বডি মেমোরি কী?
এর উত্তর অনেক রকম হতে পারে। আমি এটা বুঝেছি খুব বাজে একটা উদাহরণ এর মাধ্যমে।
আপনি সহজভাবে বুঝুন... আপনার ঘরের দরজা, ডান পার্শে সুইচবোর্ড। প্রতিদিন দরজা খুলে ডান দিকে হাত বাড়িয়ে লাইট জালান। ধরুন আজ আপনি ঘরে ঢুকলেন, লাইট জালানোই আছে। তবুও আপনার হাত চলে গেলো সুইচবোর্ড এ!
cause of body memory
শাস্ত্রীয় স্টাইলে বলতে চাইলে এভাবে বলা যায়, ব্রেইন থেকে শরীরের কোনো অঙ্গে একটা কমান্ড বারবার প্রেরণের ফলে এক সময় আর কমান্ড পাঠানোর প্রয়োজন হয়না, বডিতেই স্ট্র্যাটেজী সেভ হয়ে যায়, সামান্য ক্লু পেলেই শরীর ওই কাজটা আগেরবারের হুবহু পুনরাবৃত্তি করে।
----
তো এবার আসল কথায় আসা যাক, আল্লাহ আমাদের মাফ করুক। আমাদের অনেকের অবস্থা এমন যে, আমরা শুধু নামাজ শুরু করি, বাকি নামাজ সমগ্র দুনিয়ার ফিকিরে ব্যাস্ত থাকি। অভ্যাস অনুযায়ী হাত-পা উঠছে বসছে, মুখ দুয়া সুরা পড়ছে, একসময় মাথা সালাম ফিরালো। এরপর হুশ আসলো, অহ!! আমি তো নামাজে ছিলাম, তাইনা?
অথচ পুরো নামাজে আমাদের মনযোগ একটুও নামাজে স্থির হয়নি।
ওই যে! আমরা শুধু তাকবীর বলে ট্রিগার প্রেস করেছি বাদবাকি কাজ ব্রেইন থেকে হয়নি বরং বডি মেমোরি থেকে সম্পাদন হয়েছে।
-
এসব নামাজের ব্যাপারে শরীয়তের সিদ্ধান্ত কি? উলামায়ে কিরাম বলেন- বেখেয়ালে নামাজ পড়লে নামাজের ফরজ আদায় হয়ে যাবে বটে, কিন্তু সওয়াব পাবেনা। দলিল স্বরূপ আবু দাউদ শরিফ থেকে দুটি হাদীস বলা যায়-
.
১। “বান্দা নামাজ আদায় করে, সেই নামাজের এক-দশমাংশ বা এক-নবমাংশ বা এক-অষ্টমাংশ বা এক-ষষ্ঠাংশ বা এক-পঞ্চমাংশ বা এক-চতুর্থাংশ বা এক-তৃতীয়াংশ অথবা অর্ধেক সওয়াব পেতে পারে|”
২। “বান্দা তার নামাজের শুধু মাত্র সেই অংশের সওয়াব পায়, যে টুকু অংশ সে সজ্ঞানে(বুঝে শুনে) করে|” [দুটি হাদীসই আবু দাউদ এর]
.
এখন এই হচ্ছে আমাদের অবস্থা! আমরা মন দিয়ে নামাজ পড়িনা, বরং বডি মেমোরি দ্বারা পড়ি। যার কারণে নামাজ দ্বারা আমার আত্মার উন্নতি হচ্ছে না।
তো নামাজের কোনো উপকার যেনো মিস না যায় এজন্য আমরা কি করতে পারি?
প্রথমতঃ আমাদের মনযোগ দিয়ে নামাজ পড়তে হবে। এরপর সব সুরা ক্বিরাত দুয়া দরুদ ঠিকমত পড়তে হবে।
-
--
কিভাবে নামাজে মনযোগী হতে পারি? এটা আপনাদের কাছে অধমের প্রশ্ন, সমাধান জানলে অবশ্যই শেয়ার করবেন।
কেউ বলে- "একটা কাজ করতে পারো তা হচ্ছে নামাজে সুরা দুয়া এসব পড়ার সময় অর্থ বুঝে পড়ার চেষ্টা করো, সব অর্থ না বুঝলেও যে রিডিং পড়ছো অন্তত সেসব খেয়াল করে পড়ো। " এটা তেমন কার্যকরী মনে হয়নি। :/
.
আমার তাফসীরে জালালাইন এর উস্তায এরকম বলেছিলেন, "তুমি দুইটা কাজ করে দেখতে পারো। এক. তাহাজ্জুদ পড়ার চেষ্টা করো, দুই রাকাত চার রাকাত যা পারো। তাহাজ্জুদ এর কারণে নামাজের প্রতি আকর্ষণ বাড়ে। তাহাজ্জুদের পর আল্লাহর কাছে দুয়া করো মনযোগের জন্য, স্থির অন্তরের জন্য।
(রাতে জাগা না পেলে এশার পরেই তাহাজ্জুদ পড়ে ঘুমানো যেতে পারে)
আর আরেকটা বিষয় নামাজের যে অবস্থায় যেখানে তাকানো উচিৎ সেদিকেই দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখো। যেমনঃ দাঁড়ানো অবস্থায় সিজদার যায়গায়, রুকুতে দুইপায়ের মাঝে (ঠ্যাং না কিন্তু... ) আর আত্তাহিয়াতুর সময় উরুর ওপর। আমরা আসলে নামাজের সময় এসব যায়গায় তাকাইনা, একটা ভাসাভাসা দৃষ্টি থাকে.. আসলে কোথায় তাকায়া থাকি আমরা নিজেও জানিনা।"
তো আমার উস্তাযের দেয়া টিপস মাঝেমাঝে ফলো করার চেষ্টা করি, তবুও কিভাবে যেন টিপ্স-চিপ্স সব ভুলে যাই। মহান রবের সামনে দাঁড়িয়ে কি কি সব আলতুফালতু চিন্তায় ডুবে যাই। আস্তাগফিরুল্লাহ..
--
এবার আসা যাক সুরা কিরাত প্রসঙ্গে, বেখেয়ালে নামাজ পড়লে সাধারণত এক দুইটা সুরাই ঘুরেফিরে মুখে আসে, কখনো দুই রাকাতে একই সুরা পড়া হয়ে যায়।
এভাবে নামাজ হবে তবে, মাকরুহ হবে, কখনো বেখেয়ালে সুরা কিরাতে এমন ভুলও হয়ে যায়, যার কারণে নামাজ ভেঙ্গে যায়।
--
আল্লাহ যেন আমাদের মনযোগ দিয়ে খুশু-খুযুর সাথে নামাজ আদায়ের তাওফিক দেন, আমীন
- ১১ আগস্ট ২০১৬
ফেবুতে- https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1054415504647979&id=100002386190185
এর উত্তর অনেক রকম হতে পারে। আমি এটা বুঝেছি খুব বাজে একটা উদাহরণ এর মাধ্যমে।
আপনি সহজভাবে বুঝুন... আপনার ঘরের দরজা, ডান পার্শে সুইচবোর্ড। প্রতিদিন দরজা খুলে ডান দিকে হাত বাড়িয়ে লাইট জালান। ধরুন আজ আপনি ঘরে ঢুকলেন, লাইট জালানোই আছে। তবুও আপনার হাত চলে গেলো সুইচবোর্ড এ!
cause of body memory
শাস্ত্রীয় স্টাইলে বলতে চাইলে এভাবে বলা যায়, ব্রেইন থেকে শরীরের কোনো অঙ্গে একটা কমান্ড বারবার প্রেরণের ফলে এক সময় আর কমান্ড পাঠানোর প্রয়োজন হয়না, বডিতেই স্ট্র্যাটেজী সেভ হয়ে যায়, সামান্য ক্লু পেলেই শরীর ওই কাজটা আগেরবারের হুবহু পুনরাবৃত্তি করে।
----
তো এবার আসল কথায় আসা যাক, আল্লাহ আমাদের মাফ করুক। আমাদের অনেকের অবস্থা এমন যে, আমরা শুধু নামাজ শুরু করি, বাকি নামাজ সমগ্র দুনিয়ার ফিকিরে ব্যাস্ত থাকি। অভ্যাস অনুযায়ী হাত-পা উঠছে বসছে, মুখ দুয়া সুরা পড়ছে, একসময় মাথা সালাম ফিরালো। এরপর হুশ আসলো, অহ!! আমি তো নামাজে ছিলাম, তাইনা?
অথচ পুরো নামাজে আমাদের মনযোগ একটুও নামাজে স্থির হয়নি।
ওই যে! আমরা শুধু তাকবীর বলে ট্রিগার প্রেস করেছি বাদবাকি কাজ ব্রেইন থেকে হয়নি বরং বডি মেমোরি থেকে সম্পাদন হয়েছে।
-
এসব নামাজের ব্যাপারে শরীয়তের সিদ্ধান্ত কি? উলামায়ে কিরাম বলেন- বেখেয়ালে নামাজ পড়লে নামাজের ফরজ আদায় হয়ে যাবে বটে, কিন্তু সওয়াব পাবেনা। দলিল স্বরূপ আবু দাউদ শরিফ থেকে দুটি হাদীস বলা যায়-
.
১। “বান্দা নামাজ আদায় করে, সেই নামাজের এক-দশমাংশ বা এক-নবমাংশ বা এক-অষ্টমাংশ বা এক-ষষ্ঠাংশ বা এক-পঞ্চমাংশ বা এক-চতুর্থাংশ বা এক-তৃতীয়াংশ অথবা অর্ধেক সওয়াব পেতে পারে|”
২। “বান্দা তার নামাজের শুধু মাত্র সেই অংশের সওয়াব পায়, যে টুকু অংশ সে সজ্ঞানে(বুঝে শুনে) করে|” [দুটি হাদীসই আবু দাউদ এর]
.
এখন এই হচ্ছে আমাদের অবস্থা! আমরা মন দিয়ে নামাজ পড়িনা, বরং বডি মেমোরি দ্বারা পড়ি। যার কারণে নামাজ দ্বারা আমার আত্মার উন্নতি হচ্ছে না।
তো নামাজের কোনো উপকার যেনো মিস না যায় এজন্য আমরা কি করতে পারি?
প্রথমতঃ আমাদের মনযোগ দিয়ে নামাজ পড়তে হবে। এরপর সব সুরা ক্বিরাত দুয়া দরুদ ঠিকমত পড়তে হবে।
-
--
কিভাবে নামাজে মনযোগী হতে পারি? এটা আপনাদের কাছে অধমের প্রশ্ন, সমাধান জানলে অবশ্যই শেয়ার করবেন।
কেউ বলে- "একটা কাজ করতে পারো তা হচ্ছে নামাজে সুরা দুয়া এসব পড়ার সময় অর্থ বুঝে পড়ার চেষ্টা করো, সব অর্থ না বুঝলেও যে রিডিং পড়ছো অন্তত সেসব খেয়াল করে পড়ো। " এটা তেমন কার্যকরী মনে হয়নি। :/
.
আমার তাফসীরে জালালাইন এর উস্তায এরকম বলেছিলেন, "তুমি দুইটা কাজ করে দেখতে পারো। এক. তাহাজ্জুদ পড়ার চেষ্টা করো, দুই রাকাত চার রাকাত যা পারো। তাহাজ্জুদ এর কারণে নামাজের প্রতি আকর্ষণ বাড়ে। তাহাজ্জুদের পর আল্লাহর কাছে দুয়া করো মনযোগের জন্য, স্থির অন্তরের জন্য।
(রাতে জাগা না পেলে এশার পরেই তাহাজ্জুদ পড়ে ঘুমানো যেতে পারে)
আর আরেকটা বিষয় নামাজের যে অবস্থায় যেখানে তাকানো উচিৎ সেদিকেই দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখো। যেমনঃ দাঁড়ানো অবস্থায় সিজদার যায়গায়, রুকুতে দুইপায়ের মাঝে (ঠ্যাং না কিন্তু... ) আর আত্তাহিয়াতুর সময় উরুর ওপর। আমরা আসলে নামাজের সময় এসব যায়গায় তাকাইনা, একটা ভাসাভাসা দৃষ্টি থাকে.. আসলে কোথায় তাকায়া থাকি আমরা নিজেও জানিনা।"
তো আমার উস্তাযের দেয়া টিপস মাঝেমাঝে ফলো করার চেষ্টা করি, তবুও কিভাবে যেন টিপ্স-চিপ্স সব ভুলে যাই। মহান রবের সামনে দাঁড়িয়ে কি কি সব আলতুফালতু চিন্তায় ডুবে যাই। আস্তাগফিরুল্লাহ..
--
এবার আসা যাক সুরা কিরাত প্রসঙ্গে, বেখেয়ালে নামাজ পড়লে সাধারণত এক দুইটা সুরাই ঘুরেফিরে মুখে আসে, কখনো দুই রাকাতে একই সুরা পড়া হয়ে যায়।
এভাবে নামাজ হবে তবে, মাকরুহ হবে, কখনো বেখেয়ালে সুরা কিরাতে এমন ভুলও হয়ে যায়, যার কারণে নামাজ ভেঙ্গে যায়।
--
আল্লাহ যেন আমাদের মনযোগ দিয়ে খুশু-খুযুর সাথে নামাজ আদায়ের তাওফিক দেন, আমীন
- ১১ আগস্ট ২০১৬
ফেবুতে- https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1054415504647979&id=100002386190185
0 comments:
Post a Comment