July 27, 2015

কাফের বলার ব্যাপারে সতর্ক হউন..

প্রসংশা কেবল আল্লাহর জন্যই, আর দরুদ ও সালাম রাসুল সাঃ এর ওপর বর্ষিত হোক।
.
পর সংবাদ এই যে, বর্তমান সময়ে তাকফীর করার পরিমাণ ভয়াবহ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
একজন কালিমা পড়া মুসলমানকে কাফের বলা অথবা মুশরিক বলা যেন কোনো বিষয়ই না! খুব সহজেই আমরা বলে ফেলছি 'এটা কুফরি, ওটা শিরকি! ওতো কাফের! ওরা সব মুশরিক!'
আল্লাহর পানাহ! একটু সুস্থ বিবেকে ভাবুন শিরক কি এতই মামুলি বিষয়? ভাই আল্লাহকে ভয় করুন।
.
স্বয়ং আল্লাহ তাআলা বর্ণনা করছেন, হযরত লোকমান আঃ তার পুত্রকে বলেছেনঃ নিশ্চয় শিরক হচ্ছে মহা জুলুম! (সুরা লোকমান, আয়াত ১৩)
.
আল্লাহ তাআলা বলছেন, "নিশ্চয় আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে তার সাথে শিরক করে। আর এছাড়া বাকি সবকিছু চাইলেই মাফ করে দেন। আর যে আল্লাহর সাথে শিরক করে সে তো বড় অপবাদ দিল।" (সুরা নিসাঃ ৪৩)
.
আজ এত বড় একটা কথা আমরা কত সহজেই বলে ফেলছি,
অথচ আমরা কি বুখারী শরীফ খুলে দেখিনা?
.
"দাহহাক রহঃ থেকে বর্ণিত হয়েছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে কেউ একজন মুমিনকে লানত করলো, সে যেন তাকে হত্যা করলো। আর যে কেউ কোন মুমিন এর উপর কুফর এর অভিযোগ আনলো, সে যেন তাকে হত্যা করলো।” (বুখারী)
.
আল্লাহর রাসুল কত কঠোরভাবে সতর্ক করে গেছেন, আমরা তা বিলকুল ভুলতে বসেছি। আমরা খুব ভালোভাবে জানার পরেও এমনভাবে মুসলমানদের তাকফীর করছি যে (আল্লাহর পানাহ) মনে হচ্ছে রাসুল সাঃ এর কথার কোনো গুরুত্বই নেই! এজন্যই সেদিন দেখলাম এক কোন এক বইয়ে (!) বলা হয়েছেঃ যারা ইমামের পিছে সুরা ফাতিহা পড়েনা তারা কাফের! (নাউযুবিল্লাহ, আস্তাগফিরুল্লাহ)
আর আরেক মুফতি সাহেব এবং তার শিষ্যগণ তো সারাদিনই বলে, "যারা ভোট দেয়, যারা ভোটে দাঁড়ায় তারা সব কাফের! তারা যারা প্রচলিত এসব আদালতে বিচার চায়, যারা বিচার করে তারা সব কাফের! (নাউজুবিল্লাহ) একদল তো বলেই থাকে ৪ মাযহাবের ইমামদের অনুসরণ করা শিরক! (মানে ان الحكم الا لله টাইপের আরকি!) আল্লাহর কাছে এসব মানুষরুপি শয়তান থেকে পানাহ চাই।
.
কত বড় কথা! অথচ কি সহজভাবেই না বলে ফেলছে তারা। যে আল্লাহর ওপর ঈমান এনেছে, রাসুলকে নবী মেনে নিয়েছে তাকে কাফের বলার অধিকার কে দিল আপনাকে?
কুফর শিরক বিষয়গুলো কি এতই মামুলি? এভাবে পাইকারি হারে তাকফীর করতে থাকলে তো আস্তে আস্তে মানুষের মন থেকে শিরক শব্দটির প্রতি ঘৃনা মুছে যাবে, এবং এটাকে স্বাভাবিক মনে করতে শুরু করবে। এতে কোনো সন্দেহ নাই!
ভাই খুব ভালোভাবে লক্ষ্য করুন, গুরুত্বের সাথে স্বরণ রাখুনঃ
আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “যখন কোন ব্যক্তি তার ভাইকে ‘কাফের’ বলে সম্বোধন করে, তখন তাদের যেকোন একজন কাফের এ পরিণত হলো।”
(মুসনাদে আহমদ, মুসনাদে বাজ্জার, তাবারানী, বায়হাকী)
.
পরিশেষে ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল রহঃ এর ফাতওয়া লক্ষ্য করুনঃ
“তাকফিরীদেরকে কাফেরদের ন্যায় হত্যা করা, তাদের মধ্যকার আহতদেরকেও হত্যা করা, আর যদি তাদেরকে বন্দী করা যায়, তবে একজন কাফেরকে যেভাবে তাওবা করানো হয় তাকেও সেভাবে তাওবা করাতে হবে।” (আল মুগনি, ১০ম খন্ড)
.
অন্যায় তাকফীর এর মত নিকৃষ্ট ও জঘন্য অপরাধ থেকে যেন আল্লাহ আমাদের হিফাযত করেন।
আমীন..
-----------
পোস্টের ফেবু লিংকঃ https://facebook.com/thealmahmud/posts/850292021726996
-----------

কমেন্ট থেকে- 
Tanvir Ahmed
মুসলমান কেউ কুফরি বা শিরক করলে তাকে কী কাফির মুশরিক বলা যাবে না?
Abdullah Almahmud  
সেটা অভিজ্ঞ আলেমরা যাচাই করে সিদ্ধান্ত দিবেন, তারপর অন্যরা বলবেন। আগেই সাধারণ জনগণের হাতে এটা ছেড়ে দেয়া যাবেনা..
Share:

0 comments:

Post a Comment