একজন ইনবক্সে তিনটা প্রশ্ন করেছিলো, রুকইয়াহ বিষয়ে একটা, বাকি দুইটা ইসলামের ওপর! ইসলামের ওপর প্রশ্ন দুইটা মেসেজদাতার কোনো হিন্দু ফ্রেন্ড করেছে, আমি উনাকে হাদিস এবং তারিখ থেকে আশ্বস্ত করতে চেষ্টা করলাম।
প্রশ্নগুলো কিঞ্চিত বিভ্রান্তিকর হলেও আমরা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখলে বুঝতে পারি, হিন্দু যুবক/যুবতিদের বিরাট এক অংশ হিন্দু ধর্মের বাজে অবস্থা দেখে তা থেকে বিমুখ হচ্ছে... আর ইসলামের প্রতি আগ্রহী হচ্ছে।
তো প্রথম প্রশ্নটা ছিলো এরকম-
জিবরাইল আ. আসতেন এটাতো শুধু মুহাম্মাদ স. ই দেখতে পেতেন, তাহলে আসলেই যে এরকম কেউ আসতো সেটার প্রমাণ কী?
জিবরাইল আ. আসতেন এটাতো শুধু মুহাম্মাদ স. ই দেখতে পেতেন, তাহলে আসলেই যে এরকম কেউ আসতো সেটার প্রমাণ কী?
জবাবঃ
এটা ভুয়া কথা যে রাসুল সা. ছাড়া কেউ দেখতো না, মুর্খতার কারনে এই আপত্তি করেছে। অনেক সাহাবী জিবরীল আ. কে দেখেছেন। হাদিসে জিবরিলে তো সব সাহাবিদের মজলিসের মাঝে জিবরাইল আ. এসেছিলেন।
দেখুন ওমর রা. ঘটনা কিভাবে বর্ণনা করছেন-
..
ﺑﻴﻨﻤﺎ ﻧﺤﻦ ﺟﻠﻮﺱ ﻋﻨﺪ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺫﺍﺕ ﻳﻮﻡ ، ﺇﺫ ﻃﻠﻊ ﻋﻠﻴﻨﺎ ﺭﺟﻞ ﺷﺪﻳﺪ ﺑﻴﺎﺽ ﺍﻟﺜﻴﺎﺏ ، ﺷﺪﻳﺪ ﺳﻮﺍﺩ ﺍﻟﺸﻌﺮ ، ﻻ ﻳﺮﻯ ﻋﻠﻴﻪ ﺃﺛﺮ ﺍﻟﺴﻔﺮ ، ﻭﻻ ﻳﻌﺮﻓﻪ ﻣﻨﺎ ﺃﺣﺪ ، ﺣﺘﻰ ﺟﻠﺲ ﺇﻟﻰ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻓﺄﺳﻨﺪ ﺭﻛﺒﺘﻪ ﺇﻟﻰ ﺭﻛﺒﺘﻴﻪ ، ﻭﻭﺿﻊ ﻛﻔﻴﻪ ﻋﻠﻰ ﻓﺨﺬﻳﻪ ، ﻭﻗﺎﻝ : " ﻳﺎ ﻣﺤﻤﺪ ﺃﺧﺒﺮﻧﻲ ﻋﻦ ﺍﻹﺳﻼﻡ "
একদিন আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকটে বসে আছি, এমতাবস্থায় ধবধবে সাদা পোশাক পরা, কালো কুচকুচে চুলওয়ালা এক ব্যাক্তি এলো। তার চেহারায় সফরের কোন ছাপ দেখা যাচ্ছিল না অথচ আমাদের কেউই তাকে চিনে না। তিনি নাবী সা.-এর সামনে বসলেন, তার হাঁটুদ্বয় মহানাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর হাঁটুদ্বয়ের সাথে লাগিয়ে এবং দুহাত নিজ উরুর উপর রাখলেন, তারপর জিজ্ঞেস করেন, হে মুহাম্মাদ! আমাকে ইসলাম সম্পর্কে বলুন!! ......
(সুদীর্ঘ এই দীর্ঘ হাদিসটি ইমাম মুসলিম, তিরমিযি, ইবনে মাযাহ, আহমাদ সহ অনেকে বর্ণনা করেছেন)
.......
অসাধারণ অলংকারময় ভাষায় সায়্যিদিনা উমর রাযিয়াল্লাহু আনহু এই ঘটনা শুনিয়েছেন, আবু হুরায়রা রা. থেকেও একই ঘটনা আছে.. তবে সেটা ওমর রা.এর মত বিস্তারিত না।
.
যা'হোক, হাদিসের বাক্যগুলো আমরা খেয়াল করি...
(১) ধবধবে সাদা পোশাক পরা,
(২) কালো কুচকুচে চুলওয়ালা,
(৩) তার চেহারায় সফরের কোন ছাপ দেখা যাচ্ছিল না,
(৪) অথচ আমাদের কেউই তাকে চিনে না।
.
এই চারটে বাক্য দ্বারা ওমর রা. এটাই বুঝাতে চাইলেন, "লোকটা এই এলাকার হলে তো আমরা চিনতাম, আর দূর থেকে আসলে তো চেহারায়, চুলে, জামাকাপড়ে সফরের লক্ষণ থাকতো। অথচ কিছুই ছিলো না... তাহলে লোকটা কোত্থেকে আবির্ভাব হলো?
হাদিসের শেষ অংশে রাসূল সা. সাহাবীদের জিজ্ঞেস করেন, তোমরা কী জানো লোকটা কে? তিনি জিবরাইল!!
.
এথেকে বুঝা যায় জিবরাইল আ.কে সবাই দেখেছেন সেখানে, এরকম অনেক হাদিস আছে যেখানে সাহাবায়ে কিরাম জিবরীল আ. কে দেখেছেন। রাসূল সা. এর শেষ সময়ের ঘটনাগুলোতেও এরকম পাওয়া যায়।
তবে হ্যা! শুধু জিবরাইল আ. এর মাধ্যমেই ওহী আসতো.. ব্যাপারটা কিন্তু এরকমও না, ওহী ৭ভাবে নাযিল হতো। এটা মাত্র একটা প্রকার। (উলুমে কোরআনের যেকোনো গ্রন্থ দ্রষ্টব্য, বিশেষত তাকি উসমানী সাহেবেরটা)
রাসুল সা. এর ওপর ওহী নাযীল হওয়ার অবস্থাগুলো পাশের সবার পরিচিত ছিলো, (কোন হাদিসে যেন পড়েছিলাম, এখন ইয়াদ নাই) রাসুল সা. উট বা ঘোড়ায় বসা অবস্থায় ওহী নাযিল হলে ঘোড়ার খুর বালুতে দেবে যেত অনেকখানি!!
তো সব মিলিয়ে বলতে পারি, জিবরাইল আ. কে অন্যকেউ দেখেনি এটা সাফ হাদিসের সামনেই ধোপে টিকেনা। যুক্তির কাছে তো মোটেও না।
.
..
[কোরআনের ব্যাপারে আপত্তি করতেই যেহেতু জিবরীল আ. এর কথা তোলা হয়, তাই এবিষয়ে ইফতি ভাইয়ের কমেন্ট থেকে কিছু অংশ উল্লেখ করা যায়]
কোরআন শরীফের সত্যতার কিছু অকাট্য প্রমাণ আছে।
১) ভাষিক বৈশিষ্ট্য । আরবরা সাহিত্যে অত্যন্ত পারদর্শী হলেও বিরোধিতা করতে সক্ষম হয়নি।
২) ভবিষ্যৎ বাণী। বিশেষত রুমের ঘটনা।
৩) ওহি বলে একটা কিছু ছিল, এটা নিশ্চিত। আশেপাশের মানুষজন নবীজির ওহি আসার সময়ের প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করেছে। প্রায় তাওয়াতুর হিসেবে প্রমাণিত। এর ব্যাখ্যা কি?
৪) কোরআন শরীফ এমন অনেক তাত্ত্বিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিয়েছে, যে তত্ত্ব এখনো চমৎকৃত করছে। ( দেখুন, দসতুরুল আখলাক আবদুল্লাহ দাররাজ ও জাহেরাতুল কোরআনিয়াহ মালেক বেন নবী)
১) ভাষিক বৈশিষ্ট্য । আরবরা সাহিত্যে অত্যন্ত পারদর্শী হলেও বিরোধিতা করতে সক্ষম হয়নি।
২) ভবিষ্যৎ বাণী। বিশেষত রুমের ঘটনা।
৩) ওহি বলে একটা কিছু ছিল, এটা নিশ্চিত। আশেপাশের মানুষজন নবীজির ওহি আসার সময়ের প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করেছে। প্রায় তাওয়াতুর হিসেবে প্রমাণিত। এর ব্যাখ্যা কি?
৪) কোরআন শরীফ এমন অনেক তাত্ত্বিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিয়েছে, যে তত্ত্ব এখনো চমৎকৃত করছে। ( দেখুন, দসতুরুল আখলাক আবদুল্লাহ দাররাজ ও জাহেরাতুল কোরআনিয়াহ মালেক বেন নবী)
সত্যতার বিষয়ে সবচে বড় প্রমাণ হচ্ছে, কখনো নবীজি সাহাবীদের কাছে নিজের ভুল স্বীকার করেছেন ও কখনো জিজ্ঞাসা করা সত্ত্বেও অনেক দিন উত্তর দিতে পারেন নি। এ নিয়ে কষ্টেও ভুগেছেন। বিশেষত আয়েশা রাদিঃ এর ঘটনা, কাহাফের ঘটনায় তিনি কিছুদিন ওহি আসেনি। পরবর্তী বিস্তারিত বর্ণনাসহ এসেছে। মনগড়া হলে এগুলো সম্ভব ছিলোনা।
..
দ্বিতীয় প্রশ্ন এবং জবাব: http://thealmahmud.blogspot.com/2017/04/why-Allah-referred-as-m.html
0 comments:
Post a Comment