বড়দের ভুল নিয়ে মন্তব্যের আদবও বড়দের থেকেই শেখা উত্তম।
উদাহরণস্বরূপ রফি উসমানী দামাত বারাকাতুহুর একটা বই আছে ডা. আব্দুল হাই আরেফী রহ.কে নিয়ে। বইটা বাংলায় অনুবাদ হয়েছিল "ডাক্তারখানকা" নামে। এই বইটাতে উনাদের দুই ভাই পড়াশোনা শেষ করার পর কিভাবে তাযকিয়ার মেহনত করেছেন, কিভাবে শায়েখের সাথে সম্পর্ক রেখেছেন, উনাদের পিতা মুফতি শফি রহ. এর সাথে শায়েখের কিছু ঘটনা, পিতার ইন্তিকালের পর মুরব্বি হিসেবে ছায়ার মত পাওয়া, এসব বিষয়ে সেখানে আলোচনা আছে। আর কথা প্রসঙ্গে কিছু বয়ান বা নসিহতের সারাংশও বইটাতে উঠে এসেছে।
বইটা একজনের থেকে নিয়ে পড়েছিলাম, পরে অনেক খুজেও আর পাইনি।
যাহোক, আব্দুল হাই আরেফী রহ. আলেম ছিলেন না, একজন ডাক্তার ছিলেন। তাযকিয়া নফসের ধারায় থানবী রহ. এর ইযাজাতপ্রাপ্ত ছিলেন।
আলেম না হলে যেটা হওয়া স্বাভাবিক, কখনও কখনও এমন কোনো হাদিস বা ঘটনা বর্ণনা করে ফেলতেন যার মাকবুল হওয়ার ব্যাপারে আলেমদের আপত্তি আছে। রফি উসমানী হাফিযাহুল্লাহু এসব ক্ষেত্রে ঘটনাটা প্রথমে বর্ণনা করেছেন, এরপর নিচে আলাদাভাবে বলে দিয়েছেন "বর্ণনাটার ব্যাপারে অমুক অমুক মুহাদ্দিসের মত হচ্ছে এটা গ্রহণযোগ্য নয়। সুতরাং বিষয়টি এরকম নয়, সঠিক হল এরকম।"
এখান থেকে আমি অন্তত তিনটা জিনিসটা শিখেছি,
এক. আমার উস্তায বা মুরব্বির থেকে ঘটনাক্রমে যদি এমন কিছু পাওয়া যায়, যেটা আমার ইলম অনুযায়ী নিশ্চিতভাবেই মেনে নেয়ার মত না। তাহলে সেব্যাপারেও আদব রেখে মন্তব্য করা চাই।
দুই. বড়দের মন্তব্য রদ করার ক্ষেত্রে নিজের তাহকীক উল্লেখ করার চেয়ে অন্য বড় কারও প্রাসঙ্গিক ক্বওল উল্লেখ করে দেয়া বেশি নিরাপদ।
তিন. তরুণ আলেমদের মাঝে একটা হতাশা দেখা যায়, অমুক শায়খ তো তাযকিয়ার মেহনতের জন্য প্রসিদ্ধ, বিদআত থেকেও মুক্ত। কিন্তু দ্বীনের জন্য লড়াই ইত্যাদির ব্যাপারে তো সচেতন না।
এরও সমাধান আছে, আর তা হচ্ছে, আমি উনার কাছে যে জন্য ইস্তিফাদা করতে গিয়েছি, সেটা হাসিল করার চেষ্টা করব, কোনো ভুল দেখলে সেক্ষেত্রে নিজের ইয়াক্বিনি ইলমের ওপর আমল করতে থাকবো। আর বেয়াদবি যাতে না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখবো।
আর একটা বিষয় মাথায় রাখলে অনেক মাসআলা সমাধান হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ, তাহলো: নবী-রাসূলরা ছাড়া কাউকে যেন আমরা সর্বক্ষেত্রে পারফেক্ট মনে না করি। সবার কাছে যেন সব বিষয়ের চুড়ান্ত সমাধান আশা না করি...।
আল্লাহ আমাদের বুঝার ও মানার তাওফিক দিক। আমিন।
0 comments:
Post a Comment