এসব শিশুরা নিজ শায়েখদের অন্ধ তাকলিদ করে অন্য মুসলিমদেরকে খারেজি বলে গালি দেয়, অথচ জানেও না যে, নিজের মধ্যেই খারেজি আকিদার বিষ ঢুকে আছে। ছোট্ট একটা কমেন্ট, কিন্তু এই কমেন্টটা মাদখালিদের ইমান-আকিদার ভয়াবহ অনেকগুলো সমস্যার দলিল।
---
১. এরা খারেজিদের মত ইমান ও আমলকে আলাদা করতে পারে না। ফলে যেকোনো ধরনের কাজের নাজায়েজ জন্যই তাকফির করে বসে। হারাম কাজকে তো বটেই, মাকরুহ, এমনকি সাধারণ অনুচিত কাজকেও কুফর-শিরক বানিয়ে ফেলে।শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বা মুসান্নেফে বাশারি (হাদা.)দের লেকচারে আপনারা এগুলো দেখেছেন। বিষয়টা নিয়ে সবাই হাসাহাসি করলেও এটা প্রমাণ যে, এরা কত সাধারণ কারণে মানুষের রক্ত হালাল করে ফেলতে পারে।)
২. ঈমানের শাব্দিক অর্থ ও সংজ্ঞা স্পষ্ট। সাহাবাদের মজলিসে নবীজি ঈমান কি শিখিয়েছেন, জিবরীল আমিন সেখানে উপস্থিত থেকে সত্যায়ন করেছেন। এরপর কোনো ফিরকা এসে নতুন করে ঈমানকে ডিফাইন করতে চাইলে বুঝতে হবে এরা ইসলামকে কাটাছেড়া করতে করতে অনেকদূর পৌঁছে গেছে।
৩. নবীজির জন্য কোন ভালোবাসা মিথ্যা, কোনটা সত্য- এটার ব্যাপারেও তারা এবিষয়ক এতগুলো হাদিস উপেক্ষা করে নিজেদের চিন্তাধারার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ একটা মনগড়া স্কেল বানিয়ে নিয়েছে। একেতো শরঈ দলিলের সাথে সাংঘর্ষিক, এরপর সুস্থ মস্তিষ্কও এরকম চিন্তা করতে পারে না।
৪. নামাজের মাসায়েল ক্লিয়ার করি, আহলুস সুন্নাহর ইমামদের কথা যদি আপনার কাছে মূল্যহীন মনে হয়, সালাফি আলেম ছাড়া আর কাউকে যদি আলেম মনে না হয়, তাহলে আসেন যে হাদিসের জন্য তাকফির করছেন সেটাই দেখি,
হাদিসের ভাষ্য হল "নামাজ ছেড়ে দেয়া" - এখানে ছেড়ে দেয়া মানে "ছেড়ে দেয়া।" মাঝে মাঝে না পড়া না। নিয়মিত না পড়া না। হাদিসে যা আছে, এটাই রাখেন, নিজের কথাকে হাদিস বানাইয়েন না।
এরা "নামাজ ছেড়ে দেয়া" বিষয়টার তাহরিফ (বিকৃত) করে বানিয়েছে "নিয়মিত নামাজ না পড়া"। আচ্ছা, বাংলা শব্দ বোঝেন না? "খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দেয়া" "দোকান ছেড়ে দেয়া" "জব ছেড়ে দেয়া" এগুলার মানে কী?
- অমুক ব্যক্তি মরার দুইদিন আগে খানাদানা ছেড়ে দিয়েছিল। মানে কি একবেলা করে খাচ্ছিল?
- আমার দুইটা দোকান ছিল, ছোটটা 'ছেড়ে দিলাম'। মানে কি একদিন পরপর বসি?
- সিল্ক ফ্যাক্টরির জবটা 'ছেড়ে দিলাম'। মানে কি সপ্তাহে একদিন করে কাজ করি?
৫. আহলুস সুন্নাহর ইমামদের বুঝ হচ্ছে, কেউ যদি নামাজ পড়তে অস্বীকার করে, মানে স্থায়ীভাবেই ছেড়ে দিল, আর পড়বে না। তাকে ফরজ বিষয় অস্বীকার করার জন্য তাকফির করা হবে। একদিন বা এক সপ্তাহ পড়েনি, সেটা তো অবহেলা করেছে, অপরাধ করেছে, সেজন্য তাওবা করবে। নামাজগুলো কাজা করবে। এর বাইরে নজদি আলেমদের মত যেটা উনাদের মত হিসেবেই রাখেন, বড়জোর চাইলে আপনার মাজহাব মানা লোকদের ওপর এপ্লাই করতে পারেন। অন্যদের ওপর চাপাবেন না।
৬. আপনার মনে হতে পারে, এরা বোধহয় নামাজকে অনেক গুরুত্ব দেয়। তাই এরকম কথা ভুলে বলে ফেলেছে। জ্বি না। এটা তাদের রাজনৈতিক টুলস। নামাজকে উইয়েপনাইজ করছে তাদের শাসকপুজা আর অথর্বতার অপরাধ ঢাকতে। আপনি হাদিস অস্বীকারকারী অনেক শয়তানকে দেখবেন, তারা বলে "কোরআনের বিধানগুলোই সব মানতে পারলাম না, হাদিস কখন মানবো!!" এরা যেমন কোরআন মানার শ্লোগান উইপনাইজ করেছে। এই মাদখালিদের বিষয়টাও একই।
৭. মজার ব্যাপার হল, আম মুসলিমদের ব্যাপারে এদের আচরণ হল খারেজিদের মত, পান থেকে চুন খসলেই তাকফির। আর জালিম শাসক ও সংশ্লিষ্টদের ব্যাপারে আচরণ হল, মুরজিয়াদের মত। ইসলামের যতই অবমাননা করুক, কিছুই বলা যাবে না। এদের মধ্যে দুই প্রান্তিক ফিরকার চমৎকার কম্বিনেশন দেখা যায়। বাস্তবে এরা এই শাতিমে রাসুল প্রসঙ্গে নুন্যতম স্তরের ঈমানদারির প্রমাণ দেখাতেও ব্যর্থ হয়েছে। এবং খুব সম্ভবত আগামীতেও অনেকেক্ষেত্রে এরা পুরা মুসলিম উম্মাহর বিপরীতে দাঁড়াবে।
----
ইসলামের পক্ষে থাকুন। মুসলিমদের পক্ষে থাকুন।
সালাম!
0 comments:
Post a Comment