[ক]
সহজ বাংলায় কি বলা যায়? সহনীয় করে তোলা, নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দূর করা, ইত্যাদি। এরচেয়ে ভাল সংজ্ঞা মাথায় আসছে না।
আচ্ছা, খারাপদের থেকেই উদাহরণ দেয়া যাক! আমাদের দেশে অনৈতিক এবং বিকৃত যৌনাচার প্রসারের চেষ্টা বা ষড়যন্ত্র কিন্তু অনেক বছর থেকেই চলছে। যার ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন ইভেন্টের সময় গে প্যারেড, ন্যুড র্যালি, LGBT র্যালি ইত্যাদি বের করার চেষ্টা করা হয়। বহুজাতিক কোম্পানির সহযোগিতায় রঙধনু নাটক প্রচার করা হয়। এসবের মাধ্যমে এই বিকৃত যৌনাচারগুলোকে সহনীয় করে তোলা হয়।
অর্থাৎ মানুষ যেন এগুলোকে অপরাধ হিসেবে না দেখে, স্বাভাবিক মনে করে, সেই মানসিকতার বিস্তার ঘটানো হয়। পরবর্তীতে এসব অপরাধ আমাদের সমাজে ঘটলে যেন কেউ খারাপ ভাবে না নেয়, বরং এক পর্যায়ে এসবের বৈধতা দিয়ে দেয়। এসব র্যালি, নাটক ইত্যাদির মাধ্যমে সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।
মোদ্দাকথা, পশ্চিমা দেশগুলোর বাসিন্দারা যেমন সেক্সুয়ালি পার্ভার্ট হয়ে গেছে, আমাদের দেশেও সেই পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা চলছে।
আরও পরিচিত উদাহরণ হচ্ছে, পর্ণোগ্রাফি। প্রচুর পরিমাণে অশ্লীল গান, মুভি, আইটেম সং ইত্যাদি আমদানি করে এই ক্যান্সারকে আমাদের সমাজে সহনীয় করে দেয়া হয়েছে। যার ফলে সুলাইমান সুখন কলেজের অনুষ্ঠানের স্টেজে দাড়িয়ে বলার মত সাহস করছে “আমার হার্ডডিস্কে ৫০০জিবি কালেকশন আছে।” অথচ সেখানে উপস্থিত ছাত্র-ছাত্রীরা সেটাকে স্বাভাবিকভাবেই নিচ্ছে। (আল্লাহ আমাদের হিদায়াত দিক)
[খ]
ইসলামের বিধান মান্য করা যতটা জরুরী, তারচেয়ে বেশি জরুরী হচ্ছে ইসলামের বিধানগুলোর ব্যাপারে আক্বিদা সহিহ রাখা।
এটা তো আমরা সবাই জানি, কেউ রোজা না রাখলে কাফির হয় না, গুনাহগার হয়। কিন্তু রোজার বিরোধিতা করলে বা রোজা নিয়ে উপহাস করলে মানুষ কাফির হয়ে যায়। জিহাদ ফরজ হওয়ার পরেও জিহাদ না করলে মানুষ কাফির হয় না, গুনাহগার হয়। কিন্তু জিহাদ নামক শরিয়তের বিধানের বিরোধিতা করলে, মানুষকে বাধা দিলে, ঈমান নষ্ট হয়ে যায়, মানুষ কাফির হয়ে যায়।
আমরা এটাও জানি, আল্লাহ যেটাকে হারাম করেছেন, সেটাকে হালাল বলা কুফরি। আল্লাহ যেটাকে হালাল বলেছেন, সেটাকে হারাম বলা কুফরি। সুতরাং আল্লাহ যেটাকে বৈধ বা হালাল বলেছেন, আমাদেরকে সেটা হালাল বলতেই হবে। আল্লাহ যেটাকে নিষিদ্ধ বা হারাম বলেছেন, আমাদেরকেও সেটা নিষিদ্ধ বলতে হবে।
আর আল্লাহ যেটা আবশ্যক করেছেন, সেটাকে আবশ্যক হিসেবেই মেনে নিতে হবে। কারণ মুসলিম অর্থই আত্মসমর্পণকারী।
[গ]
আমাদের সমাজ এখনও হিন্দু সংস্কৃতি দ্বারা অনেকাংশেই প্রভাবিত। বিশেষত: বিয়ে সংক্রান্ত বিষয়ে প্রতি ধাপে ধাপেই কেমন যেন আমরা মুশরিকদের অনুসরণ করতে ভালোবাসি।
বিয়ের অনুষ্ঠানে যেমন মুশরিকদের মত পূজা-অর্চনা, গান বাজনা করি। তেমনি বিধবাবিবাহ, বহুবিবাহ নিয়েও আমাদের সমাজে বিরূপ ধারণা প্রচলিত।
অথচ একটা মেয়ের স্বামী মারা গেছে কিংবা ডিভোর্স হয়েছে, অথবা একটা ছেলে একাধিক বিয়ে করবে এসব স্বাভাবিক বিষয়। এই বিধানগুলোর অধিকাংশই সাফ ভাষায় কোরআনে বর্ণিত আছে! অথচ আমরা এগুলো নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছি।
.
আমল করতে কমবেশ হতে পারে। সেজন্য গুনাহ হবে, তাওবাহ-ইস্তিগফার, ক্বাযা-কাফফারা কিংবা আযাব দ্বারা সেসব পূরণ করা যাবে। কিন্তু বিশ্বাসের ক্ষেত্রে কোন ছাড় নেই।
রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আমি তোমাদের যে বিষয় থেকে নিষেধ করি তা বর্জন করো। আর যা করার নির্দেশ দেই, সাধ্যমতো সেটা করার চেষ্টা করো।’ (সহিহ মুসলিম, বুখারি) আল্লাহ তাআলাও বলেছেন- “তোমরা আল্লাহকে যথাসাধ্য ভয় কর, শোন, আনুগত্য কর এবং ব্যয় কর।” (সুরা তাগাবুন ১৬)
[ঘ]
মাসনা সুলাসা ওয়া রুবা'আ – নামক একটি গ্রুপ, যারা বহুবিবাহের ব্যাপারে সমাজের নেতিবাচক ধারণা দূর করতে এবং ইসলামের এই বিধানকে আমাদের মাঝে সহনীয় করার চেষ্টা করছেন। আমি তাদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।
তাদের কর্মপদ্ধতি আরও সুন্দর হতে পারে, গ্রুপের পরিবেশ আরও সুনিয়ন্ত্রিত হতে পারে। সেটা পরের কথা, একটা মুভমেন্ট তো শুরুতেই পরিপক্ব এবং পরিণত হয় না। সময় পরিবর্তন হতে তো সময় দরকার, তাইনা?
যারা এই গ্রুপের বিরোধিতা করছেন তারা কখনও নাস্তিকদের বিকৃত যৌনাচার সহনীয় তোলার প্রজেক্টগুলোর বিরোধিতা করেছেন কি না আমার জানা নাই। আচ্ছা ভালভাবেই নেই, তারা হয়তো গ্রুপের স্প্রিটটা ধরতে পারেননি।
আমাদের উচিত হবে, এদের বিরোধিতা না করা, বরং পরামর্শ দিয়ে, সহায়তা করে, এই মুভমেন্ট আরও বেগবান, আরও সঠিকভাবে পরিচালিত করার চেষ্টা করা।
.
যেমন, আমার মত হল বহুবিবাহ নিয়ে আলোচনার সাথে সাথে ডিভোর্সি বোনদের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করাও খুবই জরুরী। হয়তোবা অধিক জরুরী। আল্লাহু আ'লাম!
...
[ঙ]
বোনদের কথা বলি, শুধু মেয়েদের ক্ষেত্রেই না, এটা স্বাভাবিকভাবেই প্রতিটি মানুষের ফিতরাত, আপনার ভালবাসার মানুষটি অন্য কাউকে বেশি ভালবাসুক এটা আপনি পছন্দ করবেন না। এই ভালোবাসা যেকোনো অর্থে হতে পারে। শ্রেণীকক্ষে নতুন একটা ছেলে এসে যদি স্যারের মনোযোগ আকর্ষণ করে নেয়, তখন স্বাভাবিকভাবেই পূর্বের বিশেষ ছাত্ররা ভালভাবে নিতে পারে না। ছোট ভাই বা বোন জন্ম নিলে, বাবামা তার দিকে যখন বেশি মনোযোগ দেয়, তখন আগের শিশুটি স্বাভাবিকভাবেই মন খারাপ করে।
একইভাবে, বিয়ের পর ছেলে যখন স্ত্রীর দিকে মনযোগী হয়, তখন মা মন খারাপ করে। যদিও তাদের মর্যাদার স্তর সম্পূর্ণ ভিন্ন। তবুও সাধারণত এমনটাই হয়। আর একারণেই বউ – শাশুড়ির মাঝে হিংসা এবং বিতৃষ্ণা দেখা যায়।
আচ্ছা আরও ভাল উদাহরণ নেন, তাফসিরের দরসে শুনেছিলাম- ইউসুফ আলাইহিস সালামকে ইয়াকুব আলাইহিস সালামের কাছে থেকে আল্লাহ দীর্ঘদিনের জন্য কেড়ে নিয়েছিলেন, যেন ইয়াকুব আলাইহিস সালাম তাঁর ছেলের প্রতি বেশি মনযোগী না হয়ে যান, আল্লাহর প্রতি মনযোগী হন। আর অবশ্যই ইউসুফ মনোযোগ দেয়ার মতই ছিল।
.
[চ]
এত কথা বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে, আমার ভালবাসার মানুষটি অন্য কাউকে ভালবাসুক এটা আমি পছন্দ করব না। এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এরচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, শরিয়তের বিধান হল, একজন পুরুষ একাধিক বিয়ে করতে পারে, একজন মহিলার বিবাহ বিচ্ছেদ হলে নির্ধারিত সময় পর সে আবার বিয়ে করতে পারে, অথচ এই বিধানকে আমরা খারাপ দৃষ্টিতে দেখছি। আপনাকে অবশ্যই ব্যক্তি স্বার্থের চেয়ে বৃহৎ জনস্বার্থ বেশি মূল্যায়ন করতে হবে, এবং এরচেয়েও বেশি মূল্যায়ন করতে হবে শরিয়তে বিধানকে।
.
আপনি আপনার স্বামীর জন্য নতুন বিবাহ করা পছন্দ করেন না, এটা হতেই পারে। আপনার স্বামীকে বুঝিয়ে-সমঝিয়ে, ভালোবাসা দিয়ে সন্তুষ্ট রাখুন, যেন সে আরেকটি বিয়ের প্রয়োজনীয়তাই অনুভব না করে। কিন্তু যারা শরিয়তের একটি বিধান সমাজে সহনীয় করার চেষ্টা করছেন, তাদের বিরোধিতা করা তো বৈধ হবে না। কারণ, সারা পৃথিবীর সব পুরুষ তো আপনার স্বামী না। তাইনা?
আচ্ছা! বোনদের কথা পরে, যেসব পুরুষরা কোরআনের মাসনা সুলাসা ওয়া রুবা'আ বিধান নিয়ে এলার্জি দেখাচ্ছেন, তাদের সমস্যা কোথায়? তারা একাধিক বিয়ে না করুক, অন্যদের কেন বাধা দিচ্ছে?
এই ভাইদের ঈমান কি হিন্দুয়ানী বা সেকুলারিজমের ভাইরাসে আক্রান্ত? নাকি তাদের কলিকাতা হারবাল প্রয়োজন?
জানিয়ে বাধিত করবেন মাননীয় স্পিকার!
-----
উৎসঃ https://web.facebook.com/thealmahmud/posts/1691401980949325
সহজ বাংলায় কি বলা যায়? সহনীয় করে তোলা, নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দূর করা, ইত্যাদি। এরচেয়ে ভাল সংজ্ঞা মাথায় আসছে না।
আচ্ছা, খারাপদের থেকেই উদাহরণ দেয়া যাক! আমাদের দেশে অনৈতিক এবং বিকৃত যৌনাচার প্রসারের চেষ্টা বা ষড়যন্ত্র কিন্তু অনেক বছর থেকেই চলছে। যার ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন ইভেন্টের সময় গে প্যারেড, ন্যুড র্যালি, LGBT র্যালি ইত্যাদি বের করার চেষ্টা করা হয়। বহুজাতিক কোম্পানির সহযোগিতায় রঙধনু নাটক প্রচার করা হয়। এসবের মাধ্যমে এই বিকৃত যৌনাচারগুলোকে সহনীয় করে তোলা হয়।
অর্থাৎ মানুষ যেন এগুলোকে অপরাধ হিসেবে না দেখে, স্বাভাবিক মনে করে, সেই মানসিকতার বিস্তার ঘটানো হয়। পরবর্তীতে এসব অপরাধ আমাদের সমাজে ঘটলে যেন কেউ খারাপ ভাবে না নেয়, বরং এক পর্যায়ে এসবের বৈধতা দিয়ে দেয়। এসব র্যালি, নাটক ইত্যাদির মাধ্যমে সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।
মোদ্দাকথা, পশ্চিমা দেশগুলোর বাসিন্দারা যেমন সেক্সুয়ালি পার্ভার্ট হয়ে গেছে, আমাদের দেশেও সেই পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা চলছে।
আরও পরিচিত উদাহরণ হচ্ছে, পর্ণোগ্রাফি। প্রচুর পরিমাণে অশ্লীল গান, মুভি, আইটেম সং ইত্যাদি আমদানি করে এই ক্যান্সারকে আমাদের সমাজে সহনীয় করে দেয়া হয়েছে। যার ফলে সুলাইমান সুখন কলেজের অনুষ্ঠানের স্টেজে দাড়িয়ে বলার মত সাহস করছে “আমার হার্ডডিস্কে ৫০০জিবি কালেকশন আছে।” অথচ সেখানে উপস্থিত ছাত্র-ছাত্রীরা সেটাকে স্বাভাবিকভাবেই নিচ্ছে। (আল্লাহ আমাদের হিদায়াত দিক)
[খ]
ইসলামের বিধান মান্য করা যতটা জরুরী, তারচেয়ে বেশি জরুরী হচ্ছে ইসলামের বিধানগুলোর ব্যাপারে আক্বিদা সহিহ রাখা।
এটা তো আমরা সবাই জানি, কেউ রোজা না রাখলে কাফির হয় না, গুনাহগার হয়। কিন্তু রোজার বিরোধিতা করলে বা রোজা নিয়ে উপহাস করলে মানুষ কাফির হয়ে যায়। জিহাদ ফরজ হওয়ার পরেও জিহাদ না করলে মানুষ কাফির হয় না, গুনাহগার হয়। কিন্তু জিহাদ নামক শরিয়তের বিধানের বিরোধিতা করলে, মানুষকে বাধা দিলে, ঈমান নষ্ট হয়ে যায়, মানুষ কাফির হয়ে যায়।
আমরা এটাও জানি, আল্লাহ যেটাকে হারাম করেছেন, সেটাকে হালাল বলা কুফরি। আল্লাহ যেটাকে হালাল বলেছেন, সেটাকে হারাম বলা কুফরি। সুতরাং আল্লাহ যেটাকে বৈধ বা হালাল বলেছেন, আমাদেরকে সেটা হালাল বলতেই হবে। আল্লাহ যেটাকে নিষিদ্ধ বা হারাম বলেছেন, আমাদেরকেও সেটা নিষিদ্ধ বলতে হবে।
আর আল্লাহ যেটা আবশ্যক করেছেন, সেটাকে আবশ্যক হিসেবেই মেনে নিতে হবে। কারণ মুসলিম অর্থই আত্মসমর্পণকারী।
[গ]
আমাদের সমাজ এখনও হিন্দু সংস্কৃতি দ্বারা অনেকাংশেই প্রভাবিত। বিশেষত: বিয়ে সংক্রান্ত বিষয়ে প্রতি ধাপে ধাপেই কেমন যেন আমরা মুশরিকদের অনুসরণ করতে ভালোবাসি।
বিয়ের অনুষ্ঠানে যেমন মুশরিকদের মত পূজা-অর্চনা, গান বাজনা করি। তেমনি বিধবাবিবাহ, বহুবিবাহ নিয়েও আমাদের সমাজে বিরূপ ধারণা প্রচলিত।
অথচ একটা মেয়ের স্বামী মারা গেছে কিংবা ডিভোর্স হয়েছে, অথবা একটা ছেলে একাধিক বিয়ে করবে এসব স্বাভাবিক বিষয়। এই বিধানগুলোর অধিকাংশই সাফ ভাষায় কোরআনে বর্ণিত আছে! অথচ আমরা এগুলো নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছি।
.
আমল করতে কমবেশ হতে পারে। সেজন্য গুনাহ হবে, তাওবাহ-ইস্তিগফার, ক্বাযা-কাফফারা কিংবা আযাব দ্বারা সেসব পূরণ করা যাবে। কিন্তু বিশ্বাসের ক্ষেত্রে কোন ছাড় নেই।
রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আমি তোমাদের যে বিষয় থেকে নিষেধ করি তা বর্জন করো। আর যা করার নির্দেশ দেই, সাধ্যমতো সেটা করার চেষ্টা করো।’ (সহিহ মুসলিম, বুখারি) আল্লাহ তাআলাও বলেছেন- “তোমরা আল্লাহকে যথাসাধ্য ভয় কর, শোন, আনুগত্য কর এবং ব্যয় কর।” (সুরা তাগাবুন ১৬)
[ঘ]
মাসনা সুলাসা ওয়া রুবা'আ – নামক একটি গ্রুপ, যারা বহুবিবাহের ব্যাপারে সমাজের নেতিবাচক ধারণা দূর করতে এবং ইসলামের এই বিধানকে আমাদের মাঝে সহনীয় করার চেষ্টা করছেন। আমি তাদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।
তাদের কর্মপদ্ধতি আরও সুন্দর হতে পারে, গ্রুপের পরিবেশ আরও সুনিয়ন্ত্রিত হতে পারে। সেটা পরের কথা, একটা মুভমেন্ট তো শুরুতেই পরিপক্ব এবং পরিণত হয় না। সময় পরিবর্তন হতে তো সময় দরকার, তাইনা?
যারা এই গ্রুপের বিরোধিতা করছেন তারা কখনও নাস্তিকদের বিকৃত যৌনাচার সহনীয় তোলার প্রজেক্টগুলোর বিরোধিতা করেছেন কি না আমার জানা নাই। আচ্ছা ভালভাবেই নেই, তারা হয়তো গ্রুপের স্প্রিটটা ধরতে পারেননি।
আমাদের উচিত হবে, এদের বিরোধিতা না করা, বরং পরামর্শ দিয়ে, সহায়তা করে, এই মুভমেন্ট আরও বেগবান, আরও সঠিকভাবে পরিচালিত করার চেষ্টা করা।
.
যেমন, আমার মত হল বহুবিবাহ নিয়ে আলোচনার সাথে সাথে ডিভোর্সি বোনদের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করাও খুবই জরুরী। হয়তোবা অধিক জরুরী। আল্লাহু আ'লাম!
...
[ঙ]
বোনদের কথা বলি, শুধু মেয়েদের ক্ষেত্রেই না, এটা স্বাভাবিকভাবেই প্রতিটি মানুষের ফিতরাত, আপনার ভালবাসার মানুষটি অন্য কাউকে বেশি ভালবাসুক এটা আপনি পছন্দ করবেন না। এই ভালোবাসা যেকোনো অর্থে হতে পারে। শ্রেণীকক্ষে নতুন একটা ছেলে এসে যদি স্যারের মনোযোগ আকর্ষণ করে নেয়, তখন স্বাভাবিকভাবেই পূর্বের বিশেষ ছাত্ররা ভালভাবে নিতে পারে না। ছোট ভাই বা বোন জন্ম নিলে, বাবামা তার দিকে যখন বেশি মনোযোগ দেয়, তখন আগের শিশুটি স্বাভাবিকভাবেই মন খারাপ করে।
একইভাবে, বিয়ের পর ছেলে যখন স্ত্রীর দিকে মনযোগী হয়, তখন মা মন খারাপ করে। যদিও তাদের মর্যাদার স্তর সম্পূর্ণ ভিন্ন। তবুও সাধারণত এমনটাই হয়। আর একারণেই বউ – শাশুড়ির মাঝে হিংসা এবং বিতৃষ্ণা দেখা যায়।
আচ্ছা আরও ভাল উদাহরণ নেন, তাফসিরের দরসে শুনেছিলাম- ইউসুফ আলাইহিস সালামকে ইয়াকুব আলাইহিস সালামের কাছে থেকে আল্লাহ দীর্ঘদিনের জন্য কেড়ে নিয়েছিলেন, যেন ইয়াকুব আলাইহিস সালাম তাঁর ছেলের প্রতি বেশি মনযোগী না হয়ে যান, আল্লাহর প্রতি মনযোগী হন। আর অবশ্যই ইউসুফ মনোযোগ দেয়ার মতই ছিল।
.
[চ]
এত কথা বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে, আমার ভালবাসার মানুষটি অন্য কাউকে ভালবাসুক এটা আমি পছন্দ করব না। এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এরচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, শরিয়তের বিধান হল, একজন পুরুষ একাধিক বিয়ে করতে পারে, একজন মহিলার বিবাহ বিচ্ছেদ হলে নির্ধারিত সময় পর সে আবার বিয়ে করতে পারে, অথচ এই বিধানকে আমরা খারাপ দৃষ্টিতে দেখছি। আপনাকে অবশ্যই ব্যক্তি স্বার্থের চেয়ে বৃহৎ জনস্বার্থ বেশি মূল্যায়ন করতে হবে, এবং এরচেয়েও বেশি মূল্যায়ন করতে হবে শরিয়তে বিধানকে।
.
আপনি আপনার স্বামীর জন্য নতুন বিবাহ করা পছন্দ করেন না, এটা হতেই পারে। আপনার স্বামীকে বুঝিয়ে-সমঝিয়ে, ভালোবাসা দিয়ে সন্তুষ্ট রাখুন, যেন সে আরেকটি বিয়ের প্রয়োজনীয়তাই অনুভব না করে। কিন্তু যারা শরিয়তের একটি বিধান সমাজে সহনীয় করার চেষ্টা করছেন, তাদের বিরোধিতা করা তো বৈধ হবে না। কারণ, সারা পৃথিবীর সব পুরুষ তো আপনার স্বামী না। তাইনা?
আচ্ছা! বোনদের কথা পরে, যেসব পুরুষরা কোরআনের মাসনা সুলাসা ওয়া রুবা'আ বিধান নিয়ে এলার্জি দেখাচ্ছেন, তাদের সমস্যা কোথায়? তারা একাধিক বিয়ে না করুক, অন্যদের কেন বাধা দিচ্ছে?
এই ভাইদের ঈমান কি হিন্দুয়ানী বা সেকুলারিজমের ভাইরাসে আক্রান্ত? নাকি তাদের কলিকাতা হারবাল প্রয়োজন?
জানিয়ে বাধিত করবেন মাননীয় স্পিকার!
-----
উৎসঃ https://web.facebook.com/thealmahmud/posts/1691401980949325
0 comments:
Post a Comment