October 3, 2016

আত্মা বিক্রয়! কার কাছে করবেন?

জীবনে সফলতার শর্টকাট কি জানেন?
সফলতার শর্টকাট হচ্ছে “আত্মা বিক্রয় করা!!”
ভয় পেলেন? আচ্ছা ব্যাখ্যা করা যাক, সহজেই বুঝে আসবে ইনশা-আল্লাহ । কোরআনে সম্ভবত দুইবার আত্মা কেনাবেচার কথা এসেছে।
প্রথমে এসেছে শয়তানের কাছে আত্মা বিক্রির কথা, সুরা বাকারা আয়াত ১০২।
 এখানে আল্লাহ বলেছেন "...তারা ভালভাবেই জানে যে, যে কেউ জাদু অবলম্বন করে, তার জন্য পরকালে কোন অংশ নেই। যার বিনিময়ে তারা তাদের আত্মা বিক্রয় করেছে, তা খুবই মন্দ! যদি তারা জানত..।"(২:১০২)
এরপর আত্মা বিক্রির কথা এসেছে আল্লাহর কাছে, সুরা তাওবাহ আয়াত ১১১।
আল্লাহ বলছেন- "আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মুসলমানদের থেকে তাদের জান ও মাল এই মূল্যে যে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত" (৯:১১১)
--
পুরো ব্যাপারটা সহজে বুঝানোর জন্য আমি Christopher Marlowe এর লেখা Doctor Faustus বইয়ের গল্পটি এক লাইনে বলতে পারি।
গল্পে ডক্টর ফস্টাস শয়তানের কাছে আত্মা বিক্রি করে বিনিময়ে সে জীবনে যা ইচ্ছে করবে, সেটাই পাবে!! কিন্তু শর্ত হচ্ছে, মৃত্যুর সময় তাঁর আত্মা শয়তান নরকে নিয়ে যাবে। অর্থাৎ আমাদের ভাষায় সে পরকালে জাহান্নামী হবে। বইটি বাংলাতেও অনূদিত হয়েছে।
মজার ব্যাপার কি জানেন? কথিত আছে ১৫৮৮ সালে লেখা এই গল্প(মূলত নাটক) স্টেজে পারফর্ম করার সময় একবার সত্যি সত্যিই শয়তান এসে হাজির হয়েছিল!!
(wiki says, The powerful effect of early productions of the play is indicated by the legends that quickly accrued around them—that actual devils once appeared on the stage during a performance.)
তাহলে এখান থেকে আমরা যে বিষয়টা বুঝতে পারি তা হচ্ছে...
  1. শয়তানের কাছে যদি কেউ আত্মা বিক্রি করে, অর্থাৎ শয়তানের পূজা করে (বেহেমিয়ান সোসাইটি, ইলুমিনাতির মত) তাহলে পার্থিব জীবনে অনেক কিছু পাবে, কিন্তু পরকালে তাঁর জন্য কোনো অংশ নাই!! 
  2. আর হ্যা, তারা আখিরাতে বিশ্বাস করেনা তা কিন্তু না! তাঁরা এটা জেনেশুনেই করছে... উল্লেখিত আয়াতে আল্লাহ্‌ তেমনি বলেছেন।  
  3. আর আমরা আরেকটা বিষয় আমরা খেয়াল করবো, সুরা বাকারায় কাফেরদের আত্মা বিক্রির ক্ষেত্রে শুধু আত্মার কথাই বলা হয়েছে, কিন্তু সুরা তাওবার আয়াতে মুমিনদের "আত্মা এবং সম্পদ" কিনে নেয়ার ব্যাপারে বলা হয়েছে। অর্থাৎ মুমিনদের জান-মাল উভয়টাই আল্লাহ কিনে নেন। 
  4. এরপর আবার এই আয়াতে কিতালের ব্যাপারেও বলা হয়ছে, কিতালের কথা সম্ভবতঃ এজন্য বলা হয়েছে, এটা সবচে কঠিন ইবাদাত। কেউ যদি আল্লাহর জন্য কিতাল করতে পারে তাঁর কাছে কোনো ইবাদতই কঠিন না। সে সব ইবাদতই করতে পারবে।  
-
এপর্যায়ে আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে, আল্লাহ কেন বেশি নিলেন? জান-মাল দুটোই নিলেন, শুধু জান নিতেন। কাফেরদের মত আমরাও দুনিয়ায় সম্পদশালী হতাম!!
তাহলে আপনার জানা উচিত, আমাদের আল্লাহ দেনও বেশি। আমাদের দুনিয়ায় কিছুই দেননা এমন তো না... কত নিয়ামতে ডুবে আছি একটু চিন্তা করেন। তবুও আমাদের মানতে হবে, দুনিয়ায় আল্লাহ যা দিচ্ছেন এর পুরোটাই ফাও! কারণ, আপনার একার সম্পদ কেন? পুরো দুনিয়া দিয়েও তো জান্নাতের চাবি খরিদ করা সম্ভব না।
-
তাহলে রিভিউ দেয়া যাক-
প্রথমতঃ স্যটানিস্ট বা শয়তান পুজারীরা ছেড়ে দিচ্ছেঃ আত্মা এবং পরকালের সব নিয়ামত
বিনিময়ে পাচ্ছেঃ দুনিয়ায় যা খুশি তাই করার সুবিধা (তবে শয়তান কথা তো? ভোগাস দিবেনা তার গ্যারান্টি নাই) :P
দ্বিতীয়ত, আল্লাহর মুমিন বান্দারা দিচ্ছেঃ আত্মা এবং সম্পদ
বিনিময়ে পাচ্ছেঃ আখিরাতে অনন্তকালের ভোগবিলাসী জীবন, পৃথিবীতে মনের প্রশান্তি নিয়ে বেচে থাকার সুযোগ। গ্যারান্টি চাই?
.
""...আল্লাহর চেয়ে প্রতিশ্রুতি রক্ষায় কে অধিক? সুতরাং তোমরা আনন্দিত হও সে লেনদেনের উপর, যা তোমরা করছ তাঁর সাথে। আর এ হল মহান সাফল্য।"" (সুরা তাওবাহ: আয়াত ১১১)
এবার সবচেয়ে সিদ্ধান্তটি নিন, আপনি কার কাছে আপনার আত্মা বিক্রি করবেন?
আল্লাহর কাছে? নাকি শয়তানের কাছে?

- ০৩ অক্টোবর ২০১৬

ফেবুতে- https://mobile.facebook.com/story.php?story_fbid=1099143023508560&id=100002386190185
Share:

4 comments:

  1. আপনি কি ইলুমিনাতি

    ReplyDelete
  2. ami kichu impossible icche puron korte chai😑😑

    ReplyDelete
  3. খুব সুন্দর জাযাকাল্লাহ্

    ReplyDelete