বই নিয়ে কিছু কথা - ১
---
[ক]
আর মাত্র ক'টা দিন, আমার মনে হয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ন বিষয় নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করা উচিত। লেকচার না! এই ধরেন চা-বিস্কিট খেতে খেতে কিছু গল্পগুজব করার মত, আরকি...
আর মাত্র ক'টা দিন, আমার মনে হয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ন বিষয় নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করা উচিত। লেকচার না! এই ধরেন চা-বিস্কিট খেতে খেতে কিছু গল্পগুজব করার মত, আরকি...
তবে আমি সময় বেশি পাইনা তো.. তাই কয়েকবারে অল্প অল্প করে কিছু কথা লিখব ইনশাআল্লাহ।
[খ]
বইটা কাদের জন্য?
- রুকইয়াহ বিষয়ে বিগেনার টু ইন্টারমিডিয়েট, মোটামুটি সবার জন্যই!
বইটা কাদের জন্য?
- রুকইয়াহ বিষয়ে বিগেনার টু ইন্টারমিডিয়েট, মোটামুটি সবার জন্যই!
[গ]
কেউ যদি জিজ্ঞেস করেই বসে, ভাই "রুকইয়াহ" বইটার বিশেষত্ব কি? অথবা এটায় এমন কি আছে যা অন্য কোন বইয়ের মধ্যে নাই।
কেউ যদি জিজ্ঞেস করেই বসে, ভাই "রুকইয়াহ" বইটার বিশেষত্ব কি? অথবা এটায় এমন কি আছে যা অন্য কোন বইয়ের মধ্যে নাই।
- আমি এখানে প্রয়োজনীয় সব বিষয়ের খোলাসা জমা করতে চেষ্টা করেছি। তবে অন্তত দুই - তিনটা বিষয়ে এখানে এমন কন্টেন্ট আছে যা অন্য কোন বইয়ে আমার চোখে পড়েনি।
১. রুকইয়াহ বিষয়ে মৌলিক আলোচনা..
২. বদনজর বিষয়ে বিস্তারিত..
৩. ওয়াসওয়াসা রোগ - নিয়ে মোটামুটি আলোচনা!
১. রুকইয়াহ বিষয়ে মৌলিক আলোচনা..
২. বদনজর বিষয়ে বিস্তারিত..
৩. ওয়াসওয়াসা রোগ - নিয়ে মোটামুটি আলোচনা!
তবে সত্যি কথা হচ্ছে, ওয়াসওয়াসা নিয়ে আরও অনেক অনেক কাজ বাকি আছে। আমি করতে পারলে ভালো লাগতো...
[ঘ]
বই নিয়ে জমে থাকা প্রশ্ন-
- আমার "xyz" সমস্যা, এই বইয়ে কি সমাধান থাকবে?
- ফেসবুকের সব লেখা কি থাকবে?
- ফেসবুকের লেখাগুলোই থাকবে?
- এত দেরি হচ্ছে কেন?
- কবে আসছে?
বই নিয়ে জমে থাকা প্রশ্ন-
- আমার "xyz" সমস্যা, এই বইয়ে কি সমাধান থাকবে?
- ফেসবুকের সব লেখা কি থাকবে?
- ফেসবুকের লেখাগুলোই থাকবে?
- এত দেরি হচ্ছে কেন?
- কবে আসছে?
এগুলোর উত্তর আগামীতে দিব ইনশাআল্লাহ...
আপনার কোন প্রশ্ন আছে?
আপনার কোন প্রশ্ন আছে?
বই নিয়ে কিছু কথা - ২
----
[ক]
ঘটনা-১ঃ
...জিনটা বললঃ I'll kill you!
আমি বললামঃ চিল্লাইস না! আস্তে কথা বল!
...জিনটা বললঃ I'll kill you!
আমি বললামঃ চিল্লাইস না! আস্তে কথা বল!
ঘটনা-২ঃ
জিন বললঃ তোকে রাজশাহী থেকে আসতে মানা করেছিলাম, তাও তুই এসেছিস!
বললামঃ ধুর! তুই কোন ঘোড়া ডিমরে? তোর কথা আমি শুনব, ফাইজলামি?
জিন বললঃ তোকে রাজশাহী থেকে আসতে মানা করেছিলাম, তাও তুই এসেছিস!
বললামঃ ধুর! তুই কোন ঘোড়া ডিমরে? তোর কথা আমি শুনব, ফাইজলামি?
ঘটনা-৩ঃ
বললাম- তুই হয়তো চিরদিনের জন্য চলে যাবি, নইলে এখানেই মরবি।
জিনঃ না না, আমি এরে ছাড়া বাচবো না। আমাকে তাড়াইস না!
- উহু, এর সাথে থাকা যাবে না। আমি যা বললাম সেটাই শুনবি। নইলে দেখ কেমন মজা লাগে...
[বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম..... ফালাম তাক্বতুলূহুম ওয়ালা কিন্নাল্লাহা ক্বতালাহুম...]
- থাম থাম থাম, আমি চলে যাব, ১মাস পর আসবো।
- উহু, হবে না
[আবার তিলাওয়াত শুরু]
- ২মাস, ৫মাস, ৬মাস, ১০মাস, ১বছর! এক বছর পরপর আসব, এর মধ্যে কোন বিরক্ত করব না।
[তিলাওয়াত চলছে]
- আ আ (চিৎকার) থাম থাম! প্লিইইজ থাম। ৫বছর।
- উহু! একদম যাবি, নইলে মরবি।
- আচ্ছা, চিরদিনের জন্য যাচ্ছি। আর কখনো আসবো না।
- ওয়াদা কর।
- হ্যা, ওয়াদা করলাম।
বললাম- তুই হয়তো চিরদিনের জন্য চলে যাবি, নইলে এখানেই মরবি।
জিনঃ না না, আমি এরে ছাড়া বাচবো না। আমাকে তাড়াইস না!
- উহু, এর সাথে থাকা যাবে না। আমি যা বললাম সেটাই শুনবি। নইলে দেখ কেমন মজা লাগে...
[বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম..... ফালাম তাক্বতুলূহুম ওয়ালা কিন্নাল্লাহা ক্বতালাহুম...]
- থাম থাম থাম, আমি চলে যাব, ১মাস পর আসবো।
- উহু, হবে না
[আবার তিলাওয়াত শুরু]
- ২মাস, ৫মাস, ৬মাস, ১০মাস, ১বছর! এক বছর পরপর আসব, এর মধ্যে কোন বিরক্ত করব না।
[তিলাওয়াত চলছে]
- আ আ (চিৎকার) থাম থাম! প্লিইইজ থাম। ৫বছর।
- উহু! একদম যাবি, নইলে মরবি।
- আচ্ছা, চিরদিনের জন্য যাচ্ছি। আর কখনো আসবো না।
- ওয়াদা কর।
- হ্যা, ওয়াদা করলাম।
[খ]
একদম ছোটবেলায় দেখেছিলাম, এক সহপাঠিকে জ্বিনে ধরেছিল। কোন দোষ ছিল না তার। শুধুমাত্র দুপুর বেলা ছাদে গিয়েছিল, ব্যাস এতটুকুই!
কয়েক সপ্তাহ কি যে কষ্ট করল তার পরিবার। পরে ছেলেটা আর পড়তেই পারলো না।
বিষয়টা মনে পড়লে খুব খারাপ লাগতো, এখনও লাগে।
একদম ছোটবেলায় দেখেছিলাম, এক সহপাঠিকে জ্বিনে ধরেছিল। কোন দোষ ছিল না তার। শুধুমাত্র দুপুর বেলা ছাদে গিয়েছিল, ব্যাস এতটুকুই!
কয়েক সপ্তাহ কি যে কষ্ট করল তার পরিবার। পরে ছেলেটা আর পড়তেই পারলো না।
বিষয়টা মনে পড়লে খুব খারাপ লাগতো, এখনও লাগে।
দু-তিন বছর আগে একটা গল্প শুনেছিলাম, শেষটা এরকম- একটা মেয়ে পুকুরে পা ধুতে নেমেছিল, আর জিনে ধরেছে। পরে মেয়েটা পুকুরের পাড়ে বসে থাকতো, মেয়েটার পায়ে শেকল বাধা ছিল। কাউকে চিনত না। কয়েকদিন পর চিরদিনের জন্য মেয়েটা পুকুরের মধ্যে চলে যায়।
সত্য মিথ্যা যাইহোক, এই গল্প শোনার পর আমি খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। মনে হচ্ছিল মানুষ কি এতটাই অসহায়, শয়তানরা যা খুশি করবে। কিছুই করার থাকবে না?
আমার খুব ঘনিষ্ঠ এক বন্ধুর ভাতিজিকে এক শয়তান লোক জাদু করে বশ করে বিয়ে করেছিল। এটা শোনার পর খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। প্রচণ্ড ঘৃণা জন্ম নিয়েছিল জাদু আর জাদুকর চর্চাকারী কবিরাজদের প্রতি।
এসব কি? ছিহ!
বারবার মনে হচ্ছিল, এসব শয়তানি শক্তিগুলোর সামনে আমাদের কি কিছুই করার নাই?
বারবার মনে হচ্ছিল, এসব শয়তানি শক্তিগুলোর সামনে আমাদের কি কিছুই করার নাই?
[গ]
শয়তান জিনের ওপর রুকইয়াহ করলে যখন অলমোস্ট পায়ে পড়ে মাফ চায়, সত্যি কথা জানেন? পেছনের ঘটনাগুলো মনে পড়লে, মাফ করতে মন চায় না। মনে হয় মেরে ফেলি।
শয়তান জিনের ওপর রুকইয়াহ করলে যখন অলমোস্ট পায়ে পড়ে মাফ চায়, সত্যি কথা জানেন? পেছনের ঘটনাগুলো মনে পড়লে, মাফ করতে মন চায় না। মনে হয় মেরে ফেলি।
আর বলতে ইচ্ছা হয়, তোদের সবচেয়ে বড় শয়তানটাকে ডেকে নিয়ে আয়, সাথে তার অনুসারী সবগুলোকে।
আমি দেখতে চাই, আমার রবের কালামের সামনে তারা কিভাবে দাঁড়ায়!
আমি দেখতে চাই, আমার রবের কালামের সামনে তারা কিভাবে দাঁড়ায়!
থাক, আজ আর কথা না বাড়াই। এরকম অনেকগুলো সুখ-দুখের ঘটনা ছিল রুকইয়া নিয়ে কাজ করার পেছনে মোটিভেশন। প্রকাশিতব্য বইটি ফলো করলে, আশা করি আপনিও শয়তানদের দৌড়ের ওপর রাখতে পারবেন।
তাহলে আপনি কি প্রস্তুত, অন্ধকার হটিয়ে আলো ফিরিয়ে আনার অভিযানে আমাদের সঙ্গী হতে?
শিঘ্রই আসছে ইনশাআল্লাহ...
বই নিয়ে কিছু কথা - ৩
---
[ক]
"তিনি তোমাকে পেয়েছিলেন পথহারা, অতঃপর পথপ্রদর্শন করেছেন"।
.
উপরের এবং নিচের কথাগুলো বইয়ের ভূমিকাতে লিখেছিলাম, পরে অহেতুক দীর্ঘ হয়ে যাচ্ছে বুঝতে পারে বাদ দিয়েছি।
আর ঠিক করেছি, গল্প আলাপ বইয়ে সংক্ষেপে দুইচার লাইনে শেষ করে দিয়ে ফেবুতে দিলখুলে বলব।
চলুন শুরু করা যাক...
"তিনি তোমাকে পেয়েছিলেন পথহারা, অতঃপর পথপ্রদর্শন করেছেন"।
.
উপরের এবং নিচের কথাগুলো বইয়ের ভূমিকাতে লিখেছিলাম, পরে অহেতুক দীর্ঘ হয়ে যাচ্ছে বুঝতে পারে বাদ দিয়েছি।
আর ঠিক করেছি, গল্প আলাপ বইয়ে সংক্ষেপে দুইচার লাইনে শেষ করে দিয়ে ফেবুতে দিলখুলে বলব।
চলুন শুরু করা যাক...
[খ]
শুরুর গল্প...
রুকইয়াহ শারইয়্যাহ নিয়ে আমভাবে কাজ শুরু করার দুই বছর পূর্ণ হল। মানে কদিন পরেই হবে!
এত অল্প সময়ে কিভাবে এতকিছু হয়ে গেল তা শুধু আমার রব আল্লাহই জানেন।
শুরুটা হয়েছিল ২০১৬ সালের ঈদুল আযহার ছুটিতে। বড় মামার বাড়িতে গিয়ে ভাগিনার কাছে কিছু গল্প পেয়েছিলাম- যাদু, যাদুকর বিষয়ে। হঠাৎ মনেহল এই বিষয়ে পড়াশুনা করা দরকার। কিন্তু কোন পথ খুজে পাচ্ছিলাম না। রাতে বাড়ি ফিরে ফেসবুকে পোস্ট করলাম, "যাদু বিষয়ে বিজ্ঞ আলেমদের কোন লেখা, লেকচার কারও জানা থাকলে সাজেস্ট করেন প্লীজ"।
শুরুর গল্প...
রুকইয়াহ শারইয়্যাহ নিয়ে আমভাবে কাজ শুরু করার দুই বছর পূর্ণ হল। মানে কদিন পরেই হবে!
এত অল্প সময়ে কিভাবে এতকিছু হয়ে গেল তা শুধু আমার রব আল্লাহই জানেন।
শুরুটা হয়েছিল ২০১৬ সালের ঈদুল আযহার ছুটিতে। বড় মামার বাড়িতে গিয়ে ভাগিনার কাছে কিছু গল্প পেয়েছিলাম- যাদু, যাদুকর বিষয়ে। হঠাৎ মনেহল এই বিষয়ে পড়াশুনা করা দরকার। কিন্তু কোন পথ খুজে পাচ্ছিলাম না। রাতে বাড়ি ফিরে ফেসবুকে পোস্ট করলাম, "যাদু বিষয়ে বিজ্ঞ আলেমদের কোন লেখা, লেকচার কারও জানা থাকলে সাজেস্ট করেন প্লীজ"।
কিছু ই-বুক আর লেকচার পেলাম। কিন্তু পরে সেগুলো আর দেখা হয় নি। এক ভাই বললেন, তাফসিরে ইবনে কাসীর থেকে সুরা বাকারার ১০২ নং আয়াতের তাফসির পড়; পড়লাম। খুব ভাল লেগেছিল। ছুটি শেষ হবার আগেই ৫-৬ টি তাফসীর গ্রন্থ খুজে এই আয়াতের তাফসির পড়ে ফেললাম। প্রায় সব মুফাসসিরই এই আয়ত নিয়ে দীর্ঘ ও চমৎকার আলোচনা করেছেন। কিন্তু আমার তৃপ্তি মিলল না, আমি আরও কিছু খুজছিলাম!
(পরে মাদ্রাসার তাফসির বিভাগে গিয়ে আরও কয়েকটা থেকে পড়েছিলাম)
(পরে মাদ্রাসার তাফসির বিভাগে গিয়ে আরও কয়েকটা থেকে পড়েছিলাম)
[গ]
এরই মধ্যে ছুটি শেষ হয়ে গেল। আমি এবং আবু উবাইদা ভাই চিটাগাং যাচ্ছিলাম। দুজনে বাসের সামনে সীটে বসে গল্প করছিলাম।
এরই মধ্যে ছুটি শেষ হয়ে গেল। আমি এবং আবু উবাইদা ভাই চিটাগাং যাচ্ছিলাম। দুজনে বাসের সামনে সীটে বসে গল্প করছিলাম।
আমার পরিচিত ভাইব্রাদারদের মধ্যে Abu Obaida ভাই একজন বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী মানুষ! (আল্লাহ উনার ঈমান আমলে বরকত দিক) সব আজব আজব বিষয়ের জ্ঞান; এপিক, ইউনিক এবং বিরল সব কন্টেন্ট এর কালেকশন থাকতো উনার কাছে।
যাহোক, বাড়িতে কেমন দিনকাল কাটলো তা নিয়ে কথা বলছিলাম। কথা প্রসঙ্গে বললাম, "এবার বাড়িতে গিয়ে যাদু টপিকে মুতালায়া করেছি। আমাদের ভালো কোন আলেমের এই বিষয়ে বয়ানের কথা আপনার জানা আছে?"
উনি বললেন, "যাদু-টাদু নিয়ে তো কতজনই বলে। এরচে' ভয়াবহ ব্যাপার কি জানো?
- কি?
- বদনজর। আচ্ছা ডেটা ব্যালেন্স থাকলে তুমি "মুফতি জুনাইদ মুম্বাই" লিখে সার্চ করো।" করলাম।
- কি?
- বদনজর। আচ্ছা ডেটা ব্যালেন্স থাকলে তুমি "মুফতি জুনাইদ মুম্বাই" লিখে সার্চ করো।" করলাম।
আসলো "মুফতি জুনাইদ, মুম্বাই, রুকইয়াহ"। muftisays ফোরামের একটা থ্রেড, সেখানে অনেকজন কথা বলেছে।
- জিজ্ঞেস করলাম, "এটা"
- জিজ্ঞেস করলাম, "এটা"
- "হ্যা এটাই"
- আচ্ছা ভাই, রুকইয়াহ কি?
- রুকইয়াহ তো দারুন জিনিস....!
অনেকগুলা গল্প শুনলাম রুকইয়া বিষয়ের। ওবাইদা ভাই এগুলো মুফতি সাহেবের বয়ানের মধ্যে পেয়েছিলেন। বেশ ইন্টারেস্টিং মনে হল। যে কয়টা লেকচার পেলাম মাদ্রাসায় গিয়ে শুনে ফেলব মর্মে পাক্কা ইরাদা করলাম।
[ঘ]
প্রথমদিকে নিজের এবং উম্মে আব্দুল্লাহ ফুফুর উপর এক্সপেরিমেন্ট করে অকল্পনীয় ফলাফল পেলাম। যদিও তখন তেমন কিছুই বুঝতাম না। শুধু অডিও আর গোসল সম্পর্কে জেনেছিলাম।
তবে তিনটি শব্দ মনে গেঁথে নিয়েছিলাম- "নিয়ত, ইয়াক্বিন, মেহনত"। (বইয়ের শুরুর দিকে এগুলোর ব্যাখ্যা আছে)
প্রথমদিকে নিজের এবং উম্মে আব্দুল্লাহ ফুফুর উপর এক্সপেরিমেন্ট করে অকল্পনীয় ফলাফল পেলাম। যদিও তখন তেমন কিছুই বুঝতাম না। শুধু অডিও আর গোসল সম্পর্কে জেনেছিলাম।
তবে তিনটি শব্দ মনে গেঁথে নিয়েছিলাম- "নিয়ত, ইয়াক্বিন, মেহনত"। (বইয়ের শুরুর দিকে এগুলোর ব্যাখ্যা আছে)
ফুফুর সাথে পরামর্শ করলাম, এবিষয়ে তো বাংলা ভাষায় কন্টেন্ট নাই তেমন, অনুবাদ করে পোস্ট করি? পারলে কর।
কদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিলাম, হ্যা! অনুবাদ করব। তবে হুবহু না। উনায় লেকচার কয়টা একত্র করে পয়েন্ট পয়েন্ট হিসেবে...।
কদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিলাম, হ্যা! অনুবাদ করব। তবে হুবহু না। উনায় লেকচার কয়টা একত্র করে পয়েন্ট পয়েন্ট হিসেবে...।
"বদনজর এবং রুকইয়াহ-১" নামে প্রথম লেখাটি পোস্ট করেছিলাম অক্টোবরের ১০তারিখে, ২০১৬সন।
..
বই নিয়ে কিছু কথা - ৪
------
[ক]
যতদূর মনে পড়ে তখন আমাদের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা কেবল শেষ হয়েছে। শিরোনাম দিলাম “বদনজর (১)” প্রথমদিন শুধু এবিষয়ে কিছু হাদিস লিখেছিলাম একদম সহজ দুচার লাইনের কথার সাথে। প্রথমদিনের রেসপন্স স্বাভাবিকই ছিল। কিছু ভাই অবশ্য স্বীকারোক্তি দিলেন যে, এটাকে তারা নিছক কুসংস্কার ভাবতেন, এই লেখা দেখে ভুল ভাঙলো।
সত্যি কথা হচ্ছে, আমি নিজেও এই দলে ছিলাম। বদনজর কথাটা নিয়ে কত ফান করেছি, কতজনকে ভ্যাঙাইসি তার ইয়ত্তা নাই। কিন্তু রুকইয়া নিয়ে এই বয়ানগুলো শোনার পর মাথা চক্কর দিয়ে উঠেছিল। বিষয়গুলো সত্যিই এরকম? আমি আরেকটা জিনিস নিয়ে ফান করতাম, তা হচ্ছে বোবায় ধরা; এবিষয়টা আরও অনেক পরে সংশোধন হয়েছে।
যাহোক, মুফতি জুনাইদ সাহেবের যে লেকচারগুলো থেকে অনুবাদ করেছিলাম, সেখানে বেশ কিছু ইন্টারেস্টিং গল্প ছিল। ২য় পর্বে তার মধ্য থেকে একদম সংক্ষেপে দুইটা গল্প আর বদনজরের লক্ষণ বললাম। শুরুতে খেয়াল করিনি পোস্টে এত কমেন্ট আর শেয়ার হচ্ছে। ৩য়-৪র্থ পর্বে অনেকগুলো গল্প ছিল।
(লেখাগুলো পরে হাইড করে দিয়েছিলাম, কারণ পরে বুঝেছিলাম উনার লেকচারে অডিও শোনার প্রতি একটু অতিরিক্ত হাইলাইট করা হয়েছে। আর কিছু গল্পে একটু অতিরঞ্জন ছিল। এসব অনুচিত।)
[খ]
যাহোক, ৩য় পর্বে গিয়ে আমি অনুভব করলাম মানুষ এবিষয়ে এমন আগ্রহী, পানির প্রতি যেমনটা একজন পিপাসার্ত আগ্রহী হয়। সবাই আগের দুই লেখাও খুঁজে নিয়ে পড়লো। লেখাগুলো সম্ভবত নাসিহাহ (দ্বীনি পরামর্শ) গ্রুপে আর তালিমুদ্দিন ফাউন্ডেশনের পেইজেও পোস্ট করেছিলাম, এই দুই যায়গা থেকেও বিরাট সাড়া পেলাম। আমার লেখা ফেসবুকের মাঝে নির্দিধায় কপিপেস্টের অনুমতি থাকায় আরও অনেক পেইজ এবং আইডি থেকেই আমার লেখাগুলো পোস্ট করা হচ্ছিল।
খুবই সাধারণ ভাষায় লেখা এই পোস্টগুলো আমার গতানুগতিক পোস্টের চেয়ে অনেকগুণ বেশি রিচ হল। লেখাগুলোর শুরুতেই হাদিস থেকে প্রচুর উদ্ধৃতি থাকায় কারও আপত্তির কিছু ছিল না। প্রচুর কমেন্ট আর মেসেজ আসা শুরু হল। সবাই খালি বলছিল “কিভাবে রুকইয়া করে? কই পাব রুকইয়া? আমারও তো এই এই সমস্যা আছে, আমি কিভাবে রুকইয়া করব?” কেমন যেন মানুষেরা লেখাগুলোর ওপর এভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ল, যেভাবে পঙ্গপাল আগুনের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে…।
৫ম/শেষ পর্ব লিখতে একটু লম্বা সময় লাগলো, লেখাটা এই লেখার চেয়ে ছোট হলেও তখনকার হিসেবে আমার জন্য সেটাই বিরাট পোস্ট ছিল! উপরন্তু মুফতি জুনাইদের লেকচারগুলো বারবার শুনে একদম সব নিংড়ে বের করতে চেষ্টা করেছিলাম, যেন দরকারি কোন কথাই বাদ না পড়ে।
সেখানে সংক্ষেপে কয়েকটা বিষয় ছিল, সেলফ রুকইয়ার তিনটি মূলনীতি (নিয়াত, ইয়াকিন, মেহনত), রুকইয়ার গোসলের নিয়ম (এখন বদনজরের জন্য যে গোসল করতে বলি), আর রুকইয়ার অডিওর লিংক। আমি muftisays,com এর ফোরামে মুফতি জুনাইদের ওই বয়ানগুলো অডিওগুলোর লিংক পেয়েছিলাম।
যাহোক, বদনজর সিরিজটা শেষ করার মোটামুটি একটা প্রাথমিক চিকিৎসা প্যাকেজ তৈরি হয়ে গেল। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল, তখনও আমার নিয়াত সহিহ হয়নি…
[গ]
এরপর সম্ভবত পড়াশোনায় মন দিয়েছিলাম কিছুদিন। পাশাপাশি রুকইয়া বিষয়ে আরবি এবং ইংলিশ কিছু কন্টেন্ট পেয়েছিলাম, সেগুলো মুতালায়া করতাম। ইনবক্সে প্রশ্ন আসতো, উত্তর দিতে চেষ্টা করতাম। নিজে বুঝতে না পারলে অথবা কনফিউশনে ভুগলে উম্মে আব্দুল্লাহ ফুফুর সাথে পরামর্শ করতাম। তখন চেষ্টা করতাম সবার মেসেজের রেসপন্স করতে।
কিন্তু তখন হত কি! ‘ইনবক্সে অনেকের সমস্যার কথাই শুনতাম, কিন্তু ঘুরেফিরে একই পরামর্শ দিতাম। রুকইয়াহ শোনো, গোসল করো। তবে যাদুর সমস্যা থাকলে সাধারণত sihr-mass ওইটা শুনতে বলতাম। যেহেতু রুকইয়ার নামের মধ্যে সিহর লেখা আছে!!’
যাহোক, এখন এগুলো মনে পড়লে বেশ মজা লাগে। জানতাম না খুব বেশি, তবে যতটুকু জেনেছি সেটাকে খুব ইয়াকিনের সাথে প্রচার করেছিলাম।
এর মধ্যে মাদরাসার মাহফিল এবং দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা এগিয়ে এলো…।
[ঘ]
দাওরায়ে হাদীসের বছর আমি হাটহাজারির সবচেয়ে সুবিধাজনক ছাত্রাবাসে ছিলাম, নুর মঞ্জিল। আর আমাদের রুমে ছাত্রও বেশি ছিল না। কে কে যেন বছরের শুরুতে চলে গেল, ব্যাস প্রায় পুরা রুম ফাঁকা! আলহামদুলিল্লাহ, এই ছাত্রাবাসের নির্ঝঞ্ঝাট পরিবেশ আমার ব্যক্তিগত মুতালায়ার ক্ষেত্রে অনেক সহায়তা করেছে। একই ফ্লোরের আরেক ভাই ছিল “শিহাব ভাই।” উফ! উনার সাথে গল্প করলেই দিলখুশ হয়ে যেত, মন-মেজাজ উৎফুল্ল হয়ে যেত। উনি নিজেও সবসময় আনন্দে থাকতেন, আমাদেরকেও আনন্দে রাখতেন। আল্লাহ উনাকে অনেক অনেক বরকত দিক। উনি আমার চেয়ে অনেক ভালো ছাত্র ছিলেন। আরবির কিছু বুঝতে সমস্যা হলে উনার হেল্প নিতাম, আর ইংলিশে সমস্যা হলে ফুফুর হেল্প নিতাম।
আস্তে আস্তে জিন, যাদু, নজর – তিনটা বিষয়েই মোটামুটি ধারনা হচ্ছিল। সেসব বিষয়ে জানছিলাম, মাঝেমাঝে ছোট ছোট পোস্ট দিয়ে কিছু শেয়ার করতাম।
হাটহাজারির বাৎসরিক মাহফিল উপলক্ষে কিছুদিন ক্লাস ছুটি পেয়েছিলাম, এটাকে কাজে লাগালাম। সম্ভবতঃ তখনই “রুকইয়াহ শারইয়াহ” নামে সিরিজ শুরু করেছিলাম। প্রথম অধ্যায়ে বদনজর নিয়ে আগের লেখাগুলোকে নতুন করে ঢেলে সাজালাম, সাথে অন্যান্য বই থেকে অল্প কিছু কথা যোগ হল। এবার কথার মাঝে ফান বাদ দিয়ে একটু সিরিয়াস মুডে উপস্থাপনের চেষ্টা করলাম। আর রুকইয়া শারইয়াহ পরিচিতি এবং এবিষয়ের অনেক হাদিস নিয়ে আলাদা কিছু পোস্ট লেখলাম।
[ঙ]
তখন কয়েকদিনের জন্য বাড়ি গিয়েছিলাম। বাড়ি গিয়ে ফুফুর ওপর সরাসরি রুকইয়াহ করেছিলাম। শাইখ ওয়াহিদ আব্দুস সালামের বই থেকে যতটুকু বুঝেছিলাম, সেগুলো ফলো করার চেষ্টা করেছিলাম। রুকইয়ার সময় ইফেক্টও হয়েছিল, তবে খুব বেশি না। কেমন যেন হতাশ হতাশ লাগছিল। তবে ফুফু নিজে নিজে রুকইয়া করলে বা আমি ফুফুর নিয়াতে শুনলে অনেক ইফেক্ট হত।
চিটাগাং থেকে খালি শুনেছি, কিন্তু আমি আসলে তখন কল্পনাও করতে পারিনি রুকইয়াহ শুনতে গিয়ে উনার কত কষ্ট হতো। পরে টের পেয়েছি! আসলে শুরুতে অতটা বুঝতাম নাতো, আর ইফেক্ট সামলানোর উপায়ও জানতাম না। মুফতি জুনাইদের বয়ানে শুনেছিলাম রুকইয়াহ শুনতে হয়, ঘণ্টার পর ঘণ্টা রুকইয়াহ শুনতাম। উনি নিজেও শুনতেন আমিও শুনতাম। উনি ছোট করে বলে দিয়েছিলেন, বেশি কষ্ট হলে রুকইয়ার গোসল করতে। মাঝেমাঝে সেটা করা হত।
যাহোক, বাড়ী গিয়ে ফুফুর ওপর কয়েকবার সরাসরি রুকইয়া করার অভিজ্ঞতা হল।
---
ইনশাআল্লাহ ক্রমশঃ...
...
(সম্ভবতঃ এরপর এই সিরিজের আর কোনো লেখা প্রকাশ হয়নি...)
_______
_______
বই -রুকইয়াহ
লেখক - আবদুল্লাহ আল মাহমুদ
সম্পাদনা- Ali Hasan Osama, আব্দুল্লাহ আল মাসউদ
প্রকাশক- Maktabatul Aslaf
বই -রুকইয়াহ
লেখক - আবদুল্লাহ আল মাহমুদ
সম্পাদনা- Ali Hasan Osama, আব্দুল্লাহ আল মাসউদ
প্রকাশক- Maktabatul Aslaf
0 comments:
Post a Comment