August 17, 2015

সাদকাহ

অনেক সময় দেখা যায় কোনো দুস্থ আমাদের কাছে টাকা চায়, রেস্তোরা থেকে বের হচ্ছি অল্প বয়সী কোনো ছেলে হাত পেতে বলে "ভাইয়া......." অথবা বিকেলে রাস্তায় হাটছেন এক পিচ্চির আবেদন "ভাইয়া....." অথবা কোনো নারী এসে বলে "বাবা! কিছু সাহায্য করো..."
.
ব্যাপারগুলো খুব সহজেই ইগনোর করি, আমরা স্বাভাবিকভাবে এগুলো এড়িয়ে যেতেই অভ্যস্ত। আমরা এর পিছে অবশ্য মনে মনে কিছু যুক্তি দাড় করিয়ে নেই, যেমনঃ মনে হয় হুদাই টাকা চাইতেছে! অথবা আরে মহিলার দেখগা টাকা-পয়সা সবি আছে তাও এটাকে পেশা বানিয়ে নিয়েছে! অথবা আরে এসব পিচ্চির বাপ-মা সব আছে এমনি দেখ ধান্দা করছে! অথবা ভাবি এই ১টাকা ২টাকা দিয়ে কিই বা হবে? বা ৫টাকা দিয়ে দিব? এটা দিয়ে তো.... (ঘোড়ার ডিম পাওয়া যায়) :-/
.
এগুলো কথা শুনতে পাওয়া যায় কয়েক বন্ধু মিলে ঘুরতে বের হয়েছি, বা ভাই-ব্রাদারদের সাথে বেড়াচ্ছি তখন কেউ টাকা চাইতে আসলে... তাছাড়া কথাগুলো আমরা মনে মনে আউড়াই..
এটা আমার কথা বলছি, আপনারা তো অনেক ভালো মানুষ.. আপনাদের এমন নাও হতে পারে, আমার হয় তাই লেখাটা লেখছি আমার নিজের সংশোধনের উদ্দেশ্যে।
.
তবে আমাদের একটু ভাবা উচিৎ, একটা মানুষ কখন অন্যের কাছে হাত পাতে? অচেনা অজানা মানুষ কেন আপনার কাছে টাকা চাইবে?
.
আর যখন শীর্ণকায়, খালিগায়ে একটা ছেলে আমাদের কাছে হাত পাতে তখন আমাদের আরেকটা বিষয় ভাবা উচিৎ, তা হচ্ছে.. এই ছেলেটা তো আমার চেয়ে গরীব তাইনা? আর এর যদি সামর্থ থাকতো তাহলে তো সে আমার মত কলেজ বা মাদরাসার হোস্টেলে বসে বাপের টাকা উড়াতো। যেহেতু তার সামর্থ নাই এজন্যই তো সে আজ হাত পাতছে।
.
সম্ভব হলে মাঝেমধ্যে একটা কাজ করবেন, যখন কোনো গরিব ছেলেকে দেখবেন টাকা চাচ্ছে তখন একটু দূরে দাঁড়িয়ে তার মুখের দিকে তকিয়ে উপরের কথাগুলো ভাববেন। নিজের অবস্থার কথা একবার ভাববেন, আর তার সাথে এই ছেলেটার কথাটাও ভাববেন।
সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতায় অন্তরটা ভরে যাবে...
.
খুবই অসম্ভব হলে সামান্য একটা লিমিট নির্দিষ্ট করে নিতে পারেন, যেমনঃ আমি সপ্তাহে ১০টাকা দান করবো! অথবা, সোমবার এবং শুক্রবার আমি ৫টাকা করে দান করবো!
.
৫টাকা বা ১০টাকা কিন্তু খুব বেশি না, বিকেলে একাএকা চা-পানি খেতে বসলেও ৩০-৪০টাকার নিচে খরচ হয়না, আর সাথে ভাই-ব্রাদার থাকলে তো নিশ্চিত ৩অংকে উঠে যায়। আর এই ৫টাকা ১০টাকা খরচ করলে যা হবে.. আপনি দান করার ওপর অভ্যস্ত হয়ে যাবেন। পরে বেশি দান করলেও অন্তরে খুব বাধবে না...
..
খুব কষ্ট.. তাইনা?? ইশ! দঅঅশ টাকা দিয়ে দিব!! বিরাট ব্যাপার... :-(
..
আল্লাহ মাফ করুক
[সংযুক্তি]
কিছুদিন আগে এই লেখাটার পক্ষে একটা হাদিস মনে পড়েছিল- রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহর নিকট প্রিয় আমল হচ্ছে সেটাই, যা সবসময় (দায়েমিভাবে) করা হয়, যদিওবা সেটা কম। (সহিহ মুসলিম, মুসনাদে আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারাক রহ.)
অর্থাৎ কম হোক, তবুও যদি কোন আমল আপনি লাগাতার দীর্ঘদিন করেন, সেটা আল্লাহর কাছে অনেক পছন্দের!
Share:

0 comments:

Post a Comment