জিন পুজারিদের কাছে মানুষ কেন যায়?
১. সুস্থতা লাভের আশায়
২. সন্তানকে বাধ্য করার জন্য
৩. সন্তান লাভের জন্য
৪. চাকুরীর - আয়রোজগারের রাস্তা খোলার জন্য
৫. জাদু করে অন্যকে অসুস্থ/বশ/বিয়েবন্ধ/পাগল করার জন্য
কিভাবে জিনদের সাহায্য প্রার্থনা করা হয় জানেন কী?
১. শয়তানের নামে কোরবানি করা হয়, আগুন/ধুয়া জালানো হয়
২. নিয়মিত কয়েকমাস কয়েক শতবার শিরকি বাক্য লেখা বা উচ্চারণ করা হয়
৩. জ্যেতিশশাস্ত্রের নিয়ম মেনে নির্দিষ্ট তারা বা চাঁদ ওঠার দিন নির্দিষ্ট কাজ করতে হয়
৪. অন্ধকারে বা বদ্ধ রুমে অযু-নামাজ-পাকসাফ-হালাল-হারামের পরোয়া না করে ধ্যান করতে হয়
৫. আল্লাহর হালালকৃত খাবার থেকে বিরত থাকতে হয়, হারামকৃত খাবার খেতে হয়, কাজ করতে হয়
.
এসবের পর জিন-শয়তানরা সাহায্য করে। জাদুকরদের সাথে চুক্তিতে আসে। তাদের নিয়মিত সাহায্য পেতে নিয়মিত তাদের কথাবার্তা শুনতে হয়। তাদের নির্দেশগুলো থাকে এমন-
* ওপরে বলা কাজগুলো এবং
১. কোরআন অবমাননা
২. যিনা, সমকা মীতা, অযাচার
৩. নিজের সন্তানকে হ*ত্যা করা
৪. জুনুবি অবস্থায় জামাতের প্রথম কাতারে নামাজ পড়া
৫. শয়তানের নামে খাদ্য, পানিয়, ফল, ইত্যাদি বহুকিছু উৎসর্গ করা এমনকি নরবলি দেয়া
..
এসব কাজের মাধ্যমে জিন-শয়তানকে খুশি করা হয়। ফলে বড় শয়তান হয়তো নিজে সহযোগিতা করা, নইলে অধিনস্ত ছোট কোনো জিনকে পাঠায় কাজ করার জন্য। কখনও জাদুকরের প্রয়োজনীয় তথ্য এনে দেয়, কখনও জাদুকরের পক্ষ থেকে জাদু করে দেয়। কখনও অন্য দুর্বল জিনদের ধরে এনে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে জাদুকরের কাজ করতে বাধ্য করে।
জাদুকর-কবিরাজ যদি কোনো চুক্তির লঙ্ঘন করে, তখন জিন তার বা তার পরিবারের ক্ষতি করে। এমনকি কখনও কখনও কবিরাজ পটল তোলে।
--
গণক হল যারা জিনদের মাধ্যমে বা তারকা গুনে বা হস্তরেখা দেখে অদৃশ্যের/ভবিষ্যতের/গোপন বিষয়ের সংবাদ দেয়। গণক ও জাদুকরের পার্থক্য হচ্ছে, সাধারণত সব জাদুকরই গণকদের কাজগুলো বুঝে, গণনা করে, তারা দেখে, তবে সব গণকরা জাদুকরদের সব কাজ বুঝে না বা পারে না।
---
অতিরিক্ত সংযুক্তি -
১. সুলাইমান আলাইহিস সালাম জিনদের সাহায্য নিতেন না। জিনরা উনার কথা মানতে বাধ্য ছিল। এটা উনার বিশেষত্ব, যা অন্য নবীদেরও ছিল না। (নবীজি সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জিন বেঁধে রাখার ঘটনা দ্রষ্টব্য) কেউ যদি বলে এসব জাদুকরদের বিষয় আর সুলাইমান আলাইহিস সালামের বিষয় এক, তবে সে ইহুদিদের ভ্রান্ত আকিদাই মুসলিমদের মাঝে প্রচার করছে। যে আকিদার খণ্ডন আল্লাহ তা'আলা সুরা বাকারার ১০২ আয়াতে করেছেন। (তাফসির দ্রষ্টব্য)
২. জিনদের সাহায্য নেয়া, জিনদের দ্বারা উপকৃত হওয়া আর অন্যান্য মাখলুকদের সাহায্য নেয়ার মাঝে বহুত তফাত। আমরা জিন-শয়তানদের উপসনা করার সর্বাধিক উদাহরণের মাঝে (হিন্দুস্তানে) বসবাস করেও যদি এই বিষয় না বুঝি তবে আমাদের চেয়ে হতভাগা আর কে আছে? কোরআনে (সুরা আনআমে) জিনদের অনুসরণ করার দ্বারা যারা উপকৃত হয় তাদের চিরকালে জাহান্নামে থাকার করা এসেছে। অন্যদের বেলায় আসেনি।
৩. জিনদেরকে মানুষ যে স্তরের সাহায্যকারী ভাবে, আর জিনদের যে পরিমাণ উপাসনা করা হয়, অন্য কোনো মাখলুকের করা হয় না। অন্য কোনো মাখলুকের কাছে এই পরিমাণ প্রার্থনা করা হয়না।
৪. আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা আমাদেরকে বারবার সতর্ক করেছেন, শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করার ব্যাপারে। শয়তান একসাথেই বিভ্রান্ত করে না, ধাপে ধাপে করে।
৫. নিজের ইজ্জত রক্ষার চেয়ে উম্মতের ইমান রক্ষা জরুরি। আমার ছাড়মূলক মন্তব্যের জেরে যেন কেউ ঈমানহারা না হয়, জাদুকরের অনুসারী না হয়, অন্য মুসলিমদের জাদু করে জীবন নষ্ট করার সুযোগ না পায়, মানুষের অর্থ-সম্পদ, জীবন ও ইমান যেন নিরাপদ থাকে এটা খেয়াল রাখা জরুরি।
.....
"আমরা আল্লাহরই ইবাদাত করি, আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাই" দিন-রাতে অসংখ্যবার এই কথা বলা মুসলিমরা যেন জিনদের ইবাদাতে লিপ্ত না হয়, জিনদের সাহায্য না চায়, আজীবন এই দোয়াই করব। আমিন।
আল্লাহ আমাদের বুঝার তাওফিক দিক। মানার তাওফিক দিক।
0 comments:
Post a Comment