May 2, 2022

ঈদের আনন্দ এবং কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্য

[এক]

কেউ কেউ বলছেন, বিশ্বের বিভিন্ন যায়গায় মুসলিমরা কষ্টে আছে, মাযলুম হচ্ছে, তাই ঈদে করা যাবে না। এটা আসলে ভালো কথা না। এরকম বলা উচিত না।

এখানে কয়েকটা বিষয় বুঝতে হবে ভাই,

১। এই ঈদ আমাদের জন্য নিছক দুনিয়াবি উৎসব না। ঈদের দিন আল্লাহ তার বান্দাদের ক্ষমা করে দেন। এটা দ্বীনি বিবেচনাতেও আনন্দের।

২। ঈদের দিনে আনন্দ করার বিষয়টা আমাদের জন্য আল্লাহর দান। যেরকম সফরের মাঝে নামাজ সংক্ষেপ করা। আগে মুসলিমরা ভালো ছিল, তাই ঈদ করেছে। এখন কষ্টে আছে, তাই করা যাবে না। এটা বাতিল যুক্তি। এই যুক্তি মানলে মানুষের জন্য মুসাফিরের বিধান থাকবে না, কারন সফরে আগের যুগের দশভাগে একভাগ কষ্ট তো আর নাই। আমরা ২ঘন্টায় ৩দিনের দুরত্ব সফর করতে পারি।

৩। ঈদ ইসলামের নিদর্শন। নবিজি অমুসলিমদের উৎসব করতে দেখেও আমাদের দুই ঈদের কথা বলেছেন। ঈদের মত আল্লাহর বিশেষ দান গ্রহণ না করা দ্বীনের শিয়ার অগ্রাহ্য করার মত।
পাশাপাশি যেকোনো সম্প্রদায়ের যখন উৎসব - আয়োজন হয়, তখন অন্যরা তাদের প্রতি মনযোগী হয়। এই বিবেচনাতেও গুরুত্বপূর্ণ।

৪। মুসলমানদের দুরাবস্থা আজকে নতুন না। নবীজির যুগেও মুসলিমরা কষ্ট করেছে। এজন্য ঈদ বাতিল করতে হলে তো নবিজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গোটা দুনিয়ায় দ্বীন কায়েম পর্যন্ত ঈদ ই করতেন না সেভাবে। তাইনা?

৫। ধরে নিচ্ছি যায়েদ আরাকান বা সিরিয়ার বাসিন্দা। রিফিউজি ক্যাম্পে দাঁড়িয়ে আছে। তো?
আপনি কি বলতে চান তাকে বছরের অন্য সবদিনের মত ঈদের দিনও একইভাবে পার করতে হবে?

ভাই! আর কত বলব?
কিছু লেখার আগে একটু বাস্তবতা ভাবতে পারেন না? ঠিক না ভুল লেখছেন একটু জেনে নিতে পারেন না?

[খ]
কেউ কেউ বলছে ঈদে নতুন কাপড় নেয়া, উপহার দেয়া, ভালোমন্দ খাবার বাজার করা বিদয়াত বা নাজায়েজ। যারা এরকম বলে, এদের না ইসলামের বুঝ আছে, আর না মুসলিমদের সংস্কৃতি ও ইতিহাস সম্পর্কে ধারণা আছে। এদেরকে শরিয়ার বিধান নিয়ে মতামত দেয়ার জন্য বিশেষজ্ঞ বিবেচনা করবেন না।
ঈদের বিশেষ কাপড় পরা, বিশেষ খাবার খাওয়া, প্রয়োজনে বিশেষ কেনাকাটা করা ইসলামের শুরু থেকেই মুসলিমরা করে আসছে।
সাহাবা তাবেয়িদের সময়ে বিভিন্ন যাহেদ (পরহেজগার) ব্যক্তিদের ঘটনা দেখা যায় যে উনারা ঈদে নতুন কিছু কিনেননি। এর থেকে এটাই প্রমাণ হয় যে সবাই কিনতো, উনারা বুজুর্গ মানুষ দেখে এসব থেকে বেচে থাকতেন। নইলে আলাদাভাবে এসব উল্লেখ করার কিছু ছিল না।
বিজ্ঞ আলেমরা এসব ঘটনা বর্ণনা করেন আমাদেরকে অতিরিক্ত খরচ আর অপচয় থেকে বাচার উপদেশ দিতে। হারাম বা বেদয়াতের দলিল হিসেবে না।

আহা! প্রতি বছরই মনে হয় মানুষ ফেসবুকে নতুন নতুন ফিতনা উৎপাদন করছে। ভালো লাগে না আর।

শেষকথাঃ ঈদ আমাদের বড় উৎসব। ঈদে আনন্দ করুন। উপহার দিন। মানুষদের দাওয়াত করে খাওয়ান। গরিবদের দান করুন। অপচয় না করে, সাধ্যের মধ্যে ভালো বাজার করুন। এটা মুসলিমদের উৎসব। হালালভাবে উদযাপন করুন।
Share:

0 comments:

Post a Comment