March 5, 2019

দুখের পরে সুখ...

[ক]
অল্প ক'দিন আগের কথা, খুবই মন খারাপ আর পেরেশানি নিয়ে একটা সপ্তাহ পার করলাম। একের পর বিপদ, ঝামেলা, সমস্যা লেগেই ছিল। কাছের মানুষগুলো জানতেন কি কষ্টের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল প্রতিটা মুহূর্ত। পড়াশোনা তো বহুত আগেই শিকেয় উঠেছে, এবার খাওয়া - নাওয়া, ঘুম সব চালে উঠলো। অস্বাভাবিক ব্লাড প্রেশারের কারনে নিজের থুতুও লবনাক্ত মনে হচ্ছিল, এনজাইটির কারণে রাতে ৪-৫বার করে ঘুম ভাঙছিল।
[খ]
মানুষ মেসেজ দিলে আমি রিপ্লাই দিতে যেখানে দিন - সপ্তাহ - মাস পার করে দিই, সেই আমিই পাগলের মত এর ওর ইনবক্সের দরজায় ধাক্কাধাক্কি করছিলাম। আধ পরিচিত, সেমি পরিচিত ভাই - বোন, আংকেলদের মেসেজ দিয়ে কান্নাকাটি করছিলাম।
বড় কিছু কারণ ছিল, তবে আমার এভাবে ভেঙে পড়াটা ছিল আরও বড় অদ্ভুত। আমি নিজেই অবাক হচ্ছিলাম, প্রচণ্ড শক্ত নার্ভের অধিকারি কিংবা মাত্রাতিরিক্ত নির্লিপ্ত আব্দুল্লাহর মাথায় কিভাবে সুইসাইডাল থট ঘোরাফেরা করছে। আগে কখনো এমন হয়নি..
[গ]
সেদিনই তুলেছিলাম ছবিটা। বলছিলাম "ঐ কবরটা যদি আমার হত!"


এশার সালাতের পর রিফাত ভাইয়ের কামরায় মন খুলে কাদলাম। লম্বা সময় ধরে..।
কেঁদে হালকা হলাম নাকি ভারি হলাম আল্লাহ মালুম, তবে ছাত্র ভাইদের কেউ কেউ দেখে ফেলেছে বোঝার পর মিনিটের মধ্যেই নিজের মাঝে ফিরে এসেছিলাম। একটু পরেই চোখমুখ ধুয়ে হাসতে হাসতে সবার সাথে খেতে বসলাম।
বেক্কেল পোলাপান যারা ভেবেছিল- আমি ছ্যাক খাইসি! আমার হাসি দেখে অপ্রস্তুত হয়ে নিজেরাই ছ্যাক খেল। বেচারা.. হাহাহা!
[ঘ]
এর পরের দিনগুলো কত সুন্দর ছিল জানেন?
ছবি তোলার পরের দিনই ভাবছিলাম "কালকে যদি মরে যেতাম, তাইলে এত সুন্দর একটা দিন মিস করতাম.."
আস্তে আস্তে অবস্থার উন্নতি হচ্ছিল।
মাত্র ক'দিন পরেই বাধ্য হয়ে বললাম "আজ আমার জীবনের সবচেয়ে খুশির দিনগুলোর একটি পার করলাম.. আলহামদুলিল্লাহ!"
[ঙ]
আরে ইয়ার! তোমারে কিভাবে বোঝাই, যে আল্লাহ কাঁদাতে পারেন, তিনি হাসাতেও পারেন। যে আল্লাহ চিপায় ফেলতে পারেন, কল্পনাতীতভাবে তিনি নাজাত দিতেও পারেন।
.
সেদিন রাজশাহীর তাযকিয়া স্টোরে বসে আছি, হঠাৎ কোনভাবে ফাঁস হয়ে গেল আমিই আব্দুল্লাহ.. অহ্নো! কি এক মিঠাতিতা অবস্থার মধ্যে পড়ে গেলাম।
এক ছোট ভাই রুকইয়াহ বই কিনে আমার দিকে এগিয়ে দিল কিছু লিখে নেয়ার জন্য, লিখলাম—
"শুধু আল্লাহর কাছে চাও, কখনো ব্যর্থ হবে না"
Share:

0 comments:

Post a Comment