August 2, 2016

২০১৪ সনে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ বিপর্যয়, ধোঁকাবাজ দাজ্জাল এবং গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা...

১। আসেম ওমরের ভাষায় শুরু করা যাক-
 ""আপনি পরিবারের কর্তা, আপনার চোখের সামনে আপনার স্ত্রী-সন্তান, পিতামাতা পানির যন্ত্রনায় ছটফট করছে। দরজার সামনে পানি নিয়ে দাজ্জালের ফৌজ দাঁড়িয়ে আছে। শর্ত খুব সহজ... দাজ্জালকে প্রভু মেনে নাও, পানি পাবে। সাথে লোভনীয় অংকের টাকাও পাবে। আর দাজ্জালকে মানবে না? নিজের সন্তানের দিকে একবার তাকাও... তৃষ্ণা যন্ত্রনা কাদতে কাদতে ঘুমিয়ে পড়েছে, নাকি মারা গেছে?! তোমার মায়ের শুষ্ক মুখটার দিকে তাকাতে পারবে? দুদিন হলো... উনি একঢোক পানিও খেতে পাননি।""
পুরো দৃশ্যটা একবার কল্পনা করুন... পারছেন না? নিচের সত্য অভিজ্ঞতা একবার পড়ে নিন....
.
২। হাতে একটা চিরকুট আসলো! ০১.১১.২০১৪ তারিখের কোনো আরবি দৈনিকের অংশ। শিরোনামের অর্থ এমন- "বিদ্যুৎ বিভ্রাটে ঘোর অন্ধকারে বাংলাদেশ"
আমার চোখের সামনে ভেসে উঠলো ২০১৪সালের বিভৎস সেই তিনটা দিনের কথা।
আমি তখন বনানী জামিয়ায় পড়ছি। তিনদিন যাবত কারেন্ট নাই, অতএব পানিও নাই। কারো ফোনে চার্জ নাই। কল ধরা আর কাটা ছাড়া ফোন কোনো কাজে ব্যাবহার করতে পারিনি। দরকারে কাউকে কল করব? অনেক চার্জের ব্যাপার হে! তবুও তৃতীয়দিনে এসে সবার ফোন বন্ধ। গরমে সেদ্ধ হয়ে যাচ্ছি ছাত্র-উস্তাদ সবাই। প্রথমবারের মত কোনো কোনো উস্তাযকে ক্লাসে হাতপাখা দিয়ে বাতাস করা লাগলো। জেনারটর আছে.. তবে শুধু লাইট জলছে।
.
সবচে বাজে অবস্থা ছিলো পানি নিয়ে। প্রথমদিন রাতেই মাদরাসার ট্যাংকি খালি। রিজার্ভ টাংকে পানি আছে তবে কি দিয়ে তুলবেন? কেউ কেউ রিজার্ভ ট্যাংকির মুখ খুলে কুয়া থেকে পানি তোলার মত করে কিছু পানি তোলার চেষ্টা করলো। দ্বিতীয়দিন দুপুর না গড়াতেই মাদরাসার অধিকাংশ ইস্তিঞ্জাখানা আর ব্যাবহারের উপযোগী ছিলোনা। মসজিদের ট্যাংকিও খালি হয়ে গেলো, খানার পানির জন্য সামনে বিটিসিএল অফিসে ধর্না দিলাম, একটু পর সেটাও শেষ। রাতে অগত্যা মিনারেল ওয়াটার দিয়ে কাজ সারতে হলো। তৃতীয় দিন অবশ্য মাদরাসা কর্তৃপক্ষ জেনারেটর দিয়ে মটর চালুর ব্যাবস্থা করেছিলো.... তার কয়েকঘন্টা পর কারেন্ট আসে....
.
আচ্ছা আমার যায়গায় আপনাকে কল্পনা করুন, পাশাপাশি ভাবুন তৃতীয় দিনেও পানির কোনো বিহিত হলো না... দোকানে মিনারেল ওয়াটারের বোতলও শেষে.....
আচ্ছা এরপর প্রথম পয়েন্টের দৃশ্যটা আরেকবার কল্পনা করুন....
.
৩। এটা ছিলো ২০১৪-সালে বাস্তব অভিজ্ঞতার সামান্য বর্ণনা, আপনাদেরও হয়তো আছে। বিশেষতঃ শহুরে ভাইদের... যারা সাপ্লাই অথবা ট্যাংকির পানির ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল। জানেনই তো, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভাষায় শহরের লোকেরা দাজ্জালের ফিৎনায় বেশি আক্রান্ত হবে।
দাজ্জাল যে পানি নিয়ে বিরাট একটা গেম খেলবে এটা মুসলিম শরিফে বর্ণিত তামিম দারী রাযি. এর দাজ্জালের সাথে সাক্ষাত হওয়ার হাদীসটা দেখে বর্তমান দুনিয়ার সার্বিক হালত মিলিয়ে নিলেই বুঝা যায়।
(এবিষয়ে ব্লগে একটা লেখা আছে, খুজে পাইলে শেয়ার করবো ইনশাআল্লাহ)
লিংকঃ http://talimtube.blogspot.com/2016/08/blog-post_27.html
.
৪। প্রথমে আমার ভিন্ন কিছু খেয়ালে আসেনি। পত্রিকা মারফত জানলাম কোন এক বিদ্যুৎ গ্রিডে সমস্যার কারণে সারাদেশ কারবালা বনে গেছে। আমি ব্যাপারটা এভাবে ব্যাখ্যা করলাম- যেকোনো ভাবে এখানে হয়তো কানা দাজ্জালের কারসাজী আছে! স্রেফ বিদ্যু বন্ধ করে পুরো একটা দেশকে যে পঙ্গু বানিয়ে দেয়া যায় ২০১৪ এর নভেম্বরের ঘটনা ছিলো এর একটা ডেমো।
.
৫। বলছিলাম আরবি পত্রিকার চিরকুটের কথা... সেখানে একটা অদ্ভুত তথ্য পেলাম। পরে নেটে এসে ইংলিশ নিউজপেপারগুলো ঘেটে দেখলাম ব্যাপার ১০০% সত্য।
 (কিছু নিউজ লিংক কমেন্টে দিবনি) ""২০১৩ সালের অক্টোবর মাসে বাংলাদেশ ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি শুরু করে। তার একবছর যেতে না যেতেই যে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র দিয়ে ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি হচ্ছিলো সেটায় গোলযোগ দেখা দেয় (পড়ুন গোলযোগ সৃষ্টি করা হয়) আর একারনেই সারা বাংলাদেশ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকে কয়েকদিন।""
কি বুঝলেন ?
 এবার বলুন তো, সেই বিদ্যুৎ বিভ্রাট নিয়ে আমার ব্যাখ্যাটা কি উড়িয়ে দিতে পারবেন?
.
৬। আবার শুরুর সেই কথায় চলে যাই...
আপনার সামনে আপনার বাবা মা, স্ত্রী সন্তান পানির পিপাসায় ছটফট করছে। দরজার বাহিরে দাজ্জাল পানি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
কি করবেন আপনি?

দাজ্জালকে প্রভু হিসেবে মেনে নিবেন? নাকি নিজের চোখের সামনে বাবা মা, স্ত্রী সন্তানকে পানির যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে মরতে দেখেবেন?
চ্যুজ ইওর অপশন...


- ৮ আগস্ট ২০১৬
ফেবু লিংক https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1048326735256856&id=100002386190185
Share:

0 comments:

Post a Comment