আনওয়ার শাহ ভাইয়ের লেখার অংশ -
আমরা নাকি কথায় কথায় ফেমিনিজম এনে একে ওকে ট্যাগ দিয়ে দিই। ফেমিনিজমের গোড়ায় আছে ট্রেডিশনাল জেন্ডার রোলকে অস্বীকার করা। অর্থাৎ মেয়েদের কাজ ঘরে নয় এটা প্রতিষ্ঠা করা। ঐ পোস্টেও তারই সুর লক্ষনীয় ছিল, যদিও জোরালো ছিল না। এখন আমরা যদি বলি এখানে ফেমিনিজমের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে তাহলে আমাদের দোষ দেয়া হবে ট্যাগিং এর।
এছলামি ফেমিনিস্টরা সোজাসুজি এই সুরে কথা বলে না। কিন্তু তাদের পোস্টে ঘরের কাজকে হেয় করা এবং বাইরের যে কোন কাজকে গ্লোরিফাই করা স্পষ্ট বোঝা যায়। স্বামীর দায়িত্বের কথা তাদের কন্ঠস্থ, কিন্তু স্ত্রীর কর্তব্যের ব্যাপারে তাদের দৃশ্যত কিছু বলতে দেখা যায়না। বরং তাদের লেখা পড়লে মনে হলে খাওয়া আর ____ ছাড়া স্ত্রীদের বুঝি ইসলাম কোন দায়িত্বই দেয়নি। অথচ ইসলাম ন্যায়বিচারভিত্তিক ধর্ম।
আধুনিক দুনিয়াতে যারা ফেমিনিজম থিউরী এপ্লাই করেছে তাদের অবস্থার দিকে তাকালেই বোঝা যাবে এর পরিণতি কী। জাপানে এখন পুরুষরা বিয়ে করতে চায় না। কারণ বিয়ে করা লস প্রজেক্ট। প্রচুর দায়িত্ব নিতে হবে, অথচ লাভ প্রায় শুন্য। চাইলে সে কয়েকদিনের জন্য চাহিদা মিটিয়ে নিতে পারে অল্প টাকাতেই। এছাড়া জনপ্রিয় হচ্ছে সেক্স ডল। এসব পুতুল জাপানি পুরুষদের যৌণ চাহিদা মিটাবে। ফলে আর বিয়েই লাগবে না। এমন অবস্থার অনিবার্য পরিণতি হলো সভ্যতার পতন।
এই বাংলাদেশেই এমন গ্রুপ আছে এখন। ছেলেরা যেখানে বিয়ের বিরুদ্ধে প্রচার করে। তারা আজীবন মেয়েদের সংশ্রব থেকে দূরে থাকার শপথ নেয়। এই ঘোর অন্ধকার সময়েও শুধু আল্লাহকে ভয় করে বলেই দ্বীনি ভাইরা বিয়ে করতে চায়। সেখানেও এসব ফেমিনিস্ট বা ফেমিনিজম প্রভাবিত মহিলা যেসব কথাবার্তা ছড়াচ্ছে তার জন্য কতটুকু দায় তারা নিতে চায়?
তাদের প্রশ্ন করি, তারা কি চায় মুসলিম সমাজটাও জাপানের মত হোক? এসব থিউরির অনিবার্য পরিণতি ওটাই। আল্লাহকে যে ভয় করে, সে ছাড়া আর কেউই বিয়ে নামের এরকম লস প্রজেক্টে যেতে চাইবে না, যেখানে সব দায়িত্ব ছেলেদের আর মেয়েদের কোন দায়িত্বই নাই। আবার এরকম বন্ধন থেকে মুক্ত হতে চাইলেও প্রচুর টাকা জরিমানা দিতে হবে।
শেষ করবো নতুন দ্বীনে আগ্রহী হওয়া বোনদের উদ্দেশ্যে কিছু বলে। আপনাদের কয়েকটা কাজ করতে হবে সত্য পথ পেতে। ১। মেয়ে বলেই কারো কথা ঠিক হবে - এই জাতীয় আবেগ বর্জন। ২। আপনার পক্ষের হলেই ঠিক এই জাতীয় মনোভাব বর্জন। ৩। আপনার সুবিধার সাথে আপনার দায়িত্ব কী তার আলোচনা যদি না পান তবে চিন্তা করবেন এটা ইনসাফ সম্মত হচ্ছে কিনা। এটা ধোঁকাবাজি।
মনে রাখবেন, দ্বীনি লেবেল থাকলেই তার থেকে দ্বীন পাবেন এমন নাও হতে পারে। আপনাকে আল্লাহর সাথে সৎ থাকতে হবে। দরকারে যারা ইনসাফশুন্য কথা প্রচার করে, তাদের এভয়েড করতে হবে। যদিও সে কথা আপনার মনঃপুত হোক না কেন। কারণ ইনসাফের উলটো হলো জুলুম আর জুলুমে অংশ নিলে ওটা কোন না কোনভাবে আরো বর্ধিত জুলুম হয়ে আপনার দিকেই ফিরে আসবে। অতএব সাবধান।
ওয়ামা আলাইনা ইল্লাল বালাগ। আল্লাহ আমাদের সবাইকে বোঝার তাওফিক দিন। শুধু নিজের সুবিধার কথা না ভেবে পুরো উম্মাহর কথা একসাথে ভাবার তাওফিক দিন।
-------------
আমি 'সেই' পোস্টের নিছে দুইটা কমেন্ট করেছিলাম, একটু এডিটসহ যুক্ত করে দিই
"ফেমিনিজম হল নারীদের প্রতিক্ষেত্রে পুরুষের সাথে তুলনা বা প্রতিযোগিতার শিক্ষা দেয়ার মতবাদ। পক্ষান্তরে ইসলামে প্রত্যেকের মর্যাদা ও বিধান স্বতন্ত্র। এবার মিলিয়ে দেখেন 'আপনার লেখার মাঝে ইসলাম পান নাকি ফেমিনিজম।' আমি মূলনীতি বলেছি। তাহকিক নিজেই করতে পারবেন।"
"দ্বিতীয়তঃ (আপনি রুকইয়াহ নিয়ে উপহাস করলেন, এজন্য রুকইয়াহ থেকেই উদাহরণ নিন), যারা জিন-জাদু সম্পর্কে জানে না, তাদের মাঝে এসব সমস্যা সুপ্ত থাকলেও বুঝতে পারে না। বদনজর সম্পর্কে জানার আগে মানুষ বুঝতেই পারে না, বদনজরের জন্য তার জীবনে কত ক্ষতি হয়ে গেছে। অনেক রোগীকে যদি বলা হয় আপনার জিনের সমস্যা আছে, তাহলে সে রেগে যায়।
সে চিন্তাই করতে পারে না তার সমস্যা আছে, কারণ সে এসব সমস্যার ব্যাপারে সচেতনই না। পক্ষান্তরে অভিজ্ঞ চিকিৎসক অবস্থা দেখলেই বুঝে ফেলেন কে রোগাক্রান্ত, সে সুস্থ। ফেমিনিজম রোগের ক্ষেত্রেও একই মাসয়ালা। যে বুঝেইনা ফেমিনিজম কি, সে নিজে আক্রান্ত হলে বুঝবে কিভাবে।"
ইশরাক ভাইয়ের লেখা পড়েন, উনারা ছাত্রীসংস্থার আপাদের লেখাকে ইসলামে নারী অধিকারের আলাপ ভেবে পোস্ট করত, যতদিনে ভাইয়েরা বুঝতে শিখেছেন এসব আসলে ছিল ইসলাম ও নারীস্বত্বা বিরোধী ফেমিনিজম, ততদিনে ওই আপারা ঈমানহারা হয়ে গেছে...
জহুরি চেনে কোনটা আসল হিরা, অন্য দোকানে ঠগে এসে জহুরিকে গালি দিয়ে লাভ কী?
--------
0 comments:
Post a Comment