Showing posts with label উম্মে আব্দুল্লাহ. Show all posts
Showing posts with label উম্মে আব্দুল্লাহ. Show all posts

May 20, 2019

রুকইয়াহ ও রমাযান

লিখেছেন- উম্মে আব্দুল্লাহ

[ক]
আলহামদুলিল্লাহ। রব্বুল আ'লামীন আমাদের আরো একটা রমাযান লাভের তৌফিক দিলেন। এই বরকমতময় মাসটাতে কম বেশি সবাই ইবাদাতে সময় কাটাতে চান। যে যার অবস্থান থেকে সর্বচ্চ চেষ্টা করেন সময়গুলোকে কাজে লাগানোর। তো সেই হিসেবে অনেকেই ভাবেন এই রমাযানে রুকইয়াহ না করে এই সময়টা বেশি বেশি ইবাদাত, কুর'আন খতমের ব্যাপারে ফিকির করাই উত্তম। 
যখন কিনা এই মাসটাতেই আরো বেশি করে রুকইয়ার ফিকির করা উচিত ছিলো। কারন,


এক, এইটা বরকতময় মাস।
দুই, এইসময় রব্বুল আ'লামীন শয়তানকে শিকলবন্দী করে রাখেন।
তিন, এই মাসটাতে অন্যান্য সময়ের তুলনায় ব্যস্ততা কম থাকে।
চার, এই সময় সওয়াব সত্তরগুণ বৃদ্ধি করে দেয়া হয়।
পাঁচ, সাধারণত এই সময়ে গুনাহ কম হয়।
সুতরাং স্বাভাবিকভাবেই এই মাসে রুকইয়াহর প্রভাবও বেশি হবে ইনশাআল্লাহ।

[খ]
তবে যেহেতু, রমাযানে সবাই কুরআনুল কারীমের সাথে বেশি সময় কাটাতে চান। সেক্ষেত্রে কিছু কাজ করা যেতে পারে__
- এক্ষেত্রে সহজ এবং সুবিধাজনক পদ্ধতি হলো সাতদিনের ডিটক্স করার নিয়াত করে ফেলা। আর আশা রাখুন এই সাতদিনে আপনি শিফা লাভ করবেনই ইনশাআল্লাহ। এই রহমতের মাসে আপনি তাঁর রহমতে সিক্ত হবেন ইনশাআল্লাহ।
এর সাথে সাথে আপনার প্রতিদিনের ইবাদাতের পরিমাণটা একটু বাড়িয়ে নিন।
যেমন, আপনি যদি প্রতিদিন এক পারা করে কুর'আন তিলাওয়াতের কথা ভাবেন। সেক্ষেত্রে রুকইয়ার দিনগুলোতে চেষ্টা করুন দেড়/দুই পারা তিলাওয়াত করতে।
- এরসাথে প্রতিদিনের যিকর-আযকারের মধ্যে ইস্তেগফার এবং দরুদ শরীফের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়া।।
- গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা খুবই সহজ এই মাসটাতে। সুযোগটাকে কাজে লাগান।।
- বেশি বেশি দু'আ করা। অনেক বেশি। বিশেষ করে দু'আ কবুলের সময়গুলোতে গুরুত্বের সাথে দু'আ করা।
- আর সাধ্যানুযায়ী দান-সাদকা করা..। যেটা পরিমাণে অল্প হলেও নিয়মিত হবে। আর সাদকায়ে জারিয়ার ব্যবস্থা করা গেলে তো আরও ভাল।

[গ]
অনেকেই বলেন, ডিটক্সে কি রুকইয়াহ শুনবো??
এক্ষেত্রে চেষ্টা করুন রুকইয়াহ না শুনে রুকইয়াহর আয়াত তিলাওয়াতের। এখন প্রশ্ন আসতে পারে কি তিলাওয়াত করবো?
উত্তর- চেষ্টা করুন সুরা বাকারা তিলাওয়াত করতে। প্রতিদিন সম্পূর্ণটা না হলেও অন্তত কিছু অংশ (যেমন: এক তৃতীয়াংশ) তিলাওয়াত করুন। আর প্রতিদিন এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখুন।
পাশাপাশি যাদের যে সমস্যা, সমস্যা অনুসারে সেই আয়াতগুলো পড়া। যেমন কারো যদি সিহরের সমস্যা থাকে তাহলে সিহরের আয়াত, জিনের সমস্যার ক্ষেত্রে আয়াতুল হারক ইত্যাদি।
আর যদি না বুঝেন কি সমস্যা অথবা বেশি কনফিউশন থাকে, তাহলে শিফার নিয়াতে রুকইয়ার কমন আয়াত পড়তে পারেন।
আরেকটা প্রশ্ন হল, ডিটক্সে গোসলের পর পানি আর মধু-কালোজিরা খেতে হয়, রোজা রেখে এটা কি করব?
উত্তর- এটা সাহরির সময়ের একদম শেষের দিকে খাবেন। বাকি অন্যান্য কাজ, তেল ব্যবহার করা, গোসল করা আগের নিয়মেই।
রব্বুল আ'লামীন আমাদের সকলের পেরেশানি দূর করুন। এই বরকতময় মাসটাকে কাজে লাগানোর তৌফিক দিন, আর যারা অসুস্থ আছেন তাদের শিফায়ে কামেলা দান করুন।। আমিন ।।
Share:

May 15, 2019

বদনজর এবং প্রচলিত কুসংস্কার...

- উম্মে আব্দুল্লাহ

ছোট বাচ্চাদের বদনজর থেকে বাঁচানোর জন্য অনেকেই কালো টিপ ব্যবহার করেন। এতে নাকি বাচ্চার নজর লাগে না। অনেকে আবার আঙ্গুল কামড়ে দেন! আবার নজর লাগলে তা কাটানোর জন্য উল্টাপাল্টা কাজ করেন। কেউ কেউ হিন্দুয়ানী প্রথায় টাকা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে নজর কাটান। কেউবা মরিচ, পানপাতার দিয়ে। আর অদ্ভুত হলেও সত্য যে, এগুলোতে কাজ হয়। কারন এতে থাকে শয়তানের সাহায্য এবং সূক্ষ্ম ধোঁকা।।
Image may contain: text
এখন প্রশ্ন আসতে পারে আচ্ছা এইগুলো নাকি ভুলভাল পদ্ধতি, তাহলে ওইসব করার পরে বাচ্চার সমস্যা দূর হয় কিভাবে??
আগেই বলেছি এতে শয়তানের সূক্ষ্ম ধোঁকা ও সাহায্য থাকে। শয়তান আপনার ঈমান নিয়ে খেলার চেষ্টা করছে। আপনাকে ধোঁকা দিচ্ছে...
আপনাকে দিয়ে ভুল কাজ করাতে চাচ্ছে। শয়তান নিজেই সমস্যা সৃষ্টি করছে। আর আপনি যখন তার পছন্দের কাজ করছেন তখন সে আর সমস্যা করছেনা। ফলে আপনি ভাবছেন কাজ যেহেতু হচ্ছে, তাহলে এটাই ঠিক! আর এইভাবেই চলছে মরিচ, পানপাতা আর শয়তানের খেলা। এইবার বুঝলেন তো আপনি যাকে সমাধান ভাবছেন সেইটাই আসলে সমস্যা...
তাই শয়তানের ধোঁকায় না পড়ে কুর'আন সুন্নাহ মেনে চিকিৎসা করুন। শিফার পাশাপাশি সওয়াবও মিলবে ইনশাআল্লাহ।
এবার একটা হাদিস জানা যাক—
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ মন্ত্রপাঠ, তাবিজ/কবচ ও বশ করা শিরক। একথা শুনে (উনার স্ত্রী) যয়নব রা. বলেন: তুমি এ কি বলছ, আল্লাহর শপথ! আমার চোখে ব্যথা হলে আমি একজন ইয়াহূদীর কাছে যেতাম, সে মন্ত্র পাঠের পর আমার চোখে ফু দিলে ব্যথার উপশম হতো। তখন আবদুল্লাহ রা. বলেন, এতো শয়তানের অপকর্ম ছিল, সে নিজেই চোখে ব্যথা দিত, আর যখন ঐ ইয়াহূদী যখন তাতে ফু দিত, তখন সে বিরত থাকতো। তোমার জন্য তা-ই পাঠ করা উচিত ছিল, যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম করতেন। আর তা হলো:
أَذْهِبِ الْبَاسَ رَبَّ النَّاسِ وَاشْفِ أَنْتَ الشَّافِي لاَ شِفَاءَ إِلاَّ شِفَاؤُكَ شِفَاءً لاَ يُغَادِرُ سَقَمًا
হে মানুষের রব! যন্ত্রণা দূর করে দিন, আরোগ্য দান করুন, আপনিই আরোগ্যদাতা, আপনার দেয়া আরোগ্য ব্যতীত কোন আরোগ্য নেই, (এমন আরোগ্য দিন) যার পরে আর কোন রোগ বাকী থাকে না।
[আবু দাউদ:৩৮৪৩]
আবারো মনে করিয়ে দেই, আপনি যে কাজগুলো চিকিৎসা, ঝাড়ফুঁক কিংবা আমল হিসেবে করছেন তার কিন্তু কোন ভিত্তিই নেই। এইটা একধরনের ধোঁকা। যদি থাকতো তাহলে তো কুর'আন, হাদীসের কোথাও না কোথাও তো লিখা থাকতো।
নাহলে কোন গ্রহণযোগ্য বুজুর্গ অন্তত এসব করতে বলতেন। কিন্তু না সেইটাও কেউ বলেন নি।
সুতরাং বোঝা যাচ্ছে এইটাও সমাজে প্রচলিত কুসংস্কারের একটি।।
তাই এইগুলো বাদ দিয়ে নজর লাগলে নিমোক্ত দুয়াগুলো বাচ্চার মাথায় হাত রেখে পড়বেন, আর পড়া শেষ হলে ফুঁ দিবেন—
أُعِيْذُكُمْ بِكَلِمَاتِ اللّٰهِ التَّامَّةِ ، مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ ، وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لَامَّةٍ
উঈযুকুম বিকালিমাতিল্লাহিত্তাম্মাহ । মিন কুল্লি শাইতানিন ওয়া হাম্মাহ । ওয়ামিন কুল্লি আঈনিন লাম্মাহ ।
بِاسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ مِنْ كُلِّ شَىْءٍ يُؤْذِيكَ مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ اللَّهُ يَشْفِيكَ بِاسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ
বিসমিল্লাহি আরকিক মিন কুল্লি শাইয়িন ইউ'যিক, ওয়া মিন শাররি কুল্লি নাফসিন আউ 'আঈনি হাসিদিন আল্লাহু ইয়াশফিক । বিসমিল্লাহিল্লাহি আরকিক ।
بِاسْمِ اللَّهِ يُبْرِيكَ وَمِنْ كُلِّ دَاءٍ يَشْفِيكَ وَمِنْ شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ وَشَرِّ كُلِّ ذِي عَيْنٍ
বিসমিল্লাহি ইউবরিকা ওয়ামিন কুল্লি দা-ইন ইয়াশফিক ওয়ামিন শাররি হাসিদিন ইযা হাসাদা ওয়া শাররি কুল্লি যী 'আঈন ।
اللَّهُمَّ رَبَّ النَّاسِ أَذْهِبِ الْبَاسَ، اشْفِهِ وَأَنْتَ الشَّافِي، لاَ شِفَاءَ إِلاَّ شِفَاؤُكَ، شِفَاءً لاَ يُغَادِرُ سَقَمًا
আল্লাহুম্মা রাব্বান নাস আযহিবিল বা’স । ইশফিহি ওয়া আনতাশ শাফি । লা শিফাআ ইল্লা শিফাউক। শিফাআন লা ইউগাদিরু সাকামা ।
আর অবশ্যই প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় নিম্নোক্ত দুয়াটি বেশ কয়েকবার পড়ে ফুঁ দিবেন____
أُعِيْذُكُمْ بِكَلِمَاتِ اللّٰهِ التَّامَّةِ ، مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ ، وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لَامَّةٍ
উঈযুকুম বিকালিমাতিল্লাহিত্তাম্মাহ । মিন কুল্লি শাইতানিন ওয়া হাম্মাহ । ওয়ামিন কুল্লি আঈনিন লাম্মাহ ।
সাথে তিনকুলও পড়ে নিবেন। আর যাদের বাচ্চার এই ধরনের সমস্যা বেশি হয় উনারা চাইলে তেল, পানি পড়ে অই পানি দিয়ে গোসল করাতে পারেন, আর তেল ব্যবহার করতে পারেন সাত দিন।।
এতে বেশ ফায়দা হবে ইনশাআল্লাহ আর নিয়মিত মাসনুন আমলগুলো সবসময়ই চালিয়ে যাবেন।
রব্বুল আ'লামীন আমাদের বাচ্চাদেরকে সকল খারাবি থেকে হেফাজত করুন, আর আমাদের সঠিক বুঝ দান করুন। জানার ও মানার তৌফিক দিন। (আমীন)
Share:

April 30, 2019

কমন রুকইয়াহ সাজেশন

- উম্মে আব্দুল্লাহ
(রুকইয়াহ নিয়ে যত কথা - ৪)
_______________
যারা রুকইয়াহ করছেন বা করতে চাচ্ছেন বা রুকইয়াহ গ্রুপে পোস্ট করেছেন এখনো এপ্রুভ হয়নি। সবার জন্যই পোস্টটি উপকারী হবে ইনশাআল্লাহ।।
[ক]
প্রাথমিক নির্দেশিকা...
_____
👉 রুকইয়াহ শুরুর পুর্বে রুকইয়াহ বিষয়ে ধারনা নিন।। এ সম্পর্কে আক্বীদা ঠিক করে নিন। আবারো মনে করিয়ে দেই, রুকইয়াহ কোন যাদুর চেরাগ না। এইটা একটা চিকিৎসা পদ্ধতি। সুন্নাহ থেকে উৎসারিত। যা দ্বারা আপনার আত্মিক ও শারীরিক সমস্যার শিফা মিলবে ইনশাআল্লাহ।
যদি সেটা না পান, তাহলে বুঝবেন সমস্যা আপনার ইয়াক্বীনে অথবা মেহনতে। রুকইয়াতে কাজ হচ্ছে না— এমন বিশ্বাস রাখা দূরের কথা চিন্তাতেও আনবেন না, সবকিছু ঠিক থাকলে ফায়দা হবেই।
👉 ওযু - গোসল, সালাত, পর্দাসহ সকল ফরজ হুকুম আহকাম জেনে নিবেন। আর সুন্নাহ পালনে সিরিয়াস ও যত্নবান হবেন। এছাড়া হায়েজ - নিফাস, সাদা স্রাবসহ সকল বিষয়ে মাস'আলা-মাসায়েল জেনে নিন।
👉 রুকইয়াহ শুরুর আগে ফরজ গোসল সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন। অনেকেই এই ব্যাপারে জানেন না বা গুরুত্ব দেন না। কিন্তু এইটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি আগে না করে থাকেন তাহলে আজই করে নিন। সাথে দুই রাকাত সালাত আদায় করে তওবা করে নিন।।
👉 যারা গ্রুপে পোস্ট দিয়েছেন এখনো পোস্ট এপ্রুভ হয়নি। তারা ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করুন। আর পোস্ট এপ্রুভ না হওয়া পর্যন্ত বদনজরের রুকইয়াহ করুন। সিহর বা জ্বিন সংক্রান্ত সমস্যা থাকলেও সম্ভব হলে আগে বদনজরের রুকইয়াহ করুন। এতে অন্যান্য রুকইয়াহ ভালো ফায়দা দিবে ইনশাআল্লাহ। বদনজরের রুকইয়াহ ঠিকঠাকমত করতে পারলে আল্লাহর রহমতে ৫০ থেকে ৮০/৯০% সমস্যা চলে যায়। তাই আগে বদনজরের রুকইয়াহ করুন। আর আপডেটগুলা নোট করুন।
[খ]
কমন রুকইয়াহ....
___
এক. ⁦পিরিয়ড বা মেয়েলী সমস্যায় ডিটক্স করুন। ফায়দা পাবেন ইনশাআল্লাহ। সাথে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারও দেখিয়ে নিবেন। পরিষ্কার -পরিচ্ছন্নতা আর খাবার-দাবারের প্রতি যত্নশীল হবেন। আর হ্যা এই সময়টার আপডেট অবশ্যই নোট করবেন। আর পরবর্তীতে সাজেশন নেয়ার জন্য এইগুলো যোগ করুন।
দুই. সিহরের রুকইয়াহর ক্ষেত্রে চেষ্টা করুন পুরো পরিবারের উপর রুকইয়াহ করার। পরিবার রাজি না থাকলে পানি বা খাবারে রুকইয়াহর আয়াত পড়ে দম করে খাওয়াবেন।
তিন. বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ভারি রুকইয়াহ না করাই উত্তম।
বাচ্চাদের জন্য সুরা ফাতিহা, তিন কুল এবং আয়াতে শিফাই যথেষ্ট হবে ইনশাআল্লাহ। আর মাসনুন আমলের প্রতি গুরুত্ব দিবেন।
চার. চেষ্টা করুন হাতের কাছে রুকইয়াহ ওয়াটার, তেল, মধু এইসব রাখতে। যেন প্রয়োজনের সময় ব্যবহার করতে পারেন।
এছাড়া রুকইয়াহ ইফেক্ট সামলানোর জন্য পানি রেডি রাখা। এক্ষেত্রে সুরাতুল ফাতিহা সাতবার, আয়াতে শিফা ৩/৭ বার, তিন কুল ৩/৭ বার, দরুদ শরীফ ৩/৭ বার পড়ে দম করুন। সাথে খেজুরও রাখতে পারেন। ভালো ফায়দা দিবে ইনশাআল্লাহ।
পাঁচ. ব্যথা, ঠান্ডা/এলার্জি, বদনজর এইগুলোর আপনার প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে রুকইয়াহ কিন্তু খুবই ফায়দাময় আলহামদুলিল্লাহ।
এই ধরনের সমস্যায় তাৎক্ষণিক রুকইয়াহ করতে পারেন। ফল পাবেন ইনশাআল্লাহ।
ছয়. 'রাতে জ্বিনের সমস্যা'য় যারা ভুগছেন তারা শুধু ঘুমানোর সময় না, সবসময় অযু অবস্থায় থাকার চেষ্টা করুন।। বেশি থেকে বেশি ইস্তিগফার করুন। দরুদ শরীফ পাঠ করুন। সাথে আট সুরা ও সুরা যিনার রুকইয়াহ শুনুন।। আর এই সমস্যার জন্য ডিটক্সও করে ফেলতে পারেন। ফায়দা হবে ইনশাআল্লাহ।
সাত. ডিটক্সের ক্ষেত্রে সাতদিনই সুরা বাকারার তিলাওয়াত করার চেষ্টা করুন। তা সম্ভব না হলে অন্তত প্রতিদিন ২/৩ দিনে সম্পূর্ণ বাকারা তিলাওয়াত করুন। আর সাথে প্রতিদিন তিলাওয়াতের অডিও শুনুন।
আট. সাধারণ অসুস্থতার ক্ষেত্রে সকালে আয়াতে শিফা ও সুরা ফাতিহা ৭ বার পড়ে পানি খাবেন।।
সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। আর চেষ্টা করুন কুর'আন, হাদীসে উল্লেখিত চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ এবং উপাদান ব্যবহার করতে। যেমন: মধু-কালোজিরা, যাইতুনের তেল, খেজুর ইত্যাদি।।
নয়. সম্ভব হলে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ৭ টা আজওয়া খেজুর খান। আজওয়া না হলেও অন্য যে কোন খেজুর খেতে পারেন। যাদের ঘুমের সমস্যা আছে তারা ঘুমানোর আগে মধুর শরবত বা দুধের সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন, উপকার পাবেন ইনশাআল্লাহ।
দশ. পড়াশুনা ও ইবাদাতে অমনোযোগীতার জন্য অন্ততপক্ষে ২ সপ্তাহ বদনজরের রুকইয়াহ করুন।
ইনশাআল্লাহ ফায়দা পাবেন।
এক্ষেত্রে (১৬ মিনিটের অই রুকইয়াহ) শুনতে পারেন। আর প্রত্যেক নামাজ শেষে তাসবীহে ফাতেমি পড়ুন। এরপর -
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللّٰهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ
উচ্চারণ: লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্‌দাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু, ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া হুয়া ‘আলা কুল্লি শাই’ইন ক্বাদীর।
অর্থ: একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই, রাজত্ব তাঁরই, সমস্ত প্রশংসাও তাঁর, আর তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান।
এগারো. ব্যথার জন্য ব্যথার রুকইয়ার আয়াত পড়ে অলিভওয়েল/যাইতুনের তেল রেখে দিতে পারেন। যেকোন ধরনের ব্যথায় এইটা খুবই উপকারী আলহামদুলিল্লাহ।।
[গ]
গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা...
🌿 রুকইয়াকে সকল সমস্যার সমাধানের মাধ্যম হিসেবে নিবেন না। সকল সমস্যা ও প্রয়োজন রবকে বলুন। সলাতের মাধ্যমে সাহায্য চান। বেশি বেশি দু'আ করুন। সাথে অল্প হলেও সামর্থ্য অনুযায়ী নিয়মিত দান-সাদাকা করুন।
🌿 নিজের জবানকে যিকরে ব্যস্ত রাখুন। বেশি বেশি করে ইস্তেগফার আর দরুদ শরীফ পাঠ করুন। একটু একটু ফুরসত পেলেই যিকর করতে থাকুন...। জীবনে আমূল পরিবর্তন চলে আসবে।
⁦⁦⁦🌿 সকাল-সন্ধ্যা এবং ঘুমের সময়ের মাসনুন আমলগুলো গুরুত্বের সাথে করুন।। খারাপ কিছুর আশংকা করলে বা কুকুরের ডাক শুনলে শয়তানের থেকে পানাহ চান। তা'আউয পড়ুন। এছাড়া প্রত্যেক ফরজ সালাতের পর পূর্বে বলা "লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু.. দোয়াটা ১০ বার করে পড়ুন।"
🌿 মনে রাখবেন রুকইয়াহ করা মানে শুধু রুকইয়াহ শুনা না। রুকইয়াহর জন্য উত্তম হলো তিলাওয়াত করা। যদি আপনি একান্তই অপারগ তখন অডিও শুনুন। নাহলে তিলাওয়াত করুন। এতে বেশি ফায়দা হবে। আর যারা কুর'আন পড়তে পারেন না, তারা দ্রুত শিখে নিন। পারিনা বলে হাত পা গুটিয়ে বসে থাকবেন না প্লিজ। আর যারা বলেন পড়া শুদ্ধ না, দ্রুত পড়তে পারিনা তাদের বলছি। ভয় বা অজুহাত না দিয়ে চেষ্টা করুন শুদ্ধভাবে তিলাওয়াত করার। আপনার তিলাওয়াত আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। আপনি যদি নাই ই চেষ্টা করেন তাহলে ঠিক হবে কীভাবে!!
🌿 অনেকের ধারনা নিজে নিজে রুকইয়াহ করলে ফায়দা হবে না। কিংবা কম হবে। অমুকের কাছেই যেতে হবে। এইটা-ওইটা করতে হবে। নাহলে ঠিক হবে না। এইসব ধারনা থেকে বেঁচে থাকুন। যে কেউই রুকইয়াহ করতে পারেন। নিজেই নিজের রুকইয়াহ করুন। এইটাই অধিক উত্তম।।
তবে প্রফেশনালদের একটা ব্যাপার হচ্ছে, তারা এ বিষয়ে অভিজ্ঞ তাই সমস্যা আইডেন্টিফাই করে সে মোতাবেক চিকিৎসা দিতে পারে। আর রুগীর অবস্থা বুঝে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারে। বাকি কোন বিশেষ ব্যক্তির প্রতি না। আল্লাহ তা'আলার কালামের উপর বিশ্বাস রাখুন।।
Share:

সাদাস্রাব (white discharge) সমস্যা প্রসঙ্গে...

- উম্মে আব্দুল্লাহ
[ক]
সাদাস্রাব নিয়ে আমাদের মধ্যে একটা ভুল ধারনা কাজ করে। তা হচ্ছে অনেকে সাদাস্রাবটাকেই অস্বাভাবিক মনে করেন। এইটাকে রোগ হিসেবে ধরে অশান্তিতে ভুগেন।
কিন্তু না পিরিয়ডের মত এইটাও একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা বলেন, সাদাস্রাব না হওয়াটাই বরং অস্বাভাবিক ব্যাপার।
তবে যদি মাত্রাতিরিক্ত সাদাস্রাব হয় সাথে দুর্গন্ধ, চুলকানি, রং পরিবর্তন হয়ে যায় তাহলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।
এছাড়া স্বাভাবিক থাকলে ইনশাআল্লাহ দুশ্চিন্তার কিছু নেই।
আর হ্যাঁ সাদাস্রাবের মাত্রা কমবেশি হতে পারে বিশেষ কিছু মুহুর্তে। এতেও ভয়ের কিছু নেই।
তবুও যদি আপনার অস্বাভাবিক মনে হয় তাহলে আপনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে পারেন।
[খ]
সাপোর্ট গ্রুপে দেখলাম সাদাস্রাব নিয়ে অনেক প্রশ্ন আসছে। অনেকে আমল, রুকইয়াহ চাচ্ছেন। তাদের উদ্দেশ্যে বলি_____
আপনার যদি মনে অস্বাভাবিক মনে হয় তাহলে আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সেই মোতাবেক চলুন। পাশাপাশি নিজের খাদ্যাভ্যাস,  পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে সচেতন হোন। পরিমিত পরিমানে পুষ্টিকর খাবার খান।
অনেকে আবার এই সময়ে সাদা জিনিস যেমন ডিম, দুধ খেতে নিষেধ করেন। এইটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। বরং এ সময় আমিষ ও ভিটামিন যুক্ত খাবার ও প্রচুর  পরিমানে পানি খাওয়ার অভ্যাস করুন।
এছাড়া পিরিয়ডের সময় কাপড়/প্যাড/টিস্যু ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করুন।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় মেয়েরা একটা প্যাড দীর্ঘ সময় ব্যবহার করেন। এইটা ক্ষতিকর।
প্রতি ৬ ঘন্টায় অবশ্যই পরিবর্তন করুন।
এছাড়াও নিজের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করুন। নিজের প্রতি যত্নবান হোন।
[গ]
এখন প্রশ্ন আসতে পারে সবই করেছি তবুও কমছে না। তাহলে বলবো এইগুলার পাশাপাশি আপনি রুকইয়াহ করতে পারেন। তবে অবশ্যই উপরিউক্ত বিষয়গুলো ফলো করার পাশাপাশি রুকইয়াহ চালিয়ে যাবেন। এক্ষেত্রে একটা কথা বলে রাখি। যাদের "রাত্রীতে জ্বীনের সমস্যা" জনিত বিষয় আছে। উনাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা বেশি হতে পারে। তবে ঘাবড়ানোর কিছু নেই।
ইয়াক্বীনের সাথে নিয়মিত রুকইয়াহ করলে সমস্যা চলে যাবে ইনশাআল্লাহ। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে ধারাবাহিতা বজায় রাখতে হবে।
-নামাজ, পর্দা, মাসনুন আমলসহ সকল বিষয় গুরুত্বের সাথে পালন করবেন।
- আর সমস্যা সমাধানের জন্য রব্বুল আ'লামীনের কাছে বেশি থেকে বেশি দু'আ করবেন।
[ঘ]
সাধারণ নির্দেশনা :
১. প্রথমে ৩/৭ দিন বদনজরের রুকইয়াহ করবেন। তবে সাতদিন করাটাই উত্তম।
এক্ষেত্রে একটা কথা বলে রাখি। অনেকেই দায় এড়ানো রুকইয়াহ শুনেন শুধু। মনোযোগ দেয়া, রুকইয়ার গোসল করা— দুইটার ব্যাপারেই গুরুত্ব দেন না। এমনটা করবেন না প্লিজ। চেষ্টা করুন সকল কাজ গুরুত্বের সাথে করার। অনেকে বলেন ঠাণ্ডাজনিত সমস্যার জন্য গোসল করা সম্ভব হয় না। এক্ষেত্রে আপনি গরম পানি ব্যবহার করুন।  কোন সমস্যা নেই। গোসল শেষে এক কাপ আদা চা কিংবা কফি; যেটা আপনার পছন্দ খেতে পারেন। অনেকসময় বদনজরের গোসল করার উছিলাতেও ঠান্ডা সমস্যা কন্ট্রোলে থাকে আলহামদুলিল্লাহ।
একান্তই যদি সম্ভব না হয়। তাহলে অন্তত রুকইয়ার পানি দিয়ে অযু করুন। তবে খেয়াল রাখবেন একান্তই না পারলে এটা করবেন। নাহলে গোসলই করবেন।
২. সারাদিনে অন্তত একবার সময় করে কোন ক্বারির "কমন রুকইয়াহ / সাধারণ রুকইয়াহ" শুনবেন এই সমস্যা ভালো হওয়ার নিয়াতে। আর রাতে অবশ্যই "রুকইয়াহ যিনা" শুনবেন। সম্ভব হলে রুকইয়া যিনা একাধিকবার শুনুন। (লিংক কমেন্টে পাবেন)
৩. প্রতিবার ফরজ নামাজ শেষে
"লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা-শারীকালাহ, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হ্ামদ, ওয়াহুওয়া 'আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বদীর" দুয়াটা দশবার করে পড়ুন।
পাশাপাশি সকাল-সন্ধা এবং ঘুমের সময়ের মাসনুন আমলগুলো গুরুত্বের সাথে করুন। (মাসনুন আমলের লিংক পাবেন কমেন্টে)
৪. আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আপনি যদি হারাম সম্পর্ক বা অন্য কোন গুনাহ বা কোন আসক্তি থাকে তাহলে  তা থেকে বেরিয়ে আসুন।  ইতিমধ্যে হয়তো চেষ্টাও করছেন কিন্তু পারছেন না। এক্ষেত্রে বলবো চেষ্টার পাশাপাশি বেশি-বেশি করে দু'আ করুন। প্রতিদিন দুই রাকাত সালাতুল হাজত পড়ে চাইতে থাকুন।
রব্বুল আ'লামীন আপনার জন্য সবকিছু সহজ করে দিবেন ইনশাআল্লাহ।
পরিশেষে একটা কথা, শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি আত্মার সুস্থতারও ফিকির করুন। কারন এরা একে অপরের পরিপূরক.....
নোটঃ সাদাস্রাব সম্পর্কিত মাসআলা গুলো অবশ্যই দেখে বা জেনে নিবেন। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়।
------
প্রয়োজনীয় লিংক-
১. রুকইয়াহ যিনা https://ruqyahbd.org/download
২. মাসনুন আমল
https://ruqyahbd.org/masnun
Share:

বাচ্চাদের শীতকালীন যত্ন; অসুস্থতা এবং রুকইয়াহ

- উম্মে আব্দুল্লাহ
[ক]
এই শীতের মৌসুমে বাচ্চাদের ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা লেগেই থাকে। জ্বর, সর্দিকাশি একেবারে কমন হয়ে যায়। তো কথা হচ্ছে, শীতের সময় এমন সমস্যা হতেই পারে। কিন্তু সমস্যা সারানোর জন্য ওষুধ পথ্যে একেবারেই কাজ হয় না। সাধারণ সর্দি জ্বরের ওষুধ থেকে এন্টিবায়োটিক সবকিছুই যখন হার মানে, তখন আসলেই নিজেদের বেশ অসহায় লাগে। তো আজ এ বিষয়ে আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি।
[খ]
সেদিন সন্ধ্যায় তিলাওয়াত করছিলাম, সেসময় পিচ্চি এসে কোলে বসলো। আমি বললাম আসো তোমার রুকইয়াহ করি। ও মাথা মুখের কাছে নিয়ে আসলো। আমি তো অবাক!! ও এমনিতে তিলাওয়াত শুনে আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু রুকইয়াহর কথা শুনলে পালায়। আজ কি মনে করে কাছে আসলো!!
তখনই মাথায় আসলো ওর সমস্যার কথা। গতকাল রাতে নাকি খুব জ্বালিয়েছে, ঘুমাতে পারছিলো না, শ্বাস নিতে বেশ কষ্ট হচ্ছিলো। এখনো বেশ কষ্ট হচ্ছে। আমি তখন হাতে ঠাণ্ডার রুকইয়াহ পড়ে ওকে বললাম জোরে শ্বাস নাও। ও সত্যিই লম্বা শ্বাস নিলো।
এরপর জিজ্ঞেস করলাম, শ্বাস নিতে পারছো?
বেশ দৃঢ়তার সাথে উত্তর দিলো, হুউউউ....
ও এতটাই আরাম পেয়েছে যে নিজেই বিসমিল্লাহ ইয়াসীন (এইটা ওর রুকইয়াহ!!) পড়ে শ্বাস নিতে শুরু করলো (মাশা-আল্লাহ!)
এইটা শীতের শুরুর দিকের ঘটনা। পিচ্চিটার বেশ জ্বর ছিলো। আমরা সবাই ভাবলাম ঠাণ্ডা লেগেছে বোধহয়। এন্টিবায়োটিক চলছিলো। কিন্তু অবস্থার উন্নতি হয় না। ও এমনিতে অনেক চঞ্চল আর হাসিখুশি। কিন্তু জ্বরে একেবারে খিটমিটে আর কেমন জানি হয়ে গেলো। তখন ঝাড়ফুঁকের ব্যাপারটা মাথায় আসলো। দুপুরবেলা ও যখন ঘুমিয়ে ছিলো তখন গিয়ে ও মাথায় হাত দিয়ে বদনজরের দুয়া আর তিনকুল পড়ছিলাম। হাত এত বেশি গরম হয়ে যাচ্ছিলো বলার মত না। যাই হোক, আয়াতগুলো পড়া শেষে ওর ঘুম ভাঙ্গলো। বেশ ফুরফুরে মেজাজ নিয়ে ঘুম থেকে উঠলো আলহামদুলিল্লাহ। কারন জ্বর চলে গেছে আলহামদুলিল্লাহ।
আচ্ছা, রুকইয়াহর পাশাপাশি ওষুধও খাইয়েছিলাম কিন্তু!
[গ]
শীতকালে যারা বাচ্চাদের সমস্যা নিয়ে পেরেশানি তে আছেন। তাদের জন্য এই পোস্ট একটা রিমাইন্ডার মাত্র। আপনার বাচ্চা অসুস্থ থাকলে ওষুধের পাশাপাশি রুকইয়াহ করুন। দ্রুত শিফা লাভ করবে ইনশাআল্লাহ।
এই লেখায় বলা রুকইয়াহগুলোর লংক কমেন্টে পাবেন।
আর একটা কথা, বাচ্চাদের ক্ষেত্রে রুকইয়াহর প্রভাব খুবই দ্রুত হয়, আলহামদুলিল্লাহ। শুধু আপনি ইয়াক্বীনকে মজবুত করুন।
তাহলেই ইনশাআল্লাহ উত্তম ফল পাবেন।
এই সময়টায় বাচ্চাদের যত্নে কিছু টিপস_____
১. বাচ্চার ঠাণ্ডা যেন না লাগে এবিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করুন। গরম কাপড় পরান। তবে এক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন বাচ্চা যেন আবার ঘেমে না যায়।।
পোশাকের পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারেও বিশেষ নজর দিন। প্রতিদিন গোসল না করালেও চেঞ্জ করাবেন অবশ্যই।
২. রাতে ডায়াপার পরাতে পারেন। আর হ্যা ডায়াপার শুষ্ক থাকলেও ছয় ঘন্টা অন্তর চেঞ্জ করুন।
৩. ধুলা-বালি থেকে বাচ্চাকে দূরে রাখুন। সম্ভব হলে বাইরে গেলে মাস্ক ব্যবহার করান।
৪. ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলমূল খাওয়ান। মাল্টা, কমলা, আঙ্গুর, আমলকী  ইত্যাদি। এছাড়া শীতকালীন সবজি খাওয়াতে পারেন।
৫. অনেকেই আছেন বাচ্চাদের গোসল করান না শীতের কারনে। অথচ এই সময়টায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দেয়া আরো বেশি জরুরি। একদিন পরপর অন্তত বাচ্চাকে কুসুম গরম পানিতে হলেও গোসল করান। আর হ্যা! যত দ্রুত সম্ভব গোসল করিয়ে শরীর ভালো করে মুছে দিন। সম্ভব হলে বাচ্চাকে হালকা রোদে বসাতে পারেন।
৬. গোসলের পর অলিভওয়েল মাখিয়ে দিন। অবশ্য একজিমা থাকলে অনেকে অলিভওয়েল না ব্যবহার করার পরামর্শ দেন। এ জাতীয় সমস্যা থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
৭. প্রতিদিন, আদা / তুলসি সেদ্ধ করে একটু ঠাণ্ডা করে বা রস করে গরম করে তারপর মধু মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন। এটা খুবই উপকারী এক ভেষজ পথ্য।
আদা, তুলসি, মধু  এগুলো শুধু বাচ্চাদের না বড়দের জন্যও উপকারী।
শেষকথা হল, এই সময় বাচ্চাদের দিকে বিশেষ নজর দিন। শরীর বেশি খারাপ লাগলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।
আর অবশ্যই অবশ্যই নামাজ-কালাম ও মাসনুন আমলগুলো গুরুত্বের সাথে করুন।
আর বেশি বেশি করে সন্তানের জন্য দু'আ করুন....
রব্বুল আ'লামীন আমাদের বাচ্চাদেরকে যাবতীয় অসুস্থতা ও বালা মুসিবত থেকে দূরে রাখুন।। (আমীন)
Share:

January 30, 2019

প্রাথমিক চিকিৎসা

- উম্মে আব্দুল্লাহ
---------

দৈনন্দিন জীবনে আমরা ছোটখাটো নানা ধরনের দুর্ঘটনার স্বীকার হই যেমন- রান্নার সময় আগুনের ছ্যাঁকা লাগা,তরকারী কাটার সময় হাত কাটা, পড়ে গিয়ে চোট পাওয়া ইত্যাদি।এই ধরনে যেমন সমস্যাগুলো খুবই স্বাভাবিক আমাদের কাছে।
তাই ইমার্জেন্সি বা প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে আমাদের সবার বাড়িতেই এন্টিসেপ্টিক ক্রীম, তুলা, গজ এইসব রাখি। এমনকি ছোটখাটো অসুস্থ্যতার জন্যও আমরা বিভিন্ন ধরনের ওষুধও রাখি।
আর এইসব ছোটখাটো প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো হাতের কাছে রাখা বোকামি নয় বরং সচেতনতা।

একটু ভেবে দেখেন___
তরকারী কাটতে গিয়ে আপনার সামান্য হাত কেটে গেলো। রক্ত পড়ছে...
এখন কি আপনি ডাক্তারের কাছে ছুটবেন নাকি তুলোয় কিছু এন্টিসেপ্টিক ক্রিম বা লিকুইড লাগিয়ে ক্ষত স্থানে লাগাবেন??
এর জন্য কি আপনাকে কেউ বলবে যে ডাক্তারি করছেন??
না।।  কারন সবাই জানে এইটা প্রাথমিক চিকিৎসা।
কিন্তু যদি ক্ষতটা বেশি হয়। সেলাইয়ের দরকার পড়ে তাহলে অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। তখন আর আপনি নিজে সেলাই করতে পারবেন না।

আর এইগুলোর জন্য প্রয়োজন হয় কমন সেন্স। যা রব্বুল আ'লামীন প্রতিটা সুস্থ্য মস্তিষ্কের মানুষকেই দান করেছেন। যার কারনে আমরা সুষ্ঠু, সুন্দর,স্বাভাবিকভাবে জীবন পরিচালনা করতে পারছি আলহামদুলিল্লাহ।

যদি আমাদের এই জ্ঞানটুকু না থাকতো আমাদের কি অবস্থা হতো ভেবে দেখেছেন??
ঠিক একইভাবে দ্বীনপালনের ক্ষেত্রেও আমাদের মনে এমন ছোটখাটো নানা প্রশ্ন আসে যার সমাধান আমরা নিজেরাই করতে পারি আলহামদুলিল্লাহ।
 যেমন ধরেন, রাতের বেলা আপনার মনে হলো ফজরের পরে আপনি ইশরাক আদায় করবেন। কিন্তু কখন কিভাবে পড়ে তা আপনি জানেন না। তাই একটা দ্বীনি গ্রুপে পোষ্ট করলেন এইটা নিয়ে। কিন্তু পোষ্ট এপ্রুভ হয়ে রিপ্লে আসতে আসতে আরো একটা দিন চলে গেলো। আর আপনি একদিনের আমল থেকে বঞ্চিত হলেন।

 আবার আপনি খুব বিপদে আছেন আপনি কোথাও থেকে শুনেছেন বিপদের সময় সালাতুল হাজত পড়ে আল্লাহ তা'আলার কাছে সাহায্য চাইতে হয়। কিন্তু আপনি নিয়ম জানেন না। তখন আবার গ্রুপে পোষ্ট দিলেন। ফলাফল আগের মতই....

অনেক আপুকে তো দেখি কোন নামাজ কয় রাকাত সেইটা জানার জন্যও গ্রুপে পোষ্ট করেন। আপুরা প্লিজ!! এই বোকা বোকা কাজগুলো করা বন্ধ করেন। রব্বুল আ'লামীনের দেয়া জ্ঞান-বুদ্ধিটাকে একটু কাজে লাগান। ইসলামের হুকুম আহকামগুলো জানার চেষ্টা করুন,বুঝার চেষ্টা করুন। দেখবেন মনের মধ্যে অন্যরকম প্রশান্তি কাজ করছে। ইবাদাতের আগ্রহও বেড়ে যাবে বহুগুন। প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে একটা #আহকামুন_নিসা বা #আহকামে_যিন্দেগী কিনে ফেলুন।
বইটি পড়া শুরু করুন। দেখবেন নিজেদের অনেক ভুল সংশোধন হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।  অনেক কিছু জানতে ও বুঝতে  পারবেন আলহামদুলিল্লাহ। আর কিছু না বুঝলে বা অন্যান্য সমস্যায়  বা কিছু জানার থাকলে আলেমা আপুরা আছেনই.........

আর হ্যাঁ আরেকটা অনুরোধ____
অনেক আপুকে দেখি নামের অর্থ জানার জন্য গ্রুপে পোষ্ট দেন, ইনবক্স করেন। আপনারা প্লিজ সুন্দর দেখে একটা ইসলামিক নামের বই কিনে নেন। আপনার একটা বই কয়েক জেনারেশন চলে যাবে ইনশাআল্লাহ।  আর এতে নিজের ইচ্ছে মত নাম এবং এইগুলোর অর্থও খুঁজে দেখতে পারবেন যখন তখন।

আমরা শুধুমাত্র ফেবুটাকেই দ্বীন শিখার মাধ্যম না করে ফেলি।। প্রয়োজনীয় বইপত্র নিজেদের কাছে রাখার চেষ্টা করি....

[বি:দ্র: শুধু মহিলাদের জন্য #আহকামুন_নিসা আর পরিবারের সবার জন্য #আহকামে_যিন্দেগী বেশি ভালো হবে]




Share:

October 23, 2018

প্রেম-ভালোবাসা প্রসঙ্গ এবং রুকইয়াহ!

- উম্মে আব্দুল্লাহ
------------

[ক]
ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক সকল অবস্থাতেই বিবাহ বহির্ভূত প্রেম-ভালোবাসা সম্পূর্ণ নাজায়েজ।
কিন্তু শয়তানের ধোঁকায় পড়ে কিংবা না বুঝে অনেকেই এই হারাম কাজে জড়িয়ে পড়েন। আর এ থেকে বের হতে চাইলেও শয়তান নানা ধরনের ধোঁকায় ফেলে। যেমনঃ
-আমি প্রেম করছি কিন্তু উদ্দেশ্য আমার সৎ। পরে বিয়ে করে ফেলবো।
-আমরা কোন অশ্লীল কথা বলি না। বরং দ্বীন পালনে একে অপরকে সহায়তা করি।
-একজন আরেকজনের সাপোর্টার। একজন না থাকলে আরেকজন ঠিকঠাকমত ইবাদাত করতে পারি না।
-সবকিছু এলোমেলো হয়ে যায়..
-আমি তো যিনা করছিনা। নিরাপদ দুরুত্ব বজায় রেখেছি। তাহলে এতে অন্তত গুনাহ হবেনা।
কিন্তু আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ

وَلَا تَقْرَبُوا ٱلزِّنَىٰٓۖ إِنَّهُۥ كَانَ فَٰحِشَةً وَسَآءَ سَبِيلًا 
আর যিনা-ব্যভিচারের কাছেও যেও না, তা হচ্ছে অশ্লীল কাজ আর অতি জঘন্য পথ। (সুরা বনী ইসরাঈল- ৩২)

এখানে যিনা-ব্যভিচার করা তো দূরের কথা এর ধারে কাছেও যাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। সুতরাং আমরা যে যতই যুক্তি দেখাই সব কিছুর জন্য কুর'আনের এই একটি আয়াতই যথেষ্ট। এখানে আর কিছু বলার আছে বলে মনে হয় না। আর তাছাড়া আপনি যাই বলুন না কেন, হারামকে হালাল করতে পারবেন না। যা হারাম তা সকল অবস্থাতেই হারাম। আর ইবাদাত যদি আল্লাহর সন্তুষ্টিরর জন্য হয়, তাহলে এইসব লেইম এক্সকিউজের তো দরকারই পড়েনা।


[খ]
অনেকে আবার বলেন সবই তো জানি, বুঝি কিন্তু এত ভালোবাসি যে ফিরে আসতে পারিনা।
তাহলে বলবো এইসব ভালোবাসার থেকে আমার রবের ভালোবাসা অনেকদামী।
কুর'আনুল কারিমে আল্লাহ তা'আলা বলেছেন: "আর যারা বিশ্বাসী তাঁর আল্লাহকে অন্য সবকিছুর চেয়ে বেশি ভালবাসে।" (সুরা বাকারা-১৬৫)

তাঁর ভালোবাসার সামনে দুনিয়াবি এইসব নকল, নোংরা ভালোবাসার আদৌ কি কোন মুল্য আছে?? বরং এইটাতে শুধু মনের শান্তি নষ্ট হয়ে যায়। অন্তর তাঁর স্মরণ থেকে গাফেল হয়ে যায়।
এ সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন- "যে আমার স্মরন হতে মুখ ফিরাবে, তার জন্য রয়েছে সংকীর্ণ জীবন" (সুরা ত্বহা-১২৪)

বাস্তবে এর দ্বারা দুঃখ, যন্ত্রণা, অপমান, অশান্তি ছাড়া আদৌ কি কিছু পাওয়া যায়?? বরং হারাম সম্পর্কের জন্য দুনিয়া ও আখিরাত দুটোই বরবাদ হয়ে যায়। যারা না বুঝে এ ধরনের সম্পর্কে জড়িয়েছেন তারা কোন কিন্তু ছাড়াই এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসুন।
আর যারা এখনও এমন কিছু করেন নি, উনারা তাঁর কাছে শুকরিয়া আদায় করুন আর ভবিষ্যতে এমন নাফরমানি থেকে পানাহ চান। আর যাদের ব্রেকাপ হয়ে গেছে তারা আরো বেশি বেশি শুকরিয়া আদায় করুন। আপনার রব আপনাকে অনেক বেশি ভালোবাসেন বিধায় এই হারাম সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ করে দিয়েছেন।

আর হ্যাঁ! ভুল করেছেন বলে নিরাশ হবেন না। খাস দিলে তওবা করুন। তওবাকারীকে আল্লাহ তা'আলা অধিক পছন্দ করেন। বিষয়টা এমনই!
সুতরাং চিন্তা কিসের?? রব্বুল আ'লামীনের ভালোবাসায় নিজেকে সিক্ত করার জন্য নিজেকে সংশোধন করে ফেলুন।

[গ]
এখন কথা হচ্ছে অনেকেই এই হারাম সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চান কিন্তু পেরে উঠেন না তাই আমল চান। তাদের জন্য আমল না এক্ষেত্রে আপনার ইচ্ছাশক্তি প্রয়োজন। হতাশ না হয়ে চেষ্টা করেন সফল আপনি হবেনই ইনশাআল্লাহ।
এজন্য কিছু টিপস ফলো করতে পারেন যা আপনার জন্য সহায়ক ভুমিকা পালন করবে আশা রাখি:

♦সবথেকে উত্তম পন্থা হচ্ছে বিয়ে করে নেয়া। পরিবারকে বুঝান সব রকমভাবে। কারন বিয়েই হচ্ছে এই হারাম রিলেশন থেকে বাঁচার উত্তম উপায়। মনে রাখবেন আপনি যা করছেন তা আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টির জন্য করছেন। তাই কে কি করছে, কে কি বলবে তা নিয়ে চিন্তা না করে রবের উপর তাওয়াক্কুল করে বিয়ের ব্যাপারে ফিকির করুন। পরিবারকে বুঝান। আর যদি না পারেন। তাহলে তাঁর কাছে একদম দিল থেকে বারবার সাহায্য চান। ইস্তিখারা করুন। আর এই কাজগুলো অবশ্যই তার সকল হারাম সম্পর্ক ছিন্ন করে তওবা করে করবেন।
অনেকে আবার ভালোবাসার মান রাখতে গিয়ে পরিবারের অমতে বিয়ে করেন, পরবর্তীতে আরো ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হয়। তাই যাই করুন না চিন্তা -ভাবনা, আর তাঁর কাছে সাহায্য চেয়ে (ইস্তিখারা) করে করুন।

♦আর যদি সম্ভব না হয় তাহলে প্রথমেই তার সাথে সকল প্রকার সম্পর্ক ছিন্ন করুন। তার দেয়া গিফট বা এমন কিছু যা আপনাকে তার কথা মনে করিয়ে দিবে সেসব জিনিস সরিয়ে ফেলুন। তার টেক্সট, ফোন নং, ছবি বা পছন্দের কিছু থাকলে সেগুলোও ডিলিট করে দিন। আর ফেসবুকে থাকলে আনফ্রেন্ড না সরাসরি ব্লক করে দিন। এছাড়া যাদের সাথে মিশলে বা কথা বললে মনে পড়ার আশংকা আছে তাদের সাথেও দুরত্ব বজায় রেখে চলুন। আর মনটাকে বুঝিয়ে দিন আপনি আর এই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে চান না। আপনি পুনরায় এমন ভয়ংকর গুনাহ করতে চান না। এক্ষেত্রে শয়তান আপনাকে খোঁচাতে থাকবে নানাভাবে। কিন্তু আপনি এই ফাঁদে পা দিবেন না। মনে রাখবেন এইটাই আপনার রবের সাথে সম্পর্ক মজবুত করার উপযুক্ত সময়।

♦এমন কোন স্থান যেখানে গেলে 'দেখা হওয়া বা মনে পড়ার' সম্ভাবনা আছে সেগুলো এড়িয়ে চলুন। অনেকের আগে দুঃখ বিলাস টাইপ ভুত মাথায় চাপে। দয়া করে এটা করবেন না। অতীতের কিছু মনে করে মন খারাপ বা মন ভালো করার চেষ্টা করবেন না। আমি তো বলি জোর করে কিছু ভুলতে বা মনে করতে চেষ্টা করবেন না। মনে রাখবেন, "Time is the best healer."

♦সকল প্রকার প্রেমের উপন্যাস, কবিতা, কাহিনী, সিনেমা, নাটক, গান থেকে নিজেকে দূরে রাখুন। এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সম্পর্কিত যত পেইজে লাইক দেয়া আছে বা ফলো করেন সেগুলো আনফলো করে দিন। আর ইসলামিক পেজ, ইন্সপিরেশনাল পেইজগুলো এড করুন।

♦প্রেম-ভালোবাসার কুফল সম্পর্কে চিন্তা করুন। এর ফলে আশেপাশে, সমাজে যে ভয়ানক ঘটনাগুলো ঘটছে সেগুলো স্মরণ করুন। আর আপনার অতীতের কথা মনে আসলে খারাপ সময়টার কথা স্মরণ করুন। আর নিজের পরিবারের কথা চিন্তা করুন। তাদের ভালোবাসা, বিশ্বাসের কথা স্মরণ করুন।

[ঘ]
এইগুলো তো গেলো দূরে যাওয়ার টিপস। এখন আপনি যদি বলেন এইগুলো সব আমি জানি এবং ফলো করা শুরু করেছি। এখন ভুলে যাওয়া বা এ থেকে দূরে থাকার জন্য কোন আমল, রুকইয়াহ বা দোয়া থাকলে বলেন।
তাহলে বলবো জ্বী অবশ্যই চিকিৎসা আছে।

♦পাক পবিত্র হয়ে সম্ভব হলে ফরজ গোসল দিয়ে তওবার উদ্দেশ্যে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করুন। পুর্বেকৃত গুনাহর জন্য তওবা করুন আর ভবিষ্যতে এ ধরনের গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার জন্য সাহায্য চান। প্রতিদিন দুই রাকাত করে নফল নামাজ পড়ে আল্লাহ তা'আলার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করুন সকল নাফরমানির কাজ থেকে বিরত থাকার তৌফিক দানের জন্য। আর হ্যাঁ তাহাজ্জুদে আল্লাহর সাথে প্রেমালাপ মিস করবেন না কিন্তু।।

♦কোন কিছুর সফলতার পেছনের প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে দু'আ। রব্বুল আ'লামীনের কাছে বেশি থেকে বেশি দু'আ করুন। তাঁর সাথে সম্পর্কটা মজবুত করুন। তাঁর ভালোবাসায় নিজেকে সিক্ত করুন। দেখবেন তখন অন্তরে যেমন প্রশান্তি আসবে তেমনি অন্য কোন ভালোবাসার জন্যও মন কাঁদবেনা।
বেশি বেশি যিকর করুন, কুর'আনের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করুন, ফরজ ইবাদাতসহ নফল ইবাদাতও গুরুত্বের সাথে করুন, নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করুন।

♦নেক সহবত তৈরী করুন। যাদের সোহবত পাপের পথে ঠেলে দেয়, তাদের থেকে নিরাপদ দুরত্ব বজায় রাখুন। তাদের সাথেই বন্ধুত্ব স্থাপন করুন যারা আপনাকে আল্লাহ তা'আলার স্মরণ হতে গাফেল হতে দিবে না। বরং আপনাকে পাপ কাজ থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করবে।

♦নফসকে দুর্বল করার উত্তম হাতিয়ার হচ্ছে রোজা। কাজা রোজা থাকলে সেগুলোর নিয়াতেও করতে পারেন। নাহলে নফল রোজাও করতে পারেন। রোজার ফায়দা জানা আছে তো!! (হাদিসে এসেছে, রোজা কুপ্রবৃত্তিকে দমন করে)

♦বেশি বেশি করে মৃত্যু, কবর, কিয়ামত, হাশর, জাহান্নামের আজাবের কথা স্মরণ করুন। যা আপনাকে পাপ কাজ থেকে দূরে রাখতে সহায়তা করবে। আর তারপরেও যদি মনে বাজে খেয়াল আসে তাহলে নিজেকে শাস্তি দিন।। (যেমনঃ ভারি কোন নফল ইবাদত আবশ্যক করে নিন)

♦কুর'আন-হাদিস অধ্যায়নে লেগে থাকেন। মাসনুন আমলসহ সকল কাজ গুরুত্বের সাথে করুন।সম্ভব হলে দ্বীনি সার্কেল, মজলিসে জুড়ুন।

♦সাথে ইস্তিখারাও করে যান।দেখবেন আল্লাহ তা'আলা উত্তমটার২ ফয়সালা করবেন, আর সবকিছু সহজ করে দিবেন। (ইস্তিখারার নিয়মঃ http://bit.ly/istekhara-post )

♦বেশি বেশি করে এই দুয়া পাঠ করতে পারেন। আল্লাহ তা'আলা উত্তমটাই দান করবেন ইনশাআল্লাহ।

إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ - اللَّهُمَّ أْجُرْنِي فِي مُصِيبَتِي وَأَخْلِفْ لِي خَيْرًا مِنْهَا 
উচ্চারণঃ ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না-ইলাইহি র-জিঊন। আল্লাহুম্মা'জুরনী ফী মুসীবাতী, ওয়া আখলিফলী খইরম্মিনহা-
অর্থঃ আমরা আল্লাহরই, এবং আমর তার কাছেই ফিরব। ও আল্লাহ! আমাকে বিপদের জন্য প্রতিদান দাও এবং এর বিপরীতে আমাকে এরচেয়ে উত্তমটা দান করো”।

সাথে সুরা ফুরকানের ৭৪ নং আয়াতটা বেশি বেশি পড়বেন।
ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻫَﺐْ ﻟَﻨَﺎ ﻣِﻦْ ﺃَﺯْﻭَﺍﺟِﻨَﺎ ﻭَﺫُﺭِّﻳَّﺎﺗِﻦَﺍ ﻗُﺮَّﺓَ ﺃَﻋْﻴُﻦٍ ﻭَﺍﺟْﻌَﻠْﻨَﺎ ﻟِﻠْﻤُﺘَّﻘِﻴﻦَ ﺇِﻣَﺎﻣًﺎﻭ
রব্বানা হাবলানা মিন আঝওয়াজিনা ওয়া যুররিইয়াতিনা ক্বুররতা আ'ইউনিউ ওয়াজ'আলনা লিলমুত্তাক্বিনা ঈমামা।

♦ এটিও পড়ুন মাঝেমাঝে -

اللَّهُمَّ إِنِّى أَسْأَلُكَ حُبَّكَ وَحُبَّ مَنْ يُحِبُّكَ وَالْعَمَلَ الَّذِى يُبَلِّغُنِى حُبَّكَ اللَّهُمَّ اجْعَلْ حُبَّكَ أَحَبَّ إِلَىَّ مِنْ نَفْسِى وَأَهْلِى وَمِنَ الْمَاءِ الْبَارِدِ
.
উচ্চারণ: 'আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকা হুব্বাক। ওয়া হুব্বা মান ইয়ুহিব্বুক। ওয়াল আমালাল্লাযী ইয়ুবাল্লিগুনী হুব্বাক। আল্লাহুম্মাজ'আল হুব্বাকা আহাব্বা ইলাইয়া মিন নাফসী ওয়া আহলী ওয়া মিনাল মা-ইল বারিদ'।

অর্থ: "হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আপনার ভালোবাসা চাই এবং আপনাকে যে ভালোবাসে তার ভালোবাসা চাই, আর সেই আমলের ভালবাসা চাই যে আমল আমাকে আপনার ভালোবাসার পাত্র করে দিবে। হে আল্লাহ আপনার ভালোবাসা আমার নিকট যেন আমার নিজের জীবন, পরিবার এবং শীতল পানি থেকেও প্রিয় হয়ে যায়।" (তিরমিজী, হাদীস নং ৩৮২৮/৩৪৯০)
[এটা আতিক হুজুরের পোস্টে পেয়েছিলাম]

[ঙ]
সবশেষে বলবো ইসলামকে জানার চেষ্টা করুন।
আপনার নামাজ, কুর'আন সঠিকভাবে পালন হচ্ছে কিনা খেয়াল করুন। নিজেকে কাজে ব্যস্ত রাখুন সাধ্যানুযায়ী। অবশ্যই তা উত্তম পন্থায়, উত্তম কাজে, গান, মুভি বা নাটক দিয়ে না। আর আপনি কিভাবে গুনাহ থেকে দূরে থাকতে পারবেন। কোনটা আপনার জন্য উত্তম এবং সহজ হবে তা আপনিই ভালো বুঝবেন। তবে তার জন্য দরকার ইচ্ছাশক্তি আর রব্বুল আ'লামীনের কাছে পূর্ণ সমর্পণ।।।

আর এসবের পরেও যদি মনে আসে, কিন্তু তাঁর সন্তুষ্টির কথা ভেবে নিজেকে সংযত রাখেন। সেক্ষেত্রে গুনাহ নয় বরং সবরের সওয়াব পাবেন ইনশাআল্লাহ। তাই নিরাশ না হয়ে, অজিফা না খুঁজে চেষ্টা করতে থাকুন।
সফল হবেনই ইনশাআল্লাহ।

♦♦♦ এসবের পাশাপাশি প্রতিদিন রুকইয়াহ যিনা (ruqyahbd.org/download#zina) এবং অন্তত ৫০০ বার করে ইস্তিগফার ফলপ্রসূ হবে ইনশাআল্লাহ।

রব্বুল আ'লামীন সকলকে হারাম থেকে বাঁচার তৌফিক দিন, এজন্য উত্তম বদলা দিন, আর উত্তম জীবনসঙ্গী মিলিয়ে দিন। (আমীন)
Share:

October 18, 2018

সমস্যা যখন চুল পড়া...

- উম্মে আব্দুল্লাহ
------------------
.
নোটঃ এই সমস্যা নিয়ে গ্রুপে ইদানিং অনেক বেশি পোস্ট পড়ছে। যার পেছনে এডমিনদের অনেক সময় নষ্ট হচ্ছে। নষ্ট বললাম এজন্য, কারন এরচেয়ে বহুগুণ বেশি সিরিয়াস পোস্ট, কয়েকশটা জমে আছে পেন্ডিং এ। এডমিনদের তো সবই দেখতে হচ্ছে, এসব বারবার সামনে আসছে। তাই বাধ্য হয়ে সেদিন ফুফুকে এটা নিয়ে বললাম। পরে উনি এই লেখাটা প্রস্তুত করে দিয়েছেন। আশা করছি রুকইয়াহ সাপোর্ট গ্রুপের বোনদের জন্য লেখাটি উপকারী হবে।
.
------------------

[ক]
বর্তমানে চুল পড়া সমস্যা একটু বেশিই মনে হচ্ছে মন হয়। অনেকে এবিষয়ে অভিযোগ করছে। এই সমস্যার প্রধান কারন আমার কাছে মনে হয় পল্যুশন আর মাত্রাতিরিক্ত শ্যাম্পু-কন্ডিশনার ব্যবহার করা।
সবকিছুরই তো একটা সীমা থাকা উচিত।

তেমনি রুকইয়াহ বিষয়েও। এটাকে যাদুর কাঠি মনে না করা। সকল সমস্যার সমাধান এখানেই আছে, এমন মনে না করা। আর সব কিছুর জন্য রুকইয়ার খোঁজ না করা।

আমি বেশ ভালোভাবেই বুঝছি চুল পড়া নিয়ে আপনি চিন্তিত। কিন্তু তারমানে এই না, চুলের যত্ন না নিয়ে শুধু রুকইয়ার পেছনে ছুটবেন।

[খ]
চুল পড়া সমস্যার পেছনে অনেক কারন থাকতে পারে। বদনজর ছাড়াও খুশকি, অপুষ্টি, তেল/শ্যাম্পুজনিত নানা সমস্যা থাকতে পারে। অনেক সময় পানির কারনেও এমন হতে পারে। আবার দীর্ঘদিনের অসুস্থতা থেকেও এমনটা হতে পারে।
আগে খুঁজে বের করুন আপনার সমস্যার পেছনের কারন কি??
তারপর সে মোতাবেক চিকিৎসা করুন।
যদি মনে হয় অপুষ্টিজনিত কারনে বা কোন বিশেষ রোগের কারনে বা কোন শ্যাম্পু কন্ডিশনার ব্যবহার করার কারনে এমনটা হচ্ছে তাহলে খাবারের অভ্যাস চেঞ্জ করুন।
শ্যাম্পু, কন্ডিশনার চেঞ্জ করুন।।
পর্যাপ্ত পানি খান, পুষ্টিকর খাবার খান, বিশেষ করে যেগুলো চুলের আর ত্বকের জন্য উপকারী। যেমন- বাদাম,কিশমিশ,আমলকী খান। আর অবশ্যই ঘনঘন শ্যাম্পু করা থেকে বিরত থাকুন।

[গ]
এছাড়া কমন কিছু বিষয় যা আমরা সবাই জানি তা মানার চেষ্টা করি।
যেমন-
- ভেজা চুল না আঁচড়ানো
- ভেজা চুল না বাঁধা বা ভেজা চুলে না ঘুমানো
- প্রতিদিন শ্যাম্পু না করা।
- সপ্তাহে অন্তত একদিন হটঅয়েল ম্যাসাজ করা।
- নিয়ম করে তেল দেয়া।
- একই তেল, বা শ্যাম্পু লাগাতার বেশিদিন ব্যবহার না করা। মাঝেমধ্যে চেঞ্জ করা।
- একটা নির্দিষ্ট সময় পর পর হেয়ার প্যাক ব্যবহার করা। যেইটা আপনার চুলে স্যুট করে সেটা বুঝেশুনে।
-আর অবশ্যই যে চিরুনি ব্যবহার করবেন তা পরিষ্কার রাখা।।

 কোন তেল, শ্যাম্পু আপনার চুলের জন্য পারফেক্ট তা আপনিই ভালো বুঝবেন। তবে ক্যাস্টরওয়েল আমার খুবই ভালো কাজ করে আলহামদুলিল্লাহ। চুল পড়া কমায় আর চুল বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। অনেকের শুনি আমন্ডওয়েল কাজ করে। অনেকের খাঁটি নারিকেল তেল। আপনি যদি না বুঝেন, তাহলে শুরুতে সব তেলই একটু একটু করে টেস্ট করে দেখতে পারেন।
 খুবই উপকারী আরেকটা তেল হল কালোজিরার তেল। এইটার গুনের কথা বলে শেষ করা যাবে না...
আর যদি ডিটক্সের অলিভওয়েল থেকে যায় তাহলে সেটাও চুলে ইউজ করতে পারেন। চুল পড়া কমবে আর সিল্কি হবে ইনশাআল্লাহ।

শ্যাম্পুর মধ্যে Tresme আমার কাছে বেস্ট মনে হয়েছে, তবে দামটা একটু বেশি। এইদিক থেকে সমস্যা না থাকলে ইউজ করতে পারেন।
এছাড়া কমের মধ্যে ক্লিনিক প্লাসটা আমার বেশ ভালো লেগেছে আলহামদুলিল্লাহ।
অন্য আপুদের হয়তো অন্য কোন শ্যাম্পু ভালো লাগতে পারে। তাই আবারো বলছি এইগুলো নির্বাচন একদমই আপনার হাতে।

[ঘ]
এবার আসি হেয়ার প্যাক প্রসঙ্গে,
চুল পড়া কমাতে আর নতুন চুল গজাতে পেঁয়াজের রসের বিকল্প আমার কাছে কিছু মনে হয় না।
তবে খেয়াল রাখবেন রস যেন বেশিক্ষন মাথায় না থাকে। সর্বোচ্চ দুই ঘন্টা থাকলেই যথেষ্ট।
এছাড়া মেহেদীর কথাও উল্লেখযোগ্য। গাছের টাটকা মেহেদী থাকলে ওইটার সাথে কিছু পেঁয়াজের রস আর তেল মিশিয়ে ব্যবহার করে দেখতে পারেন। খুব বেশি লাভ না হোক, খারাপ কিছু হবে না ইনশাআল্লাহ।

আর কারো যদি জবা, মেহেদী আর কারি পাতা যোগাড় করা কঠিন না হয় তাহলে এইগুলোর পেস্ট বানিয়ে সপ্তাহে একবার ব্যবহার করতে পারেন।

একটা অনুরোধ, বাজারের চুল পড়া বন্ধ হবার যে ক্যামিকেল বা ওষুধ বিক্রি করা হয় সেগুলো থেকে নিরাপদ দুরত্ব বজায় রাখবেন।।

যাহোক, পরিশেষে এই কথাই বলব, নিজের চুলের ধরন বুঝে চুলের যত্ন নিন।।

[ঙ]
এবার আসি রুকইয়ার ব্যাপারে। বদনজরের কারনেও চুল পড়তে পারে। সেক্ষেত্রে করনীয় হচ্ছে আর যেন নজর না লাগে সে ব্যবস্থা করা।
এখন ছাতা নিয়ে বেড়ালে ভালো হবে, নাকি হিজাব করলে ভালো হবে আপনিই ভালো বুঝবেন।
তবে বড় বড় হেয়ার স্পেশালিষ্ট, বিউটিশিয়ানরাও কিন্তু পল্যুশন থেকে বেঁচে থাকার কথা বলে।
যেইটার জন্য পর্দার বিকল্প কিছু নেই।
এখন যদি বলেন এত্ত লম্বা লেকচার শুনার কোন ইচ্ছা নাই।
এইগুলোর সব আমি জানি।

শুধু বলেন চুল পড়া বন্ধের রুকইয়াহ কি আছে?

আমি বলবো, আপাতত আপনার জন্য চুল পড়া বন্ধের বিশেষ কোন রুকইয়াহ নেই। তবে বদনজরের রুকইয়াহ করতে পারেন।
আরেকটা কাজ করতে পারেন, কমন রুকইয়ার আয়াতগুলো পড়ে অলিভ অয়েলে ফু দিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। (কমেন্টে প্রয়োজনীয় লিংক পাবেন)
তবে জেনে রাখা ভালো, কারও কারও ক্ষেত্রে রুকইয়াহ শুরু করার পর চুল পড়া আরো বেড়ে যেতে পারে। তখন একটুও ভয় পাবেন না। স্বাভাবিকভাবে রুকইয়াহ চালিয়ে যান। একসময় ঠিক হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ.. 

আর এসবের পাশাপাশি অবশ্যই চুলের যত্ন নিবেন।

উপরোক্ত কোন টিপস পছন্দ হলে ফলো করতে পারেন। আর দু'আ করতে পারেন। জুতোর ফিঁতে ছিঁড়লেও হাদিসে দু'আ করার কথা বলা হয়েছে।
তাহলে চুল পড়ার মত এত বিশাল একটা সমস্যায় দু'আ করবেন না কেন!!!!!
Share:

August 31, 2018

গর্ভকালীন সমস্যা ও রুকইয়াহ

- উম্মে আব্দুল্লাহ
----------

বর্তমানে খুবই কমন একটা প্রশ্ন, "প্রেগন্যান্ট অবস্থায় কি রুকইয়া করা যায়?? কী রুকইয়াহ করবো??
.
এ প্রশ্নের উত্তর দেয়ার পুর্বে আমার মনে হয় গর্ভকালীন সময়ে একজন গর্ভবতী নারীর হরমোনাল পরিবর্তনের কারনে যে শারীরিক, মানসিক পরিবর্তন আসে সেই বিষয়ে কিছু বলা দরকার।।

এ সময় যে কমন সমস্যাগুলো দেখা যায় তার মধ্যে___

মর্নিং সিকনেস, বমি বমি ভাব, পা ও পিঠে ব্যথা, কোমর ব্যথা, বুক জ্বালাপোড়া করা, ঘুম না হওয়া, অস্থিরতা, বিষণ্ণতা, মাথা ব্যথা, ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া, কখনো খাবারে অরুচি আবার কখনওবা খুব বেশি ক্ষুধা পাওয়া, পেট খারাপ হওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, পা ফুলে যাওয়া, কখনো কখনো শ্বাসপ্রশ্বাসেও কষ্ট হয়। এছাড়া ঘুমের সমস্যার কারনে বুক ধড়ফড় ও দুঃস্বপ্নও দেখেন অনেকেই।।
এছাড়া মাত্রাতিরিক্ত রাগ, বিরক্তবোধ, একা থাকতে ভালো লাগাসহ নানা ধরনের পরিবর্তন আসে।

এগুলোকে অনেকে অস্বাভাবিক মনে করে ঝাড়ফুঁক, তাবিজ-কবজ, তেল পড়া, পানি পড়া, গাছের শিকড় ইত্যাদি নেয়াসহ অনেকধরনের তদবীর করে থাকেন।। যা অপ্রয়োজনীয় আর এসবের অধিকাংশই হয় ভিত্তিহীন। গর্ভাবস্থায় কম-বেশি সবাই এসব সমস্যা ফেইস করেন। তাই এইগুলো নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে স্বাভাবিকভাবে নেবার চেষ্টা করুন। চেষ্টা করুন স্বাভাবিক থাকার, আর নিয়মমাফিক চলার।।
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খান, পুষ্টিকর খাবার খান, পর্যাপ্ত পরিমানে ঘুমান। আর হ্যাঁ সম্ভব হলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সে মোতাবেক চলার চেষ্টা করুন।
ভালো থাকবেন ইনশাআল্লাহ...
.
এতো গেলো শারীরিক, মানসিক পরিবর্তনের কথা। এবার আসি প্যারানরমাল সমস্যার দিকে।
এ সময়টা অনেকেই সাপ, বিচ্ছু, বিভিন্ন পোকামাকড়সহ নানা জীব-জন্তু স্বপ্নে দেখেন। অনেক ভয়ংকর স্বপ্ন দেখেন।। মনে হয় ওইটা স্বপ্ন না বাস্তবেই ঘটেছে।।

.
এক্ষেত্রে প্রথম কথা হচ্ছে, আপনি যাই দেখুন না কেন, স্বপ্নের কোন ব্যাখ্যা দাঁড় করাবেন না। একান্তই যদি মনে চলে আসে তাহলে ভালো কিছু ভাববেন। খারাপ স্বপ্ন দেখলে স্বপ্নের খারাবি থেকে বাঁচার জন্য দুয়া করবেন। মনে রাখবেন শয়তান আপনাকে অমুলক ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। আপনি ওদের সুযোগ দিবেন না।।
তাছাড়া ওদের কোনই ক্ষমতা নাই, আর রব্বুল আ'লামীনের ইচ্ছা ছাড়া কোন কিছুই ঘটবে না। তাই বেশি বেশি দু'আ করুন। তাঁর কাছেই সাহায্য চান।
...
একটি হাদিস আছে এরকম-
আবু কাতাদাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবি কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ভাল ও সুন্দর স্বপ্ন আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে হয়ে থাকে আর খারাপ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে। যদি কেউ ভাল স্বপ্ন দেখে তাহলে তা শুধু তাকেই বলবে যে তাকে ভালোবাসে। অন্য কাউকে বলবে না। আর যদি স্বপ্নে খারাপ কিছু দেখে তাহলে শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করবে। (এরকম বলা যায়, আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজীম) এবং বাম দিকে তিনবার থুথু নিক্ষেপ করবে। আর কারো কাছে স্বপ্নের কথা বলবে না। মনে রাখবে এ স্বপ্ন তার ক্ষতি করতে পারবে না।(বুখারি ও মুসলিম)
...
অনেকে বলেন, আমি এই স্বপ্ন দেখেছি তাই এইটা হয়েছে! অমুক এই স্বপ্ন দেখেছেন এরপর এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে। যেইটা একেবারেই অমুলক। বরং আপনি খারাপ অর্থ দাঁড় করিয়েছিলেন বলেই হয়তো এমনটা ঘটেছে। তাই আবারো বলছি স্বপ্নের ব্যাখ্যা দাঁড় করাবেন না।
...
তবে হ্যাঁ পুর্বে জ্বীন-যাদুজনিত সমস্যা থাকলে এ সময় সমস্যা কিছুটা বাড়তে পারে। এক্ষেত্রেও ভয়ের কিছু নাই।।
মাসনুন আমলগুলো গুরুত্বসহকারে করতে থাকুন।
এ সময় জ্বীন সংক্রান্ত সমস্যার কারনে রুকইয়া করার ব্যাপারটা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন। কারন রুকইয়াহর সাইড ইফেক্টগুলো বাচ্চা-মা দুজনের জন্যই ক্ষতিকর হতে পারে।।
এছাড়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় রুকইয়াহ শুরু করলেও শেষ পর্যন্ত আর ঠিকমত করেন না।
এতে সমস্যা শুধু সামনেই আসে, কোন সমাধান হয় না। আর এই সময়টা এমন কোন রিস্ক নেয়াও উচিত হবেনা যা উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর সাব্যস্ত হয়।।
তবে যদি বাচ্চা নষ্ট করার যাদু করা হয় তাহলে এ থেকে বাঁচার জন্য রুকইয়াহ করতে পারেন।
অবশ্যই তা গুরুত্বের সাথে। যদি নিশ্চিত থাকেন ঠিকঠাকমত রুকইয়াহ করতে পারবেন তাহলে আল্লাহ তা'আলার উপর ভরসা করে শুরু করতে পারেন।। (এ বিষয়ে আব্দুল্লাহর লিখা আছে। লিংক কমেন্টে)
-----
আব্দুল্লাহ তার উস্তায মুহাম্মাদ তিম হাম্বলকে একবার প্রেগন্যান্সিতে রুকইয়ার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেছিল, তিনি বলেছিলেন- আমি হলে এরকম পরিস্থিতিতে একান্ত আবশ্যক না হলে ঝুঁকি নিতে যাব না।
-----
এখন প্রশ্ন হচ্ছে রুকইয়াহ না করে বিভিন্ন খারাপ জিনিসের ক্ষতি থেকে কিভাবে বাঁচবো??
উত্তরঃ গর্ভাবস্থায় রুকইয়াহ ছাড়াও কিছু আমল করা যায় সেগুলো করুন....(লিংক কমেন্টে)
এছাড়াও আরো কিছু বিষয় এ সময় মেনে চলার চেষ্টা করবেন। যা আপনাকে ও আপনার সন্তানকে সকল খারাবি থেকে রক্ষার জন্য সহায়ক হবে ইনশাআল্লাহ
______

১. সময়মত পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করুন। সম্ভব হলে নফল ইবাদাত করুন বেশি বেশি। চেষ্টা করুন তাহাজ্জুদ মিস না দেয়ার। সাথে সালাতুল হাজতও পড়ার চেষ্টা করুন।

.
২. চেষ্টা করুন নিজের জবানকে যিকরে অভ্যস্ত করার। শুয়ে, বসে সর্বাবস্থায় আল্লাহর স্মরনে মশগুল থাকুন। অন্তরে প্রশান্তি আসবে।
আল্লাহ তা'আলা বলেন____
"ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُم بِذِكْرِ ٱللَّهِۗ أَلَا بِذِكْرِ ٱللَّهِ تَطْمَئِنُّ ٱلْقُلُوبُ
তারাই ঈমান আনে এবং আল্লাহর স্মরণে তাদের অন্তর প্রশান্তি লাভ করে। জেনে রেখ, আল্লাহর স্মরণের মাধ্যমেই দিলের সত্যিকারের প্রশান্তি লাভ করা যায়। (সূরা রাদ: ২৮)

.
৩. গুনাহ থেকে বাঁচুন। বিশেষ করে মেয়েদের দ্বারা যে সহজ কিন্তু ভয়ংকর গুনাহগুলো সংঘটিত হয় সেগুলো থেকে বাঁচুন। একে অন্যের দোষচর্চা, সিরিয়ালপ্রীতি, পর্দা সম্পর্কে উদাসীনতা, অপ্রয়োজনে বাইরে যাওয়া এসব বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করুন।

.
৪. বেশি বেশি ইস্তেগফার করুন, দরুদপাঠ করুন। তিন তাসবীহসহ প্রত্যেক ওয়াক্তের জন্য নির্দিষ্ট তাসবীহ সমুহ আদায় করুন।

.
৫. ওযু অবস্থায় থাকার চেষ্টা করুন। বিশেষ করে ঘুমাতে যাবার আগে ওযু করে নিন।
নবী কারীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াস সাল্লাম বলেন,
"যখন তুমি বিছানায় যাবে তখন নামাজের মত করে ওযু করে নিবে।" (মুসলিম : ৪৮৮৪)

.
৬. সকাল সন্ধ্যা এবং ঘুমের আগের মাসনুন আমলগুলো গুরুত্বের সাথে করুন। বিশেষতঃ তিন কুলের আমল মিস দিবেন না।
সকাল-সন্ধ্যায় তিনবার সুরা ইখলাস, ফালাক, নাস পড়ুন। আর ঘুমের আগে তিনবার পড়ে হাতে ফুঁ দিয়ে পুরো শরীরে বুলিয়ে নিন। আর আয়াতুল কুরসি পড়ে ঘুমাবেন।
.
আব্দুল্লাহ ইবনু খুবাইব রা. থেকে বর্ণিত, নবি ﷺ বলেছেন, ‘কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ’ এবং ‘মুয়াওয়াযাতাইন’ সকালে ও সন্ধ্যায়—তিন বার বল। এটা সব কিছু থেকে তোমার হেফাজতের জন্য যথেষ্ট হবে। (তিরমিযী, আবু দাউদ)

.
৮. ফজর এবং আসরের পর অবশ্যই "লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া'হদাহু লা-শারীকালাহ, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল 'হামদ, ওয়াহুওয়া 'আলা- কুল্লি শাইয়িন ক্বদীর" এটা ১০০বার পড়া। কোনোদিন না পারলে অন্তত ১০বার পড়বেন।

৯. কুর'আন তিলাওয়াত করুন। কুর'আনের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করুন। এখন অনেকে বলেন কি সুরা পড়বো?? কুর'আন হাদীসে নির্দিষ্ট সুরার কথা উল্লেখ করা হয়নি।

তবে অনেক বুজুর্গ এসব সুরা বেশি বেশি পড়তে বলেছেন__
♦প্রথম মাসে- সুরা আল-ইমরান।
♦দ্বিতীয় মাসে-সূরা ইউসুফ।
♦তৃতীয় মাসে-সূরা মারিয়াম।
♦চতুর্থ মাসে-সূরা লোকমান।
♦পঞ্চম মাসে-সূরা মুহাম্মদ।
♦ষষ্ঠ মাসে- সূরা ইয়াসীন।
♦সপ্তম, অষ্টম,নবম ও দশম মাসে-সূরা ইউসুফ, মুহাম্মদ ও ইব্রাহীম।
এছাড়া এমনতেই খতমের নিয়াতেও কুর'আন পড়তে পারেন, এই লম্বা সময়ে চেষ্টা করলে অনেকবার খতম দেয়া সম্ভব।।

.
১০.এ সময় সবর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মাকে নানা জটিলতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এক্ষেত্রে সবর করলে অনেক কিছুই সহজ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।

এছাড়া বেশি বেশি দু'আ করুন। মনকে শান্ত রাখার চেষ্টা করুন, পজিটিভ থাকুন। নিজের সমস্যার কথা পরিবারের সাথে শেয়ার করুন।। আবারো বলছি মাসনুন আমলগুলো বাদ দিবেন না।
যদি ভুলে যান ইয়াদ হওয়ার সাথে সাথে পড়ে নিবেন।। আর যদি কোন সময় সমস্যা বুঝতে পারেন, তাহলে তখন তিনকুল পড়ে শরীর মুছে নিবেন।

.
এগুলো মেনে চললে নানা রকম বালা মুসিবত থেকে রক্ষা পাবেন আর রব্বুল আ'লামীনের নৈকট্যও অর্জনেও সহায়ক হবে। (ইনশাআল্লাহ)

--
আর সবশেষে বললেও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর একটি হল, দোয়া। অবশ্যই অবশ্যই দোয়া করবেন, নিজের জন্য, সন্তানের জন্য দিল খুলে দোয়া করবেন। যা চান, যেমন চান সব আল্লাহর কাছে বলবেন।

আল্লাহ আমাদের বুঝার এবং মানার তাওফিক দিন। আমিন!

-----
প্রয়োজনীয় লিংক-
আমলঃ https://facebook.com/thealmahmud/posts/1432893376800188
গর্ভের সন্তান নষ্টের যাদু বিষয়েঃ https://facebook.com/thealmahmud/posts/1432893376800188
Share:

ওয়াসওয়াসাকে জয় করুন...

- উম্মে আব্দুল্লাহ 
----------

গতকাল সকালে এক ছোট আপুর সাথে কথা হচ্ছিলো, কথা প্রসংগে ওয়াসওয়াসার কথা উঠলো। তাই মনে হলো এই ব্যাপারটা নিয়ে আলোচনা করা দরকার।
সত্যি বলতে এই সমস্যাটা আমি নিজেও ফেস করি। আমার মনে হয় প্রায় প্রতিটা মানুষই এমন সমস্যা কমবেশি ফেস করেছেন। কারন শয়তানের কাজই হচ্ছে মানুষকে কুমন্ত্রণা দেয়া। আর যার যা কাজ তা তো সে করবেই। এখন কথা হচ্ছে আপনি শয়তানের ফাঁদে পা দিচ্ছেন নাকি ইগনোর করছেন।
কারন শয়তানের কাজ যেমন ওয়াসওয়াসা দেয়া তেমনি আপনার কাজ হচ্ছে সেটাকে পাত্তা না দিয়ে এড়িয়ে যাওয়া। আপনি এই সমস্যাকে যত বেশি গুরুত্ব দিবেন, এটা তত বেশি জেঁকে বসবে।
.
আমার বাবাকে দেখি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করেন। বুঝতে পারি উনিও ভুক্তভোগী। অনেকেই বলেন উনার শুচিবায়ু রোগ আছে। কিন্তু আমরা কখনো উনাকে বলিনি এইটা নিয়ে আবার কেউ বললেও সেইটাকে ইগনোর করেছি। উনিও এইটাকে স্বাভাবিকভাবে নিয়েছেন। আলহামদুলিল্লাহ উনাকে এইজন্য কোন ডাক্তার বা বিশেষ কোন তদবির করা লাগেনি।
শুধু বাবা না আমি নিজেও বেশ বাজে রকমের ওয়াসওয়াসা ফেস করি অন্যদের ব্যাপারে। কারো সাথে একটু ভালো সম্পর্ক হলে বা কারো প্রতি ভালোলাগা তৈরি হলে তার সম্পর্কে বেশ খারাপ চিন্তা আসে।
আবার কারো সাথে সামনাসামনি কথা বলতে গেলেও তার একটা বাজে ইমেজ তৈরি হয় চোখের সামনে। মনে হয় উনি যা বলেন বা করেন সবই ফেইক।
যেহেতু আমি বুঝি যে এইটা নিছকই শয়তানের কুমন্ত্রণা তাই ইগনোর করার চেষ্টা করি। খুব বেশি ভালো সম্পর্ক না থাকলে চেষ্টা করি তার সাথে ভালো একটু সম্পর্ক তৈরি করার যেন তার সম্পর্কে ভুল ধারনাটা ভেঙ্গে যায়। আর ভালো সম্পর্ক থাকলে নিরাপদ দুরত্ব বজায় রাখি। যেন সে টের না পায় যে আমার ভেতরে কি চলছে।
আর ফেবু রিলেটেড হলে তাকে একটা সালাম পাঠাই। ইতিমধ্যে অনেকে পেয়েও গেছেন।
পরে অবশ্য সময় সুযোগ বুঝে বলে দেই কথাগুলো। নাহলে ভেতরে একধরনের খারাপ লাগা কাজ করে। আর বলার পরে অনেক ভালো লাগে আলহামদুলিল্লাহ।
.
মজার বিষয় হচ্ছে আমিও ভাবলাম এমন চিন্তা শুধু আমার মনে আসে। কিন্তু পরে দেখলাম অনেক দ্বীনি ভাই বোন আছেন যারা এই সমস্যাগুলো ফেইস করেন।
সেদিন খুব পছন্দের এবং ভালোবাসার এক আপু বলছিলেন আমার মত তিনিও এমন সমস্যায় ভুগছেন। কত যে উলটাপালটা চিন্তা আসে।
আব্দুল্লাহর আবার নতুন কারো সাথে কথা বলার সময় তাকে মারতে ইচ্ছে করে।। আলহামদুলিল্লাহ আজ অবধি কাউকে হার্ট করেনি। কারন সেও এই ধরনের সমস্যাগুলোকে ইগনোর করে।।

.
যাই হোক একটা বিষয় খেয়াল করেছি শয়তান দ্বীনি ভাই-বোনদের মাঝে ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি করার চেষ্টায় থাকে সবসময়। কারন এতে ফিতনা তৈরি হবে। দ্বীনি সার্কেলের বাইরে এই ব্যাপারগুলো তেমন গুরুত্ববহন করেনা। কিন্তু দ্বীনি সার্কেলের সবাই একে অন্যের হক্বের ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন, আর শয়তান কখনোই চাইবেনা সবাই আল্লাহ তা'আলার হুকুম মেনে চলুক। তাই নানা ধরনের ফাঁদ পাততে থাকে। ফলে তৈরি হয় বিভিন্ন ফিতনা-ফ্যাসাদ।
যা বিগতকয়েকমাস ধরে প্রকট আকার ধারন করেছে।।
.
অথচ রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসসাল্লাম এ ধরনের কার্যকলাপ থেকে দূরে থাকতে বলছেন। তিনি বলেছেন, "পরস্পরে সম্পর্কচ্ছেদ করো না। একে অন্যের দোষ তালাশে লিপ্ত থেকো না। পরস্পরে শত্রুতা পোষণ করোনা। হিংসা করো না। সকলে আল্লাহর বান্দা হিসেবে ভাই ভাই হয়ে যাও।"
_____ বুখারী
.
যাহোক, এইবার আসি ওয়াসওয়াসা প্রসঙ্গে,
ওয়াসওয়াসার কথাটার পরিবর্তে অনেকেই মেডিকেলীয় টার্ম ব্যবহার করেন। অনেকে বলেন শুচিবায়ু, অনেকে বলেন সংশয়রোগ আবার অনেকে বলেন OCD(obsessive compulsive disorder).
তা যে নামই ব্যবহার করেন না কেন সমস্যাগুলো একই...
এই রোগের প্রধান সমস্যা হচ্ছে রোগীর মাথায় নানা ধরনের বিব্রতকর চিন্তা আসে। কখনো সাধারণ একটা বিষয় মাথায় ঢুকে ঘুরতেই থাকে, চাইলেও এই চিন্তা থেকে বের হতে পারেন না। আর এটা থেকে বের হয়ে আসার জন্য নানা ধরনের অস্বাভাবিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। যেমন একই কাজ বারবার করা, যেকোন বিষয়ে খুব বেশি সন্দেহ বা বাড়াবাড়ি করা, গোসলের পরেও পবিত্রতা নিয়ে সন্দেহে ভুগা। টয়লেটে গেলে নাপাকি নিয়ে সন্দেহের ফলে মাত্রাধিক সময় লাগানো।অন্যের ব্যাপারে সন্দেহ ও বাজে ধারনা তৈরি হওয়া, ইত্যাদি...
.
এগুলো সবই ওয়াসওয়াসার অংশবিশেষ,
অনেকে আবার ধর্মীয় নানা বিষয় যেমন-স্মৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব, নামাজ-কালাম সহ নানা বিষয়েও সন্দেহ তৈরি হয়....
এগুলো শয়তানের প্ররোচনা ছাড়া আর কিছুই না...
তাই সর্বপ্রথম যেটা দরকার তা হলো শয়তানকে পরাজিত করার তীব্র ইচ্ছাশক্তি আর আল্লাহ তা'আলার উপর তাওয়াক্কুল।।
.
অনেকে বলেন, আমি নামাজ-কালাম পড়ি পর্দা করি তবুও কেন ওয়াসওয়াসায় ভুগি?? সবসময় হীনমন্নতায় ভুগেন।
সে ক্ষেত্রে একটা কথাই বলবো এটা নিয়ে মন খারাপ করার কিছু নাই। নিজেকে ছোট ভাবারও কিছু নাই।। ওয়াসওয়াসা সম্পর্কে বেশ কিছু হাদীস রয়েছে।

হযরত আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্নিত আছে যে, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কিছু সংখ্যক সাহাবী তাঁর নিকট এসে বললেন, "আমরা অনেক সময় আমরা নিজেদের অন্তরে এমন কথা ও কল্পনা অনুভব করি যা মুখে আনাও গুরুতর অন্যায় মনে করি। রসুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেন: বাস্তবিকই তোমরা এটাকে গুরুতর অন্যায় মনে করো? তারা উত্তর দিলেন, হ্যাঁ। আমাদের অবস্থা তো তাই।
তখন তিনি বললেন, এটা তো স্পষ্ট ঈমান।
____মুসলিম

অর্থাৎ যখন কারও অন্তরে এই অবস্থা বিরাজ করে যে, দ্বীন ও শরীয়তের খেলাফ কোন ওয়াসওয়াসা আসলেও সে ঘাবড়ে যায় এবং এইটা মুখে উচ্চারণ করতেও ভয় পায়, তখন ধরে নিতে হবে এটা খাঁটি ঈমানেরই লক্ষণ। চোর-ডাকাত সেখানেই হামলা করে, যেখানে দামী সম্পদ আছে।
.
এখন মনে হতে পারে ঈমানদার বান্দা হলে ওয়াসওয়াসা কেন আসবে?
ওয়াসওয়াসা তো মুলত শয়তানের কুমন্ত্রণা। তাই ওয়াসওয়াসা আসা স্বাভাবিক। এতে নিজের ঈমান নিয়ে যেন সংশয়ে না পড়ে যাই। এতে শুধু হতাশাই বাড়বে আর শয়তান খুশি হবে।
একবার ভেবে দেখুন রসুল (স) এর সাহাবীদের পর্যন্ত ওয়াসওয়াসা এসেছে তাহলে আমাদের জন্য তো খুবই স্বাভাবিক.....
আর রব্বুল আ'লামীনও ওয়াসওয়াসার কারনে যে কুচিন্তার উদয় হয় তা মাফ করে দিছেন। এর ফলে কোন গুনাহ হবে না ইনশাআল্লাহ।
.
হাদিসটি খেয়াল করি-
রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : "আল্লাহ তা'আলা আমার উম্মতের অন্তরে আবর্তিত কুচিন্তা ও ওয়াসওয়াসার বিষয়টি মাফ করে দিয়েছেন— যে পর্যন্ত এগুলো কার্যে পরিণত অথবা মুখে উচ্চারন না করা হয়।
—বুখারী,মুসলিম

অর্থাৎ এইসব কুচিন্তা ও ওয়াসওয়াসা যেই পর্যন্ত ওয়াসওয়াসা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে, সে পর্যন্ত আল্লাহর পক্ষ থেকে এর উপর কোন শাস্তি দেয়া হবে না। তবে যখন এইগুলা ওয়াসওয়াসার পর্যায় অতিক্রম করে কথা বা কাজে পরিনত হয়ে যায়, তখন এগুলোর জন্য শাস্তি দেয়া হবে।

তাই যতই ওয়াসওয়াসা আসুক। সেগুলো ইগনোর করেন। এমনকি অন্য কাউকে বলা থেকেও বিরত থাকেন।
শয়তানকে খোঁচাচ্ছে খোঁচাক, আপনি তার ফাঁদে পা দিবেন না। দেখবেন একসময় শয়তান নিরাশ হয়ে আপনাকে ছেড়ে দিবে।
আর হ্যাঁ যত বেশি ওয়াসওয়াসা আসবে তত বেশি আল্লাহর শরণাপন্ন হবেন। এতে ফায়দা আপনারই....
এটাও আপনার জন্য প্লাস পয়েন্ট মনে করে নেন!
ওইযে সার্ফএক্সেলের সেই এডের কথা মনে আছে না??
"দাগ থেকে যদি দারুন কিছু হয় তাহলে দাগই ভালো।"
এক্ষেত্রেও খারাপের মাঝে ফায়দাটাই দেখেন। (রব্বুল আ'লামীন চান তো) দেখবেন আস্তে আস্তে সমস্যাগুলো স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

তবে এরপরেও যদি খুব বেশি সমস্যা মনে হয় তাহলে আব্দুল্লাহর ওয়াসওয়াসা পোস্ট পড়ে অথবা অডিও ক্লিপটা শুনে সে মোতাবেক আমল করতে পারেন।
উপকার পাবেন ইনশাআল্লাহ...







------------

কমেন্ট থেকে-

: Apu kichu way bole diben.. kanna kore fed up hoye jai.. bathroom theke ber hote parina.

- বাথরুমের কাজ যখনই শেষ হবে। কোন কিছু চিন্তা না করেই দ্রুত বের হয়ে যাবেন।। যদিওবা তা একদিনে সম্ভব না তবুও চেষ্টা চালিয়ে যান আপু....

: Namaz shuru kore diye mone hoy allahu akbar taqbir korini.. abar bhenge dei.. pura namaze eta korini oita hoynai cholte thake..

- এরপর থেকে মনে হলেও অইটা করবেন না। সালাত কন্টিনিউ করবেন। বেশিরভাগ মানুষেরই এই সমস্যা আছে আপু। কথা একটাই শুধু মনে হলে কিছুই করবেন না। যখন শতভাগ শিওর হবেন তখনই নতুন করে শুরু করবেন আপু।

: আমার ৪রাকাত নামাজে প্রায় সব সময়ই সাহুসিজদা দিতে হয়। শুধু সন্দেহ হয়। মনে হয়- সিজদা কম দিয়েছি কোন রাকাতে বা ২রাকাতের সময় বসি নি। এর কি সমাধান হতে পারে। নামাজে বাজে কথা মনে পড়লে কি করা উচিত??

- ১০০% শিওর না হলে আপনার সাহু-সিজদা দেয়ার দরকার নেই আপু। চেষ্টা করুন মনোযোগসহকারে সালাত আদায় করার....

: ocd এর জন্য গতকাল ডাক্তার দেখাই আসলাম। অসিডি শয়তানের ধোঁকায় হয় কিনা জানি না তবে আল্লাহ সম্পরকে যে কু চিন্তা আসে তা শয়তানের কারনে। ডাক্তার এর চেম্বের এর পাসে এক পেপার এ লেখা ছিল অসিডি > আল্লাহ সম্পর্কে আজেবাজে চিন্তা আসে। এখন শুচিবাই মেডিক্যাল সমাধান হবে না ইসলাম এর রুলস অনুসরন করতে হবে। কুরান এ আসছে যখন শয়তান তোমাকে ঘোরাতে চাই তুমি আল্লাহর আশ্রই প্রার্থনা কর।?????

- ডাক্তারের কাছে গিয়ে চিকিৎসা নিতে তো নিষেধ করা হয়না। তবে যেইটাই করুন রব্বুল আ'লামীনে মর্জি না হলে সুস্থতা সম্ভব না। তাই বেশি বেশি করে দু'আ করুন, তাঁকে ডাকুন...

- যারা অযু, গোসল, নামাজ নিয়ে সংশয়ে ভুগছেন তাদের বলি উত্তমরুপে একবারই অযু করুন এরপর যত্নসহকারে সালাত আদায় করে নিন। এরমধ্যে যদি আপনি সংশয়ে পড়ে যান তাহলে নতুন করে কোন কিছুরই দরকার নেই... মনে রাখবেন ওয়াসওয়াসা মানেই সংশয়রোগ। তাই চেষ্টা করেন ইগনোর করা। তারপরেও না পারলে নিজেকে প্রশ্ন করুন, আপনি ১০০% শিওর তো?? যদি ১০০% শিওর হোন তাহলে আবার অযু করে সালাত আদায় করুন...
Share:

May 9, 2018

রুকইয়াহ ও রুকইয়াহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে কিছু অপ্রিয় সত্য কথা

- উম্মে আব্দুল্লাহ
--------
[ক]
আপনারা যারা রুকিয়া সম্পর্কে জানেন বা রুকিয়া সাপোর্ট গ্রুপে আছেন তাদের অনেকেই হয়তো দেখেছেন, রুকিয়া বিষয়ে সাজেশন দেয়ার পর কেউ কেউ বিভিন্ন প্যারানরমাল সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। বিশেষত: জ্বিন ঘটিত সমস্যায় এই ধরনের সমস্যা ফেস করেছে, তখন নিজেদের সমস্যা কাটানোর জন্য আবার রুকিয়া করতে হয়েছে।
যারা এ ধরনের সমস্যা ফেস করেছেন তারা নিশ্চয় বুঝে গেছেন যে রাক্বী এবং রুকিয়ার সাথে সংশ্লিষ্টদের কত ধরনের সমস্যা ফেস করতে হয়, নিজেদের শারীরিক ও মানষিকভাবে কতটা প্রস্তুত থাকতে হয় এবং এই বিষয়গুলা কতটা ঝুঁকিপূর্ণ....
.
ফ্যান্টাসি থেকে বেরিয়ে এসে রুকইয়াহ বিষয়ের বাস্তবতা আমাদের বুঝা উচিত। এটা হরর মুভি, সিরিয়াল বা এফএম রেডিওর অনুষ্ঠানের মত বিনোদনের বিষয় না। বরং শয়তানের সাথে হেড টু হেড ফাইটের চরম বাস্তবতা।
.
নিজের কথাই বলি, কাউকে এইসব বিষয়ে সাজেশন দেয়ার আগে অবশ্যই আমাকে ভাবতে হয়, আজকের মাসনুন আমলগুলো করেছি তো??
আচ্ছা! যারা প্রতিনিয়ত আপনাদের বিভিন্ন সাজেশন দিয়ে সহায়তা করছেন তারা কি কোন সমস্যাই ফেইস করেন না?
নাকি তারা মানুষ না?
নাকি তাদের জন্মই হয়েছে এসব সার্ভিস দেয়ার জন্য?
ভুলে যাবেন না। তারাও মানুষ। তাদের ব্যক্তি এবং পারিবারিক জীবন আছে। পরিবার আছে। আর আছে অন্যদের মত প্রতিদিনের ব্যস্ততা...।
.
[খ]
একটা বিষয় খেয়াল করেছি গ্রুপে পোষ্ট দেয়ার পর এপ্রুভ হতে দেরী হলেই অনেকে এডমিনদের ম্যাসেজ দেয়া শুরু করেন, আমাকেও ইনবক্স করেন। ব্যাপারটা বেশ খারাপ লাগে। একটু ধৈর্য ধরেই দেখুন, উত্তর পান কিনা। এতে আপনারই লাভ। আপনি একটা সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে যাবেন।
.
আরও অনেকের অবস্থা হচ্ছে, গ্রুপে পোষ্ট করেন। সমাধান দেয়ার পরে আপডেট জানাতে বললে আর খোঁজ পাওয়া যায় না। আপনি যদি নিশ্চিতই থাকেন যে, আপনি এইগুলা ফলো করতে পারবেন না। তাহলে পোস্ট দেয়ার কি দরকার? এতে তো আপনারই কোন দ্বীনি ভাই অথবা বোনের উত্তরটা পিছিয়ে যাচ্ছে, যিনি আপনার চেয়েও বেশি গুরুতর সমস্যা ফেস করছেন।
আগে নিজের মনকে স্থির করুন যে আপনি এডমিনদের দেয়া সাজেশন পুরোটা ফলো করবেন, এরপর গ্রুপে পোস্ট দিবেন প্লিজ।
.
[গ]
আরেকটা কষ্টের বিষয় হচ্ছে, অনেকে বোধহয় বাংলাই ঠিকমত পড়তে পারেন না। অথবা ইচ্ছে করেই পড়েন না।
যেমন ধরেন, পোস্ট দিয়ে বলা হল আপাতত পোস্ট অপশন বন্ধ থাকবে কারণ অনেক পোস্ট জমা পড়ে আছে। তখন আপনি ওখানেই কমেন্ট করা শুরু করলেন, পোস্ট দেয়া যাচ্ছে না কেন?
আবার বলা হল কেউ ইনবক্স করবেন না প্লিজ। পোস্টটা দেখার পরেই আপনি ইনবক্সে যেইটা বলতে চেয়েছিলেন তা কমেন্টে বলে ফেললেন।
উত্তর না পেলে আবার সেই ইনবক্স...।
.
এখন কথা হচ্ছে সবাই যদি কমেন্টে আর ইনবক্সে সমাধান চান তাহলে গ্রুপে পোস্ট অপশনটা কেন আছে বলতে পারেন???
.
এখন আপনি বলতে পারেন, সমস্যা আছে বলেই তো ইনবক্সে বলতে চাচ্ছি। আমার পরিচিত অমুক-তমুক গ্রুপে আছে, আমি পোস্ট করলে তারা দেখে নিবে।
তাহলে বলবো একটা ফেইক আইডি খুলে ফেলেন। এইটার জন্য এখনো জুকার মামু প্রমাণপত্র চাওয়া শুরু করেনি। সুতরাং একটা আইডি খুলতে খুব বেশি সমস্যা হবেনা আশা করি। না পারলে কোন ফ্রেন্ডের সহায়তা নেন, নইলে গুগলে সার্চ করেন "কিভাবে ফেসবুক আইডি খুলতে হয়।" এছাড়া এব্যাপারে এডমিন ভাইরা এর আগেও বহুবার পোস্ট দিয়েছেন। সেসব ফর্মুলাও ফলো করতে পারেন।
.
এখন আপনি হয়তো বলবেন, ইনবক্সে একটু সল্যুশন দিলে কি হবে??
একটু ভেবে দেখুন তো আপনার মত আরো কতজন এ ধরনের ইনবক্স করার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছেন। আচ্ছা ঠিক আছে দয়াপরবশ হয়ে আপনাকে ইনবক্সে সমাধান দেয়া হল। এরপর আপডেটটা কই জানাবেন??
আরে ভাই নিজের ভালো তো পাগলেও বুঝে, অথচ আপনি বুঝতে চাইছেন না।
পোস্টে আপনার সমস্যা জানান, নিয়মিত আপডেট দিন...
নিয়মতান্ত্রিকভাবে সল্যুশন নিন.... একটা সিস্টেমের মধ্যে থাকেন।
এতটুকু কষ্টও না করতে চাইলে, আপনার জন্য রুকইয়াহ সেন্টার আছে। অনুগ্রহ করে সেখানে গিয়ে সরাসরি পরামর্শ নিয়ে আসেন।
.
[ঘ]
আপডেটে দেখি এই রুকিয়া শুনেছি ওই রুকিয়া শুনেছি, ডিটক্স করেছি কিন্তু তেমন কিছুই বুঝিনি।
আচ্ছা মানলাম সমস্যা সমাধানের জন্য সব ঠিকঠাক মত করেছেন। কিন্তু একবার নিজেকে প্রশ্ন করে দেখুন তো...
.
একজন মুসলমান হিসেবে আমার উপর যে দায়িত্ব-কর্তব্যগুলো ছিল, যেগুলা আমাদের জন্য ফরজ ছিল সেগুলো কি ঠিকমত পালন করেছি??
গুনাহ থেকে বেঁচেছি??
পুর্বেকৃত গুনাহের জন্য ইস্তিগফার করেছি??
কুর'আন,সুন্নাহ মোতাবেক জীবন পরিচালিত করছি??
নিজের আমল-আখলাককে উন্নত করার চেষ্টা করেছি??
.
কারণ, রুকিয়ার মাধ্যমে শুধু শারীরিক ব্যাধি তো না! আত্মার ব্যাধিরও সমাধান মিলে, ইনশাআল্লাহ.. এজন্যই এসব খোজ নেয়া দরকার, আমি কি আসলেই রুকইয়াহ থেকে ফায়দা পাওয়ার উপযোগী? না হলে, উপযোগী হওয়ার চেষ্টা করছি কি?
আর একজন মুসলিমের জন্য শারীরিক ব্যাধির থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আত্মার ব্যাধি থেকে আরোগ্য লাভ। তাই আগে নিজের আত্মাকে পবিত্র করুন। নিজের ঈমান-ইয়াক্বিনকে বিশুদ্ধ করুন। আখলাককে উন্নত করুন। দেখবেন সমস্যাগুলো নিজে থেকেই পালাতে শুরু করবে।
জীবনে সুকুন নেমে আসবে ইনশাআল্লাহ...
.
[ঙ]
আপুদের দেখি সমস্যা বলার সময় বলেন আমি নামাজ পড়ি, পর্দা করি তারপরেও এত সমস্যা ক্যান?? আপনি কি নামাজ, পর্দা এগুলো সমস্যা থেকে বাঁচার জন্য করছেন? নাকি রব্বুল আ'লামীনের সন্তুষ্টির জন্য করছেন? যদি তাই হয় তাহলে এমন প্রশ্ন কেন??
আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে এইটা দুনিয়ার জীবন। এখানে রব্বুল আ'লামীন রোগ-শোক, বিপদের দ্বারা বান্দার পরীক্ষা নিবেন। কখনও তা গুনাহ মাফের কারণ হবে, কখনো রবের সান্নিধ্য লাভের উছিলা, আর কখনো আখিরাতের উত্তম প্রতিদানের আসবাব...
.
রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসসাল্লাম বলেন, "আল্লাহ তা'আলা যার কল্যাণ চান তাকে দুঃখ-কষ্টে পতিত করেন।"
সুতরাং নিরাশ না হয়ে, তাঁর দিকে আঙুল না তুলে তাঁর সন্তুষ্টির জন্য আমল করে যান। রুকিয়ার ইফেক্ট হবেই ইনশাআল্লাহ...
.
[চ]
সম্ভবত: সবথেকে বেশি যে প্রশ্নটা করা হয়, তা হচ্ছে__
যাদু, জ্বিন এইগুলোর ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য পার্মানেন্ট উপায় কি??
.
উত্তর একটাই! দুনিয়ার জীবনটাই তো ক্ষণস্থায়ী। এখানে আপনি চিরস্থায়ী সমাধান চান কি করে!! চিরস্থায়ী সুখ-শান্তির জন্য আপনাকে জান্নাতের ফিকির করতে হবে।
তবে হ্যাঁ ক্ষণস্থায়ী জীবনের নানা সমস্যার সমাধান এবং সমস্যা থেকে বাঁচার উপায় বিশ্বমানবের শিক্ষক নবী কারীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসসাল্লাম আমাদের শিখিয়ে গেছেন।।
আর তা হচ্ছে কুর'আন সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরা।
তিনি শিখিয়ে গেছেন কোন কাজ শুরুর আগে কি দু'আ পড়তে হয়। যাদু, জ্বীনসহ বিভিন্ন বালা মুসিবত থেকে বাঁচার জন্য কোন কোন আমল করতে হয়।
সেগুলো অনুসরণ করলেই এইসব বালা-মুসিবত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ।
.
তবে হ্যাঁ, ইতোমধ্যে যদি আপনি যাদু-জ্বিন দ্বারা এফেক্টেড হয়ে যান তাহলেও কুর'আন, সুন্নাহ মেনে রুকিয়া করলে/করালেই রব্বুল আ'লামীনের ইচ্ছায় শিফা লাভ করবেন ইনশাআল্লাহ। এজন্য আপনার দরকার ঈমান, ইয়াক্বীন, নিয়ত, মেহনত, গাইডলাইন আর ক্ষেত্র বিশেষে একজন অভিজ্ঞ রাক্বী.....
গাইডলাইন ও রাক্বী আপনারা গ্রুপেই পাবেন ইনশাআল্লাহ। বাকিগুলোর দায়িত্ব আপনার নিজের......
.
রব্বুল আ'লামীন আমাদের সকলকে সঠিক বুঝ দান করুন এবং কুর'আন ও সুন্নাহ মোতাবেক জীবন পরিচালিত করার তৌফিক দান করুন। (আমীন)
Share:

অনিয়মিত পিরিয়ড (irregular menstruation)

- উম্মে আব্দুল্লাহ
-----------
আজকাল এই সমস্যাটা নিয়ে অনেক আপু গ্রুপে পোস্ট দিচ্ছেন, ইনবক্স করছেন। বেশিরভাগ আপুই বেশ চিন্তিত এই সমস্যা নিয়ে । অনেক আপুর ধারনা যে শুধু তিনিই হয়তো এই ধরনের সমস্যা ফেস করছেন। কিন্তু আপুদের বলবো ভয়ের কিছু নেই। কারণ প্রায় প্রতিটা মেয়েই তার জীবনের কোন না সময় এই ধরনের সমস্যায় ভুগে থাকেন। তাই এইটা নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই। যদি কোন আপুর এ ধরনের সমস্যা দেখা যায় তাহলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন। আর এর পেছনে মেডিকেল প্রবলেম যেমন-পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রম,থাইরোয়েড প্রবলেম বা অন্য কোন কারণ আছে কিনা নিশ্চিত হয়ে ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক চিকিৎসা নিবেন। আর যদি এ ধরনের কোন সমস্যা না থাকে তাহলে নিজেদের খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাপন পদ্ধতির দিকে নজর দিবেন। কারণ হঠাৎ করে ওজন হ্রাস বৃদ্ধি, জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল গ্রহণের ফলেও এ ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই উদ্বিগ্ন না হয়ে সমস্যার পেছনের কারণ আগে চিহ্নিত করুন। আর সে মোতাবেক চিকিৎসা নিন। আর যদি এ ধরনের কোন কারণ খুঁজে না পান বা সমস্যা বা পেছনের কারণ আপনার কাছে অস্বাভাবিক মনে হয় তাহলে কিছু প্রশ্নের উত্তর দিন_____

১। আপনার কি বেশিরভাগ সময়ই মাথা ব্যাথা করে??
২। ঘুম ঠিকমত হয়না?? বোবায় ধরে বা বাজে স্বপ্ন দেখেন??
৩। একা থাকতে ভালোবাসেন বা বিষন্ন থাকেন?
৪। নামাজ কালামে মন নেই??
৫। বেশিরভাগ সময়ই মেজাজ খিটখিটে থাকে??
৬। শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যাথা করে? বিশেষতঃ ব্যাকপেইন আছে, কিংবা লজ্জাস্থানে ব্যথা করে?

উপরিউক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর যদি হ্যাঁ হয় তাহলে আপনার প্যারানরমাল সমস্যা(খারাপ বাতাস বা জ্বীনের নজর) থাকার সম্ভাবনা আছে(সঠিকটা আল্লাহ রব্বুল আ’লামীনই ভালো জানেন)। তবে এক্ষেত্রে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। বেশিরভাগ আপুই বলেন অমুক কবিরাজ বলেছে কু-নজর লাগছে,এই হইছে ,অই হইছে বলে তাবিজ,গাছ-গাছড়া,ঝাড়ফুঁক করেন। কিন্তু কোন সমাধানই মিলেনি।এখন হতাশ হয়ে পড়েছেন। আপুদের বলবো ফকির কবিরাজের পেছনে না ছুটে কুর’আন-সুন্নাহ মোতাবেক চিকিৎসা করেন রব্বুল আ’লামিন চান তো কিছুদিনের মধ্যেই শিফা লাভ করবেন ইনশাআল্লাহ।

আমি নিজেও এই ধরনের সমস্যা ফেস করেছি। বিশেষ করে কয়েকবছর যাবত ইস্তেহাযার সমস্যা ফেস করেছি। আর এই ব্যাপারে বিশেষ কোন জ্ঞান না থাকায় সমস্যার সমাধান মিলেনি। রব্বুল আ’লামীনের কাছে চাইতে পারিনি তাই হয়তো। যদিওবা আমি ইস্তেহাযার জন্য রুকিয়া করেছিলাম না । জ্বীনের সমস্যার জন্য করেছিলাম। তারপরেও আল্লাহ রব্বুল আ’লামীনের ইচ্ছায় এই সমস্যা অনেকাংশে কমে এসেছিলো আলহামদুলিল্লাহ। এরপর পুরোপুরি সমাধানের জন্য সাত দিনের ডিটক্স করেছিলাম।এবং এরপর আর সমস্যা হয়নি আলহামদুলিল্লাহ। যেহেতু সবকিছু মেইন্টেইন করে ঠিকঠাকমত রুকিয়া করা হয়ে উঠে না । তাই জন্য সাতদিনের ডিটক্স প্রোগ্রাম করাটাই আমি প্রেফার করি।

ডিটক্স সম্পর্কে …
https://web.facebook.com/thealmahmud/posts/1539586162797575?hc_location=ufi

এরপর শারীরিক কিছু সমস্যার জন্য কয়েকমাস ধরে পিরিওড অনিয়মিত ছিল। অনেকধরনের চিকিৎসা করেও ফায়দা পাইনি তেমন। পরে হিজামা করেছিলাম মাস তিনেক আগে। আর এই তিন মাস যাবত আমার পিরিওড রেগুলার আছে আলহামদুলিল্লাহ।অবশ্য শুধু আমি না অনেক আপুই ফল পেয়েছেন আলহামদুলিল্লাহ। গতকালও এক আপু বললেন হিজামা করানোর পরে তার পিরিয়ড সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান হয়েছে আল্লাহ তালার ইচ্ছায়।যেহেতু হিজামা একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাহ। এবং রাসূল সাঃ বলেছেন, হিজামা তে রয়েছে সমস্ত রোগের শিফা। (সহীহ বুখারী)

তাই আল্লাহ তা’আলার উপর ভরসা করে চিকিৎসা নিলে ভালো ফল পাবেন, ইনশাআল্লাহ্……

আর হ্যাঁ আমাদের এইটা মাথায় রাখতে হবে দুঃখ দুর্দশা দূর, অসুখ থেকে শিফা দানের মালিক একমাত্র তিনিই। তাই তাঁর উপর তাওয়াককুল করতে হবে এবং তাঁর কাছে সাহায্য চাইতে হবে।

আল্লাহ রব্বুল আ’লামীন আমাদের সকল প্রকার খারাবি থেকে হেফাজত করুন এবং সকলকে সুস্থ্যতা দান করুন।(আমীন)
Share:

বাচ্চা না হওয়া.....

রুকইয়াহ নিয়ে যত কথা____(৩)
....
পুর্বেই বলেছিলাম বর্তমান সময়ের আলোচিত কিছু সমস্যার মধ্যে একটা হচ্ছে বিয়ে বন্ধ আর আরেকটা বাচ্চা না হওয়া।
আমরা ইতিমধ্যেই বিয়ে বন্ধ সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছি(আলহামদুলিল্লাহ)
আজ আমরা বাচ্চা না হওয়া বা (বন্ধ্যাত্ব)সমস্যা নিয়ে আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ...

[ক]
বাচ্চা না হওয়ার পেছনে নানাবিধ কারন থাকতে পারে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই সমস্যার পেছনে বেশ কিছু কারণ বর্ণনা করা হয়েছে। আবার সেই অনুযায়ী চিকিৎসা পদ্ধতিও আবিষ্কার হয়েছে বর্তমানে। কিন্তু এর পরেও অনেকেই বাচ্চা কনসিভ করতে পারছেন না। অনেক চেষ্টা করেও কোন ফল পাচ্ছেন না। ফলে হতাশায় ভুগছেন।
তাদের উদ্দ্যেশে প্রথম কথাই হচ্ছে সন্তান-সন্ততি দানের মালিক কিন্তু একমাত্র আল্লাহ। বিশ্বজগতের সবকিছু তাঁরই হাতে।
আল্লাহ রব্বুল আ'লামীন বলেন___

لِلَّهِ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ يَخْلُقُ مَا يَشَاء يَهَبُ لِمَنْ يَشَاء إِنَاثًا وَيَهَبُ لِمَن يَشَاء الذُّكُورَ
أَوْ يُزَوِّجُهُمْ ذُكْرَانًا وَإِنَاثًا وَيَجْعَلُ مَن يَشَاء عَقِيمًا إِنَّهُ عَلِيمٌ قَدِيرٌ

নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের রাজত্ব আল্লাহ তা’আলারই। তিনি যা ইচ্ছা, সৃষ্টি করেন, যাকে ইচ্ছা কন্যা-সন্তান এবং যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন।
অথবা তাদেরকে দান করেন পুত্র ও কন্যা উভয়ই এবং যাকে ইচ্ছা বন্ধ্যা করে দেন। নিশ্চয় তিনি সর্বজ্ঞ, ক্ষমতাশীল।
[৪২:৪৯-৫০]

সুতরাং একমাত্র তাঁর উপর ভরসা করে আমাদের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। শারীরিক কোন সমস্যা থাকলে সেজন্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে। আর অবশ্যই অবশ্যই তাঁর উপর ভরসা করতে হবে আর সাহায্য চাইতে হবে।

[খ]
বেশি বেশি করে ইস্তিগফার করতে হবে। আল্লাহ তা'আলা বলেন____

فَقُلْتُ اسْتَغْفِرُوا رَبَّكُمْ إِنَّهُ كَانَ غَفَّارًا

يُرْسِلِ السَّمَاء عَلَيْكُم مِّدْرَارًا

وَيُمْدِدْكُمْ بِأَمْوَالٍ وَبَنِينَ وَيَجْعَل لَّكُمْ جَنَّاتٍ وَيَجْعَل لَّكُمْ أَنْهَارًا
অতঃপর বলেছিঃ তোমরা তোমাদের পালনকর্তার ক্ষমা প্রার্থনা কর। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল।
তিনি তোমাদের উপর অজস্র বৃষ্টিধারা ছেড়ে দিবেন,
তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি বাড়িয়ে দিবেন, তোমাদের জন্যে উদ্যান স্থাপন করবেন এবং তোমাদের জন্যে নদীনালা প্রবাহিত করবেন।
[সুরা নূহ:১০-১২]
হযরত হাসান বশরি (রঃ) এর ব্যাপারে বর্ণিত আছে তাঁর কাছে কেউ অনাবৃষ্টির অভিযোগ জানালে তিনি ইস্তিগফার করার শিক্ষা দিতেন। কেউ দরিদ্রতার অভিযোগ দিলে তিনি ইস্তিগফার শিক্ষা দিতেন। সন্তান না হওয়ার ব্যাপারে অভিযোগ জানালেও তিনি ইস্তিগফারের কথা বললেন।
যখন তাঁকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলো যে তিনি কেন তিনি সবাইকে ইস্তিগফারের কথা বললেন তখন তিনি উপরোক্ত আয়াত তিলাওয়াত করলেন।
আর

[গ]
পাঁচ ওয়াক্ত সালাত নিয়মিত আদায় এবং যিকর করা। সালাত ও যিকর অন্তরে প্রশান্তি আনে যা বিভিন্ন খারাপ পরিস্থিতি মোকাবেলায় সাহায্য করে।
আল্লাহ তা'আলা বলেন______
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اسْتَعِينُواْ بِالصَّبْرِ وَالصَّلاَةِ إِنَّ اللّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ

হে মুমিন গন! তোমরা ধৈর্য্য ও নামাযের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চিতই আল্লাহ ধৈর্য্যশীলদের সাথে রয়েছেন।
[সুরা আল-বাকারা:১৫৩]

[ঘ]
বেশি বেশি করে দু'আ করা। মাসনুন দুয়াগুলো গুরুত্বের সাথে পড়া( ঘুম থেকে উঠা থেকে শুরু করে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত)।
এছাড়া হযরত যাকারিয়া (আ) সন্তান লাভের জন্য যে দুয়া করেছিলেন তা পাঠ করা।

رَبِّ لَا تَذَرْنِي فَرْدًا وَأَنتَ خَيْرُ الْوَارِثِي
"হে আমার প্রতিপালক আমাকে একা রেখো না। তুমিই তো উত্তম ওয়ারিশ।
(সুরা আম্বিয়া:৮৯)
এই দু'আর বরকতে রব্বুল আ'লামীন হযরত যাকারিয়া (আ) কে বৃদ্ধ বয়সে সন্তান লাভ করেছিলেন।
এছাড়া কুর'আনুল কারিমে বিভিন্ন স্থানে সন্তান সন্ততি লাভের জন্য দু'আর কথা বর্ণিত আছে। যেমন_____

رَبِّ هَبْ لِي مِن لَّدُنْكَ ذُرِّيَّةً طَيِّبَةً إِنَّكَ سَمِيعُ الدُّعَا
অর্থ: হে, আমার পালনকর্তা! তোমার নিকট থেকে আমাকে পুত-পবিত্র সন্তান দান কর-নিশ্চয়ই তুমি প্রার্থনা শ্রবণকারী।
[সুরা আল-ইমরান:৩৮]

رَبِّ إِنِّي وَهَنَ الْعَظْمُ مِنِّي وَاشْتَعَلَ الرَّأْسُ شَيْبًا وَلَمْ أَكُن بِدُعَائِكَ رَبِّ شَقِيًّ

অর্থ: হে আমার পালনকর্তা আমার অস্থি বয়স-ভারাবনত হয়েছে; বার্ধক্যে মস্তক সুশুভ্র হয়েছে; হে আমার পালনকর্তা! আপনাকে ডেকে আমি কখনও বিফলমনোরথ হইনি।
[সুরা আল-মারইয়াম:০৪]

তবে দু'আ কবুলের জন্য অবশ্যই বিনীত হয়ে কাকুতি-মিনতি সহকারে দু'আ করা, সৎকাজে প্রতিযোগীতা করা, আশা ও ভীতির সাথে তাঁকে ডাকা।

[ঙ]
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখা। একে অপরকে বুঝা। কুর'আন, সুন্নাহ মেনে চলা। আর হ্যা সহবাসের পুর্বের দুয়া পাঠ করা।

[চ]
আর হ্যাঁ সর্বাবস্থায় তাঁর শুকরিয়া আদায় করা। আমাদের এইটা সবসময় মাথায় রাখতে হবে রব্বুল আ'লামীন তাঁর বান্দাকে তাঁর হক্ব থেকে কখনো বঞ্চিত করবেন না। তাই নিরাশ না হয়ে তাঁর কাছে চাইতে হবে। আর তাঁর দেয়া অফুরন্ত নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করতে হবে।

[ছ]
আর যারা ভাবছেন আপনাদের সমস্যা প্যারানরমাল-জ্বীন, যাদু রিলেটেড। তাহলে সাত দিনের ডিটক্স করে দেখতে পারেন। ভালো ফলাফল পাবেন ইনশাআল্লাহ।
এছাড়া বাচ্চা না হওয়ার সমস্যার ক্ষেত্রে হিজামা খুবই উপকারী।
অনেকেই ফল পেয়েছেন আলহামদুলিল্লাহ।
[হিজামা এবং ডিটক্স সম্পর্কে বিস্তারিত কমেন্টে]

পরিশেষে একটা কথা, দু'আ ও চিকিৎসার পাশাপাশি আমাদের অবশ্যই গুনাহ থেকে বাঁচতে হবে। কারন গুনাহও বাচ্চা হওয়ার অন্তরায় হতে পারে তাই বেশি বেশি করে ইস্তিগফার করুন। প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসা নিন, দুয়া করুন আর আল্লাহ রব্বুল আ'লামীনের উপর ভরসা রাখুন...

যারা এ ধরনের সমস্যায় ভুগছেন রব্বুল আ'লামীন তাদের সমস্যা দূর করে দিন, তাদের জন্য সহজ করুন। আর এমন সন্তান-সন্ততি দান করুন যারা দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য কল্যাণকর হয়।। (আমীন)
Share:

বিয়ে নিয়ে ইয়ে...

রুকইয়াহ নিয়ে যত কথা (২)
- উম্মে আব্দুল্লাহ
--------
[ক]
গতদিন বলেছিলাম বর্তমান সময়ে আলোচিত কিছু সমস্যার মধ্যে একটা হচ্ছে বিয়ে বন্ধ।
বেশিরভাগ আপুরই একটা কমন অভিযোগ___
১.আমার বয়স এত হয়ে গেছে। কিন্তু বিয়ে হচ্ছেনা। আগে প্রস্তাব যা আসতো এখন তাও আসেনা। আমল দেন আপু।
২.আপু আমার বিয়ে আসে কিন্তু কথা আগায় না। অমুক হুজুর, অমুক কবিরাজের কাছে গিয়েছিলাম উনারা বলছেন বিয়ে আটকে রাখছে। যাদু নষ্টের আমল দেন।
৩.এত আমল করছি তবুও বিয়ে হচ্ছেনা আপু কি করবো??
৪.আপু একজনকে খুব ভালোবাসি। তাকে কাছে পাওয়ার আমল দেন প্লিজ। কিংবা কাউকে নির্দিষ্ট করে চাওয়া যাবেকি?
.
[খ]
উত্তর(১):
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, আপুরা পড়াশুনা শেষ করে কিছু একটা করবে এই আশায় সময়মত বিয়ে করেন না। বয়স তুলনামূলক বেশি হয়ে যায়। যার ফলে পরবর্তিতে আর উনাদের উপযুক্ত পাত্র খুঁজে পাওয়া যায়না।
আমাদের সমাজ ব্যবস্থা এমন হয়ে গেছে যে এখানে সঠিকসময়ে মেয়ে বিয়ে দেয়াকে বাল্য বিবাহ বলা হয়। অন্যদিকে বাবা-মাও তাদের মেয়েকে স্বাবলম্বী করার জন্য পড়াশুনা করাতে করাতে মেয়ের বয়সের কথাটা ভুলেই যান। ফলাফল...
বিয়ের বয়স পেরিয়ে গেলেও মেয়ের বিয়ে হয়না।
আব্দুল্লাহর বিয়ের জন্য পাত্রী খুঁজতে গিয়ে অভিজ্ঞতা হয়েছে বেশ..। ১৮/১৯/২১ বছরের মেয়েদেরও নাকি বিয়ের বয়স হয়নি। আরো ২/৪ বছর যাক মেয়ে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করুক তারপর ভেবে দেখবে।
যাই হোক, সঠিক সময়ে সঠিক কাজ না করলে একটু ভোগান্তিতে তো ভুগতেই হবে। তাই হতাশ না হয়ে বেশি বেশি এস্তেগফার পড়ুন আর দু'আ করতে থাকুন।
.
[গ]
উত্তর(২):
বর্তমান সময়ে শিরক, কুফর মহামারী আকার ধারন করেছে। এবং এইগুলা এত সহজলভ্য হয়ে গেছে যে, ভাত রান্না করার চেয়েও কুফরি করার সহজ! (নাউযুবিল্লাহ) এর কারণে এসব দ্বারা অন্যের ক্ষতি করার প্রবণতা খুবই বেড়ে গেছে।
তাই যাদু করে বিয়ে বন্ধ করা অস্বাভাবিক কিছু না। আর এইটা নিয়ে ভয় পাওয়ারও কিছু নেই। যাদু কাটানোর জন্য ঠিকঠাক রুকইয়া করলে যাদু কেটে যাবে ইনশাআল্লাহ।
আর যাদু কাটতে কতটা সময় লাগবে তা নির্ভর করবে আপনার নিয়্যাত, ইয়াক্বীন আর মেহনতের উপর। দয়া করে এ নিয়ে বারবার প্রশ্ন করবেন না।
আর হ্যাঁ! এর জন্য কোন কবিরাজের কাছে যাবেন না । কারন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উনারা কুফরি কালাম দিয়ে কুফুরি কাটেন। তাই জেনেশুনে নিজের ঈমান নষ্ট করা থেকে বিরত থাকুন। কবিরাজদের থেকে নিরাপদ দুরত্ব বজায় রাখুন।
আরেকটা ভয়ংকর ব্যাপার হচ্ছে, যাদু-টোনার সমস্যা না থাকলেও অনেকে দ্রুত বিয়ে হওয়ার জন্য কবিরাজের শরণাপন্ন হন। যেখানে তারা আমল হিসেবে কিছু আউলা-বাউলা কথা শিখিয়ে দেন বা তাবিজ দেন। যা কোনভাবেই শরিয়াহসম্মত না।
তাই আবারো বলছি জেনেশুনে নিজের ঈমানকে হুমকির মুখে ফেলবেন না প্লিজ।
আর বিয়ে হচ্ছেনা মানেই যে আপনাকে যাদু করা হয়েছে সবসময় এমনটাও ভাবা বোকামি। সবকিছুরই তো নির্দিষ্ট একটা সময় আছে। আর কিসে বা কখন বান্দার জন্য কোনটা উপযুক্ত তা আল্লাহ তা'আলা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। শুধু দরকার একটু সবর আর দু'আ।
তবে যাদুর সব লক্ষণ যদি মিলে যায় তাহলে আপনি বিয়ে বন্ধের রুকইয়া করতে পারেন।
তবে আমি সবসময় একটা কথা বলি যেকোন রুকইয়া শুরুর আগে আগে সাতদিন বদনজরের রুকইয়া করে নেয়া উত্তম। এতে পরের রুকইয়া ভালো ইফেক্ট ফেলে আলহামদুলিল্লাহ।
.
[ঘ]
উত্তর(৩):
প্রথম কথা হচ্ছে আমাদের এইটা ভুলে গেলে চলবেনা যে আল্লাহ তা'আলার হুকুম ব্যাতিত কোন কিছুই ঘটেনা। আর তিনি যা করেন বা করবেন তা আমাদের মঙ্গলের জন্যই করেন বা করবেন। আপাত দৃষ্টিতে মনে হতে পারে আপনার উপর বিপদ আপতিত হয়েছে। আপনি অনেক কষ্টে আছেন। এতে ভালো কিছু চোখে পড়ছেনা। হতাশায় ভুগছেন কেন এমন হলো। পরবর্তিতে দেখবেন যে এইটা আপনার জন্য কল্যাণকর প্রমাণ হবে।
আর যদি দুনিয়াতে এমন কিছু আপনার চোখে না পড়ে, তাহলে বুঝবেন রব্বুল আ'লামীন আপনাকে আখিরাতে এর উত্তম প্রতিদান দিবেন। কারন তিনি তাঁর বান্দাকে কখনো বঞ্চিত করবেন না। তাই হতাশ হবার কিছু নেই। তাঁর উপর, তাঁর ফয়সালার উপর আস্থা রাখুন। দেখবেন সব কিছু সহজ হয়ে যাবে। ইনশাআল্লাহ।
এ তো গেলো ইয়াক্বীনের কথা।
এবার বলি আমলের কথা।
যেকোন আমল, দু'আ কবুলের পুর্বশর্ত হচ্ছে সকল প্রকার গুনাহ থেকে বাঁচা।
আর পুর্বেকৃত গুনাহর জন্য ইস্তেগফার করা। অথচ আমাদের অবস্থা এমন আমরা গুনাহ করছি সাথে আমলও করছি। তাহলে আমাদের আমল কাজে লাগবে কিভাবে বলতে পারেন??
আপনি ফরজ ইবাদাত বাদ দিয়ে শুধু নফল ইবাদাত করছেন, আর চাইছেন আর বলছেন এত চাইছি তাও হচ্ছেনা।
একটু ভেবে দেখেন তো, সত্যিই কি আপনি চাওয়ার মত চাইছেন??
অনেক আপু বলেন- আপু আমি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি, তাহাজ্জুদও পড়ি। আর কি করবো??
ওইসব আপুদের বলবো আপু বেশি কিছু না আপনি লাইব্রেরী থেকে একটা "আহকামুন নিসা" কিনে ফেলেন। এরপর মিলিয়ে দেখুন আপনার আর কি করা উচিত।
আর যা করছেন তা ঠিকমত হচ্ছে কিনা।
আর একটা কথা আপনি নামাজ কাযা করছেন না কারন এর জন্য আপনাকে কঠিন শাস্তি পেতে হবে। কিন্তু একই সাথে আপনি পর্দা সম্পর্কে গাফেল। “পর্দা> যে ফরজের কোন কাযা নেই”। আপনি বেপর্দা হয়ে যত মুহুর্ত কাটাবেন তত মুহুর্তের জন্য আপনাকে হিসেব দিতে হবে। ফিরে আসুন আপু। এখনও সময় আছে।
আচ্ছা এইবার নিজেকে প্রশ্ন করুন, আপনিই সত্যিই কি আল্লাহকে ডাকার মত ডাকছেন?
.
[ঙ]
উত্তর(৪): বিয়ের জন্য কাউকে নির্দিষ্ট করে চাওয়া উচিত নয়। আমাদের জন্য কি উত্তম, কে উত্তম তা আল্লাহ ব্যতিত কেউ বলতে পারবে না। তাই আল্লাহর কাছে উত্তম কিছুর জন্য দু'আ করুন।
এ প্রসঙ্গে আমার এক বান্ধবীর কথা বলি। ওর বিয়ের সাত বছর চলছে। এই সাত বছরে ও সাতদিনও বোধহয় সুখে সংসার করতে পারেনি। ও শুধু এখন বলে কেন যে ওকে এত জোর করে চাইছিলাম। কত দু'আ যে করছি ওকে পাওয়ার জন্য। এখন শুধু আফসোস লাগে। মনে হয় তখন যদি এমন করে না চাইতাম। যদি আল্লাহ তা'আলার উপর ছেড়ে দিতাম।
এ তো পাওয়ার কথা।
এইবার বলি না পাওয়ার কথা____
সেদিন এক আপু বলছিলেন একজনকে খুব করে চেয়েছিলাম কিন্তু পাইনি। খুব আফসোস হতো সেজন্য। কিন্তু এখন বুঝি আল্লাহ তা'আলা আমাকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন।
কারন একমাত্র তিনিই জানেন কোনটা ভালো আর কোনটা খারাপ।
এ সম্পর্কে কুর'আনুল কারীমে ইরশাদ হয়েছে____
“...তোমরা এমন অনেক কিছুকে অপছন্দ কর, অথচ সেটা তোমার জন্য ভালো। আবার অনেক কিছুকে তোমরা পছন্দ করো, অথচ সেটা তোমাদের জন্য খারাপ।"
(সূরা বাকারা:২১৬)
তবে যেহেতু আমাদের কর্তব্য হলো তাকদীরে বিশ্বাস করা, আর আমল করা।
সে হিসেবে আমরা এখন বিয়ের জন্য আমল ও অজিফার কথা জানবো এবং তদানুযায়ী আমল করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ________
[চ]
১. পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করুন সাথে নিয়মিত তাহাজ্জুদ ও সালাতুল হাজত পড়ে দু'আ করুন। তাঁর কাছে সাহায্য চান।
.
২. বেশি বেশি এস্তেগফার করুন। আর এস্তেগফার হচ্ছে এমন এক আমল যার উছিলায় আল্লাহ তা'আলা রিজিক, সম্পদ, সন্তান-সন্ততিতে প্রশস্ততা দান করেন।
এস্তেগফার বিষয়ে আরোও ভালো করে জানতে প্রথম কমেন্টের কিঙ্গিক দেখুন…………
.
৩. নিম্নোক্ত দুয়াটি বেশি বেশি পাঠ করবেন। উঠা-বসা, চলা-ফেরা যেকোন সময়েই পড়তে পারেন।
رب إني لما أنزلت إلي من خير فقير
রব্বি ইন্নি..লিমা.. আং..ঝালতা ইলাইয়্যা মিন খইরিং.. ফাক্বি..র।
অর্থ : হে আমার প্রতিপালক! আপনি আমার প্রতি যেই কল্যাণই নাযিল করবেন আমি সেটারই মুখাপেক্ষী।
.
৪. পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর সূরা ফুরকানের ৭৪ নং আয়াত পড়বেন।
رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوٰجِنَا وَذُرِّيّٰتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا
রব্বানা..হাব লানা..মিন আঝওয়াজিনা..ওয়া যু'র্রিয়্যা..তিনা..ক্বুর্রতা আঅ'য়ুনিউ..ওয়াজআ'লনা..লিলমুত্তাক্বিনা ইমা..মা..।
অর্থ: হে আমাদের রব, আপনি আমাদেরকে এমন স্ত্রী/স্বামী ও সন্তানাদি দান করুন যারা আমাদের চক্ষু শীতল করবে। আর আপনি আমাদেরকে মুত্তাকীদের নেতা বানিয়ে দিন।
.
৫ ﻳﺎﻓﺘﺎﺡ , ( ইয়া ফাত্তাহু)প্রতিদিন
ফজরের পর বাম হাতের উপর ডাম হাত রেখে আল্লাহর এই নামটি ৪০ বার পড়বেন। এভাবে ৪০ দিন পড়লে ইনশাআল্লাহ ফল পাওয়া যাবে।
এই আমলগুলোর প্রভাব আলহামদুলিল্লাহ আমি নিজে দেখেছি। তাই শেয়ার করলাম। বাকি অন্য আপুরা আরো কিছু জানলে শেয়ার করতে পারেন।
.
[ছ]
আর হ্যাঁ আগেই বলেছি যেকোন আমল বা দু'আ কবুলের পুর্বশর্ত হচ্ছে গুনাহ থেকে বাঁচা। তাই সকল প্রকার গুনাহ বাঁচুন। পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করুন।হারাম থেকে বাঁচুন। পর্দার মধ্যে থাকুন। আর রহমানুর রাহীমের দয়ার প্রতি ভরসা রাখুন। হতাশ হবেন না।
আর যেসব আপুরা রুকইয়া করতে চাচ্ছেন উনারা আব্দুল্লাহর যাদু নিয়ে লিখাটা পড়ে নিতে পারেন। আর রুকইয়া সংক্রান্ত তথ্য বা সাহায্যের জন্য রুকইয়া সাপোর্ট গ্রুপে যোগাযোগ করুন।
আরেকটা কথা আপনারা সবাই জানেন কেউ যদি সরাসরি রুকইয়া করাতে চান সেক্ষেত্রে পর্দা আবশ্যক। বেপর্দা হয়ে আসলে রুকিয়া করা হয়না। তাহলে সেলফ রুকইয়া করার জন্য কি এই নিয়ম কোনই গুরুত্ব বহন করেনা??
রব্বুল আ’লামীন আমাদের সকলকে সঠিকভাবে আমল করার তৌফিক ও সঠিক বুঝ দান করুন।। (আমীন)
Share:

নজর লাগা

- উম্মে আব্দুল্লাহ
-----------
সন্ধ্যার কিছু সময় আগে বসে বসে রুকিয়া শুনছি এমন সময় এক আত্মীয়া হুড়মুড় করে রুমে আসলেন। এসেই বলেন মেয়ে খাচ্ছেনা কি করি বলোতো। এরপর নিজেই বলা শুরু করলেন এত নজর লাগে ওর!! ফর্সাও না, মোটাও না তাহলে এত নজর লাগে ক্যান!!
উনার মত অনেক আপু এই ব্যাপারটা নিয়ে বেশ চিন্তিত। অনেকেই এই ব্যাপারটা নিয়ে ইনবক্স করছেন।
তাই মনে হলো এই ব্যাপারটা নিয়ে কিছু বলা দরকার।
আগেও বলেছি নজর লাগা শুধু খারাপ নজরকে বুঝায় না।
এমনিতেই অবস্থার পরিবর্তন হলে যেমন-একটু স্বাস্থ্য ভালো হলো বা একটু খেলে অনেকেই বলেন বাহ!! পিচ্চি তো ভালোই খাচ্ছে বা স্বাস্থ্যটা একটু ভালো হইছে।
ব্যাস!! নজর লাগার জন্য একথাগুলোই যথেষ্ট। কারন এতে আল্লাহ তা'আলার নাম নিয়ে প্রশংসা করা হয়নি।
তাই আমাদের উচিত এ ব্যাপারগুলো নিয়ে সচেতন থাকা।
তবে সবসময় যে নজর লাগার কারনে এমন হয় তা কিন্তু না। তাই বাচ্চা কেন কাঁদে সেই কারনটা খুঁজে বের করে সমাধান করা জরুরী। এরপরেও যদি বাচ্চা কাঁদে তাহলে বদনজরের চিকিৎসা করতে পারেন। আর এইবার বেশি শীতের কারনে বড়দেরই অবস্থা খারাপ সেখানে ছোটরা একটু সমস্যা করতেই পারে।
তাই এই ব্যাপারটা একটু বেশিই গুরুত্ব দিবেন।
.
আর সকাল সন্ধ্যায় তিন কুল পড়ে শরীর মুছে দিবেন। আর নজর লাগা বুঝতে পারলে বদনজরের চিকিৎসা করাবেন। এখন অনেকেই প্রশ্ন করেন আপু ও তো পিচ্চি। ওরে ক্যামনে গোসল করাই?
উত্তর: ছোটদের গোসল না করালেও চলে।
এক্ষেত্রে নিম্নক্ত আয়াত বাচ্চার মাথায় হাত রেখে পড়বেন____
بِاسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ مِنْ كُلِّ شَىْءٍ يُؤْذِيكَ مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ اللَّهُ يَشْفِيكَ بِاسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ
বিসমিল্লাহি আরকিক মিন কুল্লি শাইয়িই ইউ’যীক। মিন শাররি কুল্লি নাফসিন আও ‘আইনি হাসিদ। আল্লাহু ইয়াশফিক। বিসমিল্লাহিল্লাহি আরকিক।
অথবা,
بِاسْمِ اللَّهِ يُبْرِيكَ وَمِنْ كُلِّ دَاءٍ يَشْفِيكَ وَمِنْ شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ وَشَرِّ كُلِّ ذِي عَيْنٍ
বিসমিল্লাহি ইউবরিকা ওয়ামিন কুল্লি দা-ইন ইয়াশফিক। ওয়ামিন শাররি হাসিদিন ইযা হাসাদ। ওয়া শাররি কুল্লি যী”আঈন।
এতে নজর কেটে যাবে ইনশাআল্লাহ..
.
আর যাদের গোসল করানো সম্ভব তাদের গোসল করাবেন।
রুকইয়ার গোসলের পদ্ধতি হচ্ছে-
"একটা বালতিতে পানি নিবেন, তারপর ওই পানিতে দুইহাত ডুবিয়ে নিচের জিনিশগুলো সব ৭বার করে পড়বেন (যদি টয়লেট আর গোসলখানা একসাথে হয় তখন এসব অবশ্যই বাহিরে এনে পড়তে হবে) -
"দরুদ শরিফ, ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, চারকুল (কাফিরুন, ইখলাস, ফালাক্ব, নাস) প্রত্যেকটা ৭বার, শেষে আবার দরুদ শরিফ"
এসব ৭বার করে পড়ার পর হাত উঠাবেন, এবং এই পানি দিয়ে গোসল করবেন।
প্রথমে এই পানি দিয়ে গোসল করলেন পরে অন্য পানি দিয়ে ভালোমতো করলেন, সমস্যা নাই। যার সমস্যা সে যদি পড়তে না পারে, তাহলে অন্য কেউ এসব পড়ে পানিতে ফু দিয়ে দিবে। আরও ভালো হবে, যদি প্রথমে কিছুক্ষণ রুকইয়াহ শুনে এরপর গোসল করতে যান। তবে এটা আবশ্যক না।
.
সমস্যা বেশি হলে এরকম ৩ সপ্তাহ করতে পারেন। সমস্যা কম হলে কখনো একদিনেও ভালো হয়ে যায়। তবে ভালো হওয়ার পরেও ২-৩দিন করা উচিত।
আর পারলে বদনজরের রুকিয়া শুনাতে পারেন। প্রশ্ন আসতে পারে কোন সমস্যা হবেনা তো??
উত্তর: আমাদের পিচ্চি কান্নাকাটি করলে রুকিয়া প্লে করে দেই। এরপর আলহামদুলিল্লাহ ও শান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
একবারের ঘটনা বলি___
ওর শরীরে একবার চর্মরোগের মত হয়েছিলো। দেখতে যে কেমন লাগছিলো। আর কষ্টও পাচ্ছিলো ও অনেক। আমরা ভাবলাম এলার্জি মনে হয়। এরপর কত ডাক্তার দেখালাম ওষুধ খাওয়ালাম কিছুতেই কমেনা। এরপর ওকে নজরের গোসল করালাম সাথে সকাল,সন্ধ্যায় তিন কুল পড়ে ঝাড়া শুরু করলাম। এরপর কিছুদিনের মধ্যে আল্লাহ তা'আলার অশেষ রহমতে ও সুস্থ্য হয়ে উঠলো। (আলহামদুলিল্লাহ)
.
অনেকে শুনি মরিচ, পানপাতা এইসব দিয়ে নজর কাটায়। দয়া করে এইগুলো পরিহার করুন। কুর'আন, সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরুন। আর দুনিয়া ও আখিরাতকে সুন্দর করুন।
Share:

রুকইয়ার দ্বারা সমাধান বিষয়ে..

- উম্মে আব্দুল্লাহ
-----------
রুকিয়ার সাথে সম্পৃক্ততার পর থেকে আল্লাহ রব্বুল আ'লামীন অনেক কিছু দেখা-শুনার সুযোগ করে দিয়েছেন আলহামদুলিল্লাহ।
আপুরা তাদের নানা সমস্যার কথা শুনিয়েছেন। সাথে সমাধানের উপায় জানতে চেয়েছেন। কেউ কেউ সরাসরি রুকিয়া করাতে চেয়েছেন। কেউবা আশাই ছেড়ে দিয়েছেন।।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমার সাজেশন ছিলো____
আপু দু'আ করেন, রব্বুল আ'লামীনের কাছে সাহায্য চান আর ইস্তেগফার করেন বেশি বেশি।। সাথে সালাতুল হাজত আর তাহাজ্জুদ তো আছেই।। নিরাশ হবেন না তাঁর উপর ভরসা রাখেন। সবকিছু সহজ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ ।
কিছু ক্ষেত্রে হয়তো আমলের কথাও বলেছি আবার কিছু ক্ষেত্রে রুকিয়া করার কথা বলেছি।।
.
.
কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখেছি আপুরা দু'আর ব্যাপারটাকে খুব বেশি গুরুত্বের সাথে দেখেন না। যেখানে দু'আ আর নামাজই হচ্ছে সমস্যা সমাধানের সর্বোত্তম হাতিয়ার। অনেকে আবার ভাবেন আমি তাদের সমস্যাগুলোকে ইগনোর করছি।
আমি নিজেই নানা সমস্যায় জর্জরিত থাকি,(আলহামদুলিল্লাহ আলা কুল্লি হাল) আর সবকিছুর মাঝে এই দু'আ আর তাওয়াক্কুলই আমার অক্সিজেন সঞ্চার করে আলহামদুলিল্লাহ।
এ প্রসংগে একটা ঘটনা শেয়ার করি_____
এক্সামের মধ্যে একবার আমি বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। শরীরের যে কি হালত ছিলো বুঝাতে পারবোনা। ব্যাথা কমানোর জন্য পেইন কিলার [ডাবল ডোজ]নিয়েও কাজ হচ্ছিলো না। তখন ইনজেকশন নেয়া শুরু করলাম তাতেও কাজ হলো না। তখন মাথায় আসলো সালাতুল হাজতের কথা।[আগেই বলেছি ইমান দুর্বল তাই নামাজের কথাটা আগে মাথায় আসেনি]
এরপর নিয়ম করে সালাতুল হাজত, আর দু'আ করেছি। এরপর আলহামদুলিল্লাহ এতটা সুস্থ্যতা লাভ করেছিলাম যে কল্পনাও করতে পারিনি। না তখন আমি রুকিয়া করিনি। শুধু সালাতের মাধ্যমে রব্বুল আ'লামীনের কাছে সাহায্য চেয়েছি।
শুধু রুকিয়া করেই যে সমস্যার সমাধান মিলবে তা কিন্তু নয়। বরং কিছু ক্ষেত্রে এহেন বিশ্বাস আমাদের ইমানকে দুর্বল করে দেয়।
আমাদের তাওয়াক্কুল কমে যায়।
যাদের ইমান মজবুত তাদের হিসেব অবশ্য আলাদা। কিন্তু আমার মত দুর্বল ইমানের বান্দীর জন্য বেশ কঠিন..
এইবার এ প্রসংগে আরেকটা ঘটনা বলি___
এইটা আরেক এক্সামের সময়ের ঘটনা।
তখন আমি রুকিয়া করছি নিয়মিত। আর এর দ্বারা বহু সমস্যায় উপকার পাচ্ছিলাম আলহামদুলিল্লাহ। বিশেষ করে এক্সামের সময় ভয়ংকর কিছু সমস্যা দেখা দিতো সেগুলা অনেক কন্ট্রোলে চলে আসছিলো আলহামদুলিল্লাহ।
যাই হোক, তখন রুকিয়ার উপর এমন এক বিশ্বাস চলে আসলো যে এক্সাম ভালো হওয়ার জন্য রুকিয়া শুনতে লাগলাম।
আসলে তখন মাথায় এমন একটা বিষয় কাজ করছিলো যে, মনে হতো রুকিয়া করলে চাঁদও হাতে পাওয়া যায়(রব্বুল আ'লামীন মাফ করুন)।
আর এই বিশ্বাসের ফলস্বরুপ এক্সামের ফল যা হলো তা ছিলো ইতিহাস...
আমি বলছিনা যে, রুকিয়া করার কোন দরকার নেই। বরং আমি নিজেই রুকিয়ার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আর ফায়দাও অনেক পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ। তবে আমি শুধু বলছি রুকিয়ার ব্যাপারটা যেন বাড়াবাড়ি ছাড়াছাড়ি পর্যায়ে না যায়...
Share:

কে আমাকে যাদু করছে??

- উম্মে আব্দুল্লাহ
---------
[ক]
ঘটনা ১:
রুকিয়া নিয়ে কাজ করার প্রথমদিকের কথা এক আপু ইনবক্সে তার সমস্যা জানানোর পর সমাধান না চেয়ে পেছনের কারন জানতে চাইলেন। সমস্যাটা উনার ছিলো না। ছিলো উনার মামীর।
সমস্যা শুনে মনে হচ্ছিলো বদনজর আর সিহরের সমস্যা(বাকি আল্লাহ তা'আলাই ভালো জানেন)।
উনাকে বললাম আপু এইগুলা হতে পারে। মজার ব্যাপার হচ্ছে উনারা নিজেরাও জানেন এই সমস্যা।
উনি আসলে চাচ্ছিলেন এই ঘটনার পেছনে কে আছে তা জানতে। আমি উনাকে যতই বুঝানোর চেষ্টা করি উনি কিছুতেই বুঝেন না। উনার একই কথা উনাকে জানতে হবে আর উনি আমাকে নক দিয়েছেন এই কারনেই যে কেউ ইস্তেখারা করে কিনা। উনাকে এমন একজন আলেম খুঁজে দিতে হবে যিনি কিনা জানাবেন আসল ঘটনা কি। এর আগে তিনি বহুজনকে দিয়ে ইস্তেখারা করিয়েছেন। কিন্তু তিনি বিশেষ কিছু জানতে পারেন নি। তাই তিনি হতাশ হয়ে পড়েছেন।
তার উপর তার অভিযোগ ছিলো যে এতো ইস্তেখারা করছি সমস্যা তো কমেনি। আমি উনাকে বুঝানোর চেষ্টা করলাম যে ইস্তেখারা করেছেন ভালো কথা এখন একটু সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন। সমস্যা সমাধানের জন্য তো মানুষ ইস্তেখারা করেনা। কিন্তু উনি নাছোড়বান্দা। উনি ইস্তেখারাই করবেন আবার।
ওয়াল্লাহি, উনি যতসময় ধরে ইস্তেখারা করছেন তত সময় যদি সমস্যা সমাধানের পেছনে দিতেন তার সমস্যা সমাধান হয়ে যেত। (আল্লাহ চান তো)
.
ঘটনা ২:
এক আপুর এস এম এস ছিলো এমন___
__আপু আপনি কি কবিরাজ??
__না আপু।
__ আপনি কি গননা করেন? (মানে উনি বলতে চাচ্ছিলেন গায়েব জানি কিনা)
__না আপু গায়েবের খবর একমাত্র আল্লাহ তা'আলা জানেন। কোন মানুষেরই গায়েব জানার/বলার ক্ষমতা নাই। আর যারা এইগুলা করে বা বলে তাদের থেকে দুরত্ব বজায় রাখাই উত্তম।
উনি আমার উত্তরে সন্তুষ্ট হতে পারেন নি।
পরে উনার কথা শুনে বুঝলাম উনি এমন কাউকে খুঁজছেন যিনি কিনা হাত গননা করেন।
মানে উনার সমস্যা সমাধানের থেকে সমস্যার পেছনের কারন জানা দরকার।
.
ঘটনা ৩:
পরিচিত এক আন্টি যাদু-টোনার সমস্যায় ভুগছিলেন। অনেক হুজুর কবিরাজ দেখিয়েছেন।যাইহোক এইবার কোন এক কবিরাজ উনাদের বলেছেন যে উনার খুব কাছের এক আত্মীয়(নির্দিষ্ট করে বলেছেন) উনাদের যাদু করেছেন। ব্যাস!! আন্টিরা উনাদের সেই আত্মীয়কে ধরলেন। আর এরপরের বাকিটা ইতিহাস....
.
ঘটনা ৪:
এক আপুর কথা বলি উনারও সিহরের সমস্যা। বেশ কয়েকবছর থেকে ভুগতেছেন। উনার যে ধরনের সমস্যা সেই সমস্যা থেকে অনেকেই শিফা লাভ করছেন আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু ইনার বিশেষ কোন ফায়দা হয়না। কারন উনি সমস্যা সমাধানের থেকে বেশি পেছনের কারনগুলো নিয়ে বেশি ব্যস্ত। এর পেছনে কি কারন থাকতে পারে? কে বা কারা এইটা করেছে? এইসব আর কি...
.
উপরে তো শুধুমাত্র চারটা ঘটনার কথা বললাম এ যাবৎ পর্যন্ত যত জনের সমস্যা শুনেছি তাদের বেশিরভাগই এ ধরনের চিন্তা ভাবনা পোষন করেন।
অনেকে তো আরো কয়েকধাপ এগিয়ে উনারা নিজেরাই জানেন কে বা কারা এ ঘটনার পেছনে আছেন। আর সেটা পাব্লিকলিও বলে বেড়ান।
যদি বলা হয় কিভাবে জানছেন।
উত্তর আসে অমুক হুজুর,তমুক কবিরাজ এর জেনেছেন। অনেকে আবার আলেম ব্যক্তি, বুজুর্গ ইনাদের থেকেও নাকি শুনেন।
অনেক হয়েছে এইবার বন্ধ করেন এইসব। আর কত!!
আপনি শিরক কুফরের ভয়ে রুকিয়া করাতে চাচ্ছেন অথচ সমস্যার কারন জানার জন্য আবার তাদের কাছেই যাচ্ছেন।
ব্যাপারটা হচ্ছে এমন__
ডাকাতি করা গুনাহ দেখে আপনি ডাকাতি বাদ দিয়ে চুরি করা ধরছেন।
অথচ এ সম্পর্কে হাদিস শরিফে নানাভাবে হুশিয়ারি দেয়া হয়েছে।
নবী কারীম (স) বলেন: "যে ব্যাক্তি কোন জ্যোতিষীর নিকট গেলো এবং তার নিকট কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করলো তবে ৪০ রাত পর্যন্ত তার নামাজ কবুল হবেনা।"
(সহিহ মুসলিম)
অন্য এক হাদিসে আছে,"যে ব্যক্তি জ্যোতিষি,যাদুকর বা কোন গনকের নিকট আসলো আর সে যা বলে তা বিশ্বাস করলো
তাহলে সে মুহাম্মদ (স) এর প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তা কুফুরি করলো।"
(তারগীব ৪/৫৩)
এরপরে আর কিছু বলার দরকার আছে বলে আমার মনে হয়না।
[খ]
বেশিরভাগ ভিক্টিমই তাদের সমস্যার কথা বলতে গিয়ে বলেন, আমার অমুক আত্মীয় আমাকে যাদু করেছে। কেউ কেউ পরিবারের সদস্যের কথাও বলেন। অথচ আমাদের একে অপরকে সন্দেহ করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। তারপরেও আমরা ওই কাজই করছি। তাও আবার কার কথা শুনে যাদুকর,কবিরাজ এদের কথা শুনে। যারা কিনা শয়তানের সাহায্য নেন।
আর শয়তান?!?
যে কিনা আপনাকে জান্নাতে যেতে না দেয়ার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
তাহলে এখন ভাবুন আপনি কোন পথে যাবেন।
আপনি কেন বুঝতেছেন না এইটা শয়তানের একটা সুক্ষ্ম চাল আমাদের গোমরাহ করার। আমাদের দিয়ে শিরক কুফরের মত ভয়ংকর গুনাহ করানোর। অন্যদিকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অভিযুক্ত ব্যক্তিরা খুবই কাছের হন। আর ফলাফল সম্পর্কে ফাটল।
আর এইটা সবারই জানা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী কখনো জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেনা।
তাহলে এতকিছু করে আপনার লাভটা হলো কি??
গুনাহর খাতায় নতুন নতুন গুনাহ যোগ, মানুষিক অশান্তি আর জান্নাতে প্রবেশ না করতে পারার গ্যারান্টি।
আর হ্যাঁ একটা অনুরোধ আপনি যখন আপনার সমস্যার কথা জানাবেন তখন দয়া করে এই বিষয়গুলো পরিহার করবেন।
কোন কবিরাজ, কোন হুজুর আপনাকে কি বললো বা কোন আত্মীয় আপনাকে কি করলো এইগুলা জানার কোন প্রয়োজন নেই আমাদের। আমরা বিশ্বাস করি একমাত্র রব্বুল আ'লামীনই গায়েব জানেন।
তিনি ব্যতীত অন্য কোন মাখলুকাতের গায়েবের খবর বলার ক্ষমতা নেই।
সুতরাং যারা এইগুলা বলে বা করে তাদের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন।
আর ইতিমধ্যে যদি এমন কিছু আপনার দ্বারা হয়ে যায় তাহলে তার জন্য দ্রুত তওবা করুন। কেননা ইস্তেগফারই সমস্যা সমাধানের উত্তম চিকিৎসা।
রব্বুল আ'লামীন আমাদের সকলকে শিরক,কুফরের মত ভয়ংকর গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দান করুন।
Share: