June 20, 2018

অনলি-মি ছবি!

[ক]
অনর্থক পিকচার আপলোড করার অভ্যাস, অহেতুক যে সে বিষয়ে রিয়েক্ট করার অভ্যাস, এরকম আরও কিছু ফালতু অভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় হতে পারে "only me" করে পোস্ট দেয়া।
[খ]
আমি প্রথমে ফেসবুকে পিক আপলোড দিতাম না। ঢাকায় যে বছর পড়েছিলাম, সঙ্গদোষে হঠাৎ কি হল; ধুমায়া ছবি আপলোডানো শুরু করলাম। অন্যদের মত যদিও তেমন ঘোরাঘুরি করতাম না। তবুও এখন চিন্তা করলে বুঝি, তখন আমার অবস্থা বেশ খারাপ ছিল। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম গিয়ে অভ্যাসটা নিয়ন্ত্রণে নেয়া বেশ কষ্টকর হচ্ছিল। কারণ সেখানে তো দেখানোর মত আরও ভালো ভালো ব্যাকগ্রাউন্ড আছে!!
ব্যাপারটা অনেকটা ড্রাগ-এডিকশনের মত, খেয়ে কোন লাভ নাই, তবুও ভাল লাগে। ছবি আপ করছেন না, ভালোই আছেন। যদি শুরু করেন, বিভিন্নজনের মন্তব্য শুনে আরও আপলোডাইতে ইচ্ছা করবে।
[গ]
তবে আলহামদুলিল্লাহ, মনে হয় অনেকেই এখন সচেতন হচ্ছে এবিষয়ে। অথবা এরকম পাবলিক আমার লিস্টে রাখি না দেখে এমন মনে হচ্ছে!
আচ্ছা! জায়েজ-নাজায়েজ নিয়ে না বলি। ঝগড়া করার মত পর্যাপ্ত ক্যালোরি একাউন্টে নাই। তবে ভাই-ব্রাদার হিসেবে বলব, আজাইরা ছবি আপ দেয়া একটা অরুচিকর বিষয়। নিঃসন্দেহে অনর্থক কাজ। এথেকে দূরে থাকাই ভালো।
রাসূল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আমরা জেনেছি, ইসলামের কিছু সৌন্দর্য রয়েছে, মানুষের অপ্রয়োজনীয় বিষয় পরিত্যাগ করার মাঝে! (তিরমিযি)
তাই আসুন না একটু চেষ্টা করি। আমি কি করছি, কোথায় যাচ্ছি, কি খাচ্ছি, এসব প্রচার করার আগে একটু ভাবি এতে কি ফায়দা আছে?
যদি থাকে, তাহলে আলহামদুলিল্লাহ! প্রচার করব।
না থাকলে মুসলমান হিসেবে ঈমানের-ইসলামের সৌন্দর্য রক্ষার চেষ্টা অন্তত করি।
[ঘ]
আচ্ছা! বলছিলাম চিটাং যাওয়ার পর...
চিটাগাং গিয়েও প্রথম প্রথম প্রচুর ছবি আপ করেছি। তবে সব অনলি মি করে রাখতাম। আগের ছবিগুলোও এলবামে পুরে প্রাইভেসি দিয়ে রেখেছিলাম। পরে খেয়াল করে দেখলাম, আমার ছবি তোলার হার প্রায় তিন ভাগের একভাগে নেমে এসেছে। পরের বছর আলহামদুলিল্লাহ এটা প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে গেল।
দাওরায়ে হাদিসের শেষের দিকে অর্থাৎ গতবছর এরকম সময়েই.. রাঙ্গামাটি গেলাম কয়েকজন মিলে। ফোনের ক্যামেরা তেমন ভালো না, ছবি তুলতেও পারি না। তবে চেষ্টা করেছিলাম কিছু সুন্দর ছবি তুলতে।
আরে আমার ছবি না! আশেপাশের, পরিবেশের, প্রকৃতির!
অন্যরা যেখানে নিজের কয়েক ডজন খানেক ছবি তুলে ফেলেছে। আমি ২টা পিকের মধ্যে নিজেকে সীমাবদ্ধ রেখেছিলাম, তাও আবার প্রথমটা ভালো হয়নি, তাই আরেকটা। আমার মনেও হয়নি আমি কোন বিরাট কিছু মিস করে ফেললাম। তবে পরে সম্ভবত: প্রাকৃতিক ছবিগুলো ইন্সটাগ্রামে আপলোড দিয়েছিলাম। কিন্তু ওই দুইটা ছবি আর আপ করা হয়নি! ওই যে.. আস্তে আস্তে অভ্যাস দূর করা হয়েছে।
.
[ঙ]
গতকাল অমুকের আম্মা নাকি আমার ছবি চাইছে; তখন ছবি খুঁজে পাচ্ছিলাম না কি দিব! কয়েকবছর আগের তো শ'খানেক ছবি আছে। ফেসবুকেই আছে, কিন্তু এখনকার ছবি পাব কই? আর স্টুডিওর ছবির ওপর তো আমার নিজেরই বিশ্বাস নাই!! বোগাস..
যাহোক, আজ পাসপোর্টের জন্য ছবি তুলতে গিয়েছিলাম, তখন কথাগুলো ভাবলাম। মনে হল, ফেবুতে লিখে দেই। কারও হয়তো কাজে লাগবে।
হঠাৎ করে ছবি আপলোড দেয়া বন্ধ করা কষ্টসাধ্য মনে হলে, এই পদ্ধতি দেখতে পারেন, ইনশাআল্লাহ ফায়দা হবে।

-------
Share:

0 comments:

Post a Comment