[[ক.]]
শুরুটা ছোটবেলার গল্প দিয়ে করার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু সিরিয়াস বিষয় এজন্য সেটা বাদ দিচ্ছি।
বছর দুয়েক আগের কথা, আমার এক নিকটাত্মীয়া দ্বীন পালনে কেবল অভ্যস্ত হয়ে উঠছে। সেই সুবাদে শরিয়া সংক্রান্ত টুকটাক বিষয়াদি আমাকে জিজ্ঞেস করে। সেরকম একদিন ওর রুমে বসে আছি, বলতে শুরু করলো-
"আচ্ছা মাহমুদ! রাতে তাহাজ্জুদ পড়তে উঠলে নাকি জ্বিন-টিন ভয় দেখায়?"
- :? পাইলেন কই এই খবর?
-- আমার মেসের এক বান্ধবী বলছে...!
.
শুনে কয়েক সেকেন্ড চুপ থাকলাম.. তারপর বললাম- "এটা একটা শয়তানী! যেন মানুষ তাহাজ্জুদ পড়তে না উঠে!!"
.
যাহোক! আলহামদুলিল্লাহ্ সে ওই ধোকায় বোকা হয়নি, এখনও সে রাতের নামাজ পড়ে। আজ আমাকে মেসেজ দিয়েছে, গতরাতে তাহাজ্জুদ মিস গেছে তাই ওর খুব মনখারাপ!!
.
[[খ.]]
আসলে যখন আপনি আল্লাহর ইবাদাত করবেন, ইবাদাত করা শুরু করবেন.. তখন বিভিন্ন ভাবে শয়তান বাধা দিবে। শয়তান কখনওই চায়না আপনি ভালো কিছু করেন... দেখুন আল্লাহ কি বলছে,
"এইযে শয়তানরা রয়েছে, এরা নিজেদের বন্ধুদের ব্যাপারে ভীতি প্রদর্শন করে। অতএব তোমরা তাদের ভয় করো না; আমাকে ভয় কর!! যদি তোমরা ঈমানদার হয়ে থাক.."(আলে-ইমরানঃ১৭৫)
.
এজন্য আল্লাহ আমাদের সাথে আছে, আপনি বিশ্বাস রাখুন 'শয়তান আপনার কিছুই করতে পারবেনা' যদি আপনি আল্লাহর ওপর আস্থা রেখে ইবাদাতে শুরু করে দেন। উপরন্তু আপনি দুয়া করলে যাদু-টোনা আর সব শয়তানী থেকে বাচতে তাহাজ্জুদ আপনার জন্য শিল্ড(ঢাল) হিসেবে কাজ করবে। গুনাহ থেকে বাচা সহজ হয়ে যাবে। পদেপদে আল্লাহর সাহায্য পাবেন।
.
[[গ.]]
তাহাজ্জুদের ফজিলত অনেক.... কোরআনে বেশ কয়েকবার আছে এর কথা।
হাদিসেতো বহু যায়গায় আছে! যেমন সহীহ মুসলিমের এক হাদিস আছে এরকম-
"রাসুল সা. বলেন, ফরজ নামাজের পর আল্লাহর কাছে সবচে ফযিলতপুর্ন নামাজ হচ্ছে মাঝরাতের তাহাজ্জুদ নামাজ!"
.
আর বুখারির হাদিসটা তো প্রসিদ্ধ, সবাই জানেন! শেষ রাতে আল্লাহ আমাদের ডাকতে থাকেন, কার সুস্থতা দরকার, কার রিযিক দরকার, কার ক্ষমা দরকার আমার কাছে চাও, আমি দিবো।
.
তাহাজ্জুদ প্রসংগে আমার সবচে পছন্দের হাদীসটি সুনানে তিরমিযীতে আছে, অর্থ এরকম-
"রাসুল সা. বলেন, তোমরা তাহাজ্জুদ পড়াকে আবশ্যক করে নাও, কেননা এটা তোমাদের পুর্ববর্তী সালেহীন(নেককার) দের কাজ, এবং তাদের বৈশিষ্ট্য। এটা তোমাদের প্রভুর নৈকট্য লাভের বিশেষ মাধ্যম, আগের গুনাহের কাফফারা, পরের গুনাহ প্রতিরোধকারী..""
তাবারানী শরিফে আরেকটু বেশি আছে, "...এবং শরীর থেকে রোগব্যাধি দূরকারী!"
.
ইশরে! কত্ত উপকার... তাও আমরা তাহাজ্জুদ পড়িনা। যদি শেষ রাতে জাগনা পাওয়ার সম্ভাবনা না থাকে তখন কি করবেন জানেন?
রাতে যখনই ঘুমাতে যাচ্ছেন, তাহাজ্জুদের নিয়তে কয়েক রাকাত পড়ে দুয়া-টুয়া করে ঘুমান। শেষরাতে ওঠার মত অত সওয়াব না পেলেও কিছুনাকিছু তো অবশ্যই পাবেন...
তাইনা?
.
[[ঘ ]]
উপদেশ ম্যালা হইছে, এবার আমার ছোটবেলার গল্প শুনেন। হুহ! :D সেসময় আমি ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এর ৮নং রোডের মাদরাসাটার মক্তবে পড়ি। আব্বু ডিজিএফআই-তে চাকুরীরত, আমার বয়স ৭ কি ৮... । মাদরাসায় থাকতাম, রাত্রে বেলা মাঝেমাঝে জাগা পেলে বিশাল ঘরের এক কোনায় দেখতাম, 'আবু হানিফা' নামে হেফজখানার এক ভাই নামাজ পড়ছে।
একদিন আমি আর আরেকজন পিচ্চি বললাম, ভাইয়া! আজ রাত্রে উঠলে আমাদের ডাক দিবেন, আমরাও নামাজ পড়বো। :)
.
যথারীতি উনি রাতে উঠে আমাদের ডাকলেন, আমি বেশ ভীতু ছিলাম সেই জামানায়। আমরা দুজন মিলে অযু করে বারান্দায় দাড়ালাম নামাজ পড়তে, জীবনের প্রথম তাহাজ্জুদ!
তাকবীর দিয়ে কেবল সুরা পড়তে শুরু করেছি..
হায়! (রাসেল ভাই.. এরপর যা হলো তারজন্য আমি কখনওই প্রস্তুত ছিলাম না!) :P
শুনলাম বিলাই কাঁদছে! করুণ কান্না! ওরেব্বাপ্রে! আমার পাশের জন সাথেসাথে খিচ্চা দৌড়... আমি অনেক কষ্টে নামাজ পড়ছিলাম, কিন্তু বিলাই বাবাজি দেখি আরো জোরে জোরে কিরাম কিরাম শব্দে কাঁদছে, শুনতে প্রায় মানুষের মত!! এবার মনে হলো আমার পেছনে কে যেন হাড্ডি চিবাচ্ছে! :o
ওইত্তেরি... দে দৌড়... ঘরে গিয়ে হাপাতে লাগলাম.. কি হলো এইটা? ঘরে ঢুকে কোনোমতে দুইরাকাত নামাজ পড়েই ঘুম দিলাম...
ওই মাদরাসায় পড়াবস্থায় তারপর আর কখনো রাতে ওঠার সাহস হয়নি... :(
.
.
n.b এখন আর ভীতু নাই, এখন আমি অনেক সাহসী! আমার জন্য নির্দ্বিধায় বউ খুজতে পারেন।
.
- ২২ অক্টোবর ২০১৬
শুরুটা ছোটবেলার গল্প দিয়ে করার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু সিরিয়াস বিষয় এজন্য সেটা বাদ দিচ্ছি।
বছর দুয়েক আগের কথা, আমার এক নিকটাত্মীয়া দ্বীন পালনে কেবল অভ্যস্ত হয়ে উঠছে। সেই সুবাদে শরিয়া সংক্রান্ত টুকটাক বিষয়াদি আমাকে জিজ্ঞেস করে। সেরকম একদিন ওর রুমে বসে আছি, বলতে শুরু করলো-
"আচ্ছা মাহমুদ! রাতে তাহাজ্জুদ পড়তে উঠলে নাকি জ্বিন-টিন ভয় দেখায়?"
- :? পাইলেন কই এই খবর?
-- আমার মেসের এক বান্ধবী বলছে...!
.
শুনে কয়েক সেকেন্ড চুপ থাকলাম.. তারপর বললাম- "এটা একটা শয়তানী! যেন মানুষ তাহাজ্জুদ পড়তে না উঠে!!"
.
যাহোক! আলহামদুলিল্লাহ্ সে ওই ধোকায় বোকা হয়নি, এখনও সে রাতের নামাজ পড়ে। আজ আমাকে মেসেজ দিয়েছে, গতরাতে তাহাজ্জুদ মিস গেছে তাই ওর খুব মনখারাপ!!
.
[[খ.]]
আসলে যখন আপনি আল্লাহর ইবাদাত করবেন, ইবাদাত করা শুরু করবেন.. তখন বিভিন্ন ভাবে শয়তান বাধা দিবে। শয়তান কখনওই চায়না আপনি ভালো কিছু করেন... দেখুন আল্লাহ কি বলছে,
"এইযে শয়তানরা রয়েছে, এরা নিজেদের বন্ধুদের ব্যাপারে ভীতি প্রদর্শন করে। অতএব তোমরা তাদের ভয় করো না; আমাকে ভয় কর!! যদি তোমরা ঈমানদার হয়ে থাক.."(আলে-ইমরানঃ১৭৫)
.
এজন্য আল্লাহ আমাদের সাথে আছে, আপনি বিশ্বাস রাখুন 'শয়তান আপনার কিছুই করতে পারবেনা' যদি আপনি আল্লাহর ওপর আস্থা রেখে ইবাদাতে শুরু করে দেন। উপরন্তু আপনি দুয়া করলে যাদু-টোনা আর সব শয়তানী থেকে বাচতে তাহাজ্জুদ আপনার জন্য শিল্ড(ঢাল) হিসেবে কাজ করবে। গুনাহ থেকে বাচা সহজ হয়ে যাবে। পদেপদে আল্লাহর সাহায্য পাবেন।
.
[[গ.]]
তাহাজ্জুদের ফজিলত অনেক.... কোরআনে বেশ কয়েকবার আছে এর কথা।
হাদিসেতো বহু যায়গায় আছে! যেমন সহীহ মুসলিমের এক হাদিস আছে এরকম-
"রাসুল সা. বলেন, ফরজ নামাজের পর আল্লাহর কাছে সবচে ফযিলতপুর্ন নামাজ হচ্ছে মাঝরাতের তাহাজ্জুদ নামাজ!"
.
আর বুখারির হাদিসটা তো প্রসিদ্ধ, সবাই জানেন! শেষ রাতে আল্লাহ আমাদের ডাকতে থাকেন, কার সুস্থতা দরকার, কার রিযিক দরকার, কার ক্ষমা দরকার আমার কাছে চাও, আমি দিবো।
.
তাহাজ্জুদ প্রসংগে আমার সবচে পছন্দের হাদীসটি সুনানে তিরমিযীতে আছে, অর্থ এরকম-
"রাসুল সা. বলেন, তোমরা তাহাজ্জুদ পড়াকে আবশ্যক করে নাও, কেননা এটা তোমাদের পুর্ববর্তী সালেহীন(নেককার) দের কাজ, এবং তাদের বৈশিষ্ট্য। এটা তোমাদের প্রভুর নৈকট্য লাভের বিশেষ মাধ্যম, আগের গুনাহের কাফফারা, পরের গুনাহ প্রতিরোধকারী..""
তাবারানী শরিফে আরেকটু বেশি আছে, "...এবং শরীর থেকে রোগব্যাধি দূরকারী!"
.
ইশরে! কত্ত উপকার... তাও আমরা তাহাজ্জুদ পড়িনা। যদি শেষ রাতে জাগনা পাওয়ার সম্ভাবনা না থাকে তখন কি করবেন জানেন?
রাতে যখনই ঘুমাতে যাচ্ছেন, তাহাজ্জুদের নিয়তে কয়েক রাকাত পড়ে দুয়া-টুয়া করে ঘুমান। শেষরাতে ওঠার মত অত সওয়াব না পেলেও কিছুনাকিছু তো অবশ্যই পাবেন...
তাইনা?
.
[[ঘ ]]
উপদেশ ম্যালা হইছে, এবার আমার ছোটবেলার গল্প শুনেন। হুহ! :D সেসময় আমি ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এর ৮নং রোডের মাদরাসাটার মক্তবে পড়ি। আব্বু ডিজিএফআই-তে চাকুরীরত, আমার বয়স ৭ কি ৮... । মাদরাসায় থাকতাম, রাত্রে বেলা মাঝেমাঝে জাগা পেলে বিশাল ঘরের এক কোনায় দেখতাম, 'আবু হানিফা' নামে হেফজখানার এক ভাই নামাজ পড়ছে।
একদিন আমি আর আরেকজন পিচ্চি বললাম, ভাইয়া! আজ রাত্রে উঠলে আমাদের ডাক দিবেন, আমরাও নামাজ পড়বো। :)
.
যথারীতি উনি রাতে উঠে আমাদের ডাকলেন, আমি বেশ ভীতু ছিলাম সেই জামানায়। আমরা দুজন মিলে অযু করে বারান্দায় দাড়ালাম নামাজ পড়তে, জীবনের প্রথম তাহাজ্জুদ!
তাকবীর দিয়ে কেবল সুরা পড়তে শুরু করেছি..
হায়! (রাসেল ভাই.. এরপর যা হলো তারজন্য আমি কখনওই প্রস্তুত ছিলাম না!) :P
শুনলাম বিলাই কাঁদছে! করুণ কান্না! ওরেব্বাপ্রে! আমার পাশের জন সাথেসাথে খিচ্চা দৌড়... আমি অনেক কষ্টে নামাজ পড়ছিলাম, কিন্তু বিলাই বাবাজি দেখি আরো জোরে জোরে কিরাম কিরাম শব্দে কাঁদছে, শুনতে প্রায় মানুষের মত!! এবার মনে হলো আমার পেছনে কে যেন হাড্ডি চিবাচ্ছে! :o
ওইত্তেরি... দে দৌড়... ঘরে গিয়ে হাপাতে লাগলাম.. কি হলো এইটা? ঘরে ঢুকে কোনোমতে দুইরাকাত নামাজ পড়েই ঘুম দিলাম...
ওই মাদরাসায় পড়াবস্থায় তারপর আর কখনো রাতে ওঠার সাহস হয়নি... :(
.
.
n.b এখন আর ভীতু নাই, এখন আমি অনেক সাহসী! আমার জন্য নির্দ্বিধায় বউ খুজতে পারেন।
.
- ২২ অক্টোবর ২০১৬
আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুক ভাই
ReplyDelete