শয়তান আর খারাপ জ্বিন কখন আপনাকে সহজে আক্রমণ করতে পারে? (সাথে এডিকশনের ৩য় স্তর সম্পর্কে কিছু কথা)
------
[ক]
নিজের চিন্তার সাথে বড়দের চিন্তার মিল খুঁজে পেলে খুবই ভালো লাগে। ব্যাপারটা আমি বেশ আগেই চিন্তা করেছিলাম। আমার পর্যবেক্ষণ এবং ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাও এমনই সাক্ষ্য দিচ্ছিলো। এর ওপর আল্লাহর রহমতে সেদিন মিসরের এক আলেমের লেখা পড়ছিলাম, সেখানে দেখলাম উনিও এমনটাই বলেছেন।
তো শুরুতে একটা গল্প বলি। ওই শায়েখই ঘটনা শোনাচ্ছিলেন... উনার কাছে এক মহিলাকে তাঁর স্বামী নিয়ে এসেছে। ওই মহিলাকে জ্বিন সমস্যা করছিলো, উনি কোরআন এর আয়াত তিলাওয়াত করলে দুষ্ট জ্বিনটা ওই মহিলার ওপর আসে। তখন উনি বললেন যে, তুমি এই মহিলাকে আর কষ্ট দিওনা, একে ছেড়ে চলে যাও। জ্বিন বলছে যাবোনা! :/
শায়খ বললেন, তাহলে কোরআনের আয়াত দ্বারা তোকে জ্বালিয়ে দিব!
- আচ্ছা চলে যাবো, তবে আপনার ভেতর ঢুঁকবো!!
-- আচ্ছা পারলে ঢোঁক!
এবার জ্বিন চলে গেলো, একটুপর আবার আসলো, এবার কাঁদতে লাগলো!
শায়েখ বললেন, কী হয়েছে?
- আমি আপনার ভেতর ঢুকতে পারবো না
-- কেন?
- কারণ আপনি সকালে "লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা-শারীকালাহ, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হ্ামদ, ওয়াহুওয়া 'আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বদীর" এটা ১০০বার পড়েছেন তাই!
.
শায়খ ঘটনা বর্ণনা করার সময় বলছিলেন, আমার তখন রাসূল সা. এর হাদীস মনে পড়লো। রাসূল সা. সত্যই বলেছেন- যে সকালে 'ওই' দু'আ ১০০বার পড়বে সে ১০টি গোলাম আযাদ করার ফযিলত পাবে, ১০০টি সওয়াব পাবে এবং ১০০টি গুনাহ মাফ হয়ে যাবে! আর সারাদিন সে শয়তান থেকে হিফাযতে থাকবে। আর ওইদিন তাঁর চেয়ে ফযিলতপ্রাপ্ত কেউ হবেনা, তবে কেউ যদি তাঁর চেয়ে বেশি পড়ে সে ব্যতীত!
.
[খ]
তো আমি যে বিষয়ে চিন্তার মিলের কথা বলছিলাম, খারাপ জ্বিন সর্বাবস্থায় আপনার ওপর আক্রমণ করতে পারেনা। শয়তানের ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার। সবসময় আপনাকে বশ করতে পারেনা। তবে আক্রান্ত হয়ে গেলে হইছে কাম...। আমার কথা বাদ দেই। শায়খ বলছিলেন খবিস জ্বিন ৪ অবস্থায় মানুষের ভেতর ঢুকতে পারে।
১. খুব ভীত অবস্থায় ২. খুব রাগান্বিত অবস্থায় ৩. খুব উদাসীন অবস্থায় ৪. কুপ্রবৃত্তির গোলামী করা অবস্থায় (মানে যখন কোনো খারাপ কাজ করছে)
তো এসব হচ্ছে খারাপ জ্বিন মানুষের ওপর আসর করার অবস্থা। এ অবস্থায় নাকি জ্বিনের অনেক কষ্ট হয়, বিশেষত কেউ যদি দু'আ কালাম পড়ে, আর অপরদিকে জ্বিনকে যদি কোনো যাদুকর জোর করে পাঠায় তাহলে তো বেচারা জ্বিনের জান খারাপ। এদিকেও বিপদ, ওদিকেও বিপদ। যাহোক টপিক ছেড়ে আমরা অনেক দূরে এসেছি।
সারকথা হচ্ছে, এসব থেকে আমরা বুঝতে পারছি হাদিসে বর্ণিত সকালসন্ধ্যার দু'আগুলো পড়ার অভ্যাস করা উচিৎ আর গাফেল না হওয়া উচিৎ... এতে খারাপরা সুযোগ পেয়ে যায়।
.
[গ]
এডিকশনের তৃতীয় স্তরের ব্যাপারে আমাদের কিছু কথা বাকি ছিলো সেদিন। তৃতীয় স্তরটা এরকম, আপনি যখন বিভিন্নভাবে গুনাহকে এভোইড করতে অভ্যস্ত হয়ে যান, তখন শয়তান আপনার দূর্বল সময়ের অপেক্ষায় থাকে।
যেমন, একজন তাঁর অভিজ্ঞতা বর্ণনা করছিলো। বেচারা পর্ণ স্টোরি এডিক্ট। আল্লাহ তাঁকে হিফাজত করুক, হিদায়াত দিক। সে সবসময় চেষ্টা করে বেচে থাকতে। গত পর্বে বলা আমার ওই টিপসগুলোও নাকি ফলো করতে চেষ্টা করে। তো কখনো কখনো তাও হয়না। যেমন, সে ভালো কোনো বই বা লেখা পড়ছে, কখনো মাত্র একটা 'ইয়ের' ইঙ্গিতসূচক শব্দও নাকি তাঁকে আকড়ে ধরে, মাথা থেকে সরাতেই পারেনা। শেষে শয়তানের কাছে হার মেনে কখনো বাজে ছবি দেখতে বসে, কখনো খারাপ গল্প... কখনো নাকি সকালে ঘুম থেকে উঠছে "হালকা ঘুম হালকা জাগ্রত এমন অবস্থায় এসব ধোকা ওর মাথায় আসে", আর তাড়াতে পারেনা। শেষে...
আমি উনাকে তেমন কোনো সল্যুশন দিতে পারিনি, বললাম জানিনা ভাই কি করা উচিৎ :(
.
এসএসসিতে আমার ব্যাচমেট ছিল একটা ছেলে, আমরা একসাথে ফিজিক্স কেমিস্ট্রি প্রাইভেট পরতাম। সে আমার সাথে অনেক কিছু শেয়ার করতো, আল্লাহ তাকেও হিফাজত করুক, হিদায়াতের পথে রাখুক। সে নাকি দিনের বেলায় বিছানায় শুতে পারেনা। বিছানায় শুইলেই আজেবাজে চিন্তা মাথায় আসে। একেও কোনো সল্যুশন দিতে পারিনি। তবুও বলছিলাম, মাথাকে ফাঁকা রাখা যাবেনা। চেষ্টা করতে হবে কিছুনা কিছুতে ব্যস্ত থাকতে।
সত্যি বলতে আমার আসলেই তেমন কোনো সল্যুশন জানা ছিলনা, এখনও নাই। তবে কেউ জিজ্ঞেস করলে হয়তো উপরের ওই হাদিসের ওপর আমল করতে আর দু'আ করতে বলবো। আর কী?
আপনাদের কোনো সমাধান জানা থাকলে শেয়ার করবেন প্লিজ...
------
[ক]
নিজের চিন্তার সাথে বড়দের চিন্তার মিল খুঁজে পেলে খুবই ভালো লাগে। ব্যাপারটা আমি বেশ আগেই চিন্তা করেছিলাম। আমার পর্যবেক্ষণ এবং ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাও এমনই সাক্ষ্য দিচ্ছিলো। এর ওপর আল্লাহর রহমতে সেদিন মিসরের এক আলেমের লেখা পড়ছিলাম, সেখানে দেখলাম উনিও এমনটাই বলেছেন।
তো শুরুতে একটা গল্প বলি। ওই শায়েখই ঘটনা শোনাচ্ছিলেন... উনার কাছে এক মহিলাকে তাঁর স্বামী নিয়ে এসেছে। ওই মহিলাকে জ্বিন সমস্যা করছিলো, উনি কোরআন এর আয়াত তিলাওয়াত করলে দুষ্ট জ্বিনটা ওই মহিলার ওপর আসে। তখন উনি বললেন যে, তুমি এই মহিলাকে আর কষ্ট দিওনা, একে ছেড়ে চলে যাও। জ্বিন বলছে যাবোনা! :/
শায়খ বললেন, তাহলে কোরআনের আয়াত দ্বারা তোকে জ্বালিয়ে দিব!
- আচ্ছা চলে যাবো, তবে আপনার ভেতর ঢুঁকবো!!
-- আচ্ছা পারলে ঢোঁক!
এবার জ্বিন চলে গেলো, একটুপর আবার আসলো, এবার কাঁদতে লাগলো!
শায়েখ বললেন, কী হয়েছে?
- আমি আপনার ভেতর ঢুকতে পারবো না
-- কেন?
- কারণ আপনি সকালে "লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা-শারীকালাহ, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হ্ামদ, ওয়াহুওয়া 'আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বদীর" এটা ১০০বার পড়েছেন তাই!
.
শায়খ ঘটনা বর্ণনা করার সময় বলছিলেন, আমার তখন রাসূল সা. এর হাদীস মনে পড়লো। রাসূল সা. সত্যই বলেছেন- যে সকালে 'ওই' দু'আ ১০০বার পড়বে সে ১০টি গোলাম আযাদ করার ফযিলত পাবে, ১০০টি সওয়াব পাবে এবং ১০০টি গুনাহ মাফ হয়ে যাবে! আর সারাদিন সে শয়তান থেকে হিফাযতে থাকবে। আর ওইদিন তাঁর চেয়ে ফযিলতপ্রাপ্ত কেউ হবেনা, তবে কেউ যদি তাঁর চেয়ে বেশি পড়ে সে ব্যতীত!
.
[খ]
তো আমি যে বিষয়ে চিন্তার মিলের কথা বলছিলাম, খারাপ জ্বিন সর্বাবস্থায় আপনার ওপর আক্রমণ করতে পারেনা। শয়তানের ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার। সবসময় আপনাকে বশ করতে পারেনা। তবে আক্রান্ত হয়ে গেলে হইছে কাম...। আমার কথা বাদ দেই। শায়খ বলছিলেন খবিস জ্বিন ৪ অবস্থায় মানুষের ভেতর ঢুকতে পারে।
১. খুব ভীত অবস্থায় ২. খুব রাগান্বিত অবস্থায় ৩. খুব উদাসীন অবস্থায় ৪. কুপ্রবৃত্তির গোলামী করা অবস্থায় (মানে যখন কোনো খারাপ কাজ করছে)
তো এসব হচ্ছে খারাপ জ্বিন মানুষের ওপর আসর করার অবস্থা। এ অবস্থায় নাকি জ্বিনের অনেক কষ্ট হয়, বিশেষত কেউ যদি দু'আ কালাম পড়ে, আর অপরদিকে জ্বিনকে যদি কোনো যাদুকর জোর করে পাঠায় তাহলে তো বেচারা জ্বিনের জান খারাপ। এদিকেও বিপদ, ওদিকেও বিপদ। যাহোক টপিক ছেড়ে আমরা অনেক দূরে এসেছি।
সারকথা হচ্ছে, এসব থেকে আমরা বুঝতে পারছি হাদিসে বর্ণিত সকালসন্ধ্যার দু'আগুলো পড়ার অভ্যাস করা উচিৎ আর গাফেল না হওয়া উচিৎ... এতে খারাপরা সুযোগ পেয়ে যায়।
.
[গ]
এডিকশনের তৃতীয় স্তরের ব্যাপারে আমাদের কিছু কথা বাকি ছিলো সেদিন। তৃতীয় স্তরটা এরকম, আপনি যখন বিভিন্নভাবে গুনাহকে এভোইড করতে অভ্যস্ত হয়ে যান, তখন শয়তান আপনার দূর্বল সময়ের অপেক্ষায় থাকে।
যেমন, একজন তাঁর অভিজ্ঞতা বর্ণনা করছিলো। বেচারা পর্ণ স্টোরি এডিক্ট। আল্লাহ তাঁকে হিফাজত করুক, হিদায়াত দিক। সে সবসময় চেষ্টা করে বেচে থাকতে। গত পর্বে বলা আমার ওই টিপসগুলোও নাকি ফলো করতে চেষ্টা করে। তো কখনো কখনো তাও হয়না। যেমন, সে ভালো কোনো বই বা লেখা পড়ছে, কখনো মাত্র একটা 'ইয়ের' ইঙ্গিতসূচক শব্দও নাকি তাঁকে আকড়ে ধরে, মাথা থেকে সরাতেই পারেনা। শেষে শয়তানের কাছে হার মেনে কখনো বাজে ছবি দেখতে বসে, কখনো খারাপ গল্প... কখনো নাকি সকালে ঘুম থেকে উঠছে "হালকা ঘুম হালকা জাগ্রত এমন অবস্থায় এসব ধোকা ওর মাথায় আসে", আর তাড়াতে পারেনা। শেষে...
আমি উনাকে তেমন কোনো সল্যুশন দিতে পারিনি, বললাম জানিনা ভাই কি করা উচিৎ :(
.
এসএসসিতে আমার ব্যাচমেট ছিল একটা ছেলে, আমরা একসাথে ফিজিক্স কেমিস্ট্রি প্রাইভেট পরতাম। সে আমার সাথে অনেক কিছু শেয়ার করতো, আল্লাহ তাকেও হিফাজত করুক, হিদায়াতের পথে রাখুক। সে নাকি দিনের বেলায় বিছানায় শুতে পারেনা। বিছানায় শুইলেই আজেবাজে চিন্তা মাথায় আসে। একেও কোনো সল্যুশন দিতে পারিনি। তবুও বলছিলাম, মাথাকে ফাঁকা রাখা যাবেনা। চেষ্টা করতে হবে কিছুনা কিছুতে ব্যস্ত থাকতে।
সত্যি বলতে আমার আসলেই তেমন কোনো সল্যুশন জানা ছিলনা, এখনও নাই। তবে কেউ জিজ্ঞেস করলে হয়তো উপরের ওই হাদিসের ওপর আমল করতে আর দু'আ করতে বলবো। আর কী?
আপনাদের কোনো সমাধান জানা থাকলে শেয়ার করবেন প্লিজ...
আলহামদুলিল্লাহ
ReplyDeleteআমি আপনাদের Ruqyah Support BD কর্তৃক বানানো অ্যাপসটা দেখে আমল করি। সকাল সন্ধা ৩ তাসবীহ পড়ি। কুরআন তেলাওয়াত করি সকালে সূরা ইয়াসীন আর রাতে সূরা মূলক ও ওয়াকেয়াহ। আমি ভাইদেরকে বলব হতাশ হবেন না। নামাজ পড়ুন, তওবা করতেই থাকুন। আর ’মুক্ত বাতাসের খোঁজে’ এ বইটা পড়ুন। ইনশাআল্লাহ সম্ভব হবে।
ReplyDelete