December 24, 2016

আল্লাহর রং!

পোস্টের শুরুর অংশে তথ্যগত ভুল ছিল, কমেন্টে কোনো ভাই শুধরে দেয়ায় সেটা মুছে দেয়া হয়েছে..
.
আমাদের সামনে সহীহ হাদিসের উদাহরণ বিদ্যমান!
পারস্য সম্রাট একটা লোককে পাঠিয়েছে। যাও মুহাম্মদকে ধরে নিয়ে এসো!! ভেবেছে ছোট্ট একটা শহরের প্রধান.. এ আর তেমন কী।
আদিষ্ট ব্যক্তি রাসূল সা. এর দরবারে হাজির, আমাদের প্রিয় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে দেখেই মুখ ফিরিয়ে নিলেন। বললেন- "এর তো দাড়ি শেইভ করা! আমাদের দেশে এর প্রচলন নাই, তার দিকে আমার তাকাতেও ইচ্ছা হচ্ছে না!!"
.
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাধ্যমে আল্লাহ মানুষকে শুধু শিরক বর্জন, ইমান আনয়ন আর নামাজ রোজার শিক্ষাই দেননি। বরং পৃথিবীকে উপহার দিয়েছেন পুর্ণাঙ্গ একটি জীবনদর্শন বা লাইফস্টাইল।
এখানে এমন কিছু সুক্ষ্ম বিষয় আছে, যেগুলো অনেক বিজ্ঞজনের দৃষ্টিও এড়িয়ে যায়। এজন্য অবলীলায় বলে ফেলি- 'এটাতো ফরজ কিংবা ওয়াজিব না!' কোটপ্যান্ট পরতে না করলে বলি বসি- 'এটাতো হারাম না!'
হ্যা! কোনো মুফতি সাহেবকে জিজ্ঞেস করলে তিনিও আপনাকে "জায়েজ" ফাতওয়াই দিবেন, কিন্তু এর পেছনে যে বিষয়টা সুপ্ত থাকে তা হচ্ছে- ইসলামিক লাইফস্টাইল। আল্লাহর কাছে এর মর্যাদা অপরিসীম।
.
ঈশ্বরকে যেমন ম্যাথম্যাটিকস আর ফিজিক্স দিয়ে সংজ্ঞায়িত করা সম্ভব না, তেমনি ফিকহের হালাল-হারাম, জায়েজ-নাজায়েজ এসব শব্দগুলো দ্বারাও এটাকে পরিপূর্ণ সংজ্ঞায়িত করা সম্ভব না। আর এই বিষয়টা শুধু বিবেক দিয়ে বুঝা সম্ভব না, অন্তরের প্রয়োজন!
ফিতনার সময়ের একটা সুন্নাত যিন্দা করলে ৭০জন শহিদের ফজিলত, এই হাদিস আমার চেয়ে তো আপনারাই ভালো জানেন!
.
একটা বিষয় কি জানেন? ছোটখাটো ইবাদতের মত এসবের প্রভাব শুধু ব্যক্তি জীবনে সীমাবদ্ধ নয় বরং সমাজ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে দুনিয়াময় বিস্তৃত, সমগ্র উম্মাহ এর সুফল বা কুফল ভোগ করে।
গত শতাব্দীর তুরষ্ক দেখা লাগবে না, বরং গতবছর টঙ্গির IUBIT এর ঘটনাতেই আমাদের জন্য অনেক শিক্ষার উপাদান আছে।
.
সত্যি বলতে আমি সবসময় চেষ্টা করি আমার চিন্তা-চেতনা, বিশ্বাস, দর্শন এসব বিভিন্নভাবে আমার চারপাশের মানুষদের ভেতরে ইনজেক্ট করে দিতে। একটা উদাহরণ নিন-
আমি মামা/খালাবাড়ি গেলাম। কোনো ভাই/বোন জিজ্ঞেস করলো, "কখন আসলি?"
বললাম- "এই আসরের একটু আগে!"
এখানে উত্তর হতে পারতো সাড়ে তিনটা চারটার দিকে এসেছি। কিন্তু আমি এটা ব্যাবহার না করে আমার কথায় একটা ইসলামিক আচারের নাম ব্যাবহার করলাম। এখানে দুইটা ফায়দা ১. সে নামাজ না পড়লে এই এক শব্দে তাকে নামাজের দাওয়াত দেয়া হয়ে গেলো ২. আর আরো বড় কথা হচ্ছে একটা ইসলামিক শি'আর এর প্রচলন করা হলো।
.
কোরআন থেকে উদাহরণ নিন-
দ কখন কখন ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের ঘরে প্রবেশ করতেও অনুমতি নিতে হবে, এটা আল্লাহ বলছেন কিভাবে-
 ""ফজরের নামাযের পূর্বে, যোহরের সময় (মানে যোহরের পরে বিশ্রামের সময়) যখন তোমরা বস্ত্র খুলে রাখ এবং এশার নামাযের পর। এই তিন সময় তোমাদের দেহ খোলার সময়। এ সময়ের পর তোমাদের বা তাদের জন্য কোন সমস্যা নেই। তোমাদের একে অপরের কাছে যাতায়াত তো করতেই হয়, এমনি ভাবে আল্লাহ তোমাদের কাছে সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ বিবৃত করেন। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।"" (সূরা নূর, আয়াত ৫৮)
.
সুবহানাল্লাহ!! আল্লাহ তা'আলা নিজেও এই স্টাইলে সময়কে ব্যক্ত করেছেন, আপনারাও চাইলে সময়কে এভাবে সময় বলে ইসলামের একটা শি'আর বুলন্দ করতে পারেন, ।।
.
আসুন একসাথে তিলাওয়াত করি...
.
صِبْغَةَ اللَّهِ ۖ وَمَنْ أَحْسَنُ مِنَ اللَّهِ صِبْغَةً ۖ وَنَحْنُ لَهُ عَابِدُونَ
আমরা আল্লাহর রং গ্রহণ করেছি। আল্লাহর রং এর চাইতে উত্তম রং কার হতে পারে? আর আমরা তাঁরই এবাদত করি। (সূরা বাকারা, আয়াত ১৩৮)
.
- ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬
ফেবুতে- https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1179870365435825&id=100002386190185 
Share:

0 comments:

Post a Comment