বলিদের দালায়েল প্রচার করি... অথচ অনুসরণ করার মত কোনো উপমা কি তাঁদের জন্য রাখতে পারছি?
.
[৫] আচ্ছা হুজুর! একটা ফতওয়া দেন,
> অত্যাবশ্যক ফটো ছাড়া, কোনো ফটো আপলোড "না করলে' কি পাপ হবে? মানে আপনারা যে হুদাই ফটোসেশন করেন বেদ্বীনদের মত, এতে কি কোনো সওয়াব হয়?
> সূরা আলে-ইমরান এ আল্লাহ তা'আলা যে বলেছে, "নগরীতে কাফেরদের চালচলন যেন তোমাদেরকে ধোঁকায় না ফেলে দেয়"(3:196) ছবি আপ করার সময় এই আয়াতের দিকে আপনারা কতটুকু খেয়াল রাখছেন?
অথবা মুআত্তা মালেকের একটা হাদিস আছে, আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত রাসুল সা. বলেছেন, ইসলামের সৌন্দর্যের একটি হচ্ছে অপ্রয়োজনীয় বিষয় ছেড়ে দেয়া।
আচ্ছা হুজুর! আপনার প্রোফাইল পিকে একটা ছবি তো দেয়া আছে, তবুও যে অহেতুক সেলফি বিলাশ করছেন, রাসূলের কথানুযায়ী এতে কি ইসলামের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছেনা?
....
এরকম প্রশ্ন যদি কেউ করেই বসে, তাহলে সত্যিই আমার কিছু বলার নাই। অপরাধ আমারই, আমাদেরই...
[ফেবুতে]
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1210650655691129&id=100002386190185
January 5, 2017
শয়তানের উঁচু স্তরের ধোঁকা; কোনো গোনাহের প্রতি আসক্তি /এডিকশন থেকে বাঁচার উপায় কী?
শয়তানের সব ধোঁকা এক লেভেলের না। হাজারো এটাক স্ট্রাটেজি আছে শয়তানের! সাধারণ ওয়াসওয়াসা তো একবার পাপ করলেন, তাওবাহ ইস্তিগফার করলেন, কাহিনী শেষ। কিন্তু কিছুকিছু ওয়াসওয়াসা এডিকশনের লেভেলে চলে যায়।
এটা এডিকশন সম্পর্কে একটা লেসন বলতে পারেন। আজ এজন্য এবিষয়ে আলোচনা করছি কারণ, এই প্যাঁচে পড়লে খুব কম মানুষই বেরিয়ে আসতে পারে। আমরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিষয়ে আসক্ত হই, খেলা খাওয়া ঘোরাফেরা করা ইত্যাদি। আমাদের কেঁউকেঁউ অনেক খারাপ বিষয়ে আসক্ত হয়ে যায়, সেটা ছেড়ে দিতে চায় কিন্তু পারে না। এবিষয়গুলো আসলেই খুব সিরিয়াস, অনেকে বাহিরে বেশ পরহেজগার থাকেন, চেষ্টাও করেন ভালো থাকতে কিন্তু কোনো একটা আসক্তি তাকে কুরেকুরে খায়। না পারেন কারো সাথে পরামর্শ করে সমাধান চাইতে, আর না পারেন এই পাপ ছাড়তে। এজন্য একসময় বলে বসে, আমি জানি বিএফ/জিএফএর সাথে কথা বললে আমার পাপ হবে কিন্তু আমি কথা না বলে থাকতে পারছিনা যে! আমি জানি পর্ণ দেখা, মাস্টারবেশন করা অনেক বড় পাপ, কিন্তু আমি কি করবো? আমিতো আপারগ!! আমি ছাড়তে পারছিনা যে..।
এটা চেইনিং ওয়াসওয়াসার ২য় লেভেল!
.
[খ.]
এই অবস্থায় শয়তান আপনাকে একটা সার্কেলে বন্দি করে ফেলে- কোন একটা কারণে আপনার চিন্তায় পাপের ব্যাপারটা আসে, (হতে পারে সেটা কোন বাজে পিকচার দেখে, অথবা কাউকে তার প্রেমিকার হাত ধরে ঘুরতে দেখে, অথবা কারো লেখা কোনো গল্প পড়ে) ব্যাপারটা মাথায় আসার পর আপনার মনে হয় নাহ এটা করা উচিত হবে না; এটা পাপ, আপনি চেষ্টা করেন এভোইড করতে, নিজের নফসের সাথে ধ্বস্তাধস্তি করেন। এরপর নফসকে সামান্য ছাড় দেয়ার চেষ্টা করেন। (যেমনঃ এবার করার পর তাওবাহ করে নিব, এই একবারই শেষ; আর করবো না, কত পাপই তো করি দৈনিক; এ আর তেমন কি) এই পয়েন্টটাই সবচেয়ে ভয়াবহ, এই স্টেপে বাহিরের শয়তান আর ভেতরের নফসে আম্মারা ঐক্যবধ্য হয়ে আপনার বিরুদ্ধে লাগে। অবশেষে আপনি নিজের প্রবৃত্তির কাছে পরাজিত হয়ে সেই কাজে জড়িয়ে পড়েন। (জিএফ/
এখন এথেকে বেরিয়ে আসার উপায় কী?
.
[গ.]
প্রশ্নটা দেখতে ছোট হলেও দুনিয়ার সবচেয়ে কঠিন প্রশ্নগুলোর মাঝে এটি একটি। সম্ভবত কোনো ইসলাহি মুরব্বি / শাইখ এর সবচেয়ে ভালো সলিউশন দিতে পারবে। তবে আমরা ভাইব্রাদার হিসেবে কিছু ডিসকাস তো করতেই পারি, তাইনা?
.
১. এখানে সর্বপ্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্টেপ হচ্ছে আপনাকে আল্লাহর কাছে সারেন্ডার করতে হবে, কারণ শয়তান অনে-ক শক্তিশালী, অনেক বুদ্ধিমান এবং অনেক জ্ঞানী। একজন মানুষ হিসেবে আমাদের মাঝে আল্লাহ যতটুকু শক্তি দিয়ে পাঠিয়েছেন এটা শয়তানের সাথে টেক্কা দেয়ার জন্য যথেষ্ট না, শয়তানকে পরাস্ত করার জন্য অবশ্যই আমাদের আল্লাহর সাহায্য দরকার হবে। এজন্য আল্লাহ কোরআন-এ আমাদের বারবার শিখিয়েছেন তাঁর কাছে কিভাবে আত্মসমর্পন করতে হবে, কিভাবে শয়তানের বিরুদ্ধে আল্লাহর নিকট সাহায্য চাইতে হবে। যেমনঃ
>> বলুনঃ হে আমার পালনকর্তা! আমি শয়তানের প্ররোচনা থেকে আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি, হে আমার প্রভু! আমার নিকট তাদের উপস্থিতি থেকেও আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি। (সুরা মুমিনুন, আয়াত ৯৭-৯৮)
>> অতএব, যখন আপনি কোরআন পাঠ করেন তখন বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয় গ্রহণ করুন। (সুরা নাহল, ৯৮)
>> যদি শয়তানের পক্ষ থেকে আপনি কিছু কুমন্ত্রণা অনুভব করেন, তবে আল্লাহর শরণাপন্ন হোন। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, মহাজ্ঞানী। (হা-মীম সেজদাহ ৩৬, আল আ'রাফ ২০০)
.
প্রথম আয়াত থেকে দু'আটা মুখস্ত করে নিতে পারেন, মুনাজাতে বলবেন বেশিবেশি। এছাড়াও আপনি যেভাবে আল্লাহর কাছে চান সেভাবে নিজের মত করেই আপনার সমস্যার কথা বলুন, আল্লাহকে বলুন- আমি দূর্বল, ইয়া আল্লাহ! তুমি ছাড়া আমার কেউ সহায় নাই, তুমি ছাড়া আর কারো এই বিপদ থেকে উদ্ধার করার ক্ষমতা নাই, আল্লাহগো! তুমি আমাকে এই পাপ থেকে বাচাও (নির্দিষ্টভাবে পাপের কথা উল্লেখ করে আল্লাহর কাছে সাহায্য চান) তিরমিযী মুস্তাদরাকে হাকেমে বর্ণিত কোরআন হিফযের জন্য রাসুলের শিখিয়ে দেয়া দু'আর প্রথম অংশটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম)
"allahummar'ham
দুয়াটা ফাযায়েলে কোরআন এর পরিশিষ্টেও আছে, আগ্রহীরা অর্থ দেখে নিয়ে মুখস্ত করে ফেলতে পারেন, রাসুলের শিখিয়ে দেয়া দো'আর স্পিরিট-ই অন্যরকম... e-ilm এ ফাযায়েলে কোরআন এর শুধুওই অংশটার পিডিএফ আছে, কমেন্টে লিংক দিয়ে দিলাম। ( লিংক- http://mediafire.com/?cs66za1zsd562ka )
২. গুনাহ থেকে বাঁচার দ্বিতীয় স্টেপ হচ্ছে ওয়াসওয়াসার ট্রিগার শনাক্ত করা এবং এসব থেকে বেচে থাকা। একটা নোটবুক রাখুন, সাধারণ কাগজের নোটবুক রাখতে পারেন, অথবা আপনার ডায়েরির কিছু পৃষ্ঠা বরাদ্দ দিতে পারেন, প্লেস্টোরে হাজার হাজার নোটবুক অ্যাপ আছে আপনার পছন্দ মত একটা ডাউনলোড করে নিন, ফোনে কোনো নোটবুক থাকলে এজন্য একটা ফোল্ডার বরাদ্দ দিন। যেকোনো একটা দরকার...
এরপর মাইগ্রেন ডায়েরির মত প্রতিটা কেসনোট লিখে রাখুন, যেমনঃ প্রতিদিন কোন সময়টাতে আপনি পাপে জড়িয়ে পড়ছেন, আজ কিভাবে আপনি পাপে জড়ালেন, পাপটা করার আগে কি ঘটনা ঘটেছিল। কোন জিনিসটার সূত্র ধরে আপনি আজ পাপটা করে ফেললেন এসব নোট রাখুন। আমার মাইগ্রেন ডায়েরিতে কয়েকটা পয়েন্ট রাখি- date n time, event summary, starting time, ending time, cause of pain, cause of cure. আপনি আপনার নিজের মত সিন্স ডায়েরী সাজিয়ে নিন, তবে খেয়াল রাখবেন এটা যেন বেহাত না হয়, চাইলে সংকেতিক শবদ ইউজ করতে পারেন, অথবা পাসওয়ার্ড ইউজ করতে পারেন।
.
এবার কিছুদিন গেলে আপনার অনেকগুলো কেস সামনে নিয়ে বসুন, আপনি অনেকগুলো কমন ট্রিগার খুঁজে পাবেন, যেমন বাজে পিকচারের দিকে দৃষ্টি যাওয়া, কোনো গল্প পড়া, কাউকে জিএফ/বিএফ এর সাথে ঘুরতে বা ফোনে কথা বলতে দেখা ইত্যাদি। এখন আপনাকে এই ট্রিগারগুলো থেকে বেচে থাকতে হবে।
এরপর থেকে এই বিষয়গুলোর কোনটা আপনার সামনে চলে আসলে আপনি সতর্ক হয়ে যান। সাথে সাথে ইস্তিগফার দুয়া পড়ুন, পর্ণ দেখতে খুব ইচ্ছা হলে দেরি না করে ওযু করে এসে কোরআন তিলাওয়াত করতে বসে যান, অথবা ওযু করে ফোনেই তিলাওয়াত করুন। কিছু নতুন এবং ভালো শখ/hobby ধরুন, যখনি এসব চিন্তা আসবে সাথে সাথে ইস্তিগফার করে অন্য কাজে মন দিন।
আর দিনের বেলা অহেতুক বসে থাকলে যদি শয়তান কুমন্ত্রণা দেয়, তাহলে দিনে কখনই আপনার অহেতুক বিছানায় শুয়ে বসে থাকা উচিত হবেনা।
৩. আর তৃতীয় টনিক হচ্ছে জিকির বাড়িয়ে দিন, কোনো শাইখের পরামর্শ নিয়ে জিকির করতে পারেন। রাতে নামাজের অভ্যাস না থাকলে ধরতে চেষ্টা করেন, যদি শেষ রাতে জাগনা পাওয়ার সম্ভাবনা না থাকে তবে ইশার সুন্নাত ও বিতরের মাঝে কিয়ামুল্লাইল বা তাহাজ্জুদের নিয়াতে কয়েক রাকাত পড়ে নিন আর শেষ রাতে নামাজ পড়ার তাওফিক চেয়ে দুয়া করুন।
নিশ্চয় দু'আ মুমিনের হাতিয়ার!
.
গুনাহ থেকে বাঁচার জন্য এভাবে নিজে পক্ষ থেকে সর্বপ্রকার চেষ্টা আর আল্লাহর কাছে দু'আ করতে থাকলে ইনশা-আল্লাহ অচিরেই আপনি চেইনিং ওয়াসওয়াসার এই লেভেল থেকে বেচে যেতে পারবেন...।
----------
{আল্লাহ তাওফিক দিলে আগামীতে কখনো ৩য় লেভেল নিয়ে আলোচনা হবে...। আর হ্যাঁ! আমরা আলোচনার সুবিধার্থে এই লেভেলগুলো ভাগ করে নিচ্ছি, বাদবাকি সালাফের কিতাবে এর কোনো উদাহরণ থাকলে তো নুরুন আলা নুর}
...
লেখাটি গুরুত্বপুর্ণ মনে হলে শেয়ার অথবা কপি-পেস্ট করতে ভুলবেন না, আর আমার এবং আমার রিলেটিভদের জন্যও আপনার দু'আয় অংশ রাখবেন, আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে শয়তানের সর্বপ্রকার ধোঁকা থেকে হিফাজত করে
.
- ৫ জানুয়ারি ২০১৭
ফেবুতে- https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1188851274537734&id=100002386190185
November 23, 2016
ভয়াবহ দু'আ; একটু সাবধান হই…
প্রথম ঘটনা বর্ণনা করছিলেন জামি'আ রাহমানিয়া আরাবিয়ার একজন উস্তায। উনি দাওরায়ে হাদীস শেষ করেছেন এই মাদরাসা থেকেই..
উনি বলছিলেন, "আমাদের শেষ বর্ষে.. শায়খুল হাদীস রহ. সে বছর অনেক অসুস্থ ছিলেন। তখন আমরা দু'আ করতাম, হে আল্লাহ! আমাদের উস্তাযকে এবছর জীবিত রাখো.. আমরা যেন বুখারীটা হুজুরের কাছে শেষ করতে পারি!!
এটা একটা ভয়াবহ দু'আ ছিলো.. তখন বুঝতামনা, এখন বুঝতে পারি।"
.
[খ.]
শায়খুল হাদীস রহ. আল্লাহর কাছে চলে গেছেন অনেক বছর হলো। এরপর অনেক প্রদীপ নিভে গেছে। অনেক আকাবিরকে হারিয়েছি আমরা। আমাদের উস্তায শাইখুল ইসলাম আহমাদ শফী দামাত বারাকাতুহুমের অবস্থাও খুব নাজুক।
গতকাল বুখারীর দরসে বসে আছি.. ক্লাসের মাঝেই হুজুরের অসুস্থতা বেড়ে গেলো। আমি আসলে বুঝতে পারিনি কেন হুজুর কথার মাঝে বারবার থেমে যাচ্ছেন। উপস্থিত বুদ্ধি কম তো.. তবে উস্তাযজ্বির নিশ্বাসের আওয়াজ বেড়ে যাচ্ছিলো, ধারণা করলাম শ্বাসকষ্ট। পাশেরজনকে জিজ্ঞেস করলাম..
- তার মুখ থেকে বের হলো সেই ভয়াবহ কথা! "বয়স হয়ে গেছে না? দু'আ করে যেন বছরের শেষ পর্যন্ত বেচে থাকে!!"
হায় খোদা! এর মানেতো হুজুরকে কোনোমতে এবছরটা বাচায়া রাখো তারপর মরলে সমস্যা নাই(!?)
.
এটা দুয়া হলো, নাকি বদদোয়া?
ভাই এসব ভয়াবহ দু'আ থেকে বেচে থাকা চাই...
.
[গ.]
আমার এক আত্মীয়া, আল্লাহ তাঁর প্রতি রহম করুক। দীর্ঘ একটা সময় তাঁর একটার পর একটা সমস্যা লেগেই ছিল। এখনকার খবর আল্লাহ মা'লুম।
একদিন তাকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি দু'আ করেন?
- কেন কি করবো?
-- আপনি মনে হয় দুয়া করেন, 'আল্লাহ! আমাকে বিপদেআপদে ধৈর্য ধরার তাওফিক দাও!'
- হ্যা তাইতো!
--- এরমানে তো "আল্লাহ্ আমাকে আরো বড়বড় বিপদ দিতে থাকো এবং সেই বিপদে সবর করার তাওফিকও দাও!!"
অথচ আপনার উচিত ছিলো দুয়া করা.. "আল্লাহ! আমাকে এই বিপদ থেকে উদ্ধার করো এবং আগামির বিপদআপদ থেকে হিফাজত করো!"
কিন্তু আপনে চাইতেছেন বিপদ! আল্লাহ আপনাকে দিবে কি?
.
এই মহামানবীর আরেকটা ঘটনা!
গত বছর, আমার কোনো পরিক্ষার রেজাল্ট বের হচ্ছে... ফোন দিয়ে বললাম- আমার জন্য দুয়া কইরেন, যেন প্লাস পাই!
বলছে 'এই দোয়া করা ঠিক হবে? আল্লাহ নারাজ হবে তো!!'
- মানে উনার কথা হচ্ছে আমি কোনোদিন ক্লাস করিনি, হুট করে এসে পরিক্ষা দিলাম আমার জন্য এ+ পাওয়ার দুয়া করা কি উচিৎ হবে?
আরে ভাই, আল্লাহ্ যদি আমারে গোল্ডেন দিতে চায় কারো কোনো সমস্যা? যাহোক, আল্লাহই জানে উনি কি দোয়া করছিলেন.. তবে আখেরে আমার প্লাস পাওয়া হয়নি! বোর্ড চ্যালেঞ্জ করতে চাইছিলাম, কিন্তু ফ্যামিলিরে বুঝাইতে পারিনি যে, আমার পক্ষেও ভালো পরিক্ষা দেয়া সম্ভব!
.
[ঘ.]
একজন সাহাবী.. গ্রামে থাকেন, কোনো কারণে শহরে এসেছেন। (হাদীসটি বুখারী, মুসলিম, তিরমিযীতে আছে) রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে বসে আছেন অন্য সাহাবীদের সাথে। বেদুইন সাহাবী মসজিদের কোনায় নামাজ পড়ছিলেন। নামাজের পর দু'আ করলেন- "আল্লাহ! আমার প্রতি আর মুহাম্মাদ সা.-এর ওপর রহম করেন, আমাদের সাথে আর কারো ওপর রহম কইরেন না..!!"
দু'আ শুনে রাসূল সা. তাঁর দিকে ফিরলেন.. বললেন, "তুমি একটা প্রশস্ত জিনিশকে সংকীর্ণ করে ফেলছো..!"
অর্থাৎ আল্লাহর রহমত তো প্রশস্ত, এটা এত সহজে ফুরানোর জিনিশ না! তুমি চাওয়ার সময় হুদাই কমাইয়া চাইবা কেন?
-২৩ নভেম্বর, ২০১৬
ফেবুতে- https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1151738291582366&id=100002386190185
October 30, 2016
সমালোচনা...
আমাদের উস্তাযরা কখনো চাইতেন না আমরা বড়দের সমালোচনায় অভ্যস্ত হয়ে উঠি। যেসব মুরব্বিদের সামনে আমরা দেখার মত দেখতে শিখেছি, দুনিয়াকে দুনিয়া, আখিরাতকে আখিরাত হিসেবে চিনতে শিখেছি তারা কখনো আমাদেরকে শিখাননি যে, "ভিন্নমতপোষণকারী বড়দের গালিগালাজ করলে আল্লাহ খুশি হয়!"
.
[[খ.]]
আচ্ছা একটা উদাহরণ দেয়া যাক, আপনি হয়তো জানেন রাজশাহীর পরিবেশ ঢাকার মত না, আইমিন জামাতে সমালোচনার ব্যাপারে ঢাকা চট্টগ্রাম এর উলামাদের যেমন বলতে দেখা যেত রাজশাহীতে তেমনটা ছিলোনা। (এখনকার হিসেব তো পুরোই আলাদা, আল্লাহ আমার ওই ভাইদের হিফাজত করুক গোমরাহি এবং জুলুম থেকে)
তো রাজশাহীর এই বৈরি পরিবেশেও আমার প্রিয় এক উস্তায মাঝেমাঝে জামাতের ভ্রষ্টতার ব্যাপারে দুচার কথা বলতেন, অন্য ক্লাসের খবর জানিনা। কিন্তু সবচে পুরাতন ব্যাচ হিসেবে আমাদের সামনে অনেক কিছুই বলতেন।
তো শাহবাগীয় সভ্যতার যুগে একবার শোনা গেলো সাঈদি সাহেবের চেহারা নাকি চাঁদে দেখা গেছে! আমরা এটা নিয়ে অনেক হাসাহাসি করলাম, একজন আরো একধাপ এগিয়ে কম্পিউটার রুমে চলে গেল!
ইলাস্ট্রেটর দিয়ে চাঁদ ও সাঈদি সাহেবের ছবি মার্জ করে ট্রল বানিয়ে ফেললো!! এই সবকিকিছুই ঘটেছিলো সেদিন সকাল ৭টার আগে..
৭টা থেকে আমাদের ক্লাস, প্রথম ঘন্টা "আল ফিকহুল মুয়াসসার" কিতাবের, উপরে বলা সেই উস্তাযের ঘন্টা.. আমাদের এক সহপাঠী অনাবাসিক থাকতো সেও নাকি দেখেছে!! এটা নিয়ে আমরা ক্লাসে হাসিঠাট্টা করছি.. এমন সময় হুজুর আসলেন..
- এত হাসি কিসের??
-- হুজুর! সাঈদি সাহেবকে নাকি চাঁদে দেখা গেছে... আমরা সবাই হাসতে হাসতে বললাম
- তাই নাকি? আজ রাতের ঘটনা?
-- জ্বি হুজুর! **বায়দা ভাই নাকি দেখেছে!!
- কিরে **বায়দা? কাহিনী কি?
--- হুজুর ফজরের সময় আমার বোন জার্মানি থেকে ফোন করেছিল, ওর কথা শুনে আমি বাহিরে এসে দেখলাম... দেখে ওরকমি মনে হলো..
(আমরা হাসছিলাম, আর ভাবছিলাম হুজুরও হয়তো আমাদের সাথে হাসিতে যোগ দিবে..কিন্তু)
হুজুরকে একদম চুপ দেখলাম... বললেন...
.
- একজন আলেমকে যদি আল্লাহ সম্মানিত করতে চান তাহলে তোমার-আমার কি বলার আছে....
.
.
[[গ.]]
আরেকদিনের ঘটনা, তখন আমাদের নাহবেমির ক্লাস চলছে। মুহতামিম সাহেব হুজুর ক্লাস নিচ্ছেন। কথাপ্রসঙ্গে শিয়াদের কথা উঠলো.. তখন হুজুর সংক্ষেপে একটা ঘটনা শোনালেন...
.
ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট রাফসানজানী একবার বাংলাদেশে আসবে বলে কথা হচ্ছিলো... তখন কিছু উলামায়ে কিরাম তার ব্যাপারে ফতওয়া লিখে সাক্ষর যোগাড় করছিলেন... সব ঠিকঠাক চলছিলো.. মাঝে বাধ সেধে বসলেন শাইখুল হাদিস আজিজুল হক রহ.
উনি সেই ফতওয়ায় সাইন করবেন না!
আজিব! তাহলে কি উনি শিয়াদের কাফের মনে করেননা? রক্তগরম তরুণ কিছু আলেম গিয়ে হজরতের সামনে হাজির!! হুজুর আপনি ফতওয়ায় সাইন করছেননা কেন?
.
শাইখুল হাদিস সাহেব ব্যাখ্যা করলেন- "দেখো! একটা আক্বিদা কুফরি কি না.. এটা বলা সহজ! তুমি কোরআন হাদিস দেখে সহজে বলতে পারবা এটা কুফরি আক্বিদা এটা ইসলামি আক্বিদা, এই এই আক্বিদা যারা রাখবে তারা কাফির। কিন্তু একজন ব্যাক্তির ওপর যখন তুমি কুফরির ফাতওয়া দিবা (যে প্রেসিডেন্ট রাফসানজানি কাফের) তখন তোমাকে অনেক কিছু খেয়াল রাখতে হবে, সে শিয়া ঠিক আছে মানছি। কিন্তু আমার তো জানা নাই যে, সে ব্যক্তিগতভাবে শিয়া ধর্মের কুফরি আক্বিদাগুলোয় বিশ্বাসী কি না....
সবচে বড় কথা হচ্ছে, রাসুল সা. এর কথা অনুযায়ী তুমি যাকে কাফির বলবা সে আসলেই কাফির না হলে, এই কুফরির ফাতওয়া তোমার ওপরেই ফিরে আসবে! অতএব....."
শাইখুল হাদিস সাহেবের কথাশুনে এবার সবাই খামোশ!!
.
উস্তাযদের অযোগ্য ছাত্র হলেও কাওমি সনদের স্বীকৃতি হুজুগে এসব উপদেশ স্মরণ করেই আমি একদম চুপ ছিলাম, মুখ ফসকে না জানি কি বলতে কি বেরিয়ে যায়...
.
[[ঘ.]]
ব্যক্তিভিত্তিক সমালোচনার আরেকটা কুফল হচ্ছে লেখা/কথার গ্রহণযোগ্যতা কমে যায়। যেমন, একসময় আমি অনেককে আদর্শ নারী সাজেস্ট করেছি, করতে বলেছি। আদর্শ নারি পড়ে দীনের ব্যাপারে আগ্রহী হয়েছে এমন নারীর কারগুজারিও শোনা যেত একসময়....
কিন্তু যখন প্রতিমাসে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা জাকিরা নায়েকের সমালোচনা করা হচ্ছিলো তখন আমি হিম্মত হারিয়ে ফেলেছি কাউকে এই পত্রিকা পড়ার কথা বলতে।
.
একবার এক কলেজ পড়ুয়া আত্মীয়া এসে বললো- আমার কাছে অল্প কয়টা টাকা ছিলো, ভাবলাম আদর্শ নারী কিনি। কিন্তু কিনে তো লস গেল… জাকির নায়েকের ভুল ধরে অর্ধেক পত্রিকা ভর্তি। এসব দিয়ে আমি কি করবো?
.
তো ইস লিয়ে ভাই... অন্য ব্যক্তির সমালোচনার চেয়ে কি নিজের আত্মশুদ্ধির বেশি প্রয়োজন না?
.
- ৩০ অক্টোবর ২০১৬
ফেবুতে- https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1125702244185971&id=100002386190185
August 11, 2016
আমাদের নামাজ, বডি মেমোরি এবং কিছু কথা..
এর উত্তর অনেক রকম হতে পারে। আমি এটা বুঝেছি খুব বাজে একটা উদাহরণ এর মাধ্যমে।
আপনি সহজভাবে বুঝুন... আপনার ঘরের দরজা, ডান পার্শে সুইচবোর্ড। প্রতিদিন দরজা খুলে ডান দিকে হাত বাড়িয়ে লাইট জালান। ধরুন আজ আপনি ঘরে ঢুকলেন, লাইট জালানোই আছে। তবুও আপনার হাত চলে গেলো সুইচবোর্ড এ!
cause of body memory
শাস্ত্রীয় স্টাইলে বলতে চাইলে এভাবে বলা যায়, ব্রেইন থেকে শরীরের কোনো অঙ্গে একটা কমান্ড বারবার প্রেরণের ফলে এক সময় আর কমান্ড পাঠানোর প্রয়োজন হয়না, বডিতেই স্ট্র্যাটেজী সেভ হয়ে যায়, সামান্য ক্লু পেলেই শরীর ওই কাজটা আগেরবারের হুবহু পুনরাবৃত্তি করে।
----
তো এবার আসল কথায় আসা যাক, আল্লাহ আমাদের মাফ করুক। আমাদের অনেকের অবস্থা এমন যে, আমরা শুধু নামাজ শুরু করি, বাকি নামাজ সমগ্র দুনিয়ার ফিকিরে ব্যাস্ত থাকি। অভ্যাস অনুযায়ী হাত-পা উঠছে বসছে, মুখ দুয়া সুরা পড়ছে, একসময় মাথা সালাম ফিরালো। এরপর হুশ আসলো, অহ!! আমি তো নামাজে ছিলাম, তাইনা?
অথচ পুরো নামাজে আমাদের মনযোগ একটুও নামাজে স্থির হয়নি।
ওই যে! আমরা শুধু তাকবীর বলে ট্রিগার প্রেস করেছি বাদবাকি কাজ ব্রেইন থেকে হয়নি বরং বডি মেমোরি থেকে সম্পাদন হয়েছে।
-
এসব নামাজের ব্যাপারে শরীয়তের সিদ্ধান্ত কি? উলামায়ে কিরাম বলেন- বেখেয়ালে নামাজ পড়লে নামাজের ফরজ আদায় হয়ে যাবে বটে, কিন্তু সওয়াব পাবেনা। দলিল স্বরূপ আবু দাউদ শরিফ থেকে দুটি হাদীস বলা যায়-
.
১। “বান্দা নামাজ আদায় করে, সেই নামাজের এক-দশমাংশ বা এক-নবমাংশ বা এক-অষ্টমাংশ বা এক-ষষ্ঠাংশ বা এক-পঞ্চমাংশ বা এক-চতুর্থাংশ বা এক-তৃতীয়াংশ অথবা অর্ধেক সওয়াব পেতে পারে|”
২। “বান্দা তার নামাজের শুধু মাত্র সেই অংশের সওয়াব পায়, যে টুকু অংশ সে সজ্ঞানে(বুঝে শুনে) করে|” [দুটি হাদীসই আবু দাউদ এর]
.
এখন এই হচ্ছে আমাদের অবস্থা! আমরা মন দিয়ে নামাজ পড়িনা, বরং বডি মেমোরি দ্বারা পড়ি। যার কারণে নামাজ দ্বারা আমার আত্মার উন্নতি হচ্ছে না।
তো নামাজের কোনো উপকার যেনো মিস না যায় এজন্য আমরা কি করতে পারি?
প্রথমতঃ আমাদের মনযোগ দিয়ে নামাজ পড়তে হবে। এরপর সব সুরা ক্বিরাত দুয়া দরুদ ঠিকমত পড়তে হবে।
-
--
কিভাবে নামাজে মনযোগী হতে পারি? এটা আপনাদের কাছে অধমের প্রশ্ন, সমাধান জানলে অবশ্যই শেয়ার করবেন।
কেউ বলে- "একটা কাজ করতে পারো তা হচ্ছে নামাজে সুরা দুয়া এসব পড়ার সময় অর্থ বুঝে পড়ার চেষ্টা করো, সব অর্থ না বুঝলেও যে রিডিং পড়ছো অন্তত সেসব খেয়াল করে পড়ো। " এটা তেমন কার্যকরী মনে হয়নি। :/
.
আমার তাফসীরে জালালাইন এর উস্তায এরকম বলেছিলেন, "তুমি দুইটা কাজ করে দেখতে পারো। এক. তাহাজ্জুদ পড়ার চেষ্টা করো, দুই রাকাত চার রাকাত যা পারো। তাহাজ্জুদ এর কারণে নামাজের প্রতি আকর্ষণ বাড়ে। তাহাজ্জুদের পর আল্লাহর কাছে দুয়া করো মনযোগের জন্য, স্থির অন্তরের জন্য।
(রাতে জাগা না পেলে এশার পরেই তাহাজ্জুদ পড়ে ঘুমানো যেতে পারে)
আর আরেকটা বিষয় নামাজের যে অবস্থায় যেখানে তাকানো উচিৎ সেদিকেই দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখো। যেমনঃ দাঁড়ানো অবস্থায় সিজদার যায়গায়, রুকুতে দুইপায়ের মাঝে (ঠ্যাং না কিন্তু... ) আর আত্তাহিয়াতুর সময় উরুর ওপর। আমরা আসলে নামাজের সময় এসব যায়গায় তাকাইনা, একটা ভাসাভাসা দৃষ্টি থাকে.. আসলে কোথায় তাকায়া থাকি আমরা নিজেও জানিনা।"
তো আমার উস্তাযের দেয়া টিপস মাঝেমাঝে ফলো করার চেষ্টা করি, তবুও কিভাবে যেন টিপ্স-চিপ্স সব ভুলে যাই। মহান রবের সামনে দাঁড়িয়ে কি কি সব আলতুফালতু চিন্তায় ডুবে যাই। আস্তাগফিরুল্লাহ..
--
এবার আসা যাক সুরা কিরাত প্রসঙ্গে, বেখেয়ালে নামাজ পড়লে সাধারণত এক দুইটা সুরাই ঘুরেফিরে মুখে আসে, কখনো দুই রাকাতে একই সুরা পড়া হয়ে যায়।
এভাবে নামাজ হবে তবে, মাকরুহ হবে, কখনো বেখেয়ালে সুরা কিরাতে এমন ভুলও হয়ে যায়, যার কারণে নামাজ ভেঙ্গে যায়।
--
আল্লাহ যেন আমাদের মনযোগ দিয়ে খুশু-খুযুর সাথে নামাজ আদায়ের তাওফিক দেন, আমীন
- ১১ আগস্ট ২০১৬
ফেবুতে- https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1054415504647979&id=100002386190185
July 23, 2016
নীড ফর স্পিড! প্রসঙ্গ: রাসুলুল্লাহর নামাজ বনাম আমাদের নামাজ
---
June 22, 2016
পর্দা কাদের জন্য? দৃষ্টির হিফাজত কারা করবে?
August 17, 2015
সাদকাহ
.
ব্যাপারগুলো খুব সহজেই ইগনোর করি, আমরা স্বাভাবিকভাবে এগুলো এড়িয়ে যেতেই অভ্যস্ত। আমরা এর পিছে অবশ্য মনে মনে কিছু যুক্তি দাড় করিয়ে নেই, যেমনঃ মনে হয় হুদাই টাকা চাইতেছে! অথবা আরে মহিলার দেখগা টাকা-পয়সা সবি আছে তাও এটাকে পেশা বানিয়ে নিয়েছে! অথবা আরে এসব পিচ্চির বাপ-মা সব আছে এমনি দেখ ধান্দা করছে! অথবা ভাবি এই ১টাকা ২টাকা দিয়ে কিই বা হবে? বা ৫টাকা দিয়ে দিব? এটা দিয়ে তো.... (ঘোড়ার ডিম পাওয়া যায়) :-/
.
এগুলো কথা শুনতে পাওয়া যায় কয়েক বন্ধু মিলে ঘুরতে বের হয়েছি, বা ভাই-ব্রাদারদের সাথে বেড়াচ্ছি তখন কেউ টাকা চাইতে আসলে... তাছাড়া কথাগুলো আমরা মনে মনে আউড়াই..
এটা আমার কথা বলছি, আপনারা তো অনেক ভালো মানুষ.. আপনাদের এমন নাও হতে পারে, আমার হয় তাই লেখাটা লেখছি আমার নিজের সংশোধনের উদ্দেশ্যে।
.
তবে আমাদের একটু ভাবা উচিৎ, একটা মানুষ কখন অন্যের কাছে হাত পাতে? অচেনা অজানা মানুষ কেন আপনার কাছে টাকা চাইবে?
.
আর যখন শীর্ণকায়, খালিগায়ে একটা ছেলে আমাদের কাছে হাত পাতে তখন আমাদের আরেকটা বিষয় ভাবা উচিৎ, তা হচ্ছে.. এই ছেলেটা তো আমার চেয়ে গরীব তাইনা? আর এর যদি সামর্থ থাকতো তাহলে তো সে আমার মত কলেজ বা মাদরাসার হোস্টেলে বসে বাপের টাকা উড়াতো। যেহেতু তার সামর্থ নাই এজন্যই তো সে আজ হাত পাতছে।
.
সম্ভব হলে মাঝেমধ্যে একটা কাজ করবেন, যখন কোনো গরিব ছেলেকে দেখবেন টাকা চাচ্ছে তখন একটু দূরে দাঁড়িয়ে তার মুখের দিকে তকিয়ে উপরের কথাগুলো ভাববেন। নিজের অবস্থার কথা একবার ভাববেন, আর তার সাথে এই ছেলেটার কথাটাও ভাববেন।
সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতায় অন্তরটা ভরে যাবে...
.
খুবই অসম্ভব হলে সামান্য একটা লিমিট নির্দিষ্ট করে নিতে পারেন, যেমনঃ আমি সপ্তাহে ১০টাকা দান করবো! অথবা, সোমবার এবং শুক্রবার আমি ৫টাকা করে দান করবো!
.
৫টাকা বা ১০টাকা কিন্তু খুব বেশি না, বিকেলে একাএকা চা-পানি খেতে বসলেও ৩০-৪০টাকার নিচে খরচ হয়না, আর সাথে ভাই-ব্রাদার থাকলে তো নিশ্চিত ৩অংকে উঠে যায়। আর এই ৫টাকা ১০টাকা খরচ করলে যা হবে.. আপনি দান করার ওপর অভ্যস্ত হয়ে যাবেন। পরে বেশি দান করলেও অন্তরে খুব বাধবে না...
..
খুব কষ্ট.. তাইনা?? ইশ! দঅঅশ টাকা দিয়ে দিব!! বিরাট ব্যাপার... :-(
..
আল্লাহ মাফ করুক
কিছুদিন আগে এই লেখাটার পক্ষে একটা হাদিস মনে পড়েছিল- রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহর নিকট প্রিয় আমল হচ্ছে সেটাই, যা সবসময় (দায়েমিভাবে) করা হয়, যদিওবা সেটা কম। (সহিহ মুসলিম, মুসনাদে আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারাক রহ.)
অর্থাৎ কম হোক, তবুও যদি কোন আমল আপনি লাগাতার দীর্ঘদিন করেন, সেটা আল্লাহর কাছে অনেক পছন্দের!
July 27, 2015
কাফের বলার ব্যাপারে সতর্ক হউন..
.
পর সংবাদ এই যে, বর্তমান সময়ে তাকফীর করার পরিমাণ ভয়াবহ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
একজন কালিমা পড়া মুসলমানকে কাফের বলা অথবা মুশরিক বলা যেন কোনো বিষয়ই না! খুব সহজেই আমরা বলে ফেলছি 'এটা কুফরি, ওটা শিরকি! ওতো কাফের! ওরা সব মুশরিক!'
আল্লাহর পানাহ! একটু সুস্থ বিবেকে ভাবুন শিরক কি এতই মামুলি বিষয়? ভাই আল্লাহকে ভয় করুন।
.
স্বয়ং আল্লাহ তাআলা বর্ণনা করছেন, হযরত লোকমান আঃ তার পুত্রকে বলেছেনঃ নিশ্চয় শিরক হচ্ছে মহা জুলুম! (সুরা লোকমান, আয়াত ১৩)
.
আল্লাহ তাআলা বলছেন, "নিশ্চয় আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে তার সাথে শিরক করে। আর এছাড়া বাকি সবকিছু চাইলেই মাফ করে দেন। আর যে আল্লাহর সাথে শিরক করে সে তো বড় অপবাদ দিল।" (সুরা নিসাঃ ৪৩)
.
আজ এত বড় একটা কথা আমরা কত সহজেই বলে ফেলছি,
অথচ আমরা কি বুখারী শরীফ খুলে দেখিনা?
.
"দাহহাক রহঃ থেকে বর্ণিত হয়েছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে কেউ একজন মুমিনকে লানত করলো, সে যেন তাকে হত্যা করলো। আর যে কেউ কোন মুমিন এর উপর কুফর এর অভিযোগ আনলো, সে যেন তাকে হত্যা করলো।” (বুখারী)
.
আল্লাহর রাসুল কত কঠোরভাবে সতর্ক করে গেছেন, আমরা তা বিলকুল ভুলতে বসেছি। আমরা খুব ভালোভাবে জানার পরেও এমনভাবে মুসলমানদের তাকফীর করছি যে (আল্লাহর পানাহ) মনে হচ্ছে রাসুল সাঃ এর কথার কোনো গুরুত্বই নেই! এজন্যই সেদিন দেখলাম এক কোন এক বইয়ে (!) বলা হয়েছেঃ যারা ইমামের পিছে সুরা ফাতিহা পড়েনা তারা কাফের! (নাউযুবিল্লাহ, আস্তাগফিরুল্লাহ)
আর আরেক মুফতি সাহেব এবং তার শিষ্যগণ তো সারাদিনই বলে, "যারা ভোট দেয়, যারা ভোটে দাঁড়ায় তারা সব কাফের! তারা যারা প্রচলিত এসব আদালতে বিচার চায়, যারা বিচার করে তারা সব কাফের! (নাউজুবিল্লাহ) একদল তো বলেই থাকে ৪ মাযহাবের ইমামদের অনুসরণ করা শিরক! (মানে ان الحكم الا لله টাইপের আরকি!) আল্লাহর কাছে এসব মানুষরুপি শয়তান থেকে পানাহ চাই।
.
কত বড় কথা! অথচ কি সহজভাবেই না বলে ফেলছে তারা। যে আল্লাহর ওপর ঈমান এনেছে, রাসুলকে নবী মেনে নিয়েছে তাকে কাফের বলার অধিকার কে দিল আপনাকে?
কুফর শিরক বিষয়গুলো কি এতই মামুলি? এভাবে পাইকারি হারে তাকফীর করতে থাকলে তো আস্তে আস্তে মানুষের মন থেকে শিরক শব্দটির প্রতি ঘৃনা মুছে যাবে, এবং এটাকে স্বাভাবিক মনে করতে শুরু করবে। এতে কোনো সন্দেহ নাই!
ভাই খুব ভালোভাবে লক্ষ্য করুন, গুরুত্বের সাথে স্বরণ রাখুনঃ
আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “যখন কোন ব্যক্তি তার ভাইকে ‘কাফের’ বলে সম্বোধন করে, তখন তাদের যেকোন একজন কাফের এ পরিণত হলো।”
(মুসনাদে আহমদ, মুসনাদে বাজ্জার, তাবারানী, বায়হাকী)
.
পরিশেষে ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল রহঃ এর ফাতওয়া লক্ষ্য করুনঃ
“তাকফিরীদেরকে কাফেরদের ন্যায় হত্যা করা, তাদের মধ্যকার আহতদেরকেও হত্যা করা, আর যদি তাদেরকে বন্দী করা যায়, তবে একজন কাফেরকে যেভাবে তাওবা করানো হয় তাকেও সেভাবে তাওবা করাতে হবে।” (আল মুগনি, ১০ম খন্ড)
.
অন্যায় তাকফীর এর মত নিকৃষ্ট ও জঘন্য অপরাধ থেকে যেন আল্লাহ আমাদের হিফাযত করেন।
আমীন..
-----------
পোস্টের ফেবু লিংকঃ https://facebook.com/thealmahmud/posts/850292021726996
-----------
কমেন্ট থেকে-
সেটা অভিজ্ঞ আলেমরা যাচাই করে সিদ্ধান্ত দিবেন, তারপর অন্যরা বলবেন। আগেই সাধারণ জনগণের হাতে এটা ছেড়ে দেয়া যাবেনা..
July 23, 2014
পরস্পর ফিসফিসানির ব্যাপারে ইসলামের বিধান
""এই কানাঘুষা তো শয়তানের কাজ; মুমিনদেরকে দুঃখ দেয়ার দেয়ার জন্যে। তবে আল্লাহর অনুমতি ব্যতীত সে তাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না। আর মুমিনদের উচিত আল্লাহর উপর ভরসা করা।""
(সুরা মুজাদালাহ, আয়াত ১০)
এছাড়া বুখারি, মুসলিম এবং আবু দাউদ শরিফে এব্যাপারে হাদিস বর্নিত হয়েছে।
যেমন, বুখারি এবং মুসলিমে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাঃ থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ
""যেখানে তোমরা তিন জন একত্রিত সেখানে দুই জন তৃতীয় জনকে ছেড়ে পরস্পরে কানাকানি ও গোপন কথাবার্তা বলবে না, যে পর্যন্ত আরও লোক না এসে যায় ।""
আবু দাউদ শরিফের হাদিস, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ""তিন ব্যক্তির মধ্য থেকে একজনকে বাদ দিয়ে দুজনে যেন কানাঘুষা না করে, কেননা ইহা তৃতীয় ব্যক্তির মাঝে দুশ্চিন্তার সৃষ্টি করবে।""
ব্যাক্তিগত কিছু বাজে অভিজ্ঞতার দরুণ আমি এই জিনিসটা একদমই সহ্য করতে পারিনা। এমনও হয়েছে কখনো, দুজনের ফিসফিসানির আওয়াজ শুনে আমি চিল্লায়া উঠছিঃ what's up? ফাইজলামি পাইছিস নাকি?
আল্লাহ আমাদের সকলকে এই কবিরাহ গুনাহটি থেকে হেফাজত করুন ।
আ-মি-ন
---------
ফেবু লিংকঃ https://facebook.com/thealmahmud/posts/656911094398424