September 7, 2023

ভুতের বাচ্চা সোলাইমান (আংশিক রিভিউ)

পোস্টটা ১৪-০৮-২০১৭ তে লেখা। সম্ভবত লেখা কমপ্লিট করা হয়নি দেখে পোস্ট করা হয়নাই। এই বইটাতে আসলে বাচ্চাদেরকে জাদুটোনা - জিনসাধনা এসবের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়েছে। জঘন্য একটা বিষয় আগ্রহোদ্দীপক করে উপস্থাপন করা হয়েছে। জাফরিকবাল লোকটা আসলেই খুব বিপদজনক। ইতিহাসে কেউ এর অপরাধকর্মের তালিকা করলে এই বইটার কথাও উল্লেখ করা উচিত।

-----
[ক]
রোজার কিছুদিন আগে, তখন হাটহাজারিতে আমাদের বার্ষিক পরীক্ষার সিজন চলছিল। সিনিয়র এক ভাইয়ের রুমে মাঝেমধ্যে গল্প করতে যেতাম। গল্পগুজব হতো, ইলমি মুযাকারা হতো, উনার কাছে নতুন কোনো বই থাকলে পড়া হতো। সেদিন গিয়ে দেখি উনি কিযেন লেখায় মগ্ন, কাছে বসে টুকটাক গল্প জুড়ে দিলাম, উনার টেবিলে চোখ পড়তেই দেখি ভুতের বাচ্চা সোলাইমান রাখা।
হাতে নিয়ে পড়া শুরু করলাম, মাত্র কয়েকপৃষ্ঠার বই। তাঁর ওপর বাচ্চাদের (ব্রেইন ওয়াশ করার) জন্য লেখা, এজন্য সহজ ভাষা হেতু পড়তে আরো সহজ হলো।
[খ]
চলুন আপনাদেরকে স্যারের লেখা বইয়ের গল্প শোনাই।
গল্পের প্রধান চরিত্র নিতু। জাফর ইকবাল স্যারের খুব পছন্দের নাম। শুরুটা হয়েছে একজন টিচারের ক্লাস থেকে, যিনি কিনা বোরিং, ক্লাসে বসে ঝিমান, এমনকি ছাত্রছাত্রীরাও ঘুমিয়ে পড়ে ইত্যাদি। আমি জানিনা স্যার নিজে একজন শিক্ষক হয়েও উনার লেখা বইগুলোতে কেন শিক্ষকদের নেগেটিভভাবে রিপ্রেজেন্ট করেন। যাক সে কথা, আমরা গল্পে ফিরি। স্যারের ক্লাসে বসে থাকতে থাকতে নিতুর ঘুম ঘুম ভাব আসছে, তখনই ক্লাস ছুটি হয়।
নিতু স্কুল ছুটির পর বাড়ি যাওয়ার পথে ফুটপাথের এক বইওয়ালার থেকে ১০টাকা দিয়ে একটি পুরাতন বই কিনে। বইটি যাদুমন্ত্রের। সেখানে বিভিন্ন রকমের মন্ত্র আছে, আর প্রতিটি মন্ত্রের মার্জিনে কলম দিয়ে মন্তব্যও করেছে কেউ একজন, এটা কার্যকর, এটা ভয়ংকর! এটা প্রাণঘাতী, এটা কাজ করেনা.. ইত্যাদি। অর্থাৎ বইটির স্পেলগুলো এর আগেও কেউ একজন পারফর্ম করেছে, নিতু সেই বইটিতে একটা মন্ত্র পায় ভুত ডেকে আনার মন্ত্র।
[গ]
তো নিতু বই পড়তে পড়তেই বাড়ি যায়, স্যারের মতে অষ্টম শ্রেণী পড়ুয়া একটা মেয়ে বই পড়তে পড়তে ফুটপাথ দিয়ে হেটে যাচ্ছে, এটা খুব স্বাভাবিক আর সহজ বিষয়! পরে সেই বইয়ের রিচুয়াল পালন করে নিতু জিন হাজির করে, এবং সেটাকে আবার ফেরত পাঠানো নিয়ে বিভিন্ন ঝামেলা হয়। এভাবেই গল্প এগিয়ে যায়।
তা যাইহোক, এই গল্পে স্যার নতুন এক শ্রেণীর ওপর ঝাল মিটিয়েছেন। স্যার এক লেখায় বলেছিলেন “কি আর করার? ইটের ভাটার মালিকদের আমার কিশোর উপন্যাসের ভিলেন বানিয়েই মনের ঝাল মেটাতে হলো” – এথেকে আমরা বুঝি, স্যার নিজের লেখা (অথবা নকল করা) বইয়ে যাদেরকে বা যে শ্রেণির লোককে ভিলেন বানান, তারা স্যারের চোখের বালি!
এই গল্পের ভিলেন হচ্ছে দবির চাচা। বইয়ের মলাটে সৌদি স্টাইলের জুব্বা আর রুমাল মাথায় দেয়া যাকে দেখা যাচ্ছে, উনি দবির চাচা। তিনি মধ্যপ্রাচ্যে থাকেন। সবচেয়ে বড় রেমিটেন্সের দুয়ার মধ্যপ্রাচ্যের প্রবাসীদের প্রতি স্যারের এই বিদ্বেষের কারণ কি, তা এখনও জানা যায়নি। দুঃখিত আমি গল্পের মধ্যে রাজনীতি ঢুকাচ্ছিনা, তবে আমরা তো প্রশ্ন রাখতেই পারি – ভারত আম্রিকা টাইপের কোনো দেশের প্রবাসীদের প্রতিও স্যার অনুরূপ মানসিকতা রাখেন কিনা?
-------
Share:

0 comments:

Post a Comment