August 7, 2019

এক সন্ধ্যেবেলার গল্প...

রোজনামচা ০৭-০৮-১৯
----------
[ক]
আগের চেয়ে অনেকটা আড়ষ্ট হয়ে গেছি। যথেষ্ট ক্লান্ত। প্রায় মাসখানেক আগে থেকেই ভাবছিলাম আইডিটা ডিয়েক্টিভ করে ফেসবুক থেকে একটা ব্রেক নিব। কিন্তু সম্ভব হচ্ছিল না। অনেকগুলো কারণ ছিল, তার মাঝে সবচেয়ে বড় বাধা ছিল আমার লেখাগুলো। আইডি বন্ধ হলে অনেকগুলো লেখা হারিয়ে যেত। যাদের প্রয়োজন হবে, পরে খুঁজে পাবে না।
কদিন পর আল্লাহ ব্যবস্থা করে দিলেন। অহেতুক অন্য ক’জনের ঘটনার সাথে জড়িয়ে রিপোর্ট খেলাম, আইডিটা বন্ধ হয়ে গেল। আলহামদুলিল্লাহ, এখন রুকইয়াহ লেখাগুলো রুকইয়াহ সাপোর্ট বিডির ফেসবুক পেইজে আপলোড করে দিয়েছি। বাকি লেখাগুলোর কিছু হারিয়েছে, তবে অনেকগুলোই ব্যক্তিগত ব্লগে আছে।
বড় সাইজের নতুন কোন লেখা হলে আগে পেইজ বা গ্রুপে পোস্ট করে দিচ্ছি। চাপমুক্ত থাকছি। এখন যদি হঠাৎ করে মাস কিংবা বছর খানেকের জন্যও গায়েব হয়ে যাই, খুব একটা সমস্যা হবে না ইনশাআল্লাহ। গ্রুপের ওয়েবসাইট, পেজ, আমার ব্যক্তিগত ব্লগটা- এগুলোতে খুঁজলেই অনেক কিছু পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ।
[খ]
রুকইয়াহ- বই নিয়ে প্রচুর চিৎকার চ্যাঁচামেচি হয়েছে। চিৎকার বললাম দেখে অবাক হইয়েন না। এটা সত্য যে, রুকইয়াহ শারইয়াহ বিষয়ক কাজের ক্ষেত্রে আলহামদুলিল্লাহ এটা একটা মাইলফলক, কিন্তু যদি বলি “এটা নিয়ে খাজনার চেয়ে বাজনা হয়েছে অনেক বেশি” তাহলে হয়তো চার আনাও ভুল হবে না। পরিচিত কেউ যখন জিজ্ঞেস করে ‘কি গো! কেমন পাঠক পেয়েছ বইয়ের? অনেক তো নাম শুনলাম।’ লজ্জায় পড়ে যাই।
এতো প্রকাশের পরের গল্প, বর্তমানের কথা। আর বই প্রকাশের পূর্বের ঘটনাগুলো না হয় আর না-ই স্মরণ করি। দ্বীনের সাইনবোর্ডের পেছনে আহলে কিতাবদের ব্যবসাযুদ্ধ দেখে ক’দিনেই যথেষ্ট ক্লান্ত আমি। লেখাগুলো একসাথে করার পর থেকে প্রকাশের পর হাতে পাওয়ার পর্যন্ত- ওই দিনগুলোর স্মৃতি মনে করলে এখনও মানসিকভাবে অসুস্থবোধ করি। আর এজন্যই বোধহয় বাকি কাজগুলো এখনও আপনাদের হাতে পৌছাতে পারিনি।
আরও কয়েকটা বইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। হ্যাঁ! কয়েকটা। কিছু একক কাজ, আর কিছু যৌথ। কিন্তু জমা দেয়া সাহস হচ্ছে না। তবে “রুকইয়ার আয়াত এবং দোয়া” নিয়ে করা কাজটা ইনশাআল্লাহ খুব শীঘ্রই পাঠিয়ে দিব। আমি বসে বসে কত-শতবার রিভিশন দিচ্ছি, ওইদিকে ‘দারুল কালাম’এর ভাইয়েরা পেরেশান হচ্ছে। কাজটা বোধহয় উচিত হচ্ছে না। দেখি কতটা জলদি দেয়া যায়। আল্লাহ চাইলে ইদের পরে হয়তো সুসংবাদ শুনবেন।
[গ]
কেউ যদি বলে ১০বছর সোশ্যাল নেটওয়ার্কগুলো ব্যবহার করে কি শিখলে?
হয়তো উত্তর হবে- ‘কাউকেই বিশ্বাস না করা ভুল, তবে যাকে-তাকে বিশ্বাস করা অনেক বড় ভুল।’
[ঘ]
সম্ভবত গত ইদের পরপরই। মক্কা চক্ষু হাসপাতালে গেলাম, রাজশাহীর। ফলাফল দেখে তৃপ্ত হতে পারলাম না। মারাত্মক অসম পরামর্শ- এক চোখে ০.২৫ অন্যটায় ১.৫০!! সাথে এক্সিস সিলিন্ডার হ্যান্ত্যান আছে বহুত। ইচ্ছা করছিল না, তবুও আগের কাঁচ ফেলে নতুন চশমা বানিয়ে নিলাম। চোখে দিয়ে অস্বস্তিতে ভুগছি। বুঝলাম কিছু একটা ঠিক নাই। অর্ধেক পথ থেকে আবার ফিরে গেলাম হাসপাতালে। উনারা দায় নিলেন না, দোষ নাকি চশমার দোকানদারের। একটায় নাকি এক্সিস না কিসে সমস্যা, আরেকটায় পাওয়ার বেশি দিয়ে দিসে। ইত্যাদি ইত্যাদি। কি আর করার! আবার গেলাম দোকানে। লাভ হল না। অহেতুক হয়রানি আর সময়ক্ষেপণ।
ওই চশমাই ব্যবহার করছি গত দেড়মাস। সমস্যা হয় দেখে এখন মাঝেমাঝেই খুলে ফেলি। চশমা ছাড়াই চলি। এই কয়দিনে একটা জিনিস শিখেছি, চশমা পরার কারণে যখন স্বাভাবিক দেখি তখন চোখের হিফাজত করা কষ্টকর হয়, চশমা খুললে যখন একটু দূরের জিনিসও ঝাপসা দেখি, তখন স্বাভাবিকভাবেই চোখের গুনাহ থেকে অনেকটা নিরাপদ থাকি।
তবে এটা তো আসলে স্থায়ী সমাধান না, তাই না? রাসূল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেটাকে ‘দৃষ্টিকে অধিক অবনতকারী’ বলেছেন, সেটার ফিকির করা লাগবে। দোয়া চাই..। আল্লাহ যেন দ্রুত ব্যবস্থা করে দেন।
চশমাটাও পাল্টাতে হবে। ভাবছি মনটা একটু ভাল হলেই যাব অন্য হাসপাতালে। দেখি কিছু বলে কি না।
[ঙ]
দেখেন! আমার কত ব্যস্ততা তাইনা? মন ভাল রাখা, মন খারাপ করা, চশমা খোলা আবার পর, ঘুমানো, জেগে থাকা, একা একা রাস্তায় হাটতে থাকা, মাঝে মাঝে ঘরে ফিরে কপালের ওপর হাত রেখে চুপচাপ শুয়ে থাকা… এত কিছুর মাঝে ফেসবুক চালানোটা আসলে এক প্রকার বিলাসিতা। এখানে কত যোগ্যবিজ্ঞরা থাকেন, ফিক্বহ না শিখেও কত ফাক্বাহাত একেকজনের, দ্বীন-দুনিয়া সম্পর্কে কতকিছু জানেন তারা, কোন শাইখের ইত্তিবা ছাড়াই আত্মশুদ্ধির জগতে কত উঁচু স্তরের একেকজন ব্যক্তি…। আহ!
এই নিল-সাদার দুনিয়া বোধহয় আমার মত অর্ডিনারি লোকদের জন্য না। এটা যত দ্রুত ছেড়ে দিতে পারব ততই কল্যাণ। এক ভাই পরামর্শ দিয়েছেন, শরিরচর্চা করতে আর মুদির দোকান দিতে। পারলে কোন মাদ্রাসায় এক-দুইটা ক্লাস নিতে। [হাসির ইমো] মাদরাসায় পড়ানোর যোগ্যতা বোধহয় নাই। ব্যবসাও তো করতে পারব না। অত বুদ্ধিমান না। ঘুমানো যেতে পারে। একদম ঘুম। আসহাবে কাহাফের মত। তাইনা?
হঠাৎ যদি কখনও ফেসবুক থেকে নাই হয়ে যাই, দোয়া করবেন। আর কিছু দরকার নাই। খুঁজতে যাইয়েন না প্লিজ। আর যারা চিনেন, তাদের কাছে তো ফোন নাম্বার আছেই, একান্ত প্রয়োজনে হোয়াটসঅ্যাপ বা টেলিগ্রামে নক দিতে পারেন। পারিবারিক যোগাযোগের জন্য নিয়মিত হোয়াটসঅ্যাপটা ব্যাবহার করা হয়, নাম্বার ওই জিপিটাই। আর মাঝে মাঝে টেলিগ্রামে ঢুকি আরবি শিখতে, টেকনোলজি এবং রুকইয়াহ বিষয়ক কিছু চ্যানেলের লেখা পড়তে। টেলিগ্রামের নাম্বারও ওইটাই।
আচ্ছা আযান দিল। যাই…
Share:

0 comments:

Post a Comment