December 2, 2016

গর্ভের সন্তানের ব্যাপারে আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেনা; আসলে কি তাই?

বিয়ে নিয়ে ইয়ে প্রশ্ন করতে করতে গুরুজ্বীকে অতিষ্ঠ করে ফেলেছি, বাধ্য হয়ে বলে ফেললেন- এখনি বিয়া করবি তুই? এত কিছু জেনে লাভ কী?বুঝলাম গুরুজী যথেষ্ট বিরক্ত, আর কথা বাড়ানো উচিত না। 'আচ্ছা গুরুজী আজকের মত আসি?'
- থামথাম! তখন কি যেন বলছিলি কোরআন নিয়ে কি প্রশ্ন আছে?
-- ওহ! জ্বি, না মানে ওইটাও বউ বিষয়ক..
- বলে ফেল..
.
-- নাস্তিকের বলে... মায়ের গর্ভে কি সন্তান আছে এটা নাকি শুধু আল্লাহ জানেন? এখন তো আল্ট্রাস্নো করে বাচ্চা ছেলে না মেয়ে জানা যায়!!
তাহলে কি কোরআনে ভুল আছে? নাকি কোরআন এই জামানায় অচল?
.
- কোরআন এর কোথায় আছে?
-- ২১পারায় নাকি আছে?
- সুরা লোকমান এর শেষ আয়াত?
-- মনে হয়!
- আচ্ছা দেখো.. কি বলছে সেখানে
.
""নিশ্চয় আল্লাহর কাছেই কেয়ামতের জ্ঞান রয়েছে। এবং তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন। আর তিনি তা জানেন গর্ভাশয়ে যা থাকে। কেউ জানে না আগামীকাল সে কি উপার্জন করবে এবং কেউ জানে না কোন যায়গায় সে মৃত্যুবরণ করবে। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সর্ববিষয়ে সম্যক জ্ঞাত।" (31:34)
.
এটাতো তাইনা?
-- জ্বি গুরুজী!
- আচ্ছা প্রথমে শোনো, সালাফে সালেহীন থেকে এর জবাব খুঁজতে গেলে পাওয়া যাবেনা, কারণ এই প্রশ্ন তো তৈরিই হয়েছে এই জামানায় মেশিনপত্র আবিষ্কারের পর। তাই এবিষয়ে তাফসীর ঘাটতে চাইলে এই জামানার আলেমদের তাফসীর দেখবা। যেমনঃ তাফসীরে মাজেদী (ইংলিশ ভার্শন), তাফসীরে উসমানী, বয়ানুল কোরআন, তাওযিহুল কোরআন এসব দেখতে পারো। এর মাঝে দুইটার অনুবাদ পাবে, আর দুইটা হয়তো পাবেনা। আর কেউ কেউ নাস্তিকতা বিষয়ে জবাব দিতে তাফসীর ফি যিলালিল কোরআন সাজেস্ট করে। তবে সেটা আমি পড়িনি কখনো, তাই হাল-হাকিকত জানিনা।
.
এবার আমি যা বলি শোনো, আসলে কোরআন এর কোথাও এই কথা নাই যে, "মায়ের গর্ভে কি সন্তান আছে এটা শুধু আল্লাহই জানেন"
আয়াতের দিকে খেয়াল করে দেখো, এখানে বলছে "..আর তিনি তা জানেন গর্ভাশয়ে যা থাকে.."
এখানে কোথায় পাইলা যে তিনি ছাড়া আর কেউ জানেনা?
.
বৃষ্টির ক্ষেত্রেও কাহিনী একই!
এই আয়াতে আল্লাহ তা'আলা বলছেন- "...এবং তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন.." এখানে এরকম কিছু নাই যে, কখন বৃষ্টি হবে বা কোথায় হবে এটা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেনা। অতএব, এখন আবহাওয়ার খবর দেখে কেউ যদি আপত্তি করে তাহলে সেটাও গ্রহণযোগ্য হবে না।
.
কোরআন যেটা বলেইনি, সেটার দায় আমরা কেন নিবো? কেউ যদি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এরকম কিছু বলে তাহলে সেটা তার ব্যাখ্যা, কোরআন এর আয়াত তো না!
.
এই আয়াতে ২টা বিষয়ের কথা বলা হয়েছে যা আল্লাহ্‌ ছাড়া কেউ জানেনা।
১। কেউ জানে না আগামীকাল সে কি উপার্জন করবে
২। কেউ জানে না কোঁথায় সে মৃত্যুবরণ করবে
.
এখানে বলা হচ্ছে- "গর্ভে কি আছে সেটা আল্লাহ জানেন" এতে কি বোঝায় আর কেউ জানেনা?
.
আমি বললাম- "আমি মানুষ!" এতে কি বোঝালো? খালি আমিই মানুষ, বাদবাকি তোমরা সব ভুত

.
.
ফেবুতে- https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1163827423706786&id=100002386190185
.
---
কমেন্টবক্স থেকেঃ
১। হুম, তাফসীরে ক্লাসে আমাদের উস্তায এমনটা বলেছিলেন।
কারণ-
এখানে ما শব্দ ইউজ করেছে, যাদ্বারা ক্লীবলিঙ্গ বোঝায়। জড়বস্তুর ক্ষেত্রে হয়। এজন্য এর দ্বারা বাচ্চার লিঙ্গ না বরং অন্যন্য বিষয় বোঝায়। যেসবের ক্ষেত্রে ক্লীবলিঙ্গ এর শব্দ ইউজ করা যায়। এখন খুঁজতে থাকো গর্ভে বাচ্চা বাদে কোন জড়বস্তু থাকে.. যেদিন খুঁজে পাবে, সেদিন এর অর্থ বুঝতে পারবে!!
.
২।  এ ব্যাপারটা আমি জেনেছিলাম এভাবে যে,--"আর তিনিই জানেন গর্ভাশয়ে কি আছে"! এটা মায়ের গর্ভে কেবল সন্তানের ভ্রুন লিঙ্গের কথাকেই নির্দেশ করেনা বরং সন্তানের সার্বিক অবস্থার প্রতি নির্দেশ করে কেননা আলট্রাসনোগ্রাফী তো কেবল সন্তানের লিঙ্গই প্রকাশ করতে সক্ষম এর অধিক কিছু নয় কিন্তু আল্লাহ জানেন যা মায়ের গর্ভে আছে অর্থাত-সেই সন্তান সৌভাগ্যবান নাকি দূর্ভাগা, জান্নাতি না জাহান্নামী, ভালো স্বভাবের নাকি মন্দ স্বভাবের,নেককার নাকি বদকার,....ইত্যাদী ।সকল বিষয়ে আল্লাহ জানেন -এ কথাকেই নির্দেশ করে॥ কুরআন হচ্ছে টেলিগ্রাফিক বার্তা। যদি কুরআনে সকল বিষয় বিষদভাবে বলা হতো তাহলে তা এই ত্রিশ পারার কিতাবে স্থান সংকুলান হতো না বরং তার জন্য বিশাল বিশাল ভবনের সমান বই প্রয়োজন হতো যেখানে পৃথিবীর যাবতীয় রহস্যের নিগূঢ় সমাধান দেয়া আছে। কুরআন নিদর্শনের(sign)বই যেখানে বিভিন্ন বিষয়ের উপর ইঙ্গিত করে বলা আছে যার তাফসীর আলেমেদ্বীনগণ বের করেছেন আহাদীসের আলোকে.....ইত্যাদী॥
 
Share:

0 comments:

Post a Comment