Showing posts with label ফিরাকে বাতিলা. Show all posts
Showing posts with label ফিরাকে বাতিলা. Show all posts

September 20, 2023

হিজাবি ফেমিনিস্ট এবং সিম্প হুজুরগুলার প্রতারণা

হিজাবি ফেমিনিস্ট এবং সিম্প হুজুরগুলার প্রতারণার ধরন বোঝার চেষ্টা করেন,

১.
ফেমিনিস্টরা জরায়ুর স্বাধীনতার অংশ হিসেবে “বাচ্চা না নেয়ার” কথা বলে। মানে ইচ্ছা হলে বাচ্চা নিবে, না হলে নিবে না, শরীর তার - স্বাধীনতা তার। তবে অতি অবশ্যই তারা বাচ্চা নিতে নিরুৎসাহিত করে, যেসব নারীরা অধিক বাচ্চা নেয় তাদের উপহাস ও তাচ্ছিল্য করে। (হুবহু পোশাকের স্বাধীনতার মত অবস্থা এখানেও)।
এদের বাচ্চা না নেয়ার পেছনে কারণ হল, যাতে যেখানে সেখানে শুতে পারে, কাবিনের টাকা কিংবা ৫০% সম্পদ কেড়ে নিয়ে যখন ইচ্ছা ডিভোর্স দিতে পারে, এতে কোনো পিছুটান না থাকে। একই কারণে তারা ভ্রূণ ঽত্তা‌ নরমালাইজের আন্দোলন করে।
সন্তান ও পরিবার যে একটা পূর্ণ ও স্ট্যাবল নারীর সিম্বল, এটা সমাজে প্রতিষ্ঠিত থাকা ওইসব ডাইনিদের জন্য বিব্রতকর। আর এই পুরা বিষয়টা একটার সাথে আরেকটা কানেক্টেড।
এখন সিম্প হুজুরগুলা এই পিওর শয়তানি শ্লোগানের পক্ষাবলম্বন করে কি দেখিয়ে জানেন? বলে, অনেক মানুষের তো চেষ্টা করেও বাচ্চা হয় না, তারা কি খারাপ? কিংবা এটাও বলে, নবীজির অনেক স্ত্রীরও তো বাচ্চা হয়নাই। আস্তাগফিরুল্লাহ।
আরে নর্দামা, একটা হইলো রুচিবিকৃতদের by choice child free life, এরা তো মানবসভ্যতার দুষমন। আর আরেকটা হল স্বাভাবিক মানুষদের পরিবার নিয়ে জীবনযাপন, চেষ্টার পরেও আল্লাহ দেয়নাই তাই হয়নাই। দুইটা কেমনে এক হয়।
আল্লাহর রাসুল অধিক সন্তান নিতে উৎসাহ দিয়েছেন, সাহাবায়ে কিরাম প্রচুর পরিমাণে সন্তান নিয়েছেন, পরবর্তি মুসলিমরাও অধিক সন্তান নেয়ার পক্ষে ছিল - থাকবে। এটাই আমাদের সভ্যতা ও সংস্কৃতি।

২. পিল, কন*ম আর ন্যাপকিন কোম্পানিগুলো দেখবেন নারী অফিসে কাজ করছে, ভার্সিটিতে ট্যুর দিচ্ছে এসব খুব হাইলাইট বা প্রোমোট করে। কারণ তারা বোঝাতে চায়, এগুলো সিনারিওতে নারী নিষিদ্ধ যৌ*তা করবে, তাদের পণ্য এজন্য সহায়তা করছে। বাংলাদেশের টপ মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানি থেকে শুরু করে একদম নিম্নমানের গার্মেন্টস পর্যন্ত এমন কোনো কম্বাইন্ড ফ্রি মিক্সিংওয়ালা কর্মক্ষেত্র নাই, যেখানকার নারীরা সহকর্মির দ্বারা হেনস্তার স্বীকার হয়না, হারাম সম্পর্কে জড়ায় না। আর যেসব দেশ নারীদের রাস্তায় নামানোতে আমাদের চেয়ে ১০০বছর এগিয়ে, তাদের অবস্থাও আরও খারাপ। সেখানে এব্রোশন করেনাই কিংবা পিল খেয়ে ফার্টিলিটি নষ্ট করেনাই এরকম কর্মীওয়ালা অফিস খুঁজে পেতে আপনার কষ্ট হবে।
এই প্রসঙ্গেও রেগুলার ফেমিনিস্টদের মত একই সুরে হিজাবি ফেমিনিস্ট নারীর অর্থনৈতিক স্বাধিনতার পক্ষে বলে। ঘরের কাজে নিরুৎসাহিত করে অফিসের কাজে উদ্ধুদ্ধ করে।
এখন আপনি যখন বলবেন নারীর ঘরে থাকা উচিত। এই সিম্পগুলা বলবে, অনেক নারীর পুরুষ অভিভাবক থাকে না, তাদের বাধ্য হয়ে জীবন ধারণের কাজ করতে হয়, বাইরে যেতে হয়।
আরে আবর্জনা, তাবাররুজ আর ইকরাহের হালতে বের হওয়া দুইটা কেমনে এক হয়?
এই যায়গায় ধোঁকা হিসেবে আনে আম্মাজান খাদিজা রা. এর গল্প। কিন্তু বাচ্চা নেয়া বা স্বামীর খেদমতের ক্ষেত্রে কিন্তু খাদিজা রা. এর কথা ভুলেও মুখে আনবে না। এখানে সিম্পগুলা কুৎসিত চেরি পিকিং করে। আরে ভাই! আম্মাজান খাদিজা রা. জাহিলি যুগেও হারাম সম্পর্কে লিপ্ত হননাই, মাহরাম ছাড়া ট্যুর দিয়ে বেড়াননাই। টাকা ইনভেস্ট করে মানুষকে দিয়ে কাজ করাইছেন। এবং বিয়ের পর নবীজির প্রয়োজনে সব সম্পদ অকাতরে খরচ করেছেন।
এই পুরা বিষয়টা বেগম রোকেয়ার উত্তরসূরিরা চেপে যায়। নবিজি খাদিজা রা.এর কোন গুণগুলোর জন্য উনার কথা বারবার মনে করতেন সেটা ভুলেও উল্লেখ করে না।

৩. তৃতীয় উদাহরণ হইলো, ভার্সিটির পড়াশোনা। বাংলাদেশের ভার্সিটিগুলার অবস্থা হচ্ছে, শতকরা কমপক্ষে ৬০-৭০% ছেলে-মেয়ে হারাম রিলেশনে জড়িত। এবং এর বড় একটা অংশ ভার্সিটিতে ভার্জিনিটিও হারিয়ে ফেলে। এমনকি কিছুদিন আগে খবর বের হল, ফিমেল অনলি কলেজের মেয়েদেরও বড় ভাইদের রুমে যেতে হয় খুশি করতে। আর পড়াশোনার কোয়ালিটি তো ভাই…। উপরন্তু ভার্সিটিতে গিয়ে ইরতিদাদ বা যান্দাকায় আক্রান্ত হবার পরিমানও নারীদের মধ্যে বেশ উদ্বেগজনক। এরপরে দেখা যায়, পুরুষ টিচারদের চেয়ে নারী শিক্ষকগুলাই বেশি অত্যাচার করে।
এখন এই নাপাক গান্ধা অনিরাপদ পরিবেশ থেকে যদি আপনি সন্তানদের বাচানোর কথা বলেন, আকরাম নদভির মত সিম্পগুলা হাদিসের নারী রাবিদের লিস্ট এনে বলবে, এই দেখো মুসলিম নারীরা জ্ঞান চর্চা করসে, মুহাদ্দিসা হইসে।
কত্ত বড় শয়তান হলে মুসলিম খিলাফার স্বর্ণযুগে নিজের ঘরে বসে কিংবা নিজের পরিবারের সাথে থেকে, কিংবা মসজিদে নববিতে নবীজির স্ত্রীর কামরায় বসে ইলম শেখার সাথে এই সব ভার্সিটির নাপাক পরিবেশের আজগুবি পড়াশোনার তুলনা করতে পারে চিন্তা করেন।
… … …
এই অসততা ও প্রতারণার লিস্ট অনেক লম্বা। ফেমিনিজমের মূল প্যাটার্নই হচ্ছে, নারী অধিকারের ধোয়া তুলে নারীবাদ পুশ করা, প্রতিষ্ঠা করা। এজন্য এদের প্রতিটা ক্লেইমের মধ্যে দুর্বল, অপারগ বা মজলুম নারীদের দুরাবস্থা দেখানো হয়। কিন্তু এর পেছনে লুকানো থাকবে নারীকে পরিবারের নিরাপদ গণ্ডি থেকে রাস্তায় বের করা আর পুরুষের সাথে অসম ধ্বংসাত্মক প্রতিযোগিতায় নামানোর চেষ্টা। যাতে শ্রমবাজারে কর্মীর সাপ্লাই বেশি থাকে। কম খরচে পুঁজিবাদের অধিক কার্যসিদ্ধি হয়।
এই পুরো ফাঁদটার মলাটে থাকে ‘জীবনকে আরও বেশি – আরেকটু বেশি উপভোগ করা’র তাড়না। অবাধ যৌনতা ও অর্থলোভের হাতছানি।

ভাই, আমাদেরকে জাগতে হবে। নিজেদের বাচতে হবে, পরিবারগুলোকে বাচাতে হবে। আমাদের সন্তানদেরকে মুসলিম হিসেবে, আল্লাহর প্রতি সমর্পিত হিসেবে বড় করতে হবে।
এটা আমাদের কাছে দুনিয়ার হক। এই হক আদায় করতে হবে।
আল্লাহ যেন আমাদের সহায় হয়।
-----
Share:

April 29, 2022

নারীদের স্বনির্ভরতা ও দুইটা কথা

 পোস্ট ১

বনি ইসরাইলকে আল্লাহ বসিয়ে রেখে মান্না-সালওয়া খাওয়াচ্ছিলেন। তাদের আল্লাহর এই নিয়ামত পছন্দ হইল না। তারা পেয়াজ-রসুন, ডাইল চাষ করে খাওয়ার জন্য আল্লাহর নিয়ামতের না-শোকরি করলো। ফলে আল্লাহর নিয়ামত তো উঠে গেলই। লানতও বর্ষন হইল।
আল্লাহ নারীদের জন্য স্বাভাবিক নিয়ম করছে স্বামীর ওপর ভরণপোষণের চিন্তা ছেড়ে দিয়ে ঘর দেখাশোনা করো। সন্তান মানুষ করো। স্বামীর ভালোমন্দ খেয়াল রাখো। এরপর কারও "কোনো জরুরত ছাড়াই" যদি এক্সট্রা ইনকাম কইরা পিয়াজ-রশুন খাওয়ার শখ থাকে, তাহলে করো...।
এর কয়দিন পর me_too হ্যাশট্যাগ দিয়ে কোন যায়গায় কেমনে হেনস্তা হইছো সেই গল্প লেখবা এই আরকি...
(আল্লাহ নারীদের আখিরাতও সহজ করে দিয়েছে। হাদীসে বলা মাত্র ৪-৫টা জিনিস মেন্টেন করলেই জান্নাত নিশ্চিত। ছেলেদের জন্য তো বহুত পেইন। বুঝলি নারে বোন....।)

 পোস্ট ২

পৃথিবীর সবাই যদি অভাবহীন হয়ে যায়। তবে দুনিয়ার সব মানুষ না খেয়ে মারা যাবে। চাউলের দোকানদারের অভাব না থাকলে কেন দোকান খুলবে? আর গোশতের দোকানিই বা কেন গোশত বিক্রির জন্য বসে থাকবে, যদি তার কোনো প্রয়োজনই না থাকে?
প্রকৃতির রীতিই এরকম যে একজন অন্যজনের ওপর নির্ভরশীল, বাঘ-হরিণ থেকে শুরু করে আপনি আমি পর্যন্ত।
যদি খাদ্যের জন্য কারও কোনো কোনো দোকান, বাজার বা সুপারশপের স্মরনাপন্ন না হওয়া লাগে, তাহলে উনারা কি খেয়ে বাঁচবে? আমি একজনের ওপর নির্ভরশীল, সে আরেকজনের প্রতি, সে আরেকজনের প্রতি। এটা একটা চেইন।
সুতরাং কারও ওপর নির্ভরশীল হওয়া মানেই খারাপ না। এটা দুনিয়ার নিজাম। আল্লাহ আমাদের মাঝে প্রয়োজন সৃষ্টি করেছেন, যাতে আমরা বেঁচে থাকি।
.
ফেমিনাতসিরা শেখায় হাজব্যান্ডের ওপর নির্ভরশীল হইয়ো না, অনেক রিস্ক।
যদি - ডিভোর্স দেয়, মরে যায়, যদি না দেখে... ইত্যাদি। এগুলো কাল্পনিক ভীতি দেখিয়ে সংসার থেকে সরিয়ে রাখতে চায়।
এখান বিষয় হল, এই সমস্যাগুলোর পরিমাণ কত পার্সেন্ট? হাজারে কয়জন মানুষের সাথে এসব হয়েছে?
এরপর প্রশ্ন আসবে, নিজে ইনকাম করা কি রিস্ক ফ্রি?
যদি অফিসে যাওয়ার পথে নিজে মারা পড়েন, এক্সিডেন্টে পঙ্গু হয়ে যান, রেP হন, মলেস্T হন, ছিনতাইকারির হাতে পড়েন, অফিসের বস যদি লুচু হয়, পরিবার ছেড়ে কারও সাথে হারাম সম্পর্কে জড়িয়ে যান, অফিসের নিয়ম মানতে গিয়ে যদি আল্লাহর অবাধ্য হন and so on....
এবং এই সমস্যাগুলোতে আক্রান্তের পরিমাণ কত পার্সেন্ট?
..
তাহলে আমরা দেখছি নারীরা নিজে কাজ করতে গেলে ঝুঁকি আরও শতগুণ বেশি। এবং এসব বিপদে অহরহই পড়ে। খুব কমই বাঁচতে পারে।
সুতরাং স্বামীর ওপর জীবিকার পেরেশানি ছেড়ে দিয়ে নিজে চিন্তামুক্ত হওয়াই বহুগুণ নিরাপদ। নইলে আরও বহুজনের দয়ার ওপর নির্ভরশীল হতে হবে। বহুজনের দ্বারা 'আক্রান্ত' হওয়ার ঝুঁকি থাকবে।
---------
এবং এই সবগুলো অহেতুক পেরেশানির উৎস হচ্ছে আল্লাহর ওপর তাওয়াককুল না থাকা।
ইবরাহিম আলাইহিস সালাম যখন হাজেরা আলাইহাস সালামকে মক্কায় রেখে এসেছিলেন, তখন উনি আল্লাহর ওপর ভরসা না করে, স্বামীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বসলে আজকে উনার নামের পর কি আমরা দোয়া পড়তাম?
Share:

April 23, 2022

বালিকা মাদ্রাসার সমস্যা এবং ফেমিনিজম ফিতনার ব্যাপারে কিছু কথা

বালিকা মাদ্রাসার ছাত্রীদের নারীবাদ বিষয়ে খাস দরস থাকা উচিত। অন্তত বছরের একটা সেমিস্টার হলেও। নারী-পুরুষের খাস মাসায়েলগুলো, পরিবারের হক্বগুলো সবকের মত আলাদাভাবে শেখানো উচিত।

নইলে বেশ কিছু সমস্যা দেখা যায়-
.
ক।
"দ্রুত সিলেবাস শেষ করা এবং বিজ্ঞ আলেমদের সোহবত না থাকা" এই দুই কারনে অনেকেরই দাওরা হাদিস শেষ করার পরেও নূন্যতম ফিকহি যোগ্যতা হয় না। পরবর্তীতে যখন বেদ্বীন বা হাফদিনিদের সাথে মেশে, তখন এদের দ্বারা প্রভাবিত হয়, এরপর দ্বীনের বিধান নিয়ে আন্দাজে ইজতিহাদ করতে শুরু করে। সেসব লিখে অন্যদেরও মাথা নষ্ট করে।
.
খ।
যেভাবেই শেষ হোক, যেহেতু সে আলেমা হয়েছে। এর ওপর নারী স্বাধীনতার ভুত মাথায় ঢোকার কারনে পরবর্তীতে বিজ্ঞ আলেমদের থেকে নিজের ভুল শুধরানোর কথা চিন্তাও করে না।
.
(এর উদাহরণ হল, এক আলেমা আপাকে কিছুদিন আগে দেখা গেছিল নারীদের ঘরের কাজকে ঐচ্ছিক এবং নন-মেজর হিসেবে প্রচার করতে, উম্মুল মুমিনিনদের ঘটনা উল্লেখ করে দলিলের সম্পূর্ণ উলটা দালালাত করতে। পর্দার সমস্যা ও বিভিন্ন ফিতনার জন্য সেক্যুলার প্রতিষ্ঠানে নারীদের উচ্চশিক্ষার বিষয়ে আলেমরা যে নিরুৎসাহিত করেন, এর বিরুদ্ধে ফেমিনিস্ট লজিক প্রচার করতে।)
.
গ।
মাদ্রাসা পড়ুয়া সিস্টারদের অনেকে ঘরের কাজেও অনেক দূর্বল হয়ে থাকেন। (সবাই না, অনেকেই)। ঘরে মা-বোনের তত্ত্বাবধানে হোক, কিংবা মাদ্রাসায় উস্তাযাদের কাছে হোক, অল্প কিছুদিন সময় এবিষয়ে দুর্বলতা দূর করা উচিত। আশা করি এক-দুইমাসই যথেষ্ট এজন্য। নইলে পরিবার ও পরবর্তী বংশধরদের ওপর এর মন্দ প্রভাব পড়ে।
.
ঘ।
নারীবাদ বিষয়ক ক্লাসের সিলেবাসে কি কি থাকতে পারে সেটা এই নারীবাদ ফিতনা সম্পর্কে, ফিকহ এবং মাকাসিদুশ শরিয়া সম্পর্কে অভিজ্ঞ আলেমরা ঠিক করবেন।
বাকি বর্তমানের হালাত অনুযায়ী কিছু টপিক রাখা জরুরি -
১। ঘরে এবং ঘরের বাইরে পর্দার বিধান, নারী ও পুরুষের জন্য।
২। উত্তরাধিকার সম্পত্তির বিধান।
৩। ঘরের কাজ ও আয় উপার্জনের দায়িত্ব বন্টনের বিষয়ে।
৪। অনলাইন ও অফলাইনে হারাম রিলেশনের বিষয়ে।
৫। নারী হিসেবে বিবাহের পূর্বে কি কি প্রস্তুতি নেয়া উচিত সে বিষয়ে।
৬। বিয়ের পর নিজের বাড়ি ও বাবার বাড়ির সম্পর্ক ম্যানেজ করার বিষয়ে।
৭। সন্তান নেয়ার ব্যাপারে ইসলামী চিন্তাধারা। এবং সন্তান হলে তাদের আদব-আখলাক ঠিক করা ও হোম স্কুলিং বিষয়ে।
৮। সাধারণ বেদ্বীন নারীদের সাথে কিভাবে আর ফেমিনিস্টদের সাথে কিভাবে মেশা উচিত, এবং কিভাবে দাওয়াত দেয়া উচিত সে বিষয়ে।
৯। সেক্যুলার ভার্সিটি বা কলেজগুলোতে পড়া দ্বীনি বোনদের সমস্যাগুলো এবং সমাধান সম্পর্কেও ধারনা দেয়া উচিত। যাতে তাদের সাথে কথা হলে কিছু শেখাতে পারে।
১০। নারি-পুরুষের যেসব মাসায়েল ভিন্ন সে বিষয়ে আলাদাভাবে আলোচনা করা।
..
ঙ।
নারিবাদ ফিতনাটা উম্মতের ভেতর বাহির উভয়দিকেই খেয়ে ফেলে। তাই এটাকে খুবই গুরুত্বের সাথে নেয়া উচিত।
আলেমদের তো হিকমতের সাথে কাজ করা উচিত বটে। এর সাথে পশ্চিমা শিক্ষা ও দ্বীনি শিক্ষা উভয়দিকের ব্যাপারে জানাশোনা ব্যক্তিরা প্রয়োজনে খাসভাবে পড়াশোনা করে নারীদের এবিষয়ে খাস দরস দেয়া উচিত। বোনদের মধ্যে এবিষয়ে দাওয়াতি কাজ করার জন্য প্রচুর বোন দরকার। আল্লাহ চায়তো এটা বেশি উপকারী হবে।
..

ফুটনোটঃ
নারীবাদের বিভিন্ন স্তর আছে। কেউ কম, কেউ বেশি। নারীবাদী মানেই যে সবাই তাসলিমা নাসরিন বা ফারজানা মাহবুবাদের মত হবে এমন না।
সর্দিকাশি বা হাপানির মত এই রোগে কেউ অল্প আক্রান্ত হয়, কেউ বেশি। আর দ্রুত চিকিৎসা করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। তবে এখনকার সেক্যুলার শিক্ষাব্যবস্থা এমন যে, প্রাইমারী পার হতে হতে সবাই কমবেশি এই ভাইরাসে এফেক্টেড হয়ে যায়।
আসলে যে শিক্ষাব্যবস্থায় বেগম রোকেয়াকে মহৎ হিসেবে পড়ানো হয়, আবার বাড়িতে মিনা-রাজুর কার্টুনে নিয়মিত বাচ্চাদের রোল রিভার্সাল গল্প শেখানো হয়, সেখান থেকে আর কিই বা বের হবে বলেন?

-------
Share:

April 19, 2020

আনুগত্য ও অন্ধভক্তি

কিছু কিছু ভাই এখন সালাফি আকিদার কিছু ফেমাস লেখক - আলোচকদের বক্তব্য দলিল হিসেবে প্রচার করবে। 
তারা কাজটা এজন্য করবে না যে, তারা এই শাইখের আলোচনাটা কোরআন হাদীস এবং সালাফদের কওলের সাথে মিলিয়ে তাহকীক করে দেখেছে। বরং এটা শুধুমাত্র সেই শাইখের প্রতি অন্ধভক্তি কাজে লাগিয়ে তাদের আকিদা প্রচারের জন্য করবে।

ভাইরে ভাই, যার যেটা আকিদা সেটার পক্ষেই তো বলবে। অমুক আমেরিকান, সিরিয়ান, বাংলাদেশী শায়েখ সবাই নজদি ধারার লোক। শায়খ নজদির তাকফিরের উসুলকে সারাজীবন চোখ বুজে প্রচার করে এসেছে। উনারা এই প্রসঙ্গেও সালাফিদের মত কথা বলবে, এতে অবাক হওয়ার কি আছে, আর এত খুশি হওয়ারই বা কি আছে।

শোনেন, ইবনু তাইমিয়া রহ. এর ফাতওয়া হল - কেউ যদি নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাদে কারও সবকিছু মেনে নেয়া আবশ্যক মনে করে। তবে তাকে তাওবাহ করে ইমান নবায়ন করতে হবে। তাওবাহ না করলে তার জন্য মৃত্যুদণ্ড।

আমাদের প্রিয় লেখক-লেকচারারদের ব্যাপারে আমাদের আনুগত্য যেন এই লেভেলে চলে না যায়। সতর্ক থাকা উচিত।
Share:

April 12, 2020

ইসলামকিউএ ফ্যাক্টস এবং তাখরিজ প্রসঙ্গ...

#ফ্যাক্ট_১: 

ইসলামকিউএ.ইনফো আর ইসলামকিউএ.অর্গ ভিন্ন দুটি ওয়েবসাইট। 
একটায় ভিন্ন ভিন্ন মাযহাবের বিভিন্ন দারুল ইফতার ফাতওয়া ইংরেজি ভাষায় সংকলন করা হয়েছে। 
অপর ওয়েবসাইটের নিজেদের প্রশ্নোত্তর বিভাগ আছে, সেখানে নতুন-পুরাতন প্রশ্নের উত্তর দেয়া হয়। সেসব প্রশ্ন বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করা হয়। এছাড়া সৌদি আরবের বাছাইকৃত কিছু আলেমের প্রবন্ধ প্রকাশ/অনুবাদও করা হয়।

#ফ্যাক্ট_২:

ইসলামকিউএর ফাতওয়া মানেই শাইখ সালিহ আল-মুনাজ্জিদের ফাতওয়া না। ইসলামকিউএতে প্রকাশিত সব ফাতওয়া উনি রিভিউ করেও দেননি।
আর শাইখ তো এখন জালিমের কারাগারে বন্দি, এখন কি ইসলামকিউএ চলছে না? মিনাসসাতুয যাদি চলছে না? শাইখ তো সেখান থেকে এসবের সম্পাদনা করেন না।
আরেকটা বিষয় হল, ইসলামকিউএতে শাইখ বিন বায, জিবরীন, উসাইমিন রহিমাহুমুল্লাহদের অনেকের প্রবন্ধই আছে। আর শাইখ মুনাজ্জিদ সালাফি আলেম হওয়া সত্ত্বেও উনাদের সাথে অনেক বিষয়েই শাইখের ইখতিলাফ আছে।

সুতরাং, ইসলামকিউএ তে কিছু লেখা আছে মানেই সেটা শাইখ সালিহ আল মুনাজ্জিদের উক্তি না।

#ফ্যাক্ট_৩:

ইসলামকিউএ ডট ইনফো'র মন্তব্য বা ফাতওয়াতে কিছু আছে মানেই সেটার ওপর উম্মতের ইজমা— এমন নয়। ইসলামকিউএর বক্তব্য কুরআন হাদীসের নস-ও নয় যে, এটাই ইসলামী ইলমের মূল উৎস কিংবা এর ওপর ঈমান 'রাখতেই' হবে।

এই পোর্টালের প্রতিটা উত্তরদাতা - প্রবন্ধকার যেহেতু নির্দিষ্ট একটি ইসলামী ভাবধারার অনুসারী, অতএব ফাতওয়া দেয়ার ক্ষেত্রে তাদের প্রত্যেকে নিজ-নিজ মানহাজ এবং মাজহাবকেই প্রধান্য দিয়ে থাকেন।

এখন আপনি যদি বলেন ইসলামকিউএ-তে উত্তরদাতা কোরআন হাদিস ইজমা কিয়াসের আলোকে উত্তর দিচ্ছে। তবে আপনার জানা উচিত, আকাবির-আসলাফের মাঝে ইসলামকিউএ'র বিপরীত কোন মত প্রচলিত থাকলে সেটাও কোরআন - হাদীস... এর আলোকেই ছিল।

----
#এপেন্ডিক্স:

শরিয়ার সকল উসুল বিবেচনা না করে যাকে-তাকে তাকফির করা যেমন খুরুজ (খারিজিদের প্রবণতা), তেমনি সালাফের সকল মানহাজ বিবেচনা না করে যাকে-তাকে আহলুস সুন্নাহ থেকে বের করে দেয়া (তাখরিজ করা), কিংবা শুধুমাত্র নিজের মতকেই আহলুস সুন্নাহর মত বলে দাবি করা- এসবও এক ধরনের খুরুজ।

আল্লাহ যেন চিরকাল আমাদেরকে ঈমান ও হিদায়াতের ওপর অবিচল রাখেন।
Share:

June 20, 2018

কি মজা! দাজ্জাল আসবে!!

[ক]
সেদিন ইনবক্সে এক ভাইয়ের সাথে কথা হচ্ছিল, কাজি ইব্রাহিম সাহেবের কোন লেকচারে নাকি উনি দেখেছেন কয়েক বছরের মধ্যেই মাহদি চলে আসবে! সে প্রসঙ্গে উনি বেশ এক্সাইটেড..।
শুধু উনিই না, এই জামানার ছেলে-মেয়েদের একটা প্রসিদ্ধ হুজুগ হচ্ছে “আখেরি জামানার হাদিস বিশারদ হওয়া!” এই বিশেষ গবেষক গোষ্ঠীর বৈশিষ্ট্য হল, আশারাত বিষয়ক হাদিসগুলো পিটাইয়া-ভচকাইয়া ইচ্ছামত বাঁকা-চ্যাকা কইরা চলমান কোন ঘটনার সাথে খাপ খাইয়ে যেকোনভাবে প্রমাণের চেষ্টা করা যে, “কালকেই ইমাম মাহদি চলে আসবে!”
.
এসব 'গুবেষনা' করে আর বসে বসে হাহুতাশ করে। ইহুদি-খ্রিষ্টানদের গালি দেয়। না নিজের ইসলাহের ফিকির করে, আর না জিহাদের ফিকির করে। হুদাই সময় আর মেধার অপচয়!
আরেকটি বিষয়ে আমি আগেও বলেছি, আমি রুকইয়াহ সেন্টারে রুগী দেখতে গিয়ে বেশ কয়েকজন এমন ছেলেকে পেয়েছি, যারা মানসিকভাবে অসুস্থ, ওয়াসওয়াসা রোগে আক্রান্ত এবং শেষ জামানার ভবিষৎবাণী নিয়ে বেশি লাফালাফি করত!
এটা তাঁরা নিজেরাই কনফেস করেছে, তাদের অনেকে প্রায় সুস্থ হয়ে গেছে আল্লাহর রহমতে। বাকিদের খবর আল্লাহ ভালো জানেন...
.
[খ]
আচ্ছা ওই ভাইয়ের কথা বলি, উনি চাচ্ছিলেন ইমাম মাহদি আসবে খুব দ্রুত, এবং সারা দুনিয়ার প্রব্লেম সব অটোমেটিক সলভ হয়ে যাবে।
বললাম - কোন সাহাবি বা সালাফ কি এরকম দোয়া করতেন? (মাহদি আসুক তার দলে যোগ দিব) দাজ্জালের ফিতনা পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ফিতনা, আপনার ঈমান কিভাবে এত মজবুত হল যে দাজ্জালের ফিতনাকে আপনার কিছুই মনে হচ্ছে না.. সিক্রেটটা জানতে চাচ্ছি!
- কিসের সিক্রেট? আচ্ছা ভুল হইসে। উনারা উল্টা দুয়া করতেন। সালাফরা সব সময় দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাচতে চাইতেন।
- মাহদি এবং ঈসা আলাইহিস সালামই যদি পুরা সমস্যা এ টু জেড সামাল দিতেন। তাইলে দাজ্জাল তো কোন বিষয়ই না, তাইনা?
মাহদির ভরসায় না থেকে মাহদির ফৌজ হওয়ার যোগ্য করে তোলেন নিজেকে।
.
[গ]
আই লাভ কুরআন! কোরআন এর ভাষায় কিছু বলতে পারলে অনেক ভালো লাগে। তাই দুটি আয়াত দিয়ে আজকের গল্প ইতি টানছি-
১. أَعَجِلْتُمْ أَمْرَ رَبِّكُمْ
তোমরা কি তোমাদের রবের সিদ্ধান্তের (গজবের) ব্যাপারে তাড়াহুড়া করছ? (আ’রাফ ১৫০)
২. أَفَأَمِنُوا مَكْرَ اللَّهِ ۚ فَلَا يَأْمَنُ مَكْرَ اللَّهِ إِلَّا الْقَوْمُ الْخَاسِرُونَ
তারা কি আল্লাহর পরিকল্পনার ব্যাপারে নিশ্চিন্ত হয়ে গেছে? বস্তুত: আল্লাহর পরিকল্পনা থেকে তারাই নিশ্চিন্ত হতে পারে, যাদের ধ্বংস ঘনিয়ে আসে। (আ’রাফ ৯৯)
.
সুতরাং যারা বেশি লাফাচ্ছেন, তাদের জিজ্ঞেস করি- ‘আল্লাহ কেন দ্রুত দাজ্জালকে পাঠাচ্ছে না’ আপনি কি এজন্য অধৈর্য হয়ে গেছেন? আপনি কি আল্লাহর পরিকল্পনার ব্যাপারে নিশ্চিন্ত হয়ে গেছেন?
আপনি কি নিশ্চিত যে দাজ্জালের ফিতনায় আপনি ঈমান টিকিয়ে রাখতে পারবেন?
জেনে রাখুন! আল্লাহর পরিকল্পনার ব্যাপারে তারাই নিশ্চিন্ত হতে পারে, যাদের ধ্বংস ঘনিয়ে এসেছে।
.
আর "এই লিংকের" লেখাটা পড়া যেতে পারে...

Share:

August 16, 2017

ঈসা আলাইহিস সালাম এবং ইমাম মাহদির ১০টি পার্থক্য


ঈসা আলাইহিস সালাম এবং ইমাম মাহদির ১০টি পার্থক্য,
কাফির কাদিয়ানী যেসব ফিল্টারে আটকে যায়
-------
১. ঈসা আ. পিতা ছাড়া শুধু মায়ের মাধ্যমে জন্ম নিয়েছেন, উনার নাম ঈসা। ইমাম মাহদি (হুবহু রাসুল স. এর মত) অর্থাৎ নাম মুহাম্মাদ, পিতার নাম আব্দুল্লাহ। (তিরমিযী, আবু দাউদ)
২. ঈসা আ. বনী ইসরাইল তথা ইয়াকুব আ. এর বংশধর। আর ইমাম মাহদি কুরাইশ বংশীয়, হাসান রা. এর বংশধর। (আবু দাউদ, মুসতাদরাকে হাকেম)
৩. ঈসা আ. একজন নবী, তাঁর ওপর আসমানি গ্রন্থ ইনযিল নাযিল হয়েছে। ইমাম মাহদি কোনো নবী না, তাঁর ওপর কোনো আসমানি গ্রন্থ নাযিল হবেনা।
৪. ঈসা আ. কোনো রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন না, হবেনও না। ইমাম মাহদি সাত বছর পৃথিবীর শাসন করবেন, তিনি ইসলামি খিলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবেন। (মুসলিম, আবু দাউদ, আলফিতান)
৫. ঈসা আ. এর হাতে মানুষ কোনো বায়াত হবে না। আর কা’বা চত্বরে মাকামে ইব্রাহিম এবং রুকনে ইয়ামানি মাঝে ইমাম মাহদির হাতে ৩১৩জন বায়াত হবে। তিনি এতে রাজি থাকবেন না, মানুষ উনাকে বাধ্য করবে নেতা হতে। (আবু দাউদ)
৬. ঈসা আ. জেরুজালেমের লোক। আর মাহদি মদিনার লোক। (সুরা মারইয়াম, আবু দাউদ)
৭. ঈসা আ. এর কবর হবে রাসুল স. পাশে, মদিনায়। মাহদির কবর হবে বাইতুল মাকদিসে, জেরুজালেমে। (আবু দাউদ)
৮. কিয়ামাতের আগে দামেস্কের জামে মসজিদের ঈসা আ. ফেরেশতার কাঁধে ভর করে আসমান থেকে অবতরণ করবেন, মুসলমানরা অভ্যর্থনা জানিয়ে উনাকে নিয়ে আসবে। তখন ইমাম মাহদি ঈসা আ.কে ইমামতির জন্য অনুরোধ করবেন, কিন্তু ঈসা আ. বলবেন তোমাদের ইমাম তোমাদের মাঝেই হোক। ঈসা আ. মুক্তাদি হবেন, ইমাম মাহদি নামায পড়াবেন। (আসসুনানুল ওয়ারিদাতু ফিল ফিতান)
৯. আসরের নামাজের পর ঈসা আ. দাজ্জালকে ধাওয়া করবেন, এবং দাজ্জাল পালাবে। অতঃপর ইসরাইলের লুদ এলাকায় (যেখানে ইসরাইলের সর্বাধুনিক এয়ারবেজ) তাকে পাকড়াও করবেন এবং হত্যা করবেন। পক্ষান্তরে ইমাম মাহদির বাহিনীর সাথে দাজ্জালের বাহিনী যুদ্ধ করবে বটে, কিন্তু না মাহদিকে দেখে দাজ্জাল পালাবে, আর না মাহদির হাতে দাজ্জাল নিহত হবে। (মুসনাদে আহমাদ, তিরমিযি)
১০. মাহদির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সুফিয়ানির ফৌজ আসবে, এবং বায়দা প্রান্তরে এসে ভূমিধ্বসে মারা যাবে। ঈসা আ. এর বিরুদ্ধে কোনো মুসলমান নামধারী শাসক বা তাঁর দল যুদ্ধ করবে না। (আল ফিতান)
---------------
এখন কথা হচ্ছে, মির্যা কাদিয়ানী বলে, সে একসাথে ঈসা আ. এবং মাহদি দুইটাই!! (নাউযুবিল্লাহ) 
দেখেন তো উপরের একটা পয়েন্টের সাথেও কি মির্যার মিল আছে? সে না মাহদি হবার যোগ্য, না ঈসা আ. । বরং সে তো মুসলমান ই না...
Share:

September 10, 2016

আহলে হাদীসদের নবী কে?

আহলে হাদীসদের নবী কে?
---
প্রশ্নটা পছন্দ হয়নি, তাইনা?
থামেন দলিল দিয়ে জোর করে পছন্দ করাবো... "এমন অনেক বস্তু আছে যা তোমরা অপছন্দ করো অথচ সেটা তোমাদের জন্য ভালো!" [সুরা বাকারাঃ২১৩]
😌 একটু মজা করলাম... এবার সিরিয়াস হওয়া যাক..
.
১। আহলে হাদীস ভাইদের একটা কুখ্যাত পেইজ আছে "তোমরা তোমাদের পালনকর্তার অভিমুখী হও..." এরকম নাম। এই পেইজের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, আপনি যদি তাদের পোস্টের বিপরীতে কমেন্ট করেন তবে সেটা মুছে ফেলা হবে! যদি আপনি কোরআন-হাদীসের কোনো দলিলসহ কমেন্ট করেন তবে সেটা মুছে আপনাকে ব্যান করা হবে!!
কিছুদিন আগে সেখানে পোস্ট দিয়েছিলো- "যয়ীফ হাদীসকে হাদিস বলাই যাবেনা, আমলের প্রশ্নই আসেনা"
আমি কমেন্ট করলাম "ভাই, ইমাম বুখারী রহ. উনার তারিখে কাবির কিতাবে এক হাজারের বেশি যয়ীফ হাদিস দিয়ে দলিল দিয়েছেন..."
একটু পর দেখি কমেন্ট গায়েব, আমি ব্যান!  :)
.
২। আজ ওই পেজে হায়াতুন্নাবী সা. আক্বিদার বিরুদ্ধে একটা পোস্ট দিয়েছে। সেখানে কিছু আয়াত উল্লেখ করেছে 'রাসুল সা. মারা গিয়েছেন' এই বিষয়ে। এরপর উপসংহার টেনেছেন এই বলে যে, অতএব বুঝা গেল রাসুল সা. এখনো মৃত!!
what a logic! আমি দেখেছি ফজরের সময় মসজিদে গেলেন, তারমানে আপনি এখনো মসজিদেই আছেন! কিয়ামত পর্যন্ত মসজিদেই থাকবেন.... যদিওবা অন্যরা দেখেছে আপনাকে বের হতে! তবুও আমি যেহেতু দেখেছি মসজিদে যেতে অতএব আপনি মসজিদেই আছেন!
.
৩। তো এসব আয়াত উল্লেখ করার পর তাঁরা মনোমতো বিশ্লেষণ করেছে, এরপর লিখেছে...
""....সে সম্পর্কে কুরআন হাদীসে আমাদের যতটুকু জানানো হয়েছে আমরা ততটুকু কোনোরকম #প্রশ্ন ছাড়াই ইমান আনবো। কিন্তু কোনো প্রকার ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ বা অতিরিক্ত প্রশ্ন করবোনা। এটাই হলো ইমান বিল গায়েব – অদৃশ্যে বিশ্বাস।""
.
গায়েবের এই সংজ্ঞা উনি কই পাইছেন আল্লাহ মালুম.. কিন্তু এর দ্বারা উনি বুঝালেন এখানে যে কয়টা আয়াত বা হাদিস দিলাম, এতটুকুতেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে, কোনো প্রশ্ন চলবে না। আপনি প্রশ্ন করতে পারবেন না, এমন কোনো হাদিস আছে কি না যার দ্বারা বুঝা যায় নবী আ. রা মৃত্যুর পর কবরে পুনরায় জীবিত রয়েছেন। আপনি এসব প্রশ্ন করতে পারবেন না... করলেই উনার সংজ্ঞানুসারে আপনি গায়েবের ওপর ঈমান হারালেন!!!
.
৪। এরপর উনি বললেন, "...তিনি কবরে জীবিত আছে বলে মনে করা কুরআন বিরোধী আকীদা যা বিদাতী সূফীরা তৈরি করেছে!"
.
অথচ এই আক্বিদা বিষয়ে ইমাম বায়হাক্বী রহ. এর একটি স্বতন্ত্র হাদিসের কিতাব আছে! পৃষ্ঠাসংখ্যা ১০৬ যার প্রথম সহীহ হাদীসটি হচ্ছে, "আনাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সা. বলেছেন, নবীরা কবরে জীবিত, তারা নামাজ পড়েন!" (হায়াতুল আম্বিয়া, ইমাম বায়হাকি লিখিত। সনদ সহীহ। এটা সম্ভবত আলবানি সাহেবের সিলসিলাতুস সহিহাতেও আছে)
যাহোক, আমরা দেখতে পাচ্ছি রাসুল সা.ও বিশ্বাস করতেন নবীরা কবরে জীবিত, এবার মুহাম্মাদ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর আহলে হাদিস ভাইয়ের কি ফাতওয়া দিবেন?
.
৫। আলবানী সাহেব উনার সালাতুর রসুল বইয়ের ভুমিকায় চার ইমাম রহ. এর চৌদ্দগুষ্ঠি উদ্ধার করেছেন, জানপ্রান দিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন, ইমামে আরবা'আ যা বলবে তাহকিক ছাড়া মোটেও মেনে নেয়া যাবে না।
কিন্তু শেষে উনি লিখেছেন- "এই কিতাবে এমন কিছু নাই যা অমান্য করার কোনো ওযর থাকতে পারে!" একটু পর আবার বলেছেন- এই কিতাব তাদের জন্যই "যারা বলে শুনলাম এবং মানলাম!"
.
অর্থাৎ ইমাম আবু হানিফা ইমাম মালেক যা বলবে সেটা যাচাই ছাড়া মানা যাবেনা, কিন্তু আলবানী যেটা বলবে সেটা আপনাকে শুনতে হবে আর মানতে হবে। কোনো কথা চলবে না!!
..
পুনশ্চঃ আলবানী সাহেবের উক্ত (সালাতুর রসুল/রাসুলুল্লাহর নামাজ) বইয়ে ৮০টিরও বেশি যয়িফ হাদীস আছে 😁-----------
 ফেবু লিংকঃ https://facebook.com/thealmahmud/posts/1079591272130402
Share:

August 7, 2016

যার কাছে যেটা সহীহ...

আরবি ব্যাকরণ(সরফ)বিদদের সহীহঃ
যে শব্দের মুলধাতুতে আলিফ, ওয়াও, ইয়া এই তিনটা অক্ষর থাকবে না সেটাই সহীহ শব্দ।

ক্বারি সাহেবদের সহীহঃ
যে বাক্যে হরফের উচ্চারণ সমূহ সঠিকভাবে এবং ওয়াক্বফ যথাস্থানে করা হয় সেটাই সহীহ বাক্য।
.
ফক্বীহদের নিকট সহীহঃ
যে বর্ণনাকারীর ব্যাপারে সালাফে সালেহীন কোনোরুপ আপত্তি করেনি, বরং নির্দিধায় গ্রহণ করেছেন তার বর্ণনা সহীহ।
.
সালাফে সালেহীনের নিকট সহীহঃ
যে ব্যক্তি প্রখর স্মরণশক্তি সম্পন্ন এবং দ্বীনদার (যবত ও আদালত) এই দুটি গুণের অধিকারী তার বর্ণনা সহীহ।
.
শিয়া কাফিরদের নিকট সহীহঃ
যেটা শিয়াদের ১২ ইমামের মাঝে কোনো ইমামের সুত্রে বর্ণিত হয়েছে, কিংবা শিয়া রাবি বর্ণনা করেছে সেটা সহীহ!
.

গাইরে মুকাল্লিদদের নিকট সহীহঃ 

আমরা যেটা মানবো সেটাই সহিহ!! বাস্তবে বর্ণনাটা জাল-জয়ীফ যাই হোক, যদি আমরা মানি; ব্যাস তাহলে এটাই সহীহ!
আপনার কোনো সমস্যা? 😠
Share:

July 23, 2016

নীড ফর স্পিড! প্রসঙ্গ: রাসুলুল্লাহর নামাজ বনাম আমাদের নামাজ


১। হাটহাজারী দারুল উলুমের বড় মসজিদ, মাগরিবের ইকামাত শুরু হলো। আমি তিনতলায় আমার রুম থেকে নিচতলায় নেমে পুকুরপাড়ে গেলাম, একজনের পর ধীরেসুস্থে উযু করলাম। এরপর গিয়ে নামাজ ধরলাম!
আলহামদুলিল্লাহ্ এক রাকাতও মিস হয়নি।
এটা একটা নামাজ. .
.
২। মামা বাড়ি কাছে মসজিদ, মসজিদের ওজুখানায় ঢুকতে শুনলাম মাগরিবের নামাজের ইকামাত চলছে। আমি উযু করে কাতারে গিয়ে দাড়াতে দাড়াতে নামাজ শেষ!
এটাও একটা নামাজ...
.
৩। মুফতি ইজহারুল ইসলাম আল-কাউসারী ভাইয়ের সামনে বসে আছি, পাশের অরেক ভাই জিজ্ঞেস করলো- "এই যে অনেক স্পিডে নামাজ পড়ে, সুরা কিরাত রুকু-সাজদা কিছুই ঠিকঠাক করেনা, সেদিন ইন্দোনেশিয়ার একটা ভিডিও দেখলাম ৭ কি মিনিটে তারাবী শেষ! এসবের ব্যাপারে শরীয়ত কি বলে?" মুফতি ইজহার ভাই জানালেন- "নামাজ হবে না"
.
৪। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামাজ কেমন ছিলো?
- এক সাহাবী দেখলেন মুহাম্মাদ স. তাহাজ্জুদ পড়ছেন, উনি পেছনে দাঁড়িয়ে নিয়ত করলেন। রাসুল সুরা বাকারার শুরুর দিকে পড়ছিলেন, সাহাবী ভাবলেন রাসুল সা. হয়তো ১০ রুকু পড়বেন। দেখলেন না! রাসুল পড়েই চলেছেন.. এবার ভাবলেন হয়তো একপারা পড়ে রাসুল সা. রুকুতে যাবেন, কিন্তু নাহ রাসুল পড়েই চলেছেন....... হাদীসটি আক্ষরিকভাবে ইয়াদ নাই, তবে সম্ভবত রাসুল প্রথম রাকাতে তিন পারার অধিক পড়েছিলেন, রুকু সিজদাও অনে-ক দীর্ঘ ছিল এবং দ্বিতীয় রাকাতে পড়তে পড়তে যখন ৬ষ্ট পারার সুরা মায়িদা পড়ছিলেন তখন সাহাবী রাদিয়াল্লাহু আনহু পেছনে আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারেননি, ধৈর্যে কুলায়নি, বাধ্য হয়ে নামাজ ছেড়ে দিয়েছেন!!
রাসুল তখনো তিলাওয়াত করেই চলেছেন....
.
৫। আমাদের আহলে হাদীস ভাইয়েরা এক সময় খুব নর্তন-কুদন করতো ৮ রাকাত তারাবীহ নিয়ে, কিন্তু কালের আবর্তে তারা চরম ফ্লপ খেলো, ২০ রাকাত তারাবীহর বাস্তবতা অকাট্যভাবে প্রমাণ হলো। এবার উনারা নতুন সূর ধরলেন!
- আমরা নাকি ২০ রাকাত পুরন করতে গিয়ে এত এত স্পীডে নামাজ শেষ করি!!
অদ্ভুত ব্যাপার! ভাই আপনি তো মুসলমানদের মসজিদে নামাজই পড়েন না, পড়েন "মসজিদে যিরারে"। আমরা কি পড়ি না পড়ি আপনি কিভাবে জানলেন? আমাদের মসজিদে ঝগড়া বাধাইতে আসছিলেন নাকি?
.
৬। কথা হচ্ছিলো কোনো এক আম জনতা ভাইয়ের সাথে। অভিযোগ হাফেজ সাহেবদের ওপর। "হাফেজ সাহেবরা তাড়াতাড়ি পড়ে, কিছুই বুঝা যায়না"!
আমি বললাম ভাইজান আমিতো শব্দ গুনে দিতে পারবো। আপনি বুঝেন নাই এর কারণ হচ্ছে আপনি হাফেজ না। না বুঝার কারণ যদি হয় স্পিডে পড়া তাহলে আপনি আমার সামনে দাড়ান- আজকের পারা থেকে সিদ্দিক আল মিনশাবীর মত ধীরেসুস্থে আপনাকে ১ পৃষ্ঠা পড়ে শোনাচ্ছি, তারপর আপনি আমাকে বলবেন কি বুঝেছেন। রাজি?
এবার কাণ্ডারি খামোশ!!
.
৭। রমজানে আসরের আগে বসে আছি চকবাজার শাহী মসজিদে, অনলাইনে বেশ পরিচিত মুখ এক ভাইয়ের সাথে কথা হচ্ছে। বললেন- "আসলে আমরা তো হাফেজ না.. এখন হাফেজসাব যদি একটু জোরে পড়ে আমাদের মনে হয় আহ! কত কিছু যে বাদ দিয়ে দিয়ে পড়তাছে আল্লাই জানে!"
.
৮। যদ্দুর জানি নগরীগুলোর বেশিরভাগ মসজিদের তারবীতেই ঠিকঠাকভাবে কিরাত পড়া হয়। অন্তত এরকম দ্রুত পড়ানো হয় না, যেখানে হরফ আর ওয়াকফ ঠিকভাবে আদায় হয়না।
নিজের অভিজ্ঞতা বলি... এবছর (২০১৬) আমরা প্রথম ১০ দিনে খতম করেছি, আমি প্রতিদিন শুরুতে পড়াতাম। কখনো কখনো অমনোযোগী হয়ে গেছি (আল্লাহ মাফ করুক) বাদবাকি বেশিরভাগ সময়ই চেষ্টা করেছি প্রতিটা আয়াত অর্থ বুঝেবুঝে তেলাওয়াত করতে। এর স্বাদই আলাদা। কখনো মনে হয় কবিতার মত কিছু আবৃতি করছি, কখনো মনে হয় কাউকে ফাটাফাটি কোনো উপন্যাস শোনাচ্ছি। কখনো মনে হয়েছে নাহ! এত মজা.... এটা শুধু কোরআনেই সম্ভব... ইশ! যদি আর কয়েক রাকাত পড়াতে দিত!!
.
৯। আমি মানছি অনেক মসজিদে খুব দ্রুত তিলাওয়াত করা হয়, কোরআনের হক্ব আদায় করে পড়া হয়না। তবে এরজন্য তো ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুকে আপনি দায়ী করতে পারেন না, এরসাথে ২০ রাকাতের সম্পর্ক কোথায়?
যারা দ্রুত নামাজ পড়ে তাদের তারাবী, ইশরাক কিবা মাগরিবের ফারাক নেই।
সবসময়ই আপনি একবার ওযু করতে করতে তাদের ৩ রাকাত শেষে হয়ে যায় 😉

---
Share:

April 11, 2016

কে বলছে কোটটাই খৃষ্টানদের পোশাক?

ভ্রাতা বললো- আরে ভাই কোট প্যান্ট টাই খ্রিষ্টানদের ড্রেস আপনাকে কে বলছে? কোথাও লেখা আছে নাকি খ্রিস্টানরা কোট প্যান্ট পরবে।
.
গুরুজী কহেন-- আপনি যে মানুষ এটা কোথায় লেখা আছে?
.
- মানে!!!!?
.
-- না মানে বলছিলাম যে, লং কোট আর হ্যাট ইহুদীদের পোশাক, ধাপড়া ইয়া মোটা পাগড়ি শিয়াদের পোশাক এটা কি কোথাও লেখা আছে নাকি?
.
- না নাই, তো কি হইছে?
.
-- তাহলে কার্টুনে ইহুদী আর্ট করলে কেন তার গায়ে লং কোট মাথায় হ্যাট থাকে? নাস্তিকরা মুসলমানদের ব্যাঙ্গ করে কার্টুন আঁকলে কেন তার শরীরে পাঞ্জাবী বা জুব্বা থাকে??
.
- উঁ! মানে?
.
-- নাস্তিকরাও বুঝে যে টুপি জুব্বা পানজাবী পায়জামা ইসলামী পোশাক, মাগার আহলে হাদীসরা বুঝে না...
এখন মাথায় কিছু ঢুকছে?? নাকি শায়খরা ঘিলু বের করে মাথায় গোবর ভরে দিয়েছে??
.
- ভাই কি শুরু করলেন বলেন তো? একটু থামবেন প্লিজ?
.
-- ওকে ব্র! ক্ষ্যান্ত দিলাম। ক্যাচাল যেহেতু শুরু করেছেন আপনারা! শেষ ককরার যিম্মাদারি তো আমাদেরই তাইনা?? যাই হোক! আপনাদের সম্মিলিত মেহনত তাহলে ভালই চলছে নাকি? একদল জোর করে সুন্নত ছাড়াচ্ছেন, আরেকদল বিভিন্ন ঢঙয়ে পাম দিয়ে সুন্নত বিমুখ করছেন। কাজ একই; খালি সিস্টেম আলাদা....
.
- কি বলেন এগুলা?
.
-- আচ্ছা IUBAT তে কিছু হইছে শুনছিলেন? ধর্মীয় পোশাক পরে ক্লাস করা পরিক্ষা দেয়ায় বাধা দিচ্ছে বা এরকম কিছু!
.
- হ্যা! শুনছিলাম।
.
-- ওখানকার ছাত্ররা তো কোটপ্যান্ট পরার দাবিতে আন্দোলন করছিল তাইনা? আর কোটপ্যান্ট দেখলেই বোধহয় সেকুলারদের চুলকানি বাড়ে?
.
- মানে??
.
-- মানে বেশি কিছু না! রাসুল জুব্বা পরতেন আমরাও সেটাই পরব। রাসুল কোর্তা পছন্দ করতেন আমাদেরকেও সেটাই করতে হবে। ক্লিয়ার?

---------
ফেবু লিংকঃ https://web.facebook.com/thealmahmud/posts/980614755361388
Share:

March 5, 2016

বড়দের গল্পঃ ৫ (কজন বাবার সন্তান?)

আজকের ঘটনা মাওলানা মাসউদ আযহার সাহবের (আল্লাহ যেন উনাকে হিফাজত করে)

হযরত একদিন লাহোরে এসেছিলেন কোনো দরকারে, তো নামাজ শেষে মসজিদের বাহিরে দাড়িয়ে পরিচিতিজন/ভক্তদের সাথে কুশল বিনিময় করছেন
তখন এক গাইরে মুকাল্লিদ এসে বললোঃ ভাই একটা প্রশ্নের উত্তর দাও আমার সব মাসআলার সমাধান হয়ে যাবে! বলো তুমি হানাফী না মুহাম্মাদী? রাসুল সা. কে মানো না আবু হানিফা রহ. কে মানো?

হযরত বললেন স্বাভাবিক ভাষায়ঃ ভাই! রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নবী মানি, আর ইমাম আবু হানিফা রহ.- কে একজন ইমাম, গবেষক, উম্মতের মাঝে একজন উস্তায হিসেবে মানি। রাসুলের কথা তো সবার উপরে..

লোকটা বলেঃ না না না! যে কোনো একটা বলো, রাসুল সা. কে মানো না আবু হানিফা রহ. কে মানো?

হযরত বুঝতে পারলেন এই মাল সুবিধার না! 😔 তিনি বললেনঃ আচ্ছা ভাই, তাহলে তুই আমার একটা প্রশ্নের উত্তর দে!

লোকটাঃ হ্যা, বলো!

== তুই কার সন্তান? আদম আ. এর নাকি তোর বাপের?

= দুইজনের ই

== উঁহু! একাধিক বাপের সন্তান.... এটাতো ভালো কথা না!!! 😜

লোকটাঃ না না ভাই, এটা এক হিসেবে বাবা, ওটা আরেক হিসেবের! এটাই আমার আসল বাবা আর উনি আমাদের দুনিয়ায় আসার মাধ্যম এই আরকি..
.
হযরতঃ হুম ভাই, কাহিনী এটাই... আসল কথা রাসুলেরই আবু হানিফা শুধু আমাদেরকে ওগুলা সহজভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন, এই আর কি!  😂

-----------
ফেবু লিংকঃ https://web.facebook.com/thealmahmud/posts/954626167960247
Share:

August 28, 2015

বড়দের গল্প- ৪ (বুখারিওয়ালা যুবক)

আজকের ঘটনা মিরপুর আকবর কম্প্লেক্সের মুহতামীম মুফতী দিলাওয়ার হোসাইন সাহেব হুজুরের, উনাকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। আমরা ঘটনায় যাচ্ছি...
.
এক লোক দাম্মাম থাকে, আগে যখন দেশে আসতো হুজুরের সাথে দেখা সাক্ষাত করতো.. সালাম-কালাম করতো। কিছুদিন আগে বেচারা আসছে কিন্তু হুজুরের সাথে আর দেখা করতে আসে না। হুজুর দেখে যে মসজিদে আসছে নামাজ পড়তে, আবার চলেও যাচ্ছে। কিন্তু হুজুরের সাথে আর দেখা করে না...
একদিন লোকটার শশুর এসে হুজুরকে বলছে- হুজুর 'ও' তো এখন আপনাকে খুব গালাগালি করে!!
হুজুর বললেন- কেন? তার কি ক্ষতি করছি?? 😟
লোকটার শশুর বললো- আপনি হানাফী তো... তাই
হুজুর বললেন- কি করার!! আমিতো মুখে বেড়া দিতে পারবো না...
.
একদিন এশার পরে শশুর আসলেন জামাইকে সাথে নিয়ে, বেচারার হাতে একটা বাংলা বুখারী।
এসে লোকটা বললো- হুজুর আমরা রুকুর সময় হাত তুলি, বুখারী শরিফে আছে, আপনারা তুলে না কেন??
হুজুর বললেন- না তোলার হাদীসও আছে
লোকটা বললো- না তুললে তো নামাজ হবে না!!
হুজুর বললেন- কিভাবে বুঝলেন??
লোকটা বললো- এই যে দেখেন বুখারীতে লেখা আছে..
..
হুজুর দেখলেন সেখানে আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. এর হাদীসটার পর এরকম লেখা আছে- ""ইমাম বুখারী রহ. জুযউ রাফউল ইয়াদাইন কিতাবে লেখেছেন 'রুকুর সময় হাত উঠানো ওয়াজিব!! যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে না উঠায় তার নামাজ হবে না; পুনরায় পড়তে হবে। যদি ভুলে বাদ দেয় তাহলে সাহু সিজদা দিলে নামাজ হয়ে যাবে!!!'""
.
একজনকে দিয়ে মাদরাসার লাইব্রেরি থেকে জুযউ রাফউল ইয়াদাইন কিতাব আনালেন, দেখলেন যে ইমাম বুখারী এসব কথা বলেননি। 😒
তখন হুজুর বললেন- দেখেন! আপনার আহলে হাদীস অনুবাদক যে ইমাম বুখারীর নামে কথাগুলো বললো অথচ এই দেখেন কিতাব- এখানে ইমাম বুখারী ওয়াজিবের কথাও বলেননি, নামাজ না হওয়ার কথাও বলেননি, সাহু সিজদার কথাও বলেননি। উনি এতগুলো মিথ্যা কথা হাদীস অনুবাদের সাথে জুড়ে দিয়েছেন.. আর আপনি এই জিনিস নিয়ে আসছেন আমার কাছে!! আর কোন মাসআলার সমস্য বলেন.. প্রত্যেকটা মাসয়ালায় দেখিয়ে দিব তারা এখানে ধোঁকাবাজি করেছে, কারচুপি করেছে, মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে...
..
বেচারা কথিত বাংলা বুখারী শরীফে এমন জালিয়াতি দেখে নির্বাক চলচিত্র হয়ে গেছে 
এবং আলহামদুলিল্লাহ্‌ কদিন পর ঘোড়ার লেজের মত হাত উঠানো ছেড়ে দিয়েছে।
...
...
পরিশিষ্টঃ
লাউ-মাযহাবীদের এমন কোনো গ্রন্থ নাই যেটাতে তারা মিথ্যাচার বা ধোঁকাবাজি করে না... এখন গাইরে মুকাল্লিদ আর ধোঁকাবাজ দুটি সমর্থক শব্দ হয়ে গেছে।
১। আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সা. বলেছেন- যে আমাদের (মুসলমানদের) ধোকা দেয় সে আমাদের মধ্যে নয়।
-মুসলিম
২। যে যতবড় ধোকাবাজ সে ততবড় লা-মাযহাবী।
-প্রমাণিত
...
এবার সিদ্ধান্ত আপনিই নিন- "আপনি কি মুসলমান হবেন নাকি লা-মাযহাবী হবেন??"

--------
ফেবু লিংকঃ https://web.facebook.com/thealmahmud/posts/865187606904104
Share:

August 3, 2015

বড়দের গল্পঃ ২ (তালাকদাতা ডাক্তার সাহেব)

আজকের ঘটনাটি আমার মুহতারাম উস্তাদ হাফেজ মুফতী হেদায়াতুল্লাহ সাহেব দাঃবাঃ এর, উনার নিকট আমি জালালাইন শরীফ পড়েছি। উনি শায়খ মানসুর সাহেবের ছাত্র, তরুন আলেম, ইলম-কালাম মাশাআল্লাহ প্রচুর..
আলহামদুলিল্লাহ! হুজুরের মুসল্লি সংখ্যাও অনেক। এমনি ওয়াক্তিয়া নামাজে অন্তত সাড়ে ৫ থেকে ৭ শ, আর জুমার নামাজে আনুমানিক সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার মুসল্লি হয়।
..
**অনেকের জানা না থাকতেও পারে, এজন্য ঘটনা শুরুর আগে একটা বিষয় জানিয়ে রাখা প্রয়োজনঃ আহলে হাদীসদের মতে ০+০+১ = ১ আবার ১+১+১ = ১ 😕 তথা এক তালাক দিলে এক তালাক, আবার তিন তালাক দিলেও এক তালাক। 😌😨
..
তো হুজুর একবার মসজিদে জুমার বয়ান করছিলেন, তখন সামনে থেকে এক গাইরে মুকাল্লিদ ডাক্তার সাহেব দাড়িয়ে গেল, হুজুর বয়ান থামিয়ে জিজ্ঞেস করলেনঃ কি? কিছু বলবেন?
ডাক্তার সাহেব বললেনঃ একসাথে তিন তালাক দিলে তিন তালাক কিভাবে হয়?
হুজুর বললেনঃ মানে? কি বলতে চান আপনি? কি হবে তাহলে?

**ডাক্তার সাহেব পকেট থেকে ১টাকার ১টা কয়েন বের করে চারপাশের মুসল্লিদের দেখিয়ে বললোঃ আমার কাছে ১টাকার ১টা কয়েন দেখতে পাচ্ছেন, (এরপর ওই ১টাকার কয়েনটি কাউকে দেয়ার মত করে হাত নাড়িয়ে বললো) "আমি আপনাকে ১টাকা দিলাম, ১টাকা দিলাম, ১টাকা দিলাম!!" কত টাকা হলো??
পাশের মুসল্লিরা বললোঃ ১টাকা!
(what the logic) 😕



এবার হুজুর জিজ্ঞেস করলেনঃ আপনার নাম কি?
লোকটি বললোঃ ডাঃ মিযানুর রহমান
তখন হুজুর নিজের বাম হাত মুসল্লিদের দেখিয়ে বললেনঃ মনে করুন এটা ডাঃ মিযান সাহেবের গাল! (তারপর ডান হাত দিয়ে বাম হাতে থাপ্পড় দিয়ে বললেন) আমি উনাকে ১ থাপ্পড় মারলাম! ১ থাপ্পড় মারলাম! ১ থাপ্পড় মারলাম! মোট কয় থাপ্পড় হলো?? 😄

 মুসল্লিদের মাঝে এবার হাসির রোল পড়ে গেলঃ সাড়ে ৩হাজার মুসল্লির সামনে ৩টি যৌক্তিক থাপ্পড় খেয়ে ডাক্তার সাহেব বসে গেলেন।
--
هذا ما عندى والعلم عند الله

--------
ফেবু লিংকঃ https://web.facebook.com/thealmahmud/posts/853703288052536
Share:

August 1, 2015

বড়দের গল্পঃ ১ (দাড়িওয়ালা যুবক)

ঘটনাটি আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলীপুরী সাহেবের।
হযরতজ্বী একবার ব্রিটেন অথবা ইউএসএতে একটি প্রোগ্রামে ছিলেন, তখন কোনো ওয়াক্তের নামাজ শেষে মসজিদের ইমাম সাহেবের সাথে কুশল বিনিময় করছিলেন, ইমাম সাহেব অনেক পরহেযগার একজন বাংলাদেশী আলেম, বেশ নরম প্রকৃতির।
তখন এক গাইরে মুকাল্লিদ যুবক এসে ইমাম সাহেবকে বললোঃ "হুজুর! আমি দাড়ির মাসাইল জানতে চাচ্ছি, দাড়ি কাটতে কি রাসুল সাঃ কখনো নিষেধ করেছেন??"
ইমাম সাহেব বললেনঃ আপনি যদি দাড়ি কাটতে চান তাহলে এক মুষ্ঠি রাখার পর বাকি অংশ থেকে কাটতে পারেন।
যুবক বললোঃ এটা কোন হাদীসে আছে??
ইমাম সাহেব বললেনঃ এটা আছারে সাহাবা থেকে আমরা জানতে পারি। সাহাবায়ে কিরাম রাঃ সাধারণত এমনটাই করেছেন।
তখন যুবক বলছেঃ আমি সাহাবিকে মানতে যাব কেন? রাসুল সাঃ কি করেছেন সেটা বলেন!! রাসুল সাঃ কখনো দাড়ি কাটতে নিষেধ করেছেন কিনা সেটা বলেন??

** প্রিয় পাঠক, উক্ত ইমাম সাহেব একজন সাধারণ মানুষ, কোনো মহামানব বা অতিমানব নন। এজন্য রাসুল সাঃ এর ১০ লক্ষ হাদীসের মাঝে কোনো দুই-একটা বিষয়ের হাদীস জানা না থাকা এটা মানুষ হিসেবে খুবই স্বাভাবিক একটা বিষয়। অথবা জানা থাকলেও হয়তো সেই মুহুর্তে তার স্মরণ না থাকতে পারে। এটিও মানুষ হিসেবে একটা অতি স্বাভাবিক ব্যাপার। **

ইমাম সাহেব তখন তাকে বুঝাতে চেষ্টা করলেন যে, সাহাবায়ে কেরামগণ উম্মতের মাঝে সর্বশ্রেষ্ঠ উম্মত। তারা সবচেয়ে বেশি মুত্তাকী এবং পরহেজগার, তারা যা করেছেন রাসুল সাঃ এর সম্মতি নিয়ে অথবা সরাসরি রাসুল সাঃ এর আমল প্রত্যক্ষ করেই সে অনুযায়ী করেছেন, আর তাদের কোনো কাজ দেখে যখন রাসুল সাঃ কোনো আপত্তি অথবা মন্তব্য করেননি বুঝতে হবে সেটা ইসলাম সমর্থিত বলেই রাসুল সাঃ নিরব ছিলেন। অতএব সেটাও সুন্নাতের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে।

কিন্তু যুবক তো নাছোড়বান্দা! তাকে হাদীস দেখানোই লাগবে। তাছাড়া মানবেই না। তখন পাশে বসা নুরুল ইসলাম ওলিপুরী সাহেব দাঃবাঃ বললেন "হুযুর! আপনি যদি অনুমতি দেন আমি কিছু বলতে পারি।"
ইমাম সাহেব বললেনঃ জ্বী অবশ্যই..
ওলীপুরী সাহেব তো খুব ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছেন এটা কোন ঘাটের মাঝি, আর একে কোন ডোজ দেয়া উচিত।
তখন হযরত বললেনঃ আপনি তো রাসুল রাসুল সাঃ কে মানবেন তাইনা?
যুবকঃ হ্যা, অবশ্যই!
হযরতঃ রাসুল যা করেননি আপনি তা করবেন না, যা করেছেন শুধু তাই করবেন তাই তো?
যুবকঃ হ্যা, তাই..
হযরতঃ তাহলে আপনি জীবনেও দাড়ি কাটতে পারবেন না। আপনার দাড়ি যত বড় হবে হোক! যদি ১০ হাত লম্বা হয়ে যায় তবুও এতে কাচি বা ব্লেড লাগাতে পারবেন না। কারন রাসুল সাঃ দাড়ি কেটেছেন বা চাচছেন এরকম কথা কোনো হাদিসেই নেই। আর আপনি যদি দাড়ি কাটতেই চান তবে সাহাবা রাঃ দের অনুসরণ করে একমুষ্ঠির পর কাটতে পারেন। 😄

فبهت الذي كفر

--------
ফেবু লিংকঃ https://web.facebook.com/thealmahmud/posts/852924738130391
Share:

July 11, 2015

প্রসঙ্গঃ মতবিরোধ! ইখতিলাফ নাকি খিলাফ?


উপমা: তাফহীমুল কুরআন এবং হিদায়াহ শরীফ
(জামায়াতে ইসলামীর ভাইদের লেখাটি অবশ্যই পড়া উচিত)
--
 ""দ্বিতীয় ধরনের মতপার্থক্য করা হবে দীনের মৌলিক বিষয়গুলোর ব্যাপারে। অথবা যে বিষয়টিকে আল্লাহ ও তাঁর রসুল দীনের মৌলিক বিষয় বলে গণ্য করেননি এমন কোনো বিষয়ে কোনো আলেম, সুফী, মুফতী, নীতিশাস্ত্রবিদ বা নেতা নিজে একটি মত অবলম্বন করবেন এবং অযথা টেনে-হেঁচড়ে তাকে দীনে মৌলিক বিষয়ে পরিণত করে দেবেন, তারপর তার অবলম্বিত মতের বিরোধী মত পোষণকারী প্রত্যেক ব্যক্তিকেই দীন ও মিল্লাত বহির্ভুত গণ্য করবেন। একই সাথে নিজের একটি সমর্থক দল বানিয়ে এমর্মে প্রচারণা চালাতে থাকবেন যে, আসল উম্মতে মুসলিমা তো এ একটি দলই মাত্র, বাদবাকি সবাই জাহান্নামের ভাগীদার। উচ্চ কণ্ঠে তারা বলে যেতে থাকবে, মুসলিম হও যদি এই দলে এসে যাও, অন্যথায় তুমি মুসলিমই নও।"" (তাফহীমুল কুরআন, ভুমিকা, ১ম খন্ড, ৩৫ পৃষ্ঠা)
.

১। আমার কোন এক উস্তাদ বলেছিলেনঃ "প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক হচ্ছে আত্মমর্যাদাবোধ থাকা, নতুবা সে গোমরাহ হয়ে যাবে!"
আজ খুব দুঃখজনক ভাবে আমরা লক্ষ্য করছি এদেশে জামায়াতে ইসলামী সমর্থকদের বিরাট অংশ লা-মাযহাব তথা আহলে হাদীস মতবাদে ইফেক্টেড। আর এদেশে লা-মাযহাবী ভাইদের বড় একাংশ জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক। এর কারন কি তা আমার জানা নেই, কিংবা আপাতত জানার প্রয়োজনবোধ করছি না।
তবে সত্য অনুসন্ধানী ভাইদের আহ্বান করবো কারো কথায় প্রভাবিত হওয়ার পুর্বে নিজ মাযহাবের দলিল সম্পর্কে পরিপুর্ণ অবগত হয়ে নিন... আল্লাহ আমাদের তৌফিক দান করুক..
.
২। শুরুতে উল্লেখিত অংশটুকু আধুনিক প্রকাশনীর ২০১২ সনে প্রকাশিত তাফহীমুল কুরআন থেকে হুবহু উদ্ধৃত হয়েছে।
বাংলা তাফহীমের ভূমিকার শেষে 'বৈধ মতবিরোধ' শিরোনামে সাইয়েদ মওদুদী সাহেব বেশ চমত্‍কার ভাবে প্রসঙ্গটি আলোচনা করেছেন। জামায়াতে ইসলামী সমর্থক কিংবা শিবিরের ভাইদের অনুরোধ করছি পড়ে বর্তমান সময়ের সাথে মিলিয়ে নিতে।
.
৩। বিশ্বখ্যাত ফিক্বাহ গ্রন্থ হিদায়াহ গ্রন্থকার এই বিষয়টি তার গ্রন্থের ২য় খন্ডে খুব সংক্ষেপে মাত্র কয়েক লাইনে বিষয়টি উল্লেখ করেছেন, সাইয়েদ মৌদুদী সাহেব কর্তৃক প্রথমে উল্লেখিত বৈধ মতবিরোধ; সেটিকে হিদায়াহ গ্রন্থকার বলেছেন "ইখতিলাফ" শব্দে, এবং অবৈধ উল্লেখিত দ্বিতীয় মতবিরোধ; সেটিকে উল্লেখ করেছেন "খিলাফ" শব্দে।
.
৪। আপনি হেদায়াহ পড়লে দেখবেন সমগ্র হেদায়ায় ইমাম আবু হানিফা, ইমাম শাফেয়ী, ইমাম মালেক, আবু ইউসুফ, মুহাম্মাদ বিন হাসান, যুফার সহ বিভিন্ন ফুকাহাদের অসংখ্য ইখতিলাফের আলোচনা করা হয়েছে এবং অন্য ইখতিলাফের জবাব দেয়া হয়েছে। অথচ যখনই প্রসংগ এসেছে শিয়া, খারেজি, জাহমিয়াদের তখন বলা হয়েছে "এটা ইখতিলাফ নয় বরং খেলাফ" তথা "মতপার্থক্য নয় বরং বিরোধীতা"। ব্যস এর খণ্ডনে সময় নষ্ট করা হয়নি।
.
৫। আজ বাংলাদেশের পথে ঘাটে, রাস্তায় রাস্তায় খিলাফ এবং ইখতিলাফের ডংকা বাজছে। হাজার বছরের মীমাংসিত বিষয় নিয়ে আবার ঝামেলা মাথাচাঁড়া দিয়ে উঠছে। যদিওবা মক্কার হাম্বলীরা হিন্দুস্তানীদের বলছেনা যে তোমাদের নামাজ ভুল, আফ্রিকার শাফেয়ীরা পাকিস্তানীদের বলছেনা যে তোমাদের নামাজ ভুল, নাইজেরিয়ার মালেকীরা বাংলাদেশীদের বলছেনা যে তোমাদের নামাজ ভুল, আর আমরাও কখনো বলিনি যে বাকি ৩ মাযহাবী কোনো লোকের নামাজ হচ্ছেনা, কিন্তু ওই তিন মাযহাবেরই কোনো না কোনো মাসায়িল টেনে এনে কেউ যখন বলে "বিশ্বের বেশিরভাগ মুসলমান যে ফিক্বহ অনুসরণে নামাজ পড়ে তথা হানাফীদের নামাজ রাসুলের নামাজের মত নয়" তখন আমরা সত্যিই চিন্তিত হয়ে যাই যে, 'এটা কি ইখতিলাফ নাকি খিলাফ?' এতবছর পর উদ্ভাবিত এই অদ্ভুত আপত্তির পেছনে রহস্য কি?
জাতি জানতে চায়!
 
-------
Share:

March 7, 2015

ইসলামে বিভক্তি প্রসঙ্গ এবং একটি উদাহরন.....


(একটু ধৈর্য নিয়ে পড়ুন নিশ্চিত মজা পাবেন)
-
আমাদের (বনানী) মাদরাসার মসজিদটা বেশ বড়সড়, প্রতি কাতারে আনুমানিক ৯০ থেকে ১০০ জন দাড়াতে পারে, সাধারনত প্রতি ওয়াক্তে ৬ কাতার মুসল্লি হয় অর্থাত্‍ মোটামুটি ৫৫০ বা ৬০০ লোক।
 
এখন প্রতিদিন ফজরের পর মুসল্লিরা ৫ ফিরকায় বিভক্ত হয়ে যায় :-P একদল মসজিদের দক্ষিন দিকে বসে যিকির-আযকার করে, আরেকদল উত্তর দিকে বসে কোরআন হাদীস থেকে তালিম করে, আরেকদল বাহিরে বারান্দায় কোরআন শরীফ পড়া শিখে, আর মসজিদের মাঝখানে আমরা ছাত্ররা নিজ নিজ দৈনন্দিন আমল করি আর সুরা ইয়াসিন পড়ি।

কি? ৪টা মাজহাব পাইলেন? :-) এখন আসুন এই চার মাজহাবি ফিরকাকে কোরআন-সুন্নাহর কষ্টি পাথরে যাচাই করি......

১। প্রথম ফিরকার ব্যাপারে দেখুন আল্লাহ কোরআনে কি বলছেনঃ
وَاسْتَغْفِرْ لِذَنْبِكَ وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ بِالْعَشِيِّ وَالإبْكَارِ
অর্থঃতুমি তোমার ভুল-ত্রুটির জন্যে ক্ষমা চাও এবং সকাল-সন্ধ্যায় তোমার রবের প্রশংসাসহ পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর। (মুমিন, ৪০/৫৫)
(পবিত্রতা subhanallah, প্রশংসা alhamdulillah, মহিমা allahu akbar)

এছাড়াও সকাল সন্ধ্যায় যিকিরের নির্দেশ এসেছেঃ সুরা সদঃ১৮ আহযাবঃ৪২ ফাতহঃ৯ নুরঃ৩৬

২। দ্বিতীয় ফিরকার ব্যাপারে তো আপনারা জানেনই, এরকম অসংখ্য হাদীস আছে যে, আল্লাহর রাসুল ফজরের নামাজের পর সাহাবাদের নিয়ে আলাপ আলোচনা করতেন, নসিহত করতেন, কারো কিছু বলার থাকলে শুনতেন এবং সমাধান দিতেন। এখন যেহেতু আল্লাহর রাসুল সাঃ আমাদের মাঝে নেই তাহলে কোরআন থেকে তেলাওয়াত করে তার অনুবাদ করা বা শোনা, রাসুল সাঃ এর হাদীস পড়ে তা অনুবাদ করা শোনা কি মসজিদে নববীর সেই সকালের মজলিসের প্রতিনিধিত্ব করছেনা? আর রাসুল সাঃ তো বলেছেনই "সকাল সন্ধ্যায় ইলমের একটি অধ্যায় শিক্ষা করা হাজার রাকাত নফল পড়ার চেয়া উত্তম" (ইবনে মাযাহ)

৩। মসজিদের বারান্দায় বসা তৃতীয় ফিরকা অর্থাত্‍ কুরআন শিক্ষার্থিদের বেলায় উপরের দুই প্যারার সবই প্রযোজ্য, তারা যেমন সর্বোত্তম জিকির তথা কো রআন তিলাওয়াত করছে আবার দ্বীনি ইলম তো শিখছেই।

৪। আর চতুর্থ ফিরকা ;-) মানে আমরা কয়েকটা হাদীসের ওপর আমল করছি, সুরা ইয়াসিন পড়তে যেমন রাসুল সাঃ বলেছেন তেমন অন্যান্য দোয়া যেগুলো ছাত্ররা পড়ে থাকে সেগুলোও বিভিন্ন হাদীসে এসেছে।

এখন এত কথা বলার অর্থ হচ্ছে এখানে যেমন ৪ দলই কুরআন হাদীসের ওপর আমল করছে, আল্লাহ ও তার রাসুলের অনুসরন আনুগত্য করছে, এবং ৪ দলই সঠিক! ঠিক তেমনই হানাফী, মালেকী, শাফেয়ী, হাম্বলী ৪ মাযহাবের অনুসারিরাই কুরআন হাদীসের ওপর আমল করছে, আল্লাহ ও তার রাসুলের অনুসরন আনুগত্য করছে, এবং ৪ দলই সঠিক ইসলামের ওপর আছে।

আর বাকি থাকলো আরেক ফিরকা তথা গাইরে মুকাল্লিদরা যারা নামাজের পর চার মাযহাব থেকে বের হয়ে বাড়িতে গিয়ে মুড়ি খায় :-P
 
-----------
Share: