রুকইয়াহ নিয়ে যত কথা - ২
- উম্মে আব্দুল্লাহ
------------
রুকিয়া নিয়ে এত্ত এত্ত পোষ্ট দেয়ার পরেও সবাই যখন জিজ্ঞেস করে
-রুকিয়া কি??
-এইটা কি শিরক??
তখন আর উত্তর দেয়ার কিছু খুঁজে পাইনা।
Abdullah Almahmud এবং Jumana Puspo আপু উভয়েই তাদের পোষ্টে রুকিয়া কি তা বেশ ভালোভাবেই ব্যাখ্যা করেছেন।
তবুও এখনো প্রশ্ন রুকিয়া কি??
[ক]
রুকিয়া
রুকিয়া অর্থ শরিয়াসম্মত ঝাড়ফুঁক।
আর এই ঝাড়ফুঁক কথাটা শুনার পর থেকে অনেকের মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে রুকিয়া শিরক/কুফর নাকি অন্য কিছু??
যাদের মনে এমন সংশয় আছে তাদের কাছে আমার প্রশ্ন রুকিয়ার আয়াতগুলা খেয়াল করে শুনেছেন কি???
আর না শুনে থাকলে দয়া করে আবার শুনুন। আর না পারলে আয়াত লিস্ট খানা দেখে নিন....
সেখানে শিরক কুফুরের মত কোন কথা আছে কি??!!!??
বরং এই আয়াতগুলাই আমরা বিভিন্ন সময় পাঠ করে থাকি।
যেইগুলা কুর'আনুল কারীম থেকে আর প্রিয় নবীর পঠিত দুআ গুলো থেকে নেয়া।
.
[খ]
আবার অনেকেই বলেন রুকিয়ার আয়াতগুলা পড়া হয়না কেন??
এক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো রুকিয়া শুনার থেকে পড়াকেই বেশি উত্তম বলা হয়। শুয়ে, বসে যে কোন সময়েই আপনি রুকিয়ার আয়াত তিলাওয়াত করতে পারবেন। কিন্তু সবাই তো কুর'আনে হাফেজ না তাই এইটা সম্ভব না।
আর একনাগাড়ে এইভাবে তিলাওয়াত করাও সবার জন্য সম্ভব না। সুতরাং বুঝতেই পারছেন কেন রুকিয়া শুনার কথা বলা হয়...
.
[গ]
রুকিয়া শুনে কি লাভ??
কিভাবে এইটা সমস্যার সমাধান করবে??
রুকিয়ার যে আয়াতগুলো সেগুলা সব কুর'আনুল কারীমের আয়াত। আর আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা'আলার বড়ত্ব, জাহান্নামের কথা, শয়তানের কথা এবং আখিরাতের কথা বলা হয়েছে যেটাতে শয়তানের কষ্ট হয় আর এতে শিফা লাভ হয়।
একইভাবে যাদু এবং জ্বীনের আয়াতের দ্বারা আল্লাহ্ তা'আলা এগুলো দুর করে দিবেন ইনশাআল্লাহ....
.
[ঘ]
রুকিয়া শুনার নিয়ম এবং পুর্বশর্ত : দুঃখজনক হলেও সত্যি রুকিয়া পোষ্ট দেখার পর থেকে আপুরা এর মাধ্যমে শিফা লাভের চেষ্টা করছেন ঠিকই কিন্তু এর শর্তগুলো পুরন করছেন না।
√√আপনাদের এইটা ভুলে গেলে হবেনা শিফা দানের মালিক একমাত্র আল্লাহ্, রুকিয়া না।
√√ রুকিয়া করার পুর্বশর্ত ছিলো হারাম থেকে বাঁচা। যেমন -বিয়ে বহির্ভুত সকল হারাম সম্পর্ক থেকে দূরে থাকা। সেটা হতে পারে তথাকথিত গফ,জফ কিংবা বেস্ট ফ্রেন্ডের ট্যাগ লাগানো কোন গাইরে মাহরাম।
√√ এরপর পর্দার মধ্যে থাকা।
রুগীকে অবশ্যই পর্দা করতে হবে। শুধু রুকিয়ার জন্য না পর্দা তো আমাদের জন্য ফরজ তাইনা আপুরা?
এমন অনেক আপু আছেন যাদের প্রোফাইল পিকচারে এখনো নিজেদের ফোটো আছে তারা এখনই সেগুলা চেঞ্জ করে ফেলুন।
.
√√ আরেকটা গুরুত্বপুর্ন বিষয় হলো নিয়্যাত।
আপনি কি সমস্যার জন্য শুনছেন তারজন্য অবশ্যই নিয়্যাত করে নিবেন।
শারীরিক সমস্যার জন্য আলাদা পারিবারিক সমস্যার জন্য আলাদা করে নিয়্যাত করবেন।
এবং একজন ব্যক্তি একবারে একজনের জন্যই নিয়্যাত করবেন।
.
√√ সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করা। মনে রাখবেন শিফা দানের মালিক একমাত্র আল্লাহ্, কোন মানুষ বা অন্য কিছু নয়।
::::::::::::::::::::::
[ঙ]
গুরুত্বপুর্ন কিছু বিষয় : ইনবক্সে বেশিরভাগই আপুরই অভিযোগ যে তাদের নামাজ-কালামে মন নেই।
অনেকে ওযু করে এসেও নামাজ পড়তে পারেন না। তাদের উদ্দেশ্যে বলছি বদনজর, যাদু-টোনা, জ্বীন জাতীয় সমস্যার একটি কমন উপসর্গ এইটা। সুতরাং নিরাশ না হয়ে সর্বচ্চ চেষ্টা করতে হবে আপুরা।
নামাজই হচ্ছে সকল সমাধানের মাধ্যম।
আল্লাহ্ সুবহানু তা'আলা তো কুর'আনুল কারীমেই ইরশাদ করেছেন__
"ধৈর্য্যর সাথে সাহায্য প্রার্থনা কর নামাযের মাধ্যমে। অবশ্য তা যথেষ্ট কঠিন। কিন্তু সে সমস্ত বিনয়ী লোকদের পক্ষেই তা সম্ভব।"
- সূরা আল-বাকারাঃ ৪৫
নামাজের মত ফরজ ইবাদাতকে কাযা করে শয়তানকে জয়ী হতে দিবেন না।
মনে রাখবেন আপনি যতই রুকিয়া শুনেন আর যাই করেন যদি আপনার নামাজ ঠিক না থাকে তাহলে কিছুই ঠিক থাকলোনা।
এর সাথে মাসনুন দু'আ গুলো ঠিকঠাক মতো পড়েন। আর শেষ রাতে রবের দরবারে ফরিয়াদ জানান। মন খুলে কথা বলুন তাঁর সাথে। আপনার সকল প্রয়োজনের কথা বলুন, সাহায্য চান, শিফা চান..
ইনশাআল্লাহ আপনি সম্পুর্ন শিফা লাভ করবেন...
0 comments:
Post a Comment