February 16, 2019

কিছুই কি করার নেই?

[ক]
নতুন কিছু অভিজ্ঞতা হচ্ছে, মাথা ভারি হচ্ছে। দুশ্চিন্তা আর হতাশা বাড়ে না কমে বুঝছি না। তবে একপ্রকার মজায় আছি। কারণ বুঝে নিয়েছি, আপাতত আমার বিয়ে হচ্ছে না! আপনি হাসছেন তাইনা? হাসুন, আমিও হাসি।
আজ কিছু হালকা গল্প করি, গুরুগম্ভীর উপদেশ দেয়ার দিন কি আর আছে বলেন?
[খ]
প্রশ্ন হল, বিয়ের জন্য ফ্যান্টাসিতে কারা ভোগে বেশি? আচ্ছা, এটায় পরে আসি। ফ্যান্টাসিতে কেন ভুগবে? কারণ, এখানেই সমাধান আছে। যেমন ধরেন, কেউ আর্থিক কষ্টে আছে, তার মনের চাওয়া এটাই হবে কিছু টাকা হোক, অভাবটা ঘুচে যাক। তো এটা কারও জন্য সাধারণ চাওয়া, কারও জন্য ফ্যান্টাসি। কারণ, সবার অভাব ঘুচবে না। অনেক মানুষ এমন থাকবেই, যাদের সবসময়ই কমবেশি অভাবকে সঙ্গী করে বাচতে হবে।
এখন আমি যদি তাকে তাচ্ছিল্য করি, সে চাকুরী বা কাজের খোজে রাতদিন ঘুরছে দেখে ঠাট্টা করি, বিষয়টা কেমন?
ভালো?  মনে হয় না।
[গ]
অনেকেই বলেন কথাটা, “দ্বীনের পথে নতুন এসে ছেলেরা দুই ধরণের ফ্যান্টাসিতে ভোগে ১. জিহাদ নিয়ে ২. বিয়ে নিয়ে।” একটা মাত্রা পর্যন্ত কথাটা সত্য, কিন্তু কারও কারও ক্ষেত্রে এটা নিষ্ঠুর সত্য। খুবই নিষ্ঠুর…
হয়তো বোঝাতে পারলাম না!
আপনাকে আমি কিভাবে সেই মেয়ের পরিস্থিতি বোঝাবো? যার পাশের ঘরে দিনে অন্তত ১০ঘন্টা টিভি চলে, গান বাজে। কিন্তু সে শুধুমাত্র আল্লাহর ভয়ে কয়েক মাস হল টিভির স্ক্রিনের দিকেই তাকায়নি। সে যদি একটা নিরাপদ ঠিকানার আশায় হন্য হয়ে ঘুরে, যেখানে সে নিজ রবের সামনে নির্বিঘ্নে সাজদা করতে পারবে, এটা অপরাধ? নাকি তাকে নিয়ে ফান করা উচিত?
আমি সেই ছেলের কথা আপনাকে কিভাবে বোঝাই? যে সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং চাইলেই কতজনের সাথে রিলেশনে জড়াতে পারে, আরও কত কি করতে পারে, কিন্তু সে আল্লাহর জন্য সবর করছে। তার সহপাঠীরা যখন গফের সাথে রাতভর কথা বলছে, তখন সে আল্লাহকে বলছে “মাবুদ গো! একটা ভাল সঙ্গী মিলাইয়া দাও! রিযকের একটা ব্যবস্থা করে দাও, যেন আমি দায়িত্ব নিতে সক্ষম হই।”
আসুন! এই ছেলেটা যখন বিয়ের ব্যাপারে আফসোস করবে, ক্ষণিকের জন্য আবেগের ওপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে আমাদের সামনে কিছু বলে ফেলবে, তখন তার জন্য দোয়া না করে, তাকে নিয়ে ফান করি।
ইনশাআল্লাহ বহুত ফায়দা হবে!
আর জিহাদ নিয়ে অন্যদিন বলি, ওকে?
[ঘ]
দ্বীনের ওপর টিকে থাকতে কোমর একটু শক্ত হওয়া উচিত। নইলে এই ফিতনার বর্ষায়, বাচতে পারবেন না! বানের সাথে ভেসে যাবেন।
অনেক দ্বীনি ভাই – বোনরা পরিবারকে না জানিয়ে বিয়ে করছেন। সেদিন এক ভাই এটা নিয়ে ফান করলেন, আমার খুব কষ্ট লেগেছে। উনি কিভাবে বুঝবে দ্বীনের বুঝ পাওয়া সেই বোনের অবস্থা, যে যৌবনের ১০টা বছর ইতিমধ্যেই পার করে এসেছে, কলেজ-ভার্সিটির পড়া শেষ করে এসেছে, কিন্তু তার পরিবার চায় “সে পরিবারের জন্য কিছু করুক! চৌদ্দগোষ্ঠির নাম উজ্জ্বল করুক”
যেন বংশে না ফুটানোর কোন পুরুষ নাই, সব কাপুরুষ। অথবা পরিবার না খেয়ে মরছে, মেয়ের হাতের কামাই না হলে বাঁচানো সম্ভব না।
আমি এধরণের পরিবারের অমতে বিয়ে করাকে স্ট্রংলি সাপোর্ট করি, ওয়াল্লাহি!
[ঙ]
সোসাইটির গুল্লি মারেন। কোন সমাজের তোয়াক্কা করেন? যেখানে একটা ছেলে দাড়ি রাখলে বা একটা মেয়ে পর্দা শুরু করলে “মাথা গেছে! শেষ! গেল! আহ!” টাইপের হাজারো কথা শোনায়। এগুলা কুফর না?!
কাদের পরোয়া করেন এখনও?
আমাদের রব বলেছেন “আল্লাহ কি তাঁর বান্দার জন্য যথেষ্ট না? অথচ তারা তোমাকে আল্লাহ ছাড়া অন্য উপাস্যদের ভয় দেখায়। আসলে আল্লাহ যাকে গোমরাহ করেন তাকে কেউ পথ দেখাতে পারে না।” (সুরা যুমার, আয়াত: ৩৬)
.
ভাই বিয়ে করে ফেলেন, বিয়ে করে ফেলেন। সম্ভব হলে অন্যদের বিয়েতে সহায়তা করেন।
বিশেষত: বোনগুলোর প্রতি সদয় হোন, দ্বীনের পথে এসে তাদের অনেক কষ্ট করতে হয়।
আল্লাহ যেন আমাদেরকে তার সন্তুষ্টির ওপর বাচার তাওফিক দেন…
Share:

1 comment:

  1. فَإِنَّ مَعَ الْعُسْرِ يُسْرًا

    ReplyDelete